ভালো খাবার পেলে মন কার না ভালো থাকে। ভোজনপর্ব শেষে গুনগুন করে অনেকে গানও গাইতে থাকেন। তবে যদি বলা হয়, খাওয়াদাওয়া ভালো হলে তিমিও গান গায়, আর সেই গান পিয়ানোর সুরের মতোই মধুর! অবাক হওয়ার কিছু নেই—এমন ঘটনা যে আদতেই ঘটে, তা দেখা গেছে নতুন এক গবেষণায়।

গবেষণাটি করেছে সংবাদমাধ্যম দ্য কনভারসেশন। ছয় বছর ধরে প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের উপকূলে এ গবেষণা চালানো হয়েছে। এ নিয়ে দিন কয়েক আগে পিএলওএস ওয়ান সাময়িকীতে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, তিমিদের বাস্তুসংস্থানে পরিবর্তন হলে, তার আভাস পাওয়া যায় সেগুলোর গানে।

প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তর-পূর্বাঞ্চল তিমির জন্য খাবারের দারুণ এক উৎস। বংশবিস্তারের জন্য সেখান থেকে প্রতিবছর বহু দূরে পাড়ি দেয় তিমিরা। পথে বলতে গেলে সেগুলো কিছুই খায় না। তাই যাত্রার আগে পেটপুরে খেয়ে নেয়। এই খাবার থেকে পাওয়া শক্তির সাহায্যেই তিমিরা বহু দূর গিয়ে সন্তান জন্ম দেয়, চলে লালন-পালন। পরে বসন্ত বা গ্রীষ্মের দিকে আবার নিজ ঠিকানায় ফিরে আসে।

গবেষণায় তিন ধরনের তিমির গানের তথ্য পাওয়া গেছে। সেগুলো হলো নীল তিমি, হামব্যাক তিমি ও ফিন তিমি। এর মধ্যে নীল তিমি শুধু ‘ক্রিল’ নামে একধরনের চিংড়িজাতীয় মাছ খেয়ে থাকে। হামব্যাক তিমি ক্রিলের পাশাপাশি ‘অ্যাংকোভি’ নামের মাছের ঝাঁক থেকে খাবার সংগ্রহ করে। তবে এই খাবারের প্রতুলতা কিন্তু প্রতিবছর একই রকম থাকে না।

কনভারসেশনের গবেষণাটি শুরু হয়েছিল ২০১৫ সালে। তখন সমুদ্রে দীর্ঘস্থায়ী তাপপ্রবাহ চলছিল। এতে উত্তর-পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে তিমিসহ অন্যান্য জলজ প্রাণীর খাবারের সংকট দেখা দিয়েছিল। গবেষণায় দেখা যায়, ওই তাপপ্রবাহের সময় তিন প্রজাতির তিমি সবচেয়ে কম গান গেয়েছিল। আর পরের দুই বছর পরিস্থিতির উন্নতি হলে সেগুলোর গানের পরিমাণও বেড়ে যায়।

এ থেকেই প্রথম জানা যায়, খাবারের সঙ্গে তিমির গানের সম্পর্ক রয়েছে। এরপর বিগত ৫০ বছরে অ্যাংকোভি মাছ বৃদ্ধি পেয়েছে—এমন এলাকায় নজর রাখা হয়। দেখা যায়, সেসব এলাকায় হামব্যাক তিমির গান ব্যাপক হারে বেড়েছে। এই গানের সঙ্গে যে মাছের সম্পর্ক রয়েছে, তার প্রমাণ পাওয়া যায় তিমিগুলোর ত্বক পরীক্ষা করে। ওই মাছ খাওয়ার ফলে সেগুলোর ত্বকে পরিবর্তন এসেছিল। নীল তিমির ওপর একই ধরনের পরীক্ষা চালিয়েও সেগুলোর খাবারের সঙ্গে গানের সম্পর্ক পাওয়া গেছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

নর্ডিক স্কলারশিপে সম্পূর্ণ অর্থায়নে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডির সুযোগ

উত্তর ইউরোপের দেশগুলোর আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য গবেষণার সুযোগ নিয়ে এসেছে নর্ডিক স্কলারশিপ প্রোগ্রাম ২০২৬। এই প্রোগ্রাম ঘোষণা করেছে সুইডেনের নর্ডিক আফ্রিকা ইনস্টিটিউট (NAI)। সামাজিক বিজ্ঞান ও মানবিক বিষয়ে যাঁরা আফ্রিকান স্টাডিজ বা সমসাময়িক আফ্রিকা নিয়ে গবেষণা করছেন, তাঁদের জন্য এই আন্তর্জাতিক বৃত্তি উন্মুক্ত।

এই বৃত্তির মাধ্যমে সুইডেন, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক ও আইসল্যান্ডের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত মাস্টার্স, পিএইচডি ও পোস্টডক্টরাল গবেষকেরা এক মাসের জন্য নর্ডিক আফ্রিকা ইনস্টিটিউটে গবেষণার সুযোগ পাবেন। এই প্রোগ্রাম আবেদনকারীর নাগরিকত্বের ওপর নির্ভরশীল নয়। মূল লক্ষ্য হলো, আফ্রিকা–বিষয়ক গবেষণায় নর্ডিক অঞ্চলে সক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং নর্ডিক গবেষকদের মধ্যে সহযোগিতার নেটওয়ার্ক তৈরি করা।

নর্ডিক স্কলারশিপ প্রোগ্রাম ২০২৬–এর শেষ তারিখ আগামী ১২ অক্টোবর ২০২৫।

সম্পর্কিত নিবন্ধ