গত বছর ৭৪৫ কোটি টাকা মুনাফা করেছে প্রাইম ব্যাংক
Published: 13th, March 2025 GMT
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্রথম ব্যাংক হিসেবে ২০২৪ সালের শেয়ারধারীদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে প্রাইম ব্যাংক। ব্যাংকটি গত বছরের শেয়ারধারীদের ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় লভ্যাংশ প্রদানের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ব্যাংকের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয়।
প্রাইম ব্যাংক গত বছরের জন্য যে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, তার মধ্যে সাড়ে ১৭ শতাংশ নগদ ও আড়াই শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ। ২০২৩ সালে ব্যাংকটি শেয়ারধারীদের সাড়ে ১৭ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। সেই হিসাবে আগের বছরের চেয়ে গত বছর লভ্যাংশের পরিমাণ আড়াই শতাংশ বেড়েছে।
প্রাইম ব্যাংক জানিয়েছে, গত বছর ব্যাংকটির প্রকৃত মুনাফা ২০২৩ সালের তুলনায় ২৬১ কোটি টাকা বা ৫৪ শতাংশ বেড়েছে। গত বছর শেষে ব্যাংকটি প্রকৃত মুনাফা করেছে ৭৪৫ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে যার পরিমাণ ছিল ৪৮৪ কোটি টাকা। মুনাফা বৃদ্ধি পাওয়ায় শেয়ারপ্রতি আয়ও (ইপিএস) বেড়েছে প্রাইম ব্যাংকের। গত বছর শেষে ব্যাংকটি ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৬ টাকা ৫৮ পয়সায়। ২০২৩ সালে ব্যাংকটির ইপিএস ছিল ৪ টাকা ২৭ পয়সা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত বছর প্রাইম ব্যাংকের মুনাফা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ ছিল সরকারি ট্রেজারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগের বিপরীতে পাওয়া সুদ আয়। গত বছরের প্রথম ৯ মাসের হিসাবে ব্যাংকটির বিনিয়োগ আয় ছিল ৬৯৩ কোটি টাকা। গত জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর—এই ৯ মাসে সরকারি ট্রেজারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগে আয়ের দিক থেকে শীর্ষ ১০ ব্যাংকের একটি ছিল প্রাইম ব্যাংক। বছর শেষে বিনিয়োগের এই মুনাফার কারণে প্রাইম ব্যাংকের প্রকৃত মুনাফার বড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
প্রাইম ব্যাংক আরও জানিয়েছে, গত বছর শেষে ব্যাংকটির মোট সম্পদ প্রায় ৫৫ হাজার কোটি টাকায়। ঘোষিত লভ্যাংশের জন্য ব্যাংকটি রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করেছে ১০ এপ্রিল। ওই দিন যাঁদের হাতে ব্যাংকটির শেয়ার থাকবে, তাঁরাই ঘোষিত লভ্যাংশ পাওয়ার যোগ্য বিবেচিত হবেন। আর এই লভ্যাংশ অনুমোদনের জন্য বার্ষিক সাধারণ সভা বা এজিএমের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ মে। ওই সভায় অনুমোদনের পর ঘোষিত লভ্যাংশ বিতরণ করা হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ২০২৩ স ল বছর শ ষ গত বছর র জন য বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
৭৮০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে পূবালী ব্যাংক
বেসরকারি খাতের পূবালী ব্যাংক ২ হাজার কোটি টাকার রেকর্ড পরিচালন মুনাফা করলেও বছর শেষে ব্যাংকটির নিট মুনাফা হাজার কোটি টাকা ছাড়ায়নি। গত বছর শেষে পূবালী ব্যাংকের নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৭৮০ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে ব্যাংকটি নিট মুনাফা করেছিল ৬৯৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংকটির মুনাফা ৮২ কোটি টাকা বা প্রায় ১২ শতাংশ বেড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত বছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়।
আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদনের পাশাপাশি গত বছরের জন্য লভ্যাংশও অনুমোদন করা হয় গতকালের এই সভায়। গত বছরের জন্য ব্যাংকটি ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। যার মধ্যে সাড়ে ১২ শতাংশ নগদ ও সাড়ে ১২ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ। ২০২৩ সালেও ব্যাংকটি একই হারে শেয়ারধারীদের লভ্যাংশ দিয়েছিল।
ব্যাংকসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালে পূবালী ব্যাংক ঋণের সুদ থেকে ১ হাজার ৫১৩ কোটি টাকা আয় করেছে। বিনিয়োগ, কমিশন, মুদ্রা বিনিময় ও ব্রোকারেজ থেকে আয় করেছে ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। তাতে সব মিলিয়ে আয় হয় ৪ হাজার ২৩৫ কোটি টাকা। বিদায়ী বছরে বেতন-ভাতাসহ নানা খাতে খরচ হয় ১ হাজার ৯৩৩ কোটি টাকা। ফলে পরিচালন মুনাফা হয় ২ হাজার ৩০১ কোটি টাকা। ব্যাংকটি বিদায়ী বছরে নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করে ৯৬১ কোটি টাকা। এরপর কর পরিশোধের পর নিট বা প্রকৃত মুনাফা হয় ৭৮০ কোটি টাকা।
জানতে চাইলে পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভবিষ্যতের কথা বিবেচনায় আমরা চাহিদার বেশি নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করেছি। বাংলাদেশ ব্যাংক এই পরামর্শ দিয়েছে। খেলাপির তুলনায় বেশি সঞ্চিতি রাখার মাধ্যমে ব্যাংকটির ভিত্তি মজবুত করা হয়েছে।
ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালে পূবালী ব্যাংকের আমানত বেড়ে হয়েছে ৭৪ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। এ সময়ে ঋণ বেড়ে দাঁড়ায় ৬২ হাজার ৯২৫ কোটি টাকা। আর খেলাপি ঋণের হার কমে নেমে এসেছে ২ দশমিক ৬৭ শতাংশে। ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন এখন ১ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা। আর কর্মীর সংখ্যা ১০ হাজার ৬৭৮। সারা দেশে ৫০৮টি শাখা ও ২২৭টি উপশাখা রয়েছে ব্যাংকটির। বর্তমানে বেসরকারি খাতে সবচেয়ে বেশি নেটওয়ার্ক পূবালী ব্যাংকের।