গাজীপুরের শ্রীপুরে গড়গড়িয়া মাস্টার এলাকায় থেকে গলিত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে শ্রীপুর থানা পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানিয়েছেন, ছিনতাইয়ে ব্যর্থ হয়ে শ্বাসরোধে হত্যার করা হয় রেজাউল ইসলামকে।

শনিবার (১৫ মার্চ) বেলা ১১টায় শ্রীপুর থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন মন্ডল।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কালিয়াকৈর সার্কেল) আফজাল হোসেন, থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শামীম ও পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কর উপস্থিত ছিলেন।  

আরো পড়ুন:

সংঘর্ষে বিএনপিকর্মী নিহত
হত্যা মামলায় হুকুমের আসামি সাবেক মেয়র মিজান

গোপালগঞ্জে দিনে-দুপুরে যুবককে হত্যা, অর্থ ও স্বর্ণালংকার লুট  

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, নেত্রকোনা জেলার সদর থানার টেংগা গ্রামের আলী ওসমানের ছেলে জুলহাস (৩৪), শ্রীপুরের উজিলাব গ্রামের আফাজ উদ্দিনের ছেলে নুরুল ইসলাম (৫২) ও শ্রীপুর পৌর এলাকার কেওয়া পশ্চিমখণ্ড গ্রামের বকুলতলা এলাকার আলতাফ হোসেনের ছেলে শাহাদত হোসেন শান্ত (২৫)। গতকালই তাদের শ্রীপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

নিহত রেজাউল করিম (৪০) নেত্রকোনা জেলার সদর থানার দুর্গাশ্রম গ্রামের ইসহাক মুন্সীর ছেলে। তিনি শ্রীপুরের গিলারচালা গ্রামের নতুন বাজার এলাকায় রুহুল আমিন তালুকদারের বাড়িতে স্ত্রী হালিমা আক্তার ও ১২ বছর বয়সী মেয়ে সুমাইয়া আক্তারকে নিয়ে ভাড়া থেকে বাঘেরবাজার এলাকায় এইচপি গার্মেন্টসে অপারেটর পদে চাকরি করতেন।  

নিহতের স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন রেজাউল ইসলাম। তাকে সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে খুঁজে সন্ধান না পেলে শ্রীপুর থানা পুলিশের সহযোগিতা নেন স্বজনরা। গত ৯ মার্চ বিকেলে শ্রীপুরের গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ী ঢালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশ থেকে অজ্ঞাত গলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহটি গলে পচে যাওয়ায় পরিচয় শনাক্ত সম্ভব হয়নি। শ্রীপুর থানা পুলিশ বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। নিহতের ভাগিনা রিমন মরদেহের গায়ে থাকা শার্ট দেখে উদ্ধার হওয়া লাশটি তার মামা রেজাউল ইসলামের বলে শনাক্ত করেন। এরপরই শ্রীপুর থানার পুলিশের একাধিক টিম হত্যার রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করে।

শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুজন কুমার পন্ডিত জানান, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় প্রথমে জুলহাসকে শ্রীপুরের আনসার রোড এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যায় চারজন অংশ নেয় বলে জানান এবং বাকিদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেন। পরে জুলহাসের দেওয়া তথ্যমতে নুরুল ইসলাম ও শান্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় আরো একজন জড়িত আছে। তদন্তের স্বার্থে তার নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হচ্ছে না বলে তিনি জানান।  

উপপরিদর্শক সুজন কুমার পন্ডিত জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানান, ২৭ মার্চ রাতে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ী এলাকায় যান রেজাউল ইসলাম। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ী ঢালে মহাসড়কের পাশে নির্জন জায়গায় শান্ত, নুরুল, জুলহাসসহ অজ্ঞাত একজন তার গতিরোধ করে সঙ্গে থাকা টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় রেজাউল বাধা দিলে তাকে পাশে নিয়ে গলায় গামছা পেচিয়ে হত্যার করে মরদেহ ফেলে চলে যায়। এর ১০ দিন পর স্থানীয়রা গলিত মরদেহ পরে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন মন্ডল বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের শনিবার আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। বাকি আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।

ঢাকা/রফিক/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য গ র প ত র কর ল ইসল ম এল ক য় র এল ক মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপি নেতাকে মারধর: খুলনা সদর থানার সাবেক ওসি কারাগারে

খুলনা মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফখরুল আলমের করা মামলায় সদর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

রোববার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন হাসান আল মামুন। খুলনা মহানগর দায়রা জজ মো. শরীফ হোসেন হায়দার তার জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এদিকে আদালত চত্বরে থাকা বিএনপি নেতাকর্মীরা মামুনকে লক্ষ্য করে ডিম ও পচা আম নিক্ষেপ করেন। তার শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন তারা। পরে নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেন সেনা সদস্যরা। 

মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এ কে এম শহিদুল আলম বলেন, মামলাটিতে উচ্চ আদালতের জামিনে ছিলেন হাসান আল মামুন। উচ্চ আদালতের নির্দেশে রোববার খুলনা মহানগর দায়রা জজ  আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করেন। এ সময় তার আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন। আমরা জামিনের বিরোধিতা করি। আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি কে ডি ঘোষ রোডের দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির সমাবেশে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এ সময় তৎকালীন ওসি মামুন নিজেই
ফখরুল আলমকে বেদম মারধর করেন। লাঠির আঘাতে ফখরুল আলমের একটি চোখ নষ্ট হয়ে যায়। এ ঘটনায় ২০২৪ সালের ১৯ আগস্ট মামুনের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে আদালতে মামলা করেন ফখরুল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ