গ্রাহকের হিসাবে ভুল করে চলে গেল ৮১ ট্রিলিয়ন ডলার
Published: 1st, March 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের সিটি ব্যাংক এনএ এক মজার কাণ্ড করেছে। বিষয়টি হলো, এক গ্রাহকের হিসাবে পাঠানোর কথা ছিল মাত্র ২৮০ মার্কিন ডলার; কিন্তু সেই সামান্য পরিমাণ অর্থ না পাঠিয়ে ভুলক্রমে তারা ৮১ ট্রিলিয়ন বা ৮১ লাখ কোটি ডলার পাঠানোর বার্তা দিয়েছিল গ্রাহককে। এই ঘটনায় সিটি ব্যাংক বড় ধরনের বিপদে পড়ে যেতে পারত।সূত্র ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস
এই ঘটনা সাম্প্রতিক নয়, গত বছরের এপ্রিল মাসে তা ঘটেছে, কিন্তু এত দিন তা জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি। শেষমেশ এ ঘটনায় সিটি ব্যাংকের অবশ্য কোনো ক্ষতি হয়নি এবং সেই গ্রাহকের হাতেও এত অর্থ যায়নি।
এই লেনদেনের সঙ্গে সম্পৃক্ত দুজন কর্মকর্তা বিষয়টি খেয়াল করতে পারেননি এবং পরের কার্যদিবসে তা স্থানান্তর হয়ে যাওয়ার কথা। শেষমেশ তৃতীয় একজন কর্মকর্তার চোখে ভুলটি ধরা পড়ে। তিনি টের পান ব্যাংকের স্থিতিপত্রে কোনো ধরনের সমস্যা হয়েছে; এই ৮১ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থ পাঠানোর পোস্টিং হওয়ার ৯০ মিনিট পর সেই কর্মকর্তা ভুলটি ধরতে পারেন। কয়েক ঘণ্টা পর এই লেনদেন বাতিল করা হয়।
এই ৮১ লাখ কোটি ডলার প্রকৃত অর্থে সেই হিসাবে পাঠানো হয়নি; সিটি ব্যাংকেরও ক্ষতি হয়নি। বিষয়টি ফেডারেল রিজার্ভের কম্পট্রোলার অব দ্য কারেন্সি বিভাগে জানানো হয়। ব্যাংক থেকে অর্থ ছাড় না হলেও বোঝা যায়, সরাসরি বা কাগজে-কলমে লেনদেনের ক্ষেত্রে কী ধরনের সমস্যা হতে পারে এবং ডিজিটাল লেনদেনের গুরুত্ব কতটা।
এ ধরনের ঘটনা প্রতিবছরই কিছু না কিছু হয়। সিএনএনের সংবাদে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে সিটি ব্যাংকেই এ রকম ১০টি ঘটনায় এক বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলার ক্ষতি হয়েছে। এর আগের বছর ছিল ১৩টি ঘটনা। অর্থাৎ গত বছর এই সংখ্যা কিছুটা কমেছে।
গত মাসে সিটি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক ম্যাসন বলেন, কমপ্লায়েন্স বা আইন মান্যতার ক্ষেত্রে সিটি ব্যাংক বেশ কিছু ব্যবস্থা নিচ্ছে। বিশেষ করে তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে আরও বিনিয়োগ করা দরকার বলে তিনি মত দেন।
এসব কারণে সিটি ব্যাংক সম্প্রতি জরিমানারও শিকার হয়েছে। এসব বিষয় ঠিকঠাক সামলাতে না পারার কারণে ব্যাংকটির জরিমানা হয় ১৩ কোটি ৬০ লাখ ডলার। ২০২০ সালে তারা ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও তথ্যসংক্রান্ত ঘাটতির কারণে ৪০ কোটি ডলার জরিমানা দিয়েছিল।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত ল নদ ন ধরন র
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁওয়ে শহিদুল ইসলাম শহিদকে হত্যার মামলায় অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিয়েছে পুলিশ। এ মামলায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ ২৩১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চান্দগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুল হক গত বুধবার (৩০ জুলাই) আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন।
শনিবার (২ আগস্ট) চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব আহমেদ অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার তথ্য সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
সিলেটে স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা: ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন
চবি ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
পুলিশ জানিয়েছে, গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলার সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা কোনো মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল করা হলো।
২০২৪ সালের ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মহানগরীর বহদ্দারহাটে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় একাধিক পিস্তল, শটগানসহ ভারী অস্ত্র দিয়ে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছিলেন আওয়ামী লীগের কর্মীরা।
এর আগে নিউ মার্কেট মোড়ে সমাবেশ করে ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে ষোলশহর মেয়র গলিতে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বাসভবনে হামলা চালায়। এর পর বহদ্দারহাট মোড়-সংলগ্ন সাবেক সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসভবনে হামলা হয়। ওই সময় গুলিবিদ্ধ হন অটোরিকশাচালক শহিদ। তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শহিদের ভাই শফিকুল ইসলাম চান্দগাঁও থানায় মামলা করেন।
আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি আইনের ৩০২ ধারায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। উল্লেখযোগ্য অপর আসামিরা হলেন— চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ও আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, এম এ লতিফ, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভী, মহিউদ্দিন বাচ্চু, আবদুচ ছালাম, দিদারুল আলম দিদার, এস এম আল মামুন ও নোমান আল মাহমুদ, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, চসিকের সাবেক কাউন্সিলর এসরারুল হক, নুর মোস্তফা টিনু, সলিমুল্লাহ বাচ্চু, জিয়াউল হক সুমন ও নুরুল আজিম রনিসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
আগামী ২৫ আগস্ট বাদীর উপস্থিতিতে অভিযোগপত্রের ওপর শুনানি হবে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে। অভিযোগপত্রে ১২৮ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৮ জন সাধারণ মানুষ, ৯৯ জন পুলিশ ও ১ জন চিকিৎসক।
ঢাকা/রেজাউল/রফিক