জাসদের প্রতিষ্ঠাতা সিরাজুল আলম খানের ভাতিজী ফারাহ খান বলেছেন, “ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে ১৯৭২ সালে সিরাজুল আলম খান দাদা ভাইর নেতৃত্বে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের জন্ম হয়। ১৯৭২ সালের পরে এই দলটি যখন বিশাল কিছু করতে পারত, তখন বিভিন্ন কারণে ও নানা ভাগে আমাদের ভাগ করা হয়েছে। শুধু ভাগ করাই হয়নি, দলের আদর্শ থেকে বেড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।” 

তিনি বলেন, “দলের আদর্শ থেকে বেড়িয়ে আমরা কখনো শেখ হাসিনার হাত,  কখনো খালেদা জিয়ার হাতকে শক্ত করেছি। এরশাদ সাহেবের হাতকেও শক্ত করেছি। এটা করতে গিয়ে আমরা নিজেদের হাত শক্ত করতে পারিনি।” 

শনিবার (১৫ মার্চ) দুপুরে খণ্ডিত জাসদকে ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান উদ্যোক্তার বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। বরিশাল প্রেস ক্লাবে এই সভার আয়োজন করা হয়। 

ফারাহ খান বলেন, “৭২ সালে আমরা ছিলাম একটি বটগাছ, ৫৩ বছর পরে আমরা হয়ে গেছি একটা পরগাছা। বড় বড় দলগুলোর ওপরে আমরা ভরসা করে শিখে গেছি। ওনারা আমাদের একটি-দুইটি আসন দিলে, সেই আসন নিয়ে আমরা খুশি হয়ে যাই। আমরা ওনাদের ওপর ভরসা করে ক্ষমতার সাধ পেতে চাই। যখন কিনা জাসদই হতে পারত এই দেশের মূল কাণ্ডারি। আমাদের সেই যোগ্যতা ছিল, আমাদের সঙ্গে তরুণ ও মেধাবীরা ছিল। কিন্তু আমরা সেটা পারিনি।”

তিনি আরো বলেন, “দলের নেতা হাসানুল হক ইনুর একছত্র সমর্থনের কারণে শেখ হাসিনা স্বৈরাচারী থেকে আরো বেশি স্বৈরাচারী হয়েছেন। দলের নেতাকর্মীদের তিনি বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছেন। এ কারণে অনেকেই এলাকায় যেতে সাহস পায় না। আমরা এমন রাজনীতি করতে চাই না, যাতে এলাকায় যেতে ভয় পেতে হয়।” 

ফারাহ খান বলেন, “জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে ছাত্র-জনতার বিজয় এসেছে। এই বিজয় আসার পরে আমরা চেয়েছি, নতুন বাংলাদেশ দেখতে।  আন্দোলনে আমি নিজে মাঠে ছিলাম, আপনারা এখানে অনেকেই হয়ত চেয়েছেন ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার বিদায় হোক, আমরা সেটি করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়তে পারিনি। নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাসী কোনো একটি শক্তি লাগবে। জাসদের যত ভাগই থাকুক, আমরা যদি সবাই এক হয়ে যাই, তাহলে নতুন সময়ের সেই শক্তিটা আমরাই হতে পারব। যে শক্তি বাংলাদেশকে আবার পুনর্গঠন করতে পারবে।” 

সাবেক জাসদ নেতা ও সাবেক সাংসদ সদস্য সরদার আব্দুর রশিদের উপস্থিতিতে সভায় বাংলাদেশ জাসদের কেন্দ্রীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য শহিদুলইসলাম মীরন, বাংলাদেশ জাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বাদল উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/পলাশ/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন

প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।

শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।

আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন

রাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।

কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।

দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।

২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।

প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।

আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।

সূত্র: এনবিসি নিউজ

আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ