রাসুল (সা.) হুনাইন যুদ্ধ থেকে ফিরছিলেন। দেখলেন এক কিশোর বিলালের (রা.) আজান ব্যঙ্গ করছে। কিশোরটির নাম আবু মাহজুরা। নামাজ শেষে নবীজি (সা.) কিশোরদলকে ডাকলেন। জিজ্ঞেস করলেন, কে আজান দিয়েছ? আবার আজান দাও। সবাই ভয়ে তটস্থ। ওরা একে একে আজান দিল। ভয়ে ভয়ে আবু মাহজুরাও আজান দিলেন।
রাসুল (সা.) তাকে সুন্দরভাবে আজান দেওয়া শেখালেন। ‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার; আশহাদু আল্লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ, আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ; আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ।’
আরও পড়ুনআজান ও ইকামতে যা বলা হয়১৫ ডিসেম্বর ২০২৪(অর্থ: আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন ইলাহ নেই; আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ আল্লাহর রসূল; আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসুল)
তারপর বললেন, আবার দীর্ঘস্বরে বলো। ‘আশহাদু আল্লাইলা-হা ইল্লাল্লাহ, আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ; আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ; হাইয়্যা আলাস্ সালাহ, হাইয়্যা আলাস্ সালাহ; হাইয়্যা ’আলাল ফালাহ, হাইয়্যা আলাল ফালাহ; আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ।’
(অর্থ: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই; আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসুল; আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মহাম্মাদ আল্লাহর রাসুল। সালাতের জন্য এসো, সালাতের জন্য এসো। কল্যাণের জন্য এসো, কল্যাণের জন্য এসো। আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান। আল্লাহ ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন ইলাহ নেই।)
আরও পড়ুনআজান এল কেমন করে ১০ নভেম্বর ২০২৪এর আগে তিনি কখনো কাউকে আজান দেওয়া শিখিয়েছেন বলে জানা যায় না। শেখানোর শেখানো হয়ে গেলে তাকে কিছু অর্থকড়ি দিলেন। আবু মাহজুরার কণ্ঠস্বর ছিল সুমধুর। তিনি নিজেই বর্ণনা করেন, ‘সর্বশেষে ছিলাম আমি। আমি আজান দেওয়ার পর বললেন, আসো, তারপর আমাকে তাঁর সামনে বসালেন এবং আমার কপালে হাত বুলিয়ে তিনবার বরকতের দোয়া করলেন।’
আবু মাহজুরা মুসলমান হলেন। রাসুল (সা.
তথ্যসূত্র: সুনানে আন নাসাঈ: ৬৩২, ইমাম যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা: ৩/৭৮
আরও পড়ুনআজান শোনার পর দোয়া কবুল হয়২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আল ল হ ছ ড আজ ন দ ও ম হজ র আকব র
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ