ভালো ব্যবসা করতে পারছে না উৎপাদন ও সেবা খাতের দেশীয় কোম্পানি। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত এমন ২৩০ কোম্পানির মধ্যে গত বছরের শেষ ছয় মাসে ৫৭টি লোকসান করেছে, যার ৩৯টি আগের বছরেও লোকসানে ছিল। এর বাইরে ৪৫ কোম্পানি নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পরও আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। ধারণা করা হচ্ছে, এসব কোম্পানিও লোকসানে।
এদিকে ১২৮টি কোম্পানি গত বছরের শেষ ছয় মাসে বা দুই প্রান্তিক মিলে নিট মুনাফা করেছে, যার মধ্যে ৭৯টির মুনাফা আগের একই সময়ের চেয়ে বেড়েছে। তবে মুনাফা করা কোম্পানির মধ্যে শেয়ারপ্রতি ৫০ পয়সা মুনাফাও হয়নি এমন কোম্পানি ৫১টি। আবার ৪৮টির মুনাফা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে।
গতকাল পর্যন্ত ঢাকার শেয়ারবাজার ডিএসইতে তালিকাভুক্ত যেসব কোম্পানি ২০২৪ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সময়কালের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তাদের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) পর্যালোচনায় এমন তথ্য মিলেছে। বর্তমানে ডিএসইর মূল প্ল্যাটফর্মে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ৩৬০টি। এর মধ্যে ২৪৩টি উৎপাদন ও সেবা খাতের, যাদের হিসাব বছর শেষ হয় জুনে। বাকি ১৩টি বহুজাতিক কোম্পানি, যাদের হিসাব বছর শেষ হয় ডিসেম্বরে।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে মুনাফা করার পরও ১৮টি কোম্পানি চলতি হিসাব বছরের প্রথম ছয় মাসে লোকসান করেছে। এগুলো হলো– ইনফরমেশন সার্ভিসেস, বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার, ল্যুব-রেফ, ইনটেক, ওরিয়ন ফার্মা, ইভিন্স টেক্সটাইল, আমরা টেকনোলজিস, এনার্জিপ্যাক পাওয়ার, দেশবন্ধু পলিমার, শাইনপুকুর সিরামিক, সি পার্ল হোটেল, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, ইস্টার্ন কেবলস, বেক্সিমকো লিমিটেড, জেমিনি সি ফুডস, বসুন্ধরা পেপার, তিতাস গ্যাস এবং মেঘনা পেট্রোলিয়াম।
আগের হিসাব বছরের একই সময়ে লোকসান করার পর চলতি হিসাব বছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়কালে মুনাফা করেছে ১০ কোম্পানি। এসব কোম্পানি হলো– পাওয়ার গ্রিড, ফারইস্ট নিটিং, আরামিট লিমিটেড, এস্কোয়ার নিট, শেফার্ড, দুলামিয়া কটন, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, স্টাইল ক্রাফট, জিবিবি পাওয়ার ও লিগ্যাসি ফুটওয়্যার।

লোকসান যাদের বেশি 
চলতি হিসাব বছরের প্রথম ছয় মাসে সবচেয়ে বেশি লোকসান করেছে বেক্সিমকো লিমিটেড। ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ারের বিপরীতে এর লোকসান ৩ টাকা ৭৮ পয়সা। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ প্রায় ৩৪০ কোটি টাকা। অথচ আগের হিসাব বছরের একই সময়ে প্রায় পৌনে ৩ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল। একই গ্রুপভুক্ত শাইনপুকুর সিরামিক কোম্পানি শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ৩৫ পয়সা বা টাকার অঙ্কে নিট প্রায় ২০ কোটি টাকা লোকসান করেছে, যেখানে আগের বছর একই সময়ে ২৯ লাখ টাকা মুনাফা করেছিল। 
মেঘনা সিমেন্টও এবার বড় লোকসান করেছে। আগের বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি ৩০ পয়সা মুনাফা করেছিল। এ বছর ১০ টাকার শেয়ারের বিপরীতে ৯ টাকা ৪৭ পয়সা হারে লোকসান করেছে বলে জানিয়েছে। লোকসান দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩০ কোটি টাকা। বড় লোকসানের তালিকায় আছে এপেক্স ট্যানারি, এসিআই লিমিটেড, তিতাস গ্যাস, বসুন্ধরা পেপার, বিডি ল্যাম্পস, জেমিনি সি ফুডস, এইচআর টেক্সটাইল, ইস্টার্স কেবলস ইত্যাদি। কমপক্ষে ১ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩৭ টাকা লোকসান করেছে ২৭ কোম্পানি।

মুনাফায় থাকা কোম্পানি
শেয়ারপ্রতি কমপক্ষে ১ টাকা মুনাফা করা কোম্পানির মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে জেএমআই সিরিঞ্জেস অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইসেস। কোম্পানিটি জুলাই-ডিসেম্বর সময়কালে শেয়ারপ্রতি নিট ১ টাকা ৭১ পয়সা মুনাফা করেছে, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল মাত্র ১৫ পয়সা। ফাইন ফুডসের মুনাফা ৩৮ পয়সা থেকে ১ টাকা ৮১ পয়সায়, মতিন স্পিনিংয়ের ৫৮ পয়সা থেকে ২ টাকা ৬১ পয়সায়, ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টসের ৫ টাকা ৪৭ পয়সা থেকে ১৭ টাকা ৫৯ পয়সায়, লাভেলোর ৫৭ পয়সা থেকে ১ টাকা ৫২ পয়সায় এবং এনভয় টেক্সটাইলের ১ টাকা ৪৫ পয়সা থেকে ৩ টাকা ৫৮ পয়সায় উন্নীত হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র বছর র একই সময় র হ স ব বছর হ স ব বছর র ড স ম বর ছয় ম স পয়স য়

এছাড়াও পড়ুন:

২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট সময়কালে ফ্যাসিবাদী শক্তি নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে, এসবির প্রতিবেদন

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে কর্মসূচি পালনকালে ফ্যাসিবাদী শক্তি অনলাইন-অফলাইনে প্রচারণা চালিয়ে সারা দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি)।

গতকাল সোমবার এসবির এক প্রতিবেদনে এমন আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনটি পুলিশের সব বিভাগকে পাঠিয়ে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছে এসবি। এসবির একটি সূত্র প্রথম আলোকে এই প্রতিবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সরকার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ফ্যাসিবাদবিরোধী সামাজিক সংগঠনগুলো ১ জুলাই থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। এই ধারাবাহিকতায় ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত কর্মসূচি পালনের সময়কাল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে কর্মসূচি পালনকে কেন্দ্র করে বিতাড়িত ফ্যাসিবাদী শক্তি অনলাইন-অফলাইনে প্রচারণা চালিয়ে দেশব্যাপী নৈরাজ্য সৃষ্টি, ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির কর্মসূচিতে বাধা প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর অপচেষ্টা চালাতে পারে।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি ও জানমাল রক্ষায় পুলিশের বিভিন্ন বিভাগকে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছে এসবি।

নির্দেশনাগুলো হলো ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা। ৮ আগস্ট পর্যন্ত নিয়মিত সন্দেহজনক ব্যক্তিসহ মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস ও অন্যান্য যানবাহন তল্লাশি করা। বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট, রেলস্টেশন ও বিমানবন্দরের পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল অভিযান পরিচালনা করা। মোবাইল প্যাট্রোল জোরদার করা। গুজব রোধে সাইবার পেট্রোলিং কার্যক্রম অব্যাহত রাখাসহ গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা।

এ ছাড়া কোনো অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকলে তা তাৎক্ষণিকভাবে এসবিকে অবহিত করার কথাও বলা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ২৯ জুলাই-৮ আগস্ট ‘ফ্যাসিবাদী শক্তির’ নৈরাজ্যের আশঙ্কায় এসবির সতর্কতা
  • ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট সময়কালে ফ্যাসিবাদী শক্তি নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে, এসবির প্রতিবেদন