সাহরি খাওয়া রমজানে একটি পৃথক পুণ্যের কাজ। সাহরি রোজাদারকে সবল রাখে এবং রোজার কষ্ট তার জন্য হালকা করে। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা দিনে শুয়ে রাতের নামাজের জন্য এবং সাহরি খেয়ে দিনে রোজা রাখার জন্য সাহায্য গ্রহণ কর।’ (ইবনে মাজাহ: ১২৩)

সাহরির বিধান সম্পর্কে সমাজে নানা ধরনের ভুল ধারণা ছড়িয়ে আছে, যার ফলে এই সহজ পুণ্যের কাজটি অনেক সময় আমাদের কাছে কঠিন মনে হয়। তেমন কয়েকটি জরুরি বিধান স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি।

 ১.

যদি সাহরি খেতে বিলম্ব হয়ে যায় এবং প্রবল ধারণা হয় যে, সুবহে সাদিকের পরও কিছুটা পানাহার হয়ে গেছে—তবে এ অবস্থায় সন্ধ্যা পর্যন্ত পানাহার ত্যাগ করা এবং পরে ওই রোজা কাজা করা ওয়াজিব। সন্দেহ হয়, এমন সময় সাহরি খাওয়া মাকরুহ। (ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি, ১/২০১)

আরও পড়ুনযে কারণে রোজা ভেঙে যায়২৩ মার্চ ২০২৪

২. ঘুমের কারণে সাহরি না খেতে পারলেও রোজা রাখতে হবে। সাহরি না-খাওয়ার অজুহাতে রোজা না রাখা পাপের কাজ। (বেহেশতি জেওর, ৩৫৩)

 ৩. সঠিক ক্যালেন্ডারে সুবহে সাদিকের যে সময় দেওয়া থাকে, তার দু-চার মিনিট আগে খানা বন্ধ করে দেওয়া উচিত। এক-দুই মিনিট আগে-পিছে হলে রোজা হয়ে যাবে, তবে ১০ মিনিট দেরি করে খাওয়া হলে রোজা হবে না। কিন্তু মনে রাখতে হবে, শুধু ক্যালেন্ডারের ওপর নির্ভর করা উচিত নয়, কেননা, অনেক সময় তাতে ভুলও হয়ে থাকে। তাই সতর্ক থাকা দরকার। (আপকে মাসায়েল, মুফতি তাকি উসমানি, ৩/২০১)

 ৪. যদি এমন হয় যে, অপবিত্র ব্যক্তির গোসল করে সাহরি খাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় নেই; তাহলে কর্তব্য হলো, অজু করে বা হাত-মুখ ধুয়ে আগে সাহরি খেয়ে নেওয়া। পরে গোসল করে ফজর আদায় করা। কারণ, সাহরি গ্রহণের জন্য পবিত্রতা ফরজ নয়, বরং সুন্নত; আর নামাজ আদায় করার জন্য পবিত্রতা ফরজ। (ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি, ১/২০১)

আরও পড়ুনসাহ্‌রির ফজিলত ও বরকত০১ মার্চ ২০২৫

৫. পেট পুরে সাহরি খাওয়া জরুরি নয়। দুই বা এক গ্রাস অথবা একটি খেজুর কিংবা কয়েকটি দানা মুখে দিয়ে নিলেও হবে। তাই ক্ষুধা না থাকলেও কিছু খেয়ে নেওয়া উচিত। আগে খাওয়া হয়ে গেলে এক ঢোক পানি খেলেও সাহরির ফজিলত অর্জিত হবে। (হেদায়া, ১/১৮৬)

৬. অনেকে রাতের শুরুতে বা মাঝামাঝি সময়ে সাহরি খেয়ে শুয়ে পড়েন এবং মনে করেন, রোজার নিয়ত করার পর বা সাহরি খাওয়া পর আর পানাহার করা যাবে না। এমন ধারণা সঠিক নয়। সুবহে সাদিক উদয় না হওয়া পর্যন্ত পানাহার করতে কোনও দোষ নেই। তাতে নিয়তেও কোনও ক্ষতি হবে না এবং রোজায়ও নয়। (হাশিয়ায়ে ফাতাওয়া দারুল উলুম, ৬/৪৪৬)

৭. সাহরির সময় কোনো ব্যক্তি এত পরিমাণ খেয়েছেন যে, সূর্যোদয়ের পর তার মধ্যে ঢেকুর আসতে শুরু করে। সঙ্গে গলা দিয়ে পানিও বের হয়। এর মাধ্যমে রোজার কোনও ক্ষতি হবে না। (ফাতাওয়া রশিদিয়া, ৩৭১) 

আরও পড়ুনরাতের শেষ প্রহরে রাসুলুল্লাহ (সা.) কী আমল করতেন১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

রাউজানে যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তাঁর সহযোগী গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামের রাউজানে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে যুবদল কর্মী আলমগীর আলমকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় এক যুবককে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার যুবক আলমগীর আলমের সহযোগী ছিলেন। গতকাল শনিবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার যুবকের নাম মুহাম্মদ রাজু (২৮)। তিনি পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রহমতপাড়ার মৃত নুর নবীর ছেলে। পুলিশ জানিয়েছে, আলমগীর আলমকে গুলি করার সময় তাঁর পেছনে একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন মুহাম্মদ রাজু।

গত ২৫ অক্টোবর বিকেলে রাউজান পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চারাবটতল বাজারসংলগ্ন কায়কোবাদ জামে মসজিদের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় আলমকে। এ সময় তাঁর স্ত্রী ও সন্তান পেছনে একটি অটোরিকশায় ছিলেন। পাশের গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে দাওয়াত খেয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন তাঁরা। আলমের বাড়ি পার্শ্ববর্তী ঢালারমুখ এলাকায়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কবরস্থানে লুকিয়ে থাকা আটজন অস্ত্রধারী আলমকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এ সময় মোটরসাইকেলে থাকা আলম ঘটনাস্থলেই নিহত হন। অস্ত্রধারীরা তাঁকে হত্যার পর রাঙামাটি সড়ক দিয়ে অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে পালিয়ে গেছেন। নিহত আলমের শরীরে পাঁচটি গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়।

রাউজান থানা-পুলিশ জানায়, আলম নিহত হওয়ার দুই দিন পর তাঁর বাবা আবদুস সাত্তার বাদী হয়ে ২১ জনের নামোল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৬ থেকে ৭ জনকে আসামি করে রাউজান থানায় মামলা করেন। মামলার এজাহারে রাজুর নাম নেই। তবে ঘটনার তদন্তে হত্যাকাণ্ডে তাঁর সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে।

এর আগে এ মামলায় এজাহারভুক্ত দুই আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁরা হলেন রাউজান কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ রাসেল খান (৩২) ও পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রহমতপাড়ার বাসিন্দা ও যুবদল কর্মী মুহাম্মদ হৃদয় (৩০)।

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, যখন অস্ত্রধারীরা আলমগীর আলমকে গুলি করার জন্য কবরস্থানে লুকিয়ে ছিলেন, তখন আলমগীর আলমের পেছনে একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন রাজু। তিনি আলমগীরের সহযোগী হিসেবে পরিচিত। তবে হত্যাকাণ্ডে তাঁর সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। রোববার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অস্ত্র-মাদকসহ বিভিন্ন মামলায় ১২ বছর কারাগারে ছিলেন আলম। তিনি গত বছরের ৫ আগস্টের পর জামিনে মুক্তি পান। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী হিসেবে পরিচিত তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পরিকল্পিতভাবে প্রচারণা চলছে যে বিএনপি সংস্কারের বিরোধী: মির্জা ফখরুল
  • কাঁচাপাট রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি বিজেএ চেয়ারম্যানের
  • বাবাকে না পেয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে সড়কে যায় শিশু, মুহূর্তে ট্রাকচাপায় নিহত
  • রাউজানে যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তাঁর সহযোগী গ্রেপ্তার
  • ক্ষুব্ধ-বিরক্ত আঁখি বললেন, ভণ্ডামি থেকে মুক্তি চাই
  • ‘বয়স বাড়ছে, বুঝে ফেলি কে মিথ্যা বলে’—ফেসবুকে আঁখি আলমগীর