লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করতে পারছে না চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। অর্থবছরের আট মাস পার হয়ে গেলেও মাত্র ৪০ শতাংশ গৃহকর পেয়েছে সংস্থাটি। এখন আয় বাড়াতে শক্ত অবস্থান নিয়েছে সিটি করপোরেশন। লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ কর কর্মকর্তা ও কর আদায়কারীদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের গাফিলতির কারণে প্রত্যাশিত রাজস্ব আয় হচ্ছে না বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

চলতি অর্থবছরে (২০২৪–২৫) গৃহকর খাতে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৩৯০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আদায় হয়েছে ১৫৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে চার মাসে সিটি করপোরেশনকে আয় করতে হবে ২৩৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। যা অসম্ভব বলছেন রাজস্ব বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মীরা।

সিটি করপোরেশনের সেবার পরিধি বাড়ছে। ব্যয়ও বেড়ে চলছে। তাই রাজস্ব আদায়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছেন। শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সিইও, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের রাজস্ব আয়ের দুটি বড় খাত হচ্ছে গৃহকর ও ট্রেড লাইসেন্স ফি। এসব খাত থেকে আসা অর্থ দিয়ে সংস্থাটির কর্মকর্তা–কর্মচারীদের বেতন–ভাতা পরিশোধ করা হয়। এ ছাড়া নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে নালা–নর্দমা পরিষ্কার, মশা মারার ওষুধ ক্রয় এবং উন্নয়নকাজসহ বিভিন্ন খাতে অর্থ ব্যয় করা হয়। রাজস্ব আদায় কমলে এসব কাজে এর প্রভাব পড়ে। বর্তমানে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা বেতন–ভাতা খাতে পরিশোধ করতে হয়। দেনা আছে ৪০০ কোটি টাকার বেশি।

মেয়র শাহাদাত হোসেন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে রাজস্ব আয় বাড়াতে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। দফায় দফায় রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এর পরও প্রত্যাশিত রাজস্ব আদায় করতে ব্যর্থ হওয়ায় আট রাজস্ব সার্কেলের সাত কর কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নোটিশ দেওয়া হয় কর আদায়কারীদেরও।

কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়েছে, আগের অর্থবছরের তুলনায় এবার কর আদায় কম হওয়ায় মেয়র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আপনি আপনার অধীন থাকা কর্মীদের কাজ ঠিকভাবে তদারকি করেননি। যা আপনার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের অবহেলার শামিল। এ কারণে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কেন নেওয়া হবে না তার কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে।

কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়া দুই কর কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, এটি ঠিক কারণ দর্শানোর নোটিশ নয়। এমনিতেই চিঠি দেওয়া হয়েছে। আর চলতি অর্থবছর শুরু হওয়ার পর থেকে কোটাবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। পরে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে সরকারের পতন হয়। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে গৃহকর আদায় কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তবে মার্চের শেষে আদায়ের হার বাড়বে।

সিটি করপোরেশনের কর কর্মকর্তারা দাবি করছেন, গৃহকর পরিশোধে বেসরকারি খাতের চেয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর আগ্রহ কম। দাবি অনুযায়ী, গৃহকর পরিশোধ না করার কারণে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হয়নি।

রাজস্ব বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে সিটি করপোরেশনের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ২২৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। কিন্তু ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পরিশোধ করেছে ৭৯ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। পরিশোধের হার ৩৫ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তি বা বেসরকারি খাতে আদায়ের হার ৪৭ শতাংশ। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছে পাওনা ১৬০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। পরিশোধ করা হয়েছে ৭৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।

এদিকে ট্রেড লাইসেন্স খাতে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। যদি সিটি করপোরেশনের রাজস্ব বিভাগ আদায় করেছে ২৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা।

সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সিটি করপোরেশনের সেবার পরিধি বাড়ছে। ব্যয়ও বেড়ে চলছে। তাই রাজস্ব আদায়ের ওপর জোর দিচ্ছেন তাঁরা। এ জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছেন। এর অংশ হিসেবে যাঁরা লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করতে ব্যর্থ হচ্ছেন তাঁদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আবার যাঁরা পূরণ করছেন তাঁদের ধন্যবাদ পত্র দেওয়া হচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর কর মকর ত র কর মকর ত অন য য় গ হকর য় করত সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ডের লভ্যাংশ ঘোষণা

পুঁজিবাজারে মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে তালিকাভুক্ত ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ডের ট্রাস্টি কমিটি ইউনিটহোল্ডারদের জন্য ৩.৩০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এর পুরোটাই নগদ লভ্যাংশ।

২০২৫ অর্থবছরের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য এ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে প্রতিটি ১০ টাকা মূল্যের শেয়ারের বিপরীতে ০.৩৩ টাকা নগদ লভ্যাংশ পাবেন শেয়ারহোল্ডারা।

বুধবার (৩০ জুলাই) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

আরো পড়ুন:

পুঁজিবাজারে বড়-মাঝারি বিনিয়োগকারী বেড়েছে: বিএসইসি

পুঁজিবাজারে টানা ৩ কার্যদিবস সূচকের পতন

এর আগে মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) অনুষ্ঠিত ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ডের ট্রাস্টি কমিটির বৈঠকে সর্বশেষ হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর লভ্যাংশ সংক্রান্ত এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

তথ্যমতে, ঘোষিত লভ্যাংশ প্রাপ্তির যোগ্যতা নির্ধারণে রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৪ আগস্ট। ওই তারিখে যেসব বিনিয়োগকারীর কাছে ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ডের ইউনিট থাকবে, তারা ঘোষিত লভ্যাংশ পাওয়ার জন্য যোগ্য হবেন।

২০২৫ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী মিউচ্যুয়াল ফান্ডটির ইউনিটপ্রতি মুনাফা (ইপিইউ) হয়েছে ০.৩৪ টাকা।

আর ২০২৫ সালের ৩০ জুন ফান্ডটির বাজার দরে ইউনিটপ্রতি সম্পদ মূল্য (এনএভিপিইউ) দাঁড়িয়েছে ৯.৬১ টাকা।

এই করপোরেট ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে এদিন কোম্পানিটির শেয়ারের লেনদেনে কোনো মূল্য সীমা থাকবে না।

ঢাকা/এনটি/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নীতি সুদহার অপরিবর্তিত, বেসরকারি খাতের জন্য সুখবর নেই
  • জুলাইয়ের ৩০ দিনে রেমিট্যান্স ২৩৬ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে
  • নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা, নীতি সুদহার অপরিবর্তিত
  • সবজির দামে স্বস্তি, মজুরি বৃদ্ধির হার এখনো কম
  • ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ডের লভ্যাংশ ঘোষণা