সোনারগাঁয়ে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ফিল্মি স্টাইলে একটি বেসরকারি কোম্পানির ১ কোটি ১০ লাখ টাকা ডাকাতি হয়েছে। ভুক্তভোগীদের অস্ত্র ঠেকিয়ে তাদের টাকা নিয়ে যাওয়া হয়।

শনিবার দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দড়িকান্দি ব্রিজ সংলগ্নে এই ঘটনা ঘটে।  ডাকাতির ঘটনায় একই রাতে দিবা এন্টারপ্রাইজ নামক কোম্পানির ম্যানেজার মো. নাজিম উদ্দিন বাদী সোনারগাঁ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। 

অভিযোগপত্রে তুলে ধরা হয়েছে, ঢাকার ভাটারা থানা এলাকার 'দিবা এন্টারপ্রাইজ' নামক একটি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার মো.

নাজিম উদ্দিন ও একই কোম্পানির মাইক্রোবাস চালক মামুন শেখ (৪৫)

গত শনিবার দুপুরে ঢাকার মতিঝিল জীবন বীমা ভবনে থাকা সিটি ব্যাংকের কর্পোরেট শাখা হতে ১ কোটি দশ লাখ টাকা উত্তোলন করে তাদেরই চাঁদপুরের দিবা এন্টারপ্রাইজ শাখার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাচ্ছিলেন। 

যাত্রাপথে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামগামী লেনের সোনারগাঁ উপজেলার দড়িকান্দি ব্রীজ পার হতেই পেছনে থাকা সিলভার রঙের একটি এক্সজিও ফিল্ডারযোগে অজ্ঞাতনামা ৬ সদস্যের একটি ডাকাত গ্রুপ তাদের গাড়ির গতিরোধ করে। পরে ডাকাত সদস্যরা নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ভুক্তভোগী ম্যানেজারকে গাড়িটি তল্লাশির কথা বলেন। 

একপর্যায়ে ডাকাত সদস্যরা ভুক্তভোগীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে চোখ বেধে ও হ্যান্ডকাফ পড়িয়ে মাইক্রোবাসযোগে বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে অপরিচিত একটি স্থানে থামিয়ে কোম্পানির মাইক্রোবাসে থাকা দুটি ব্যাগের ১ কোটি ১০ লাখ ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে থাকা মূল্যবান জিনিস ডাকাতি করে চলে যান।

ছুটিরদিন হওয়া সত্বেও ব্যাংক হতে কোটি টাকা উত্তোলনের বিষয়টি জানতে অভিযোগের বাদী নাজিম উদ্দিনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমাদের কোম্পানিতে বিকাশের লেনদেন করা যায়। এটা শুধু সিটি ব্যাংকই করেন। আমাদের মালিক দেশের বাহিরে থাকায় উনার সই করা চেকের মাধ্যমে আমরা টাকা তুলেছি। এটা করা যায়।

তিনি বলেন, ৬ ডাকাতের একজন আমাদের গাড়িটি চালিয়ে আমাদেরকে বিভিন্ন স্থানে প্রায় আড়াই ঘন্টা ঘুরিয়ে তারপর সব নিয়ে গেছেন। 

এ বিষয়ে জানতে সোনারগাঁ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল বারীকে একাধিক ফোন দেওয়া সত্বেও তিনি কল রিসিভ করেনি। তবে পরিদর্শক (তদন্ত) রাশেদুল হাসান খান বলেন, এ ঘটনার স্পট আমি পরিদর্শন করেছি। প্রযুক্তির সহয়তায় আমরা তদন্তের চেষ্টা করছি। 

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ- সার্কেল) আসিফ ইমাম জানান, আমি ঘটনার কথা শুনেছি। তবে আমি ছুটিতে থাকায় বিস্তারিত বলতে পারছি না।  

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ন র য়ণগঞ জ আম দ র স ন রগ

এছাড়াও পড়ুন:

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্ব আরোপ

কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এ পরস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বুধবার দুজনকে করা এ ফোন কলে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া দুই 

ফোনালাপের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় মার্কো রুবিও বলেন, তিনি পেহেলগাম হামলায় নিহতদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। 

তবে তিনি আরও বলেন, ভারত যেন পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করার আগে সতর্ক থাকে, কারণ এখনও পর্যন্ত ভারত এই হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার জন্য বলেছেন।

পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনালাপে রুবিও- ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।

তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রুবিও এই অযৌক্তিক হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ভারতের উস্কানিমূলক আচরণ শুধু উত্তেজনাই বাড়াচ্ছে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ভারতের ওপর দায়িত্বশীল আচরণ ও ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করে।

এর আগে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।

এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। বর্তমানে এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।

তাছাড়া, হামলার পরে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সূত্র-এএফপি 

সম্পর্কিত নিবন্ধ