হয়তো সেভাবে ট্রফি জেতেনি বলে তাদের নাম ‘ফেভারিট’-এর তালিকায় সেভাবে আসে না। নকআউট পর্বের স্নায়ুর দুর্বলতার কারণেও লোকে তাদের সেভাবে হিসাবে রাখে না। তবে রেকর্ড বলছে, ২০১১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আইসিসির যে ১৪টি ইভেন্ট হয়েছে, তার আটটিতেই নকআউট পর্বে খেলেছে নিউজিল্যান্ড; ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার পর আইসিসি টুর্নামেন্টে তারাই বেশি প্রভাব বিস্তার করেছে। আজ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে দুবাইয়ের মরুতে তাই সেয়ানে সেয়ানেই টক্কর দিতে যাচ্ছে।
ধারাবাহিকতা আর বর্তমান পারফরম্যান্সে দু’দলই বুক বরাবর। এটা ঠিক, ভারত দুবাইয়ের এক ভেন্যুতে খেলার বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে। এটাও ঠিক, গত দেড় দশকে বিভিন্ন দেশের ভিন্ন ভেন্যুতে গিয়ে তারাই দাপট দেখিয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, সাদা বলের ফরম্যাটে ২০১১ সালের পর থেকে আইসিসির টুর্নামেন্টগুলোতে ভারত মোট ৮৬টি ম্যাচ খেলেছে, যার মধ্যে জয় পেয়েছে তারা ৭০ টিতে। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়া ৭৭ ম্যাচের মধ্যে জিতেছে ৪৯টিতে। তালিকার তৃতীয়তে থাকা নিউজিল্যান্ড ৭৭ ম্যাচের মধ্যে জিতেছে ৪৫টিতে; যা প্রমাণ করে এই ফরম্যাটে কতটা ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে এই তিনটি দল। এর বাইরে দক্ষিণ আফ্রিকাও ৭৭ ম্যাচ খেলে জিতেছে ৪৫টিতে। আর ইংল্যান্ড ৮০ ম্যাচের মধ্যে জয় পেয়েছে ৪১টিতে।
নকআউটের নিয়মিত দল ভারত-নিউজিল্যান্ড: গত ১৪ বছরের ১৪ আসরের ১২টিতে নকআউট পর্বে উত্তীর্ণ হয়েছে ভারত। চারবার সেমিফাইনালে গিয়ে হারতে হয়েছে কোহলিদের। রানার্সআপ হয়েছে তারা পাঁচবার আর চ্যাম্পিয়নের ভাগ্য খুলেছে তিনবার। নিউজিল্যান্ডের রেকর্ডও এখানে একেবারে মন্দ না। নকআউট পর্বের আটবারের মধ্যে চারবার তারা সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছে। তিনবার রানার্সআপ হয়েছে আর একবার ভারতকে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে।
এই রেকর্ডে ভারতের পরই রয়েছে নিউজিল্যান্ড। ধারাবাহিক সাফল্যের এই তালিকায় তৃতীয়তে রয়েছে ইংল্যান্ড। তারা ৭ বার নকআউট পর্বে গিয়ে দু’বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। দু’বার রানার্সআপ আর তিনবার সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছে।
মজার ব্যাপার হলো, গত ১৪টি আইসিসি ইভেন্টে মাত্র ৬ বার নকআউট পর্বে উঠেছে অস্ট্রেলিয়া। যার মধ্যে চারটিতেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তারা। ফাইনালে গিয়ে কখনোই হারেনি অসিরা। সেমিফাইনাল থেকে তাদের বিদায় নিতে হয়েছে মাত্র দু’বার। অস্ট্রেলিয়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকা ও পাকিস্তান পাঁচবার করে নকআউট পর্বে উঠেছে। যার মধ্যে পাকিস্তান একবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, একবার রানার্সআপ হয়েছে আর তিনবার সেমি থেকে বিদায় নিয়েছে। আর দক্ষিণ আফ্রিকা একবারও চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। বরং তারা সেমির থেকে বিদায় নিয়েছে চারবার। এই তালিকায় তাদের নিয়েই করা হয়েছে, যারা কিনা একবার করে ফাইনালে ওঠার সুযোগ পেয়েছে।
গ্রুপ পর্বের ধারাবাহিকতা: ভারত অপরাজিত থেকে ২০১৩ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি এবং ২০২৪ টি২০ বিশ্বকাপ জিতেছে। ২০১১ থেকে সাদা বলের ফরম্যাটে আইসিসির ইভেন্টে মোট ৩৮টি গ্রুপ পর্বের ম্যাচ খেলেছে ভারত। যার মধ্যে তারা হেরেছে মাত্র ৩টিতে। অন্যদিকে নিউজিল্যান্ডও ২০১৫ বিশ্বকাপ এবং ২০১৬ টি২০ বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের কোনো ম্যাচ হারেনি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ম ফ ইন ল র ন র সআপ পর ব র একব র আইস স
এছাড়াও পড়ুন:
সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ৭ দিনের রিমান্ডে
দুর্নীতি ও রায় জালিয়াতির অভিযোগের মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে পুলিশ তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. ছানাউল্ল্যাহর আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
২০২৪ সালের ২৭ অগাস্ট শাহবাগ থানায় দুর্নীতি ও রায় জালিয়াতির অভিযোগের মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন।
গত ২৪ জুলাই সকালে ঢাকার ধানমন্ডির বাসা থেকে সাবেক এ প্রধান বিচারপতিকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।
সম্প্রতি তার গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। সংগঠনটি দাবি করেছে, ‘বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের মূল কারিগর’ তিনি।
খায়রুল হক ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন এবং ২০১১ সালের ১৭ মে বয়স অনুযায়ী অবসর গ্রহণ করেন। বিচারপতি হিসেবে তার সবচেয়ে আলোচিত এবং বিতর্কিত রায় ছিল সংবিধানের ১৩তম সংশোধনী, অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে। ওই রায়ের পর দেশে আর কোনো নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয়নি।
বিচারপতি খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ ২০১১ সালে এই রায় ঘোষণা করে। এতে বলা হয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অসাংবিধানিক এবং গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার পরিপন্থি। এরপর থেকে নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরাই সরকারে থেকে নির্বাচন পরিচালনা করছে। বিরোধী দলগুলোর দাবি, এই রায়ের মধ্য দিয়েই দেশে একতরফা নির্বাচন ও গণতন্ত্রহীনতার ভিত্তি তৈরি হয়।
২০১৩ সালের ২৩ জুলাই তাকে তিন বছরের জন্য আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ওই মেয়াদ শেষে কয়েক দফা কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে তাকে পুনর্নিয়োগ দেওয়া হয়। সেখানে তিনি আইন সংস্কার সংক্রান্ত নানা প্রস্তাব ও গবেষণায় যুক্ত ছিলেন। বিভিন্ন সময় আইনি সেমিনার, বক্তৃতা এবং পরামর্শমূলক কাজে অংশ নিয়েছেন তিনি।
আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবী ও মহলগুলো তাকে ‘সংবিধান রক্ষার সাহসী রূপকার’ হিসেবে অভিহিত করলেও, বিএনপি ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলোর মতে তিনি ‘বিচার বিভাগের রাজনৈতিকীকরণের পথপ্রদর্শক’।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম বলেছে, ‘তত্ত্বাবধায়ক বাতিল করে তিনি দেশের নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংস করেছেন।’
ঢাকা/কেএন/ইভা