Samakal:
2025-07-31@07:20:23 GMT

বর্ণিল ঈদ পোশাক

Published: 11th, March 2025 GMT

বর্ণিল ঈদ পোশাক

ঈদের সকাল মানেই নতুন সুগন্ধি, প্রাণখোলা হাসি আর উৎসবের আনন্দ। প্রতিটি ঘরে এ উৎসবের মাঝে পোশাক হয়ে ওঠে এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এবারের ঈদেও বাংলাদেশের ফ্যাশন জগৎ সেজেছে এক নতুন সাজে। এখানে স্থানীয় শিল্পের মোটিফ, বিদেশি নকশার প্রভাব এবং পারিবারিক বন্ধনকে ফোকাস করে এসেছে একাধিক অনন্য কালেকশন। শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, পাঞ্জাবি ও কাফতান– প্রতিটি পোশাকে তুলে ধরা হয়েছে শিল্পের নান্দনিকতা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সৌন্দর্যপূর্ণ সম্মিলন। 
চলুন, এবার আমরা ডুব দিই এবারের ঈদের ফ্যাশনের ঝলমলে জগতে, যেখানে প্রতিটি সেলাইয়ে বোনা হয়েছে ঈদ উৎসবের স্বপ্ন! 
রঙ বাংলাদেশ এবারের ঈদ উপলক্ষে বিশেষ থিমে সাজানো নতুন কালেকশন নিয়ে এসেছে। এবারের থিমগুলো হলো– ‘আল হামরা মসজিদ’, ‘টি’ নালক উইভিং এবং ‘ডিলাইট ইন ডিজাইন-ইন্ডিয়ান সিলভার ফর দ্য রাজ’। প্রতিটি থিমে ঐতিহ্য, প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং শিল্পকর্মের অনুপ্রেরণা পাওয়া যায়, যা ঈদ পোশাকের কালেকশনকে অনন্য করে তুলেছে। আল হামরা মসজিদ থিমটি ইসলামী স্থাপত্যের এক অসাধারণ নিদর্শন, যা স্পেনের কর্ডোভার ঐতিহাসিক মসজিদের নকশা থেকে নেওয়া। অন্যদিকে টি’ নালক উইভিং ফিলিপাইনের ঐতিহ্যবাহী বুননশিল্প থেকে অনুপ্রাণিত, যেখানে প্রাকৃতিক সুতোর মাধ্যমে জটিল নকশা তৈরি হয়। ‘ডিলাইট ইন ডিজাইন-ইন্ডিয়ান সিলভার ফর দ্য রাজ’ থিমটি ভারতীয় এবং ব্রিটিশ নকশার সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে। 
এবারের কালেকশনে বড়দের পাশাপাশি ছোটদের জন্যও রয়েছে আকর্ষণীয় পোশাক। পরিবারের সবাই একসঙ্গে একই ডিজাইনে পোশাক পরতে পারবে, যেমন মা-মেয়ের রঙিন সালোয়ার কামিজ বা বাবা-ছেলের টুইন পাঞ্জাবি। তরুণ প্রজন্মের জন্য ‘ওয়েস্ট রঙ’, বয়োজ্যেষ্ঠদের জন্য ‘আপন ভুবন শ্রদ্ধাঞ্জলি’, এবং শিশুদের জন্য ‘রঙ জুনিয়র’ সাবব্র্যান্ডের পোশাকও রয়েছে। 
লা রিভের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুন্নুজান নার্গিস জানান, এ বছর তাদের ঈদুল ফিতর কালেকশনের প্রতিপাদ্য মুভমেন্ট; যার অর্থ গতিময়তা বা এগিয়ে চলা। আন্তর্জাতিক ফ্যাশন অঙ্গনে এখন জনপ্রিয় কিছু থিমের মধ্যে ‘মুভমেন্ট’ অন্যতম। গতিময়তা যেমন জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যায়, তেমনি পোশাকের নকশাতেও এই ধারা ফুটিয়ে তুলেছেন নকশাকারেরা। যে কোনো মুভমেন্টের ভেতরের প্রেরণা বস্তুত সংযোগের আকাঙ্ক্ষাকেই প্রতীয়মান করে; যার সঙ্গে মিশে থাকে আত্মিক, সামাজিক বা শারীরিক সংযোগ। এ ভাবনাকেই তুলে ধরা হয়েছে কাপড়ের ক্যানভাসে। যে কাপড়কে পোশাকে রূপান্তর করে সাজানো হয়েছে এবারের ঈদ সংগ্রহ।
এবারও ঈদে উৎসবের পাশাপাশি গরমের কথা বিবেচনায় রেখে পোশাক এনেছে পরিচিত ব্র্যান্ডগুলো। পোশাকের কাপড়ে রাখা হয়েছে কটন, ডবি, জ্যাকার্ড, বিভিন্ন ধরনের জর্জেট, প্রিন্টেড কটন, প্রিন্টেড জর্জেট, নিট, ডেনিম, সাটিন, টিস্যু ইত্যাদি।  
কে ক্র্যাফট-এর স্বত্বাধিকারী খালিদ মাহমুদ খান জানান, এবারের ঈদ কালেকশনে ব্যবহার করা হয়েছে সুতি, লিনেন, জর্জেট, সিল্ক, হ্যান্ডলুম কটন এবং ডিজাইন্ড কটনের মতো আরামদায়ক ফেব্রিক, যা গরমে আরাম দেয়। এ ছাড়া সিল্ক, সাটিন, অরগাঞ্জা এবং হাফ সিল্ক ব্যবহার করা হয়েছে, যাতে পোশাকগুলোর আরাম এবং আয়েশিতা বজায় থাকে। পোশাকে বিভিন্ন মোটিফ ব্যবহার করে সৌন্দর্য বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কাঁথা  স্টিচ, ফ্লোরাল, মুঘল, জামদানি, ইক্কত, ট্রাইবাল প্রিন্ট। 
তিনি আরও জানান, পোশাকের রঙের ক্ষেত্রে বেছে নেওয়া হয়েছে মেরুন, পার্পল, রেড, নেভি, স্যালমন পিঙ্ক, গোল্ডেন ব্রাউনসহ নানা ধরনের  রং। 
‘সারা লাইফস্টাইল’-এর পার্সিয়ান রূপকথার প্রভাব এবারের ঈদে আরেক চমক। এই থিমে পারস্যের মোটিফ এবং রঙের মিশেলে নতুন ধরনের এক ডিজাইন আনা হয়েছে। এই থিমে পুরুষদের জন্য পাঞ্জাবি, কটি, শার্ট, প্যান্টসহ নানা ধরনের পোশাক রয়েছে, আবার মেয়েদের জন্য এথনিক থ্রি পিস, আনারকলি সেট, সিঙ্গেল পিস, কাফতান এবং বাচ্চাদের জন্য ফ্রক, কামিজ, পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্টের সংগ্রহও রয়েছে। বিশেষ করে মসলিনের ডিজাইনও এ সংগ্রহে নতুন সংযোজন হিসেবে এসেছে, যা ঈদের জন্য একদম উপযুক্ত। পার্সিয়ান থিমে রঙের মধ্যে মেরুন, মেজেন্টা, ব্লু, পিঙ্ক, পার্পল, টিল, মাস্টার্ড ইত্যাদি রং ঈদের পোশাকে নতুন চমক আনবে। 
এ ছাড়াও পার্সিয়ান মোটিফ এবং ট্র্যাডিশনাল প্যাটার্নের সুন্দর মিশেলে এবারের সংগ্রহে বাবা-মা, মা-মেয়ে এবং বাবা-ছেলের জন্য ম্যাচিং পোশাক দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসে। বলা বাহুল্য, এসব কালেকশন এবার ঈদের আনন্দকে আরও উপভোগ্য করে তুলবে।  
সারা লাইফস্টাইলের ডিজাইনার শামীম রহমান এবারের ঈদ সংগ্রহের বিশেষত্ব তুলে ধরে বলেন, “আমরা এবারের সংগ্রহে পার্সিয়ান রূপকথার মোটিফ এবং রঙের সঙ্গে আমাদের ঐতিহ্যবাহী মোটিফ, রং এবং কারুকার্যের মিশেল করেছি। পোশাকের মধ্যে মসলিনের ব্যবহার এবং ছেলেদের ডাবল ফ্রেঞ্চ কাফ স্লিভ পাঞ্জাবি নতুনত্ব নিয়ে এসেছি। এ ছাড়া বাবা-ছেলে, মা-মেয়ে মিনিমি সংগ্রহের মাধ্যমে পুরো পরিবারের জন্য একত্রে পোশাক সংগ্রহ করতে সুবিধা হচ্ছে। আমাদের এই নতুন সংগ্রহ, যা কটন, ব্লেনডেড, আর্টিফিশিয়াল সিল্ক, মসলিন, ক্রেপ সিল্কের মতো বিভিন্ন ফেব্রিকে তৈরি, ঈদের আনন্দকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।” 
এবারের ঈদ পোশাকের সংগ্রহে ফেব্রিক এবং রঙের একটি সুন্দর মিশেল দেখা যাচ্ছে, যা এই গরমে শরীরের আরাম নিশ্চিত করবে। বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসে সুতি, ব্লেনডেড, আর্টিফিশিয়াল সিল্ক, মসলিন সিল্ক এবং ক্রেপ সিল্ক ব্যবহার করা হয়েছে, যা পোশাকগুলোকে আরামদায়ক এবং ট্রেন্ডি করে তোলে। দামও সব স্তরের ক্রেতার জন্য সাশ্রয়ী রাখা হয়েছে, যেমন মসলিন থ্রি-পিসের দাম ৩,৫০০ থেকে ৮,০০০ টাকা এবং পুরুষদের পাঞ্জাবির দাম ১,২০০ থেকে ৪,৫০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। v

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঈদ প শ ক ব যবহ র কর দ র জন য ক ল কশন উৎসব র ড জ ইন স ন দর মসল ন ধরন র

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬০ দিন পর শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা, উৎসবের আমেজ

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) দীর্ঘ ১৬০ দিন পর একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এসেছেন। সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে বইছে উৎসবের আমেজ।

সকালে কুয়েট ক্যাম্পাসে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস। ছাতা মাথায় দল বেঁধে ছুটছেন ক্লাসরুমের দিকে। কখনো এক ছাতার নিচে দু-তিনজন। কারও সঙ্গে অভিভাবকও এসেছেন। সকাল নয়টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি শিক্ষাবর্ষের প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী ক্লাসে যোগ দেন। নতুন উপাচার্য অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে শ্রেণি কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ করেন।

ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) বিভাগের ২২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী দীপ্ত বলেন, ‘আমাদের প্রায় এক সেমিস্টার নষ্ট হয়ে গেছে। এই সময়টা খুব অস্বস্তিতে কেটেছে। ক্ষতি যা হওয়ার হয়েছে, তবে এখন আবার ক্লাস শুরু হওয়াটা ইতিবাচক দিক। আমরা আশাবাদী।’ একই ব্যাচের শিক্ষার্থী আম্মান বলেন, ‘অনেক দিন জীবনটা থেমে ছিল। আজকের দিনটা বিশেষ মনে হচ্ছে। ঠিক যেন স্কুলজীবনের প্রথম দিনের মতো। সব হতাশা কাটিয়ে আমরা অনেকটা নতুন করে শুরু করছি।’

হুমায়ুন কবির নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘আমার ছেলে বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়ে। পাঁচ মাস ধরে ক্লাস বন্ধ থাকায় ও মানসিকভাবে খুব চাপের মধ্যে ছিল। একসময় অসুস্থও হয়ে পড়ে। কুয়েটে এমন পরিস্থিতি আগে দেখিনি। কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করলে হয়তো আগেই খুলে যেত। তারপরও এখন অন্তত খুলেছে, এটা বড় স্বস্তি।’

কুয়েটের ছাত্র পরিচালক আবদুল্লাহ ইলিয়াস আক্তার বলেন, আজ থেকে কুয়েটে ক্লাস শুরু হয়েছে। তবে এখনো সব শিক্ষার্থী আসেননি। যাঁদের কেবল ক্লাস রয়েছে, তাঁরা অংশ নিচ্ছেন। যাঁদের পরীক্ষা ছিল, তাঁরা প্রস্তুতির জন্য কিছুটা সময় চেয়েছে। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন হবে ১৪ আগস্ট, ক্লাস শুরু ১৭ আগস্ট।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। ওই রাতেই তৎকালীন উপাচার্য ও কয়েকজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠে। এরপর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২৬ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ ও সহ-উপাচার্য অধ্যাপক শরিফুল আলমকে অব্যাহতি দেয়। ১ মে চুয়েটের অধ্যাপক হজরত আলীকে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনার বিচার দাবিতে ৪ মে থেকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দেয় শিক্ষক সমিতি। এরপর কোনো শিক্ষকই ক্লাসে ফেরেননি। শিক্ষক সমিতির বিরোধিতার মুখে হজরত আলী দায়িত্ব পালন করতে না পেরে ২২ মে পদত্যাগ করেন।

এরপর ১০ জুন নতুন উপাচার্য নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় সরকার। সেই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার কুয়েটের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী। পরদিন শুক্রবার তিনি খুলনায় এসে দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় আন্দোলন কর্মসূচি তিন সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে গতকাল সোমবার ক্লাস শুরুর নোটিশ জারি করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১৬ কোটি টাকায় সারা দেশে ফুটবলের তিন টুর্নামেন্ট
  • দুদিনের সফরে কলকাতায় ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু
  • ভৌতিক গল্প নিয়ে কানাডায় নুহাশ
  • তাহলে তো স্পন্সর নিয়ে প্রোগ্রাম করলেই চাঁদাবাজি: সালাউদ্দিন
  • সিডনিতে ড্র অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের কেউ না থাকায় হতাশ প্রবাসীরা
  • ‘মুক্তির উৎসব’ করতে সহযোগিতা চেয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সাবেক সমন্বয়কের আবেদন
  • এবার পরিবার নিয়ে ঘরে বসেই ‘উৎসব’
  • খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬০ দিন পর শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা, উৎসবের আমেজ