সারাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা ও নিপীড়নের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট।

মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বেলা ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়কে মানববন্ধন করেন তারা।

এ সময় সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক সাদমান অলীভ বলেন, “নারীর প্রতি সহিংসতা শুধু আজকের ঘটনা না। এটা যুগের পর যুগ ধরে ঘটে আসছে। আমার কোন বোন যদি সাধারণ কামিজ পরেও বাসে উঠে, কেউ কেউ তার দিকেও খারাপভাবে তাকায়। আমি আজ ভাই হিসেবে ব্যর্থ। আমরা যদি তাদের নিরাপত্তা না দিতে পারি, তাহলে এই মানববন্ধন কখনোই থামবে না। আমরা চাই যেভাবে দেশে সহিংসতা হচ্ছে, মবের নামে নারীদের নির্যাতন, নিপীড়ন করা হচ্ছে; এর দ্রুত অবসান হোক।”

আরো পড়ুন:

জেলে ও হাসপাতালে বসে পরীক্ষা দিচ্ছেন জাবিতে হামলাকারী ২ ছাত্রলীগ নেতা

‘ছাত্রদল চাইলে গুপ্ত সংগঠনের অস্তিত্ব থাকবে না’

পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু বলেন, “পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীর প্রতি বৈষম্যের ব্যাপারটি আমাদের দীর্ঘ প্রক্রিয়ার অংশ। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরও আমরা এ ধরনের মানসিকতা থেকে বের হতে পারিনি। প্রকাশ্যে ধুমপান করা পুরুষ ও নারী উভয়ের জন্যই অনুচিত। কিন্তু আমরা দেখি ছেলেরা প্রায়ই ধূমপান করছে, শুধু নারীর ক্ষেত্রেই সমস্যা। মব জাস্টিসের নামে যে ধরনের নিপীড়ন করা হয়েছে, তা একেবারেই অনভিপ্রেত। আমরা এর নিন্দা জানাই।”

তিনি বলেন, “একটা পরিস্থিতি যখন তৈরি হয়, সেট আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধান না হয়ে মব জাস্টিসের মাধ্যমে যে ঘটনাগুলো ঘটানো হয়, তা একেবারেই অনভিপ্রেত। রাষ্ট্র, সমাজ এবং যে রাজনৈতিক দলগুলো আছে, সবাই মিলে এ বিষয়টাকে সামনে রেখে সহনশীল আচরণ করার জন্য যা যা কর্মসূচি দরকার, সেগুলো পালন করার মধ্য দিয়ে এ সমস্যার সমাধান করা উচিৎ। রাষ্ট্রের উচিৎ, এ মব জাস্টিসের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা।”

সমাপনী বক্তব্যে জোটের সভাপতি ফাইজা মেহজাবিন প্রিয়ন্তী বলেন, “বারবারই একটা বলি যে, হে রাষ্ট্র, মেয়েদের বন্দিত্বের দায় না নিয়ে নিরাপত্তার দায় নাও। অথচ হতাশার সঙ্গে আমরা দেখি, এ রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা মেয়েদের বন্দিত্বের দিকে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে অধিক আগ্রহী। মেয়েদের নিরাপত্তা দানের ব্যাপারে তাদের ন্যুনতম কোনো আগ্রহ বা সদিচ্ছা আমরা দেখতে পাই না‌। একটি সংবাদে দেখলাম, গত এক মাসে প্রায় ২৩৮টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। যা বাংলাদেশের মতো একটি রাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত নিন্দাজনক।” 

তিনি আরো বলেন, “স্বাধীনতার ৫৫ বছর বয়সেও এ দেশ আসলে মেয়েদের কোন সম্মান দিতে পারেনি । আমরা বারবার দেখছি ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটছে, নিপীড়নমূলক ঘটনা ঘটছে, নারীর প্রতি সহিংস আচরণ করা হচ্ছে। কিন্তু দোষীদের শাস্তির আওতায় আনতে এ রাষ্ট্র বরাবরই ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। ফলে গত এক মাসে ২৩৮টির মতো ধর্ষণের ঘটনা দেখি। এ মেয়েদের গত জুলাইয়ে দেখেছি, সম্মুখ সারির যোদ্ধা হিসেবে।”

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদের ভাইকে কোপানোর ঘটনায় মামলা, প্রতিবাদ কর্মসূচি

জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ নোয়াখালীর মাহমুদুল হাসান ওরফে রিজভীর ছোট ভাই শাহরিয়ার হাসানকে (১৬) এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে আহত শাহরিয়ারের মা ফরিদা ইয়াসমিন ২১ জনকে আসামি করে সুধারাম থানায় মামলাটি করেছেন। মামলার তিন আসামিকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদিকে শাহরিয়ার হাসানকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনার প্রতিবাদে নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীতে পৃথকভাবে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়েছে।

সুধারাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু তাহের মামলার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, হামলার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁরা ‘কিশোর গ্যাংয়ের’ সদস্য। তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হবে। একই সঙ্গে অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এর আগে গতকাল বিকেল সোয়া চারটার দিকে জেলা শহর মাইজদীর বার্লিংটন মোড় এলাকায় ওই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় শাহরিয়ার হাসান গুরুতর আহত হয়। তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। শাহরিয়ার শহরের হরিনারায়ণপুর উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র।

হামলাকারীদের গ্রেপ্তার দাবি

শাহরিয়ার হাসানের ওপর হামলার প্রতিবাদে আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে জেলা শহর মাইজদীর হরিনারায়ণপুর উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ‘নোয়াখালীর সর্বস্তরের ছাত্র–জনতা’ ব্যানারে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। এ সময় তাঁরা হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে স্লোগানও দেন।

সমাবেশে হরিনারায়ণপুর উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা শাখার আহ্বায়ক মো. আরিফুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন। মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আমাদের সন্তানেরা নিরাপদে স্কুলে আসতে পারবে না, স্কুল থেকে বাড়ি ফিরতে পারবে না; স্বাধীন দেশে এটা মেনে নেওয়া যায় না। অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করতে হবে।’ আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘কিশোর গ্যাং লালনকারীদের আমরা সাবধান করে দিতে চাই। এ ধরনের তৎপরতা বন্ধ না হলে আপনাদের বিরুদ্ধেও রুখে দাঁড়াব।’

দুপুর পৌনে ১২টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশের আয়োজন করে ‘ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ’। কর্মসূচিতে পটুয়াখালীতে এক শহীদের মেয়েকে ধর্ষণের ঘটনা ও নোয়াখালীতে শহীদের ভাইয়ের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার দাবি করা হয়। কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশের জেলা সংগঠক শহিদ আলম, জয়নুল আবেদীন, জান্নাতুল ফেরদাউস, ইমাজ উদ্দিন প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অফিসে ঢুকে প্রধান শিক্ষককে জুতাপেটা করার অভিযোগ
  • নির্দোষ দাবি প্রতিপক্ষের, হয়নি মামলা
  • মাওলানা রঈস উদ্দিন হত্যার বিচার দাবি ১০৪ নাগরিকের
  • বাসে হামলার প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
  • সন্তানের বন্ধু হতে চাইলে
  • উত্তরায় বাসে হামলার প্রতিবাদে ঢাবিতে মানববন্ধন
  • সবুজ এলাকায় পুলিশের প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার কম হয়
  • গোবিপ্রবিতে কর্মকর্তাদের শৃঙ্খলাবিষয়ক কর্মশালা শুরু
  • মূলধারার শিক্ষার সঙ্গে কারিগরি শিক্ষা সম্পৃক্ত করা দরকার: শিক্ষা উপদেষ্টা
  • জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদের ভাইকে কোপানোর ঘটনায় মামলা, প্রতিবাদ কর্মসূচি