তথ্য চাওয়ায় সাংবাদিককে হেনস্তা করার অভিযোগ
Published: 6th, March 2025 GMT
রৌমারীতে খোলা বাজারে খাদ্যশস্য বিক্রয় (ওএমএস) কর্মসূচির তথ্য চাওয়ায় সাখাওয়াত হোসেন নামে এক সাংবাদিককে হেনস্তা করা হয়েছে। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবু হাসনাত মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। গত মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক দপ্তরে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী সাংবাদিক সাখাওয়াত হোসেন একটি জাতীয় দৈনিকের রৌমারী উপজেলা প্রতিনিধি।
বুধবার দুপুরে ভুক্তভোগী সাংবাদিক সাখাওয়াত হোসেন অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অফিসে গিয়ে খোলা বাজারে খাদ্যশস্য বিক্রয়ের ডিলার ও বিক্রয় স্থানের তথ্য চান তিনি। তাঁর চাওয়া অনুযায়ী তথ্য দেওয়ার জন্য ফাইল বের করেন অফিস সহকারী জাকির হোসেন। এ সময় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মিজানুর রহমান অফিসে ঢুকে সাংবাদিককে দেখে অফিস সহকারীর কাছে কারণ জানতে চেয়ে বলেন, ‘এখানে সাংবাদিক কেন এসেছে, কী চায়?’ উত্তরে অফিস সহকারী বলেন, ‘স্যার, সাংবাদিক ওএমএসের তথ্য চান।’ এ কথা শোনামাত্র তিনি উত্তেজিত হয়ে অফিস কক্ষ থেকে বের করে দেন ওই সাংবাদিককে।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক বলেন, ‘উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মিজানুর রহমান তাঁকে রাগান্বিত হয়ে বলেছেন, তাঁর চার ভাই সাংবাদিক ও আরেক ভাই ব্রিগেডিয়ার জেনারেল। আমার কাছে তথ্য চান? এত বড় সাহস! যান, বের হয়ে যান। কোনো তথ্য দিব না।’
রৌমারী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসের অফিস সহকারী জাকির হোসেন বলেন, ‘স্যার আসলে সাংবাদিককে চিনতে পারেননি। যা ঘটেছে, তার জন্য আমি স্যারের পক্ষ থেকে ক্ষমা চাচ্ছি।’
রৌমারী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের দাবি, তিনি তেমন কোনো ব্যবহার করেননি। অফিসে অনেক লোক ছিল। তাই বলা হয়েছে যে, সবাই একটু বাইরে যান। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি কোনো উত্তর দিতে চাচ্ছি না।’
কুড়িগ্রাম জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা সাইফুল কাবির খানের ভাষ্য, সাংবাদিক তথ্য চাইতেই পারেন। তাই বলে দুর্ব্যবহার করার কোনো সুযোগ নেই। তবে বিষয়টি দেখবেন তিনি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম জ ন র রহম ন উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
বছরে ৬ লাখ অপরিণত শিশুর জন্ম
দেশে বছরে গড়ে জন্ম নিচ্ছে প্রায় ৬ লাখ অপরিণত (প্রিম্যাচিওর) শিশু। জন্মের সময় গর্ভকাল পূর্ণ না হওয়ায় এসব নবজাতকের ঝুঁকি থাকে নানা জটিলতায় পড়ার, এমনকি মৃত্যুর আশঙ্কাও থাকে বেশি। তাই নবজাতকদের মৃত্যু হ্রাসে অপরিণত নবজাতক জন্ম প্রতিরোধে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
সোমবার শহীদ ডা. মিল্টন হলে বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিওন্যাটোলজি বিভাগ ও সেভ দ্যা চিলড্রেন আয়োজিত সভায় এই তথ্য জানানো হয়।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাদেকা চৌধুরী মনি। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. ইসমত জাহান। তিনি বলেন, মা ও অপরিণত নবজাতকদের জীবন রক্ষাকারী প্রকল্প সেভিং উইমেন এন্ড প্রিমেচিউর বেবিজ বা সোয়াপের মাধ্যমে দেশের পাচঁটি হাসপাতাল মা ও নবজাতক সেবা দেওয়া হচ্ছে। এই প্রকল্পের আওতায় ১ লাখ ৬৫ হাজার গর্ভবতী মা ও ৮৭ হাজার নবজাতককে সেবা পেয়েছে। দেড় হাজার স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের উল্লেখযোগ্য অর্জন হলো ভায়ু বাবল সিপ্যাপ, ফ্যামিলি সেন্টার কেয়ার, ক্যাঙ্গারু মাদার কেয়ার, নিওনেটালি লাইভ ইত্যাদিকে সফলভাবে প্রয়োগ করে নবজাতকদের জীবন রক্ষায় ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া গেছে।
বিএমইউর নিওনাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল মান্নান বলেন, বাংলাদেশে বছরে ৩০ লাখ নবজাতকের জন্ম হয়। যার মধ্যে শতকরা ২০ শতাংশই অপরিণত নবজাতক এবং বিশ্বের মধ্যে এই হার সর্বোচ্চ। সেই হিসেবে বছরে অপরিণত ৬ লাখ শিশু জন্মায়। নবজাতকের মৃত্যুহার হ্রাস পেলেও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। বিশেষ করে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি হাজার জীবিত জন্মে বর্তমানে নবজাতকের মৃত্যুহার ২০ জন থেকে ১২ জনে কমিয়ে আনা। যদিও এই প্রকল্পের কার্যক্রমসহ সামগ্রিক প্রচেষ্টায় নবজাতকের মৃত্যুহার ২০ জনে কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
বিএমইউর ফিটোম্যাটার্নাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. তাবাসসুম বলেন, নবজাতকের মৃত্যুর অন্যতম কারণ হলো অপরিণত নবজাতকের জন্ম দান। বাংলাদেশে প্রতি বছর ৩০ লাখ নবজাতকের জন্ম হয়। যার মধ্যে শতকরা ২০ শতাংশই অপরিণত নবজাতক এবং বিশ্বের মধ্যে এই হার সর্বোচ্চ। গত ১০ বছর ধরে এমন পরিস্থিতি দেখা যায়। এটি প্রতিরোধে আমাদের উদ্যোগ নেই। কেনো কমানো যাচ্ছে না এবিষয়েও কোনো গবেষণা হয় না। তবে সচেতনতা, প্রসূতি সেবা এবং মাতৃস্বাস্থ্য কার্যক্রম জোরদার করলে এ সমস্যা অনেকাংশে কমানো সম্ভব। অপরিণত শিশুর জন্মের পেছনে রয়েছে মাতৃস্বাস্থ্যের অবনতি, অপুষ্টি, সময়মতো প্রসবপরিচর্যার অভাব, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও প্রসবকালীন জটিলতা। এ ছাড়া ধূমপান, অনিয়ন্ত্রিত ওষুধ সেবন এবং অল্প বয়সে গর্ভধারণও অন্যতম কারণ।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) এর ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, সোয়াপের মাধ্যমে নবজাতকদের পরিবার কেন্দ্রিক চিকিৎসা (ফ্যামিলি সেন্টারড কেয়ার-এফসিসি) মা ও শিশুর জীবন রক্ষায় বিরাট অবদান রাখছে। এই পদ্ধতিকে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে বৃহৎ আকারে কাজে লাগাতে পারলে সমগ্র স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর গবেষণা ও উন্নয়ন অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, শিশু অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. আতিয়ার রহমান।