কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (কুমেক) সার্জারি বিভাগের পঞ্চম তলার বারান্দার বেড থেকে নিচে পড়ে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ওই রোগীর নাম গনি মিয়া (৫০)। তিনি জেলার আদর্শ সদর উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা। 

শুক্রবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

গনি মিয়ার স্ত্রী কোহিনুর বেগম জানান, হাতের সমস্যায় এক সপ্তাহ আগে স্বামী নিয়ে হাসপাতালে  আসি। অপারেশন করার পর অনেক চেষ্টা করার পরও বেড না পেয়ে সার্জারি বিভাগের কর্মচারি (জমাদার) বিল্লাল হোসেনকে ৫০০ টাকার দিলে বারান্দায় দেয়ালের পাশে সিট দেওয়া হয়। যেখানে কোনো সুরক্ষা ব্যবস্থা ছিল না। রাতে পাশে হেলান দিতে গিয়ে নিচে পড়ে তিনি (স্বামী) মারা যান। নিচতলায় থাকা হাসপাতালের কর্মচারিরা বলেন, রাতে হঠাৎ তারা একটি বিকট শব্দ শোনার পর  সেখানে ওই ব্যক্তিকে রক্তাক্ত অবস্থায় যায়। জরুরি বিভাগে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

এদিকে এ ঘটনার পর হাসপাতালের লোকজন রোগীর বেডটি সরিয়ে নেন। বিল্লাল হোসেনও সটকে পড়েন।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনা শুনেছি, তবে কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। 

হাসপাতালের উপ-পরিচালক পরিচালক ডা.

মোহাম্মদ শাহজাহান আজ শনিবার সমকালকে বলেন,  প্রতিদিন ৫০০ শয্যার এ হাসপাতালে দ্বিগুণ রোগী ভর্তি থাকেন। এতে বারান্দা ও ফ্লোরেও এক্সটা বেড দিতে হয়। কিন্ত বারান্দায় রোগীর স্বজনদের সামনে তার নিচে পড়ে গিয়ে মারা যাওয়ার বিষয়টি দু:খজনক। এ বিষয়ে ভবিষ্যতে আমরা আরও সতর্ক থাকবো এবং বারান্দা সুরক্ষিত করা হবে। জমাদার বিল্লাল কর্তৃক রোগীর স্বজনদের নিকট থেকে টাকা নিয়ে বেড দেওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা

‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’

এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন। 

এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী  বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’

প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা