প্রবাসীদের নিয়ে দেশের ফুটবলে নতুন স্বপ্ন
Published: 15th, March 2025 GMT
জামাল ভূঁইয়া, সৈয়দ শাহ কাজেম, ফাহমিদুল ইসলাম ও তারিক কাজী; এক ফ্রেমে চার প্রবাসী ফুটবলার। বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য এটি বড় বিজ্ঞাপনই বলা চলে। ছবিতে হামজা দেওয়ান চৌধুরী থাকলে আরও পূর্ণতা পেত। কিছুদিন পরই জাতীয় দলের সঙ্গে যোগ দেবেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা হামজা। তখন বাংলাদেশের ফুটবলে দেখা যাবে একসঙ্গে পাঁচ প্রবাসী ফুটবলার। ২৫ মার্চ শিলংয়ে ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে এই পাঁচ প্রবাসী একসঙ্গে খেলার সুযোগ পান বা না পান বাংলাদেশের ফুটবলে এখন বড় আলোচনায় তারা। এই প্রবাসীদের ঘিরেই নতুন স্বপ্ন দেখছেন ফুটবলপ্রেমীরা।
বাংলাদেশের ফুটবলে প্রথম প্রবাসী হিসেবে আবির্ভাব ঘটে জামাল ভূঁইয়ার। ২০১৩ সাল থেকে জাতীয় দলে খেলা ডেনমার্ক প্রবাসী এ মিডফিল্ডার এখন দলের অধিনায়কও। তাঁর পথ ধরে লাল-সবুজের জার্সিতে ২০২১ সালে অভিষেক ঘটে ফিনল্যান্ড প্রবাসী তারিক রায়হান কাজীর। গত বছর তৃতীয় প্রবাসী হিসেবে বাংলাদেশ দল সুযোগ মেলে কানাডিয়ান বংশোদ্ভূত সৈয়দ শাহ কাজেমের। তিনি হলেন সাবেক ক্রিকেটার হালিম শাহর ছেলে।
কাজেমের জন্ম বাংলাদেশে হলেও বেড়ে উঠেছেন কানাডায়। তাঁকে নিবন্ধন করতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি বাফুফেকে। এর পেছনে বড় কারণ, কাজেমের জন্ম বাংলাদেশে আর কানাডার হয়ে যুব দলে না খেলা। ২০২৪ সালের ১১ জুন বিশ্বকাপ বাছাইয়ে লেবাননের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক ঘটে এ অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারের। কাতারের খলিফা স্টেডিয়ামে ৭৭ মিনিটে শেখ মোরসালিনের বদলি হিসেবে নেমেছিলেন ২৬ বছর বয়সী এ ফুটবলার।
তবে বাংলাদেশ দলে বড় চমক ইতালিয়ান প্রবাসী ফাহমিদুল ইসলাম। হামজাকে নিয়ে সবাই যখন আলোচনায়, তখনই ভারত ম্যাচের জন্য প্রাথমিক দলে ফাহমিদুলকে অন্তর্ভুক্ত করেন কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা। ইতালির সিরিয়ে ডি লিগের ক্লাব ওলবিয়া কালসিওর হয়ে লেফট ব্যাক এবং উইং ব্যাক পজিশনে খেলেন ফাহমিদুল। বর্তমানে সৌদি আরবে জাতীয় দলের সঙ্গে অনুশীলনও করছেন তিনি। শুক্রবার অনুশীলনে একসঙ্গে তোলা চার প্রবাসীর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে জামাল লিখেছেন, ‘ওয়েলকাম টু দ্য টিম ফাহমিদুল’।
পাঁচ প্রবাসীর মধ্যে সবার আকর্ষণ হামজাকে ঘিরে। ১৭ মার্চ ইংল্যান্ড থেকে সিলেটে ফিরবেন শেফিল্ড ইউনাইটেডে খেলা এ ফুটবলার। ১৯ মার্চ ক্যাম্পে যোগ দেবেন তিনি। হামজার অপেক্ষায় থাকা পুরো দল সৌদি আরবের তায়েফে কঠোর অনুশীলন করছেন। কীভাবে ভারতকে থামানো যায়, সেটা নিয়ে কাজ হচ্ছে বলে গতকাল বাফুফের পাঠানো ভিডিও বার্তায় বলেছেন সহকারী কোচ হাসান আল মামুন, ‘আজকে (শুক্রবার) যেটাতে ফোকাস করেছিলাম, কীভাবে ডিফেন্ডিং ব্লকগুলো করব। কে প্রেসিংয়ে যাবে, কে তাকে ব্যালান্স করবে; এই টেকনিকগুলো নিয়ে কাজ করেছি। পাশাপাশি ভারত কীভাবে অ্যাটাকিংয়ে যায় আর আমরা কীভাবে ব্লকগুলো তৈরি করব এ নিয়ে আমাদের ক্লাস হয়েছে।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ল দ শ র ফ টবল ফ টবল র প রব স
এছাড়াও পড়ুন:
৭ উপাচার্যের অংশগ্রহণে গোবিপ্রবিতে শিক্ষা সমাপনী
গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গোবিপ্রবি) নবম ব্যাচের (নবনীতক ৯) শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষা সমাপনী-২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীদের বিদায় বেলায় এক মঞ্চে আসীন হন দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতিমান সাত উপাচার্য।
বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুর ১২টায় একাডেমিক ভবন প্রাঙ্গণে আনন্দঘন পরিবেশে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর ছাড়াও অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী, খুলনা কৃষি বিশ্বিবদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল আহসান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী, পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এসএম আব্দুল আওয়াল, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আতিয়ার রহমান ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুসলেহ উদ্দিন তারেক।
আরো পড়ুন:
নতুনবাজারের সেই রনির বুলেটের যন্ত্রণা আজো থামেনি
শিশু ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা
এক মঞ্চে একইসঙ্গে এতজন উপাচার্যকে পেয়ে সমাপনী ব্যাচসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “এভাবে একসঙ্গে পুরো সেশনের শিক্ষা সমাপনী আয়োজনের আইডিয়াটি অত্যন্ত চমৎকার। এতে করে একটি ব্যাচের একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে প্রবেশ ঘটে। যেখানে সবার একসঙ্গে পরীক্ষা হয়, রেজাল্ট প্রকাশ হয় এবং কোনো সেশন জট থাকে না। আমি এই আইডিয়াটি আমার নিজ বিশ্ববিদ্যালয়েও বাস্তবায়নের চেষ্টা করব।”
খুলনা কৃষি বিশ্বিবদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল আহসান বলেন, “আমরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণ এখানে এসেছি সংহতি জানানোর জন্য। আমি নবম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের জীবনে সফলতা কামনা করছি।”
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, “শিক্ষার্থীদের বিসিএস দেওয়া, বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করা বা ব্যবসা করার লক্ষ্য থাকে। তবে জীবনে কোনো না কোনো কিছু করতেই হবে। এক্ষেত্রে অবসর বলে কোনো শব্দ থাকা উচিত নয়।”
পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, “আমি যখন দেশের বাইরে পড়াশোনা করতাম, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে আমি কখনোই দেখিনি। আর বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্চে কখনো একসঙ্গে সাতজন উপাচার্যকেও বসতে দেখিনি, এটা অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর করে দেখিয়েছেন।”
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুল আওয়াল বলেন, “আমরা যদি আন্তর্জাতিক পরিপ্রেক্ষিতে চিন্তা করি, আমাদের চাকরি খোঁজার পাশাপাশি এমন কিছু করার মানসিকতা রাখতে হবে, যা দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে।”
রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আতিয়ার রহমান বলেন, “শিক্ষা সমাপনী মানেই সব সম্পর্ক ছিন্ন করা নয়। বিশ্বে এমন অনেক নজির আছে, যেখানে অ্যালামনাই থেকে উপাচার্য নিয়োগ হয়েছে। তাই নিজেকে বিস্তৃত পরিসরে মেলে ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ উজ্জ্বল করার দায়িত্ব নিতে হবে।”
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “নিজেকে চেনাই সবচেয়ে বড় শিক্ষা। আর শিক্ষার্থীদের কর্মজীবনই বলে দেবে, তারা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে কতটা জ্ঞান অর্জন করেছে।”
প্রধান অতিথিরি বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর আগত উপাচার্যদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, “শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্যই আমাদের এই প্রয়াস। একইসঙ্গে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি তুলে ধরাও আমাদের লক্ষ্য। আমরা জানিয়ে দিতে চাই, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চায় এবং অচিরে দাঁড়াবেই।”
তিনি বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে ইউজিসির দুইটি হিট প্রকল্প পেয়েছি এবং ভবিষ্যতে আরো পাব। আমরা আশা করছি, বি ক্যাটাগরি থেকে আগামী অর্থবছরের আগেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়টি এ ক্যাটাগরিতে উন্নীত হবে।”
গোবিপ্রবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সোহেল হাসানের সভাপতিত্বে এতে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাজমুল আহসানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক, সব অনুষদের ডিন, বিভাগীয় সভাপতি ও প্রাধ্যক্ষগণ, দপ্তর প্রধানগণ, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, জুলাই শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করা হয়।
শিক্ষা সমাপনী উপলক্ষে বুধবার ছাত্রদের কালার ফেস্ট ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা এবং আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যায় একটি কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছে।
ঢাকা/রিশাদ/মেহেদী