সাবেক মন্ত্রীর বান্ধবীসহ পুলিশ সদস্যের নামে মামলা
Published: 2nd, March 2025 GMT
হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ এনে সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের বান্ধবী ফারজানা সাকি ও কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ডেপুটি কমিশনার মো. নাজমুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
রবিবার (২ মার্চ) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেনের (গালিব) আদালতে ডা. জোবায়ের আহমেদ মামলাটি করেন।
আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন সংস্থাকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
আরো পড়ুন:
স্ত্রী-মেয়েসহ আমির হোসেন আমুর ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ
মুক্তিযোদ্ধার নাতি সেজে এক যুগ পুলিশে চাকরি, গ্রেপ্তার
বাদী পক্ষের আইনজীবী ফারুক আহমেদ এতথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ডা.
নাজমুল ইসলাম ২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর বাদীকে তার অফিসে দেখা করার জন্য আসতে বলেন। তিনি না আসায় বারবার তাকে নক করে আসতে বলেন এবং বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি প্রদান করেন। উপায়ান্তর না দেখে জোবায়ের আহমেদ ১৫ ডিসেম্বর নাজমুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করতে যান। যাওয়ার পর দেখতে পান, ফারজানা সাকি আগে থেকেই সেখানে উপস্থিত রয়েছেন। জোবায়ের আহমেদ তাকে ডেকে আনার কারণ জানতে চান। তখন নাজমুল ইসলাম বাদীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। তাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন। ফারজানা সাকি মারের দৃশ্য ভিডিও করেন। পরে তিনি চিকিৎসা গ্রহণ করেন।
নাজমুল ইসলাম ১৬ ডিসেম্বর জোবায়ের আহমেদ ফোন করে জানতে চান, তিনি ঠিক আছেন কি না। তখন বাদী বলেন আপনি আমাকে আপনার অফিসে বিনা কারনে ডেকে নিয়া অপমান ও লাঞ্চিত করলেন এবং আমাকে ফিজিক্যাল অ্যাসল্ট করলেন। আমার কি অপরাধ ছিল? তখন নাজমুল ইসলাম তাকে মামলা দিয়ে আটকে সাইজ করার হুমকি দেন।
নাজমুল ইসলাম পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে ফারজানা খান নামে এক মহিলা দ্বারা জোবায়ের আহমেদের বিরুদ্ধে ভাটারা থানায় একটি মামলা দায়ের করান। ২০২৩ সালের ১৯ জানুয়ারি জোবায়ের আহমেদকে কুমিল্লা থেকে ঢাকায় সামনা সামনি কথা বলার জন্য ডেকে এনে ধানমন্ডি ২৭ নম্বরে অবস্থিত গার্ডেন বারবিকিউ এন্ড ক্যাফে থেকে গ্রেপ্তার করান। পরে তাকে হেফাজতে নিয়ে মানষিক ও শারীরিক নির্যাতন করেন। তাকে রিমান্ড আবেদনসহ আদালতে হাজির করা হয়। আদালত রিমান্ড নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ২০২৩ সালের ৩ এপ্রিল জামিন পান ডা. জোবায়ের আহমেদ।
ঢাকা/মামুন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ব য় র আহম দ র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।
সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।
পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।
বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।
এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।
আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।
জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)