পাবনায় ১২০০ টাকার ঘি ১৮০০ টাকায় বিক্রি করায় লাখ টাকা জরিমানা
Published: 9th, March 2025 GMT
পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরের ঘি ১ হাজার ১৮০০ টাকায় বিক্রি করায় একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। রোববার দুপুরে উপজেলা সদরের চৌবাড়ীয়ার দক্ষিণপাড়ায় অবস্থিত ‘ঘি বাড়ি’ নামের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে এ জরিমানা করা হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসমীয়া আক্তার। অভিযানের সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলার স্বাস্থ্য পরিদর্শক নুরুল ইসলাম ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
ভ্রাম্যমাণ আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ভাঙ্গুড়া উপজেলার ১২২টি গ্রামে প্রায় দেড় লাখ লোকের বসবাস। তাঁদের অর্ধেকের বেশি গরুর খামার ও দুগ্ধ উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত। এ উপজেলায় প্রায় পাঁচ হাজার দুগ্ধ খামার আছে। এসব খামার থেকে প্রতিদিন লক্ষাধিক লিটার দুধ উৎপাদিত হয়। উৎপাদিত দুধের প্রায় ৭৫ শতাংশ সরকারি–বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সংগ্রহ করে। বাকি ২৫ শতাংশ দুধে স্থানীয়ভাবে ঘি ও মিষ্টান্ন তৈরি করা হয়। উপজেলার উৎপাদিত ঘি ও মিষ্টি পণ্য দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হয়। ফলে এ এলাকার ঘি ও মিষ্টান্নের বেশ সুনাম ও চাহিদা আছে। আর এ সুযোগেই একটি অসাধু চক্র ভেজাল ঘি তৈরি ও বেশি দামে ঘি বিক্রি করে অতিরিক্ত মুনাফা করছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে উপজেলা সদরের ‘ঘি বাড়ি’ নামের একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরের ঘি ১ হাজার ৮০০ টাকা দরে বিক্রির প্রমাণ পাওয়া গেছে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির মালিক সাইফুল ইসলামকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ঘিয়ের মান যাচাই–বাছাই করতে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে।
অভিযান দলে থাকা উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক নুরুল ইসলাম বলেন, ঘি প্যাকেটজাত করার সময় মূল্য বেশি লেখায় ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা আদায় করেছেন। সেই সঙ্গে ঘিয়ের নমুনা সংগ্রহ করে গুণগত মান পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণ করতে এ অভিযান চলমান থাকবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাগরে ইলিশ মিলছে কম, চড়া দাম আড়তে
নিষেধাজ্ঞা শেষে দীর্ঘ বিরতির পর আবারও সরগরম হয়ে উঠেছে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম বৃহত্তম সামুদ্রিক মৎস্য আড়ত কেবি বাজার। সাগরে প্রায় দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় আবারও সরগরম হয়ে উঠেছে বাগেরহাটের ভৈরবতীরের এ মাছ বাজার।
সাগরে মাছ আহরণ শেষে শুক্রবার ভোরে কেবি বাজার ঘাটে দুটি ট্রলার ভেড়ে। তবে মাছের পরিমাণ চাহিদার তুলনায় অনেক কম। ব্যবসায়ীরা জানান, ৫৮ দিনের অবরোধ শেষে সাগর থেকে এই প্রথম দুটি ট্রলার এসেছে। তবে এসব ট্রলারে মাছের পরিমান খুবই কম। ফলে দাম অনেক বেশি।
জেলে রুহুল জানান, তাদের ট্রলার সাগরে যাওয়ার পরে মাত্র কয়েকবার জাল ফেলতে পেরেছেন। এতে অল্প কিছু ইলিশসহ নানা ধরনের মাছ পেয়েছেন। পরে ট্রলারে সমস্যা হওয়ায় চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন।
শুক্রবার বাজারে ২০০ থেকে ৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, আধা কেজি থেকে ৮০০ গ্রামের ইলিশ ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা কেজি এবং এক কেজি ওজনের ইলিশ ২ হাজার থেকে ২৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
এ ছাড়া রূপচাঁদা আকার ভেদে প্রতিকেজি ৫০০ থেকে ১২০০ টাকা, কঙ্কন, তুলারডাটি, ঢেলা চ্যালা, ভেটকি, লইট্টা, ছুরি, জাবা, বিড়াল জাবাসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ একশ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সাগর থেকে বেশি করে ট্রলারের আগমন ও মাছের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে দাম কমবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
মোরেলগঞ্জ থেকে মাছ কিনতে আসা তৈয়ব মুন্সি বলেন, সাগরে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা চলাকালে তিনি বাজারে আসেননি। অনেক দিন পরে আজই বাজারে এসেছেন, তবে দাম অনেক বেশি। তারপরও কিছু মাছ কিনেছেন। বেশি দামে মাছ কিনে এলাকায় বিক্রি করে লোকসানের শঙ্কা জানান তিনি।
কেবি বাজার আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক অনুপ কুমার বিশ্বাস বলেন, নিষেধাজ্ঞার পর শুক্রবার প্রথমবারে সাগর থেকে ট্রলার এসেছে। জেলেরা তেমন মাছ পায়নি। তবে বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক পাইকার আসছে। যার কারণে দাম কিছুটা বেশি। সাগরে বেশি পরিমাণ মাছ ধরা পড়লে দাম কিছুটা কমবে বলে জানান তিনি।
সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এবার ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত সাগরে মাছ আহরণ নিষিদ্ধ ছিল।