Samakal:
2025-06-16@00:48:04 GMT

বর্ণিল ঈদ পোশাক

Published: 11th, March 2025 GMT

বর্ণিল ঈদ পোশাক

ঈদের সকাল মানেই নতুন সুগন্ধি, প্রাণখোলা হাসি আর উৎসবের আনন্দ। প্রতিটি ঘরে এ উৎসবের মাঝে পোশাক হয়ে ওঠে এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এবারের ঈদেও বাংলাদেশের ফ্যাশন জগৎ সেজেছে এক নতুন সাজে। এখানে স্থানীয় শিল্পের মোটিফ, বিদেশি নকশার প্রভাব এবং পারিবারিক বন্ধনকে ফোকাস করে এসেছে একাধিক অনন্য কালেকশন। শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, পাঞ্জাবি ও কাফতান– প্রতিটি পোশাকে তুলে ধরা হয়েছে শিল্পের নান্দনিকতা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সৌন্দর্যপূর্ণ সম্মিলন। 
চলুন, এবার আমরা ডুব দিই এবারের ঈদের ফ্যাশনের ঝলমলে জগতে, যেখানে প্রতিটি সেলাইয়ে বোনা হয়েছে ঈদ উৎসবের স্বপ্ন! 
রঙ বাংলাদেশ এবারের ঈদ উপলক্ষে বিশেষ থিমে সাজানো নতুন কালেকশন নিয়ে এসেছে। এবারের থিমগুলো হলো– ‘আল হামরা মসজিদ’, ‘টি’ নালক উইভিং এবং ‘ডিলাইট ইন ডিজাইন-ইন্ডিয়ান সিলভার ফর দ্য রাজ’। প্রতিটি থিমে ঐতিহ্য, প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং শিল্পকর্মের অনুপ্রেরণা পাওয়া যায়, যা ঈদ পোশাকের কালেকশনকে অনন্য করে তুলেছে। আল হামরা মসজিদ থিমটি ইসলামী স্থাপত্যের এক অসাধারণ নিদর্শন, যা স্পেনের কর্ডোভার ঐতিহাসিক মসজিদের নকশা থেকে নেওয়া। অন্যদিকে টি’ নালক উইভিং ফিলিপাইনের ঐতিহ্যবাহী বুননশিল্প থেকে অনুপ্রাণিত, যেখানে প্রাকৃতিক সুতোর মাধ্যমে জটিল নকশা তৈরি হয়। ‘ডিলাইট ইন ডিজাইন-ইন্ডিয়ান সিলভার ফর দ্য রাজ’ থিমটি ভারতীয় এবং ব্রিটিশ নকশার সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে। 
এবারের কালেকশনে বড়দের পাশাপাশি ছোটদের জন্যও রয়েছে আকর্ষণীয় পোশাক। পরিবারের সবাই একসঙ্গে একই ডিজাইনে পোশাক পরতে পারবে, যেমন মা-মেয়ের রঙিন সালোয়ার কামিজ বা বাবা-ছেলের টুইন পাঞ্জাবি। তরুণ প্রজন্মের জন্য ‘ওয়েস্ট রঙ’, বয়োজ্যেষ্ঠদের জন্য ‘আপন ভুবন শ্রদ্ধাঞ্জলি’, এবং শিশুদের জন্য ‘রঙ জুনিয়র’ সাবব্র্যান্ডের পোশাকও রয়েছে। 
লা রিভের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুন্নুজান নার্গিস জানান, এ বছর তাদের ঈদুল ফিতর কালেকশনের প্রতিপাদ্য মুভমেন্ট; যার অর্থ গতিময়তা বা এগিয়ে চলা। আন্তর্জাতিক ফ্যাশন অঙ্গনে এখন জনপ্রিয় কিছু থিমের মধ্যে ‘মুভমেন্ট’ অন্যতম। গতিময়তা যেমন জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যায়, তেমনি পোশাকের নকশাতেও এই ধারা ফুটিয়ে তুলেছেন নকশাকারেরা। যে কোনো মুভমেন্টের ভেতরের প্রেরণা বস্তুত সংযোগের আকাঙ্ক্ষাকেই প্রতীয়মান করে; যার সঙ্গে মিশে থাকে আত্মিক, সামাজিক বা শারীরিক সংযোগ। এ ভাবনাকেই তুলে ধরা হয়েছে কাপড়ের ক্যানভাসে। যে কাপড়কে পোশাকে রূপান্তর করে সাজানো হয়েছে এবারের ঈদ সংগ্রহ।
এবারও ঈদে উৎসবের পাশাপাশি গরমের কথা বিবেচনায় রেখে পোশাক এনেছে পরিচিত ব্র্যান্ডগুলো। পোশাকের কাপড়ে রাখা হয়েছে কটন, ডবি, জ্যাকার্ড, বিভিন্ন ধরনের জর্জেট, প্রিন্টেড কটন, প্রিন্টেড জর্জেট, নিট, ডেনিম, সাটিন, টিস্যু ইত্যাদি।  
কে ক্র্যাফট-এর স্বত্বাধিকারী খালিদ মাহমুদ খান জানান, এবারের ঈদ কালেকশনে ব্যবহার করা হয়েছে সুতি, লিনেন, জর্জেট, সিল্ক, হ্যান্ডলুম কটন এবং ডিজাইন্ড কটনের মতো আরামদায়ক ফেব্রিক, যা গরমে আরাম দেয়। এ ছাড়া সিল্ক, সাটিন, অরগাঞ্জা এবং হাফ সিল্ক ব্যবহার করা হয়েছে, যাতে পোশাকগুলোর আরাম এবং আয়েশিতা বজায় থাকে। পোশাকে বিভিন্ন মোটিফ ব্যবহার করে সৌন্দর্য বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কাঁথা  স্টিচ, ফ্লোরাল, মুঘল, জামদানি, ইক্কত, ট্রাইবাল প্রিন্ট। 
তিনি আরও জানান, পোশাকের রঙের ক্ষেত্রে বেছে নেওয়া হয়েছে মেরুন, পার্পল, রেড, নেভি, স্যালমন পিঙ্ক, গোল্ডেন ব্রাউনসহ নানা ধরনের  রং। 
‘সারা লাইফস্টাইল’-এর পার্সিয়ান রূপকথার প্রভাব এবারের ঈদে আরেক চমক। এই থিমে পারস্যের মোটিফ এবং রঙের মিশেলে নতুন ধরনের এক ডিজাইন আনা হয়েছে। এই থিমে পুরুষদের জন্য পাঞ্জাবি, কটি, শার্ট, প্যান্টসহ নানা ধরনের পোশাক রয়েছে, আবার মেয়েদের জন্য এথনিক থ্রি পিস, আনারকলি সেট, সিঙ্গেল পিস, কাফতান এবং বাচ্চাদের জন্য ফ্রক, কামিজ, পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্টের সংগ্রহও রয়েছে। বিশেষ করে মসলিনের ডিজাইনও এ সংগ্রহে নতুন সংযোজন হিসেবে এসেছে, যা ঈদের জন্য একদম উপযুক্ত। পার্সিয়ান থিমে রঙের মধ্যে মেরুন, মেজেন্টা, ব্লু, পিঙ্ক, পার্পল, টিল, মাস্টার্ড ইত্যাদি রং ঈদের পোশাকে নতুন চমক আনবে। 
এ ছাড়াও পার্সিয়ান মোটিফ এবং ট্র্যাডিশনাল প্যাটার্নের সুন্দর মিশেলে এবারের সংগ্রহে বাবা-মা, মা-মেয়ে এবং বাবা-ছেলের জন্য ম্যাচিং পোশাক দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসে। বলা বাহুল্য, এসব কালেকশন এবার ঈদের আনন্দকে আরও উপভোগ্য করে তুলবে।  
সারা লাইফস্টাইলের ডিজাইনার শামীম রহমান এবারের ঈদ সংগ্রহের বিশেষত্ব তুলে ধরে বলেন, “আমরা এবারের সংগ্রহে পার্সিয়ান রূপকথার মোটিফ এবং রঙের সঙ্গে আমাদের ঐতিহ্যবাহী মোটিফ, রং এবং কারুকার্যের মিশেল করেছি। পোশাকের মধ্যে মসলিনের ব্যবহার এবং ছেলেদের ডাবল ফ্রেঞ্চ কাফ স্লিভ পাঞ্জাবি নতুনত্ব নিয়ে এসেছি। এ ছাড়া বাবা-ছেলে, মা-মেয়ে মিনিমি সংগ্রহের মাধ্যমে পুরো পরিবারের জন্য একত্রে পোশাক সংগ্রহ করতে সুবিধা হচ্ছে। আমাদের এই নতুন সংগ্রহ, যা কটন, ব্লেনডেড, আর্টিফিশিয়াল সিল্ক, মসলিন, ক্রেপ সিল্কের মতো বিভিন্ন ফেব্রিকে তৈরি, ঈদের আনন্দকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।” 
এবারের ঈদ পোশাকের সংগ্রহে ফেব্রিক এবং রঙের একটি সুন্দর মিশেল দেখা যাচ্ছে, যা এই গরমে শরীরের আরাম নিশ্চিত করবে। বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসে সুতি, ব্লেনডেড, আর্টিফিশিয়াল সিল্ক, মসলিন সিল্ক এবং ক্রেপ সিল্ক ব্যবহার করা হয়েছে, যা পোশাকগুলোকে আরামদায়ক এবং ট্রেন্ডি করে তোলে। দামও সব স্তরের ক্রেতার জন্য সাশ্রয়ী রাখা হয়েছে, যেমন মসলিন থ্রি-পিসের দাম ৩,৫০০ থেকে ৮,০০০ টাকা এবং পুরুষদের পাঞ্জাবির দাম ১,২০০ থেকে ৪,৫০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। v

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঈদ প শ ক ব যবহ র কর দ র জন য ক ল কশন উৎসব র ড জ ইন স ন দর মসল ন ধরন র

এছাড়াও পড়ুন:

তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের মহব্বতপুর গ্রাম ঘেঁষে তুলশীগঙ্গা নদীর অদূরে সন্ন্যাসতলীর বটতলা। জায়গাটিতে প্রায় একশ বছর আগে থেকে বাংলা জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ শুক্রবার আয়োজন হয় ঘুড়ির মেলা। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। অন্তত ৫০ গ্রামের হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে শুক্রবার সন্ন্যাসতলী ঘুড়ি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

মেলার দিনক্ষণ মনে রেখে সময়মতো দোকানিদের পাশাপাশি দর্শনার্থীরা ভিড় জমান নিভৃত পল্লীতে। আগে মেলার দিন বৃষ্টি হওয়া যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটেছে। প্রচণ্ড গরম ও তাপপ্রবাহের মধ্যেই চলে এ আয়োজন। বৈরী পরিবেশের কারণে উৎসবের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দারা বলছেন, সন্ন্যাসতলীর এ ঘুড়ি উৎসব শুরুর দিন বিকেলে বটতলায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় সন্ন্যাস পূজা পালন করেন। তাদের এ পূজা-অর্চনা ঘিরেই মূলত এ মেলার উৎপত্তি। তবে শুরুর কথা কেউ বলতে পারেননি। প্রবীণরা শুধু জানেন, একশ বছরের বেশি সময় ধরে তারা এ মেলার আয়োজন দেখে আসছেন।

মেলার নিজস্ব জায়গা না থাকলেও এর ব্যাপ্তি প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেই এক দিনের এ মেলা ঘিরেই জেলার জামালগঞ্জ চারমাথা থেকে ঐতিহাসিক আছরাঙ্গাদীঘি পর্যন্ত রকমারি পণ্যের দোকান বসে। এখান থেকে সংসারের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন আসবাব থেকে শুরু করে ছোট মাছ ধরার বাঁশের তৈরি পণ্য খলসানি, টোপা, ডালা, চালুন কিনে নেন অনেকে।

সুতার তৈরি তৌরা জাল, গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি, বিভিন্ন ধরনের খেলনা, মিষ্টান্ন, প্রসাধনী, মাটির তৈজসপত্রসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি হয়। শিশুদের বিনোদনের জন্য ছিল নাগরদোলার ব্যবস্থাও। আর মেলার বড় আকর্ষণ ঘুড়ি ওড়ানো ও বিক্রি। পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এসেছিলেন ঘুড়ি বিক্রি করতে।

প্রচণ্ড গরমের পাশাপাশি তেমন হাওয়া-বাতাস না থাকায় এবার ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা সেভাবে জমে ওঠেনি। তবে ঘুড়ি বেচাকেনা ও শিশু-কিশোরদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। এ উপলক্ষে আসা হাজার হাজার দর্শনার্থীর নিরাপত্তার জন্য মেলায় সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহল ছিল।

আদমদীঘির শিববাটি গ্রামের ঘুড়ি ব্যবসায়ী সালাম হোসেনের ভাষ্য, সন্ন্যাসতলীর মেলা বড় হওয়ায় তিনি এসেছেন ঘুড়ি বিক্রির জন্য। মেলায় প্রত্যাশা অনুযায়ী ঘুড়ি বিক্রি করতে পেরে তিনি খুশি। জয়পুরহাটের পার্বতীপুর এলাকার ঘুড়ি ব্যবসায়ী মফিজ উদ্দিন ও মজনু সরদার বলেন, পূর্বপুরুষের আমল থেকে এ মেলার কথা শুনে আসছেন তারা।

মেলা উদযাপন ও পূজা কমিটির সদস্য মহব্বতপুর গ্রামের মন্টু মণ্ডল বলেন, মেলাটি হিন্দু সম্প্রদায়ের হলেও এটি আসলে সব ধর্মালম্বীর মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। 

মামুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মিলন হোসেনের ভাষ্য, এক দিনের আয়োজনে যে এত লোকের সমাগম হতে পারে, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। মেলায় যেন অনৈতিক কর্মকাণ্ড না হয়, সে ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ক্ষেতলাল থানার ওসি মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং মেলায় আসা দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রশাসন সতর্ক আছে। মেলায় অনৈতিক আচরণ লক্ষ্য করা গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বকুলতলায় বৃষ্টির সুর
  • কলকাতায় নতুন সিনেমার শুটিং শুরু করলেন জয়া
  • বর্ষা উৎসবে বন ও পরিবেশ ধ্বংসের প্রতিবাদ, পান্থকুঞ্জ পার্ক রক্ষাসহ কয়েকটি দাবি
  • নাচ-গান-আবৃত্তিতে চারুকলায় বর্ষাবরণ
  • মেঘ-রোদের লুকোচুরির সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 
  • মেঘ-রোদের লুকোচুরি সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 
  • আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ
  • কলিজা ঠান্ডা করে দেওয়া ছবি ‘উৎসব’
  • তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা
  • ভালোবাসার ফ্রেমে মেহজাবীন-রাজীব, পেছনে আইফেল টাওয়ার