বদরগঞ্জে বেশি দামে সার বিক্রির প্রতিবাদ করায় মারধর, ডিলার গ্রেপ্তার
Published: 7th, March 2025 GMT
রংপুরের বদরগঞ্জে বেশি দামে সার বিক্রির প্রতিবাদ করায় মারধরের শিকার হয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির বদরগঞ্জ শাখার দুই সদস্য। এ ঘটনায় থানায় মামলা করার পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বিএডিসির সারের ডিলার মনোয়ার হোসেনকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মারধরের শিকার জাতীয় নাগরিক কমিটির স্থানীয় দুই সদস্য হলেন সাজেদুল ইসলাম ও শাহ পরান। তাঁদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্সে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল বিকেলে উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের বোর্ডের হাটে ওই দুজনের ওপর হামলা হয়। আহত সাজেদুর রহমান বাদী হয়ে ডিলার মনোয়ার হোসেনসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করে বদরগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন।
গ্রেপ্তার মনোয়ার হোসেন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) বদরগঞ্জ উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ডিলার। তাঁর সারের দোকান ওই ইউনিয়নের বোর্ডেরহাট বাজারে অবস্থিত।
ামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মনোয়ার হোসেন দীর্ঘদিন ধরে রাসায়নিক সারের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে সরকারি মূল্যের চেয়ে বেশি দামে কৃষকের কাছে সার বিক্রি করে আসছিলেন। তিনি নিজ বাড়িতে সার রেখে দোকান ফাঁকা রাখতেন। রশিদ ছাড়াই চড়া দামে কৃষকের কাছে ইউরিয়া, এমওপি ও টিএসপি সার বিক্রি করতেন।
সাজেদুর রহমান বলেন, ‘মনোয়ার হোসেন আওয়ামী লীগের দোসর। তিনি পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় থেকে সার বেশি দামে বিক্রি করে আসছিলেন। প্রতিবাদ করেও লাভ হয়নি। দুই দিন আগে স্থানীয় এক সাংবাদিক তাঁর দোকানে যান। সেখানে বেশি দামে সার বিক্রির প্রতিবাদ করি এবং ওই সাংবাদিক আমাদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। এতে ডিলার মনোয়ার হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে লোক ভাড়া করে আমাদের ওপর হামলা চালান।’
বদরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রুহুল আমিন বলেন, ওই ঘটনায় গতকাল রাতে বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন সাজেদুর রহমান। রাতেই মামলার প্রধান আসামি মনোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র মন য় র হ স ন বদরগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা
হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।
চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।
শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।
আরো পড়ুন:
বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি
ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা
সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।
শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’
শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’
চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’
ঢাকা/রাজীব