নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নেবে কিনা সেই সিদ্ধান্ত তাদের
Published: 6th, March 2025 GMT
‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করবে কিনা, সেই সিদ্ধান্ত তাদেরই নিতে হবে। তারা এটা (ভোট) করতে চায় কিনা, সেই সিদ্ধান্ত তাদেরই (আওয়ামী লীগ) নিতে হবে। আমি তাদের হয়ে এই সিদ্ধান্ত নিতে পারি না’। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বিবিসির দক্ষিণ এশিয়া সংবাদদাতা সামিরা হুসেইনের নেওয়া সাক্ষাৎকারটি আজ বৃহস্পতিবার বিবিসিতে প্রকাশিত হয়েছে। ঢাকায় সরকারি বাসভবন যমুনায় বসে বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, নির্বাচনে কারা অংশ নেবে, তা নির্বাচন কমিশন ঠিক করবে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নিতে বলা হলে মুহাম্মদ ইউনূস ‘হতভম্ব’ হয়ে পড়েছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার ধারণা ছিল না যে আমি সরকারের নেতৃত্ব দেব। আমি আগে কখনও সরকার চালাইনি। অথচ আমাকেই প্রয়োজনীয় কাজগুলো করতে হবে। ব্যাপারটি যখন ঠিক হয়ে গেল, তখন আমরা কাজগুলো সংগঠিত করতে শুরু করি। আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার, দেশের জন্য অর্থনীতি ঠিক করা আমাদের অগ্রাধিকার ছিল।
তিনি আরও বলেন, সরকারের নেতৃত্ব দেওয়ার বিষয়ে আমার কোনো ধারণা ছিল না। আগে কখনও সরকার যন্ত্রের কোনো অংশ চালাইনি এবং সেই দায়িত্বই তখন কাঁধে এলো। দায়িত্ব নেওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার ও অর্থনীতি ঠিক করাই দেশের জন্য অগ্রাধিকার ছিল জানিয়ে বলেন, এসব ঠিক হওয়ার পরে আমরা সংগঠিতভাবে কাজ শুরু করি।
ড.
আগামী নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেছেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তার সরকার কত দ্রুত প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার করতে পারে তার ওপর নির্ভর করে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে নির্বাচন করবেন। আমাদের চাওয়া যদি দ্রুত সংস্কার করা যায়, তাহলে ডিসেম্বরেই আমাদের নির্বাচন হবে। আর যদি সংস্কার দীর্ঘতর হয়, তবে আমাদের আরও কয়েক মাস সময় লাগতে পারে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শিশুর মাথা ঘামে কেন
শিশুর মাথা ঘামা নিয়ে যেন মা-বাবার দুশ্চিন্তার শেষ নেই। সাধারণত শিশুর এ আচরণকে অসুখ-বিসুখ ভাবা ঠিক নয়। রাতের বেলায় ঘুমানোর সময় মাথা ঘেমে যাওয়া, হাতের পাতা ঘেমে জবজবে হওয়া শিশুর বেলায় প্রায়ই দেখতে পাওয়া যায়। শিশুর মাথা ঘেমে গেলে, মাথায় কোনো সুনির্দিষ্ট কোনো লক্ষণ না থাকলে এ নিয়ে দুশ্চিন্তার তেমন কোনো কারণ নেই। শারীরিক কার্যকলাপের সময় উষ্ণ পরিবেশে মাথায় ঘাম একটি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। শিশুর ঘামের গ্রন্থিগুলো শরীরের অন্যান্য অঙ্গের মতো মাথার ঘামের গ্রন্থিও অপরিপক্ব; যার কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঘামে মাথা। শিশুর মাথা ঘামার সুবিধা হলো, শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ হয়। মাথায় প্রচুর ঘাম গ্রন্থি থাকে এবং এই ঘাম শরীরকে ঠান্ডা করতে সাহায্য করে।
কেন শিশুর মাথা ঘামে
l জন্মগত হৃদরোগের কারণে শিশুর মাথা অতিরিক্ত ঘামতে পারে। এ ক্ষেত্রে শিশুর অন্যান্য লক্ষণ থাকে। যেমন– হাত-পা, ঠোঁট নীল হয়ে যাওয়া, ঘন ঘন নিউমোনিয়া হওয়া, শরীরের ওজন না বাড়া ইত্যাদি।
l থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে অতিরিক্ত হরমোন তৈরির কারণে শিশুর মাথার ঘাম বাড়তে পারে। এ ক্ষেত্রে শিশুর ঘাম বাড়ার সঙ্গে ওজন কমে যাওয়া, বুক ধড়ফড় করা, ঘুম কমে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা থাকে।
l শিশুর রিকেটস রোগের জন্য ক্যালসিয়াম
এবং ভিটামিন ডি’র অভাব হলে মাথার ঘাম বেড়ে যেতে পারে।
l ইডিওপ্যাথিক হাইপারহাইড্রোসিস নামক রোগের কারণে শিশুর অতিরিক্ত ঘাম বেড়ে যেতে পারে।
l কিছু কিছু ওষুধ যেমন– অ্যামফিটামিন, পেথেডিন, থাইরোক্সিন অতিমাত্রায় এ ওষুধগুলো মা খেলে বুকের দুধ খায় এমন শিশুর মাথা ঘেমে যেতে পারে।
l ক্যাফেইনযুক্ত খাবার মাথার ঘাম বাড়িয়ে দিতে পারে।
l অতিরিক্ত মোটা কাপড়ও শিশুর মাথার ঘাম বাড়িয়ে দিতে পারে।
কখন চিকিৎসক দেখাবেন
শিশুর ঘামের সঙ্গে যদি অন্যান্য কিছু লক্ষণ দেখা যায়। তবে চিকিৎসা নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। যেমন–
l বয়স অনুযায়ী ওজন এবং উচ্চতা না বাড়া।
l পর্যাপ্ত বিশ্রাম সত্ত্বেও শিশুর ক্লান্তি দূর না হওয়া।
l শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা। শ্বাস নিতে অসুবিধা বা ঘন ঘন শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ বা নিউমোনিয়া।
l হাত, পা, ঠোঁট নীল হয়ে যাওয়া।
l কবজি ফুলে যাওয়া, দেরিতে হাঁটতে শেখা। হাঁটু থেকে গোড়ালি পর্যন্ত সামনের দিকে অথবা হাঁটুর কাছ থেকে দুই পা দু’দিকে বেঁকে যাওয়া।
চিকিৎসা
l গরম আবহাওয়ায় পাতলা সুতি কাপড় পরিধান করাবেন।
l ঘরের পরিবেশ ঠান্ডা এবং আরামদায়ক করা।
l শিশুকে পরিমাণমতো পানি এবং তরল খাবার দেওয়া।
l যেসব খাবার শিশুদের ঘাম বাড়িয়ে দিতে পারে। যেমন– চা, কফি, চকলেট জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। v
v শিশুকে প্রতিদিন গোসল করাবেন।
শিশুর মাথার ঘাম একটি স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রতিক্রিয়া, যা পরবর্তী সময়ে শিশুর বড় হওয়ার পর থাকবে না। তবে কখনও কখনও এটি একটি অন্তর্নিহিত স্বাস্থ্য সমস্যার কারণও হতে পারে। কারণগুলো বোঝা এবং কখন চিকিৎসা নেওয়া উচিত, তা জানা অভিভাবকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
[অধ্যাপক, শিশু বিভাগ
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা ]