দুই কার্গো এলএনজি কেনা হচ্ছে, দামও কম পড়ছে
Published: 18th, March 2025 GMT
আন্তর্জাতিক বাজারে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দাম একটু কমেছে। এ দফায় যুক্তরাজ্যভিত্তিক টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড থেকে দুই কার্গো এলএনজি আমদানির প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। কেনা হবে স্পট মার্কেট থেকে। আর খরচ পড়বে বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ হাজার ৩৭৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এই এলএনজি আমদানির প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এক কার্গো সমান ৩৩ লাখ ৬০ হাজার মিলিয়ন মেট্রিক ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট (এমএমবিটিইউ) এলএনজি। দুই কার্গোর জন্য আজ দুটি আলাদা প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। একটি প্রস্তাবে প্রতি এমএমবিটিইউর দাম ধরা হয়েছে ১৪ দশমিক ৪৮ মার্কিন ডলার। মোট ব্যয় হবে ৬৯৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। আরেক কার্গোতে প্রতি এমএমবিটিইউর দাম ধরা হয়েছে ১৪ দশমিক ২২ মার্কিন ডলার, যাতে বাংলাদেশি মুদ্রায় ব্যয় হবে ৬৮২ কোটি টাকা।
দুই সপ্তাহ আগে গত ৫ মার্চ ক্রয় কমিটি দুই কার্গো এলএনজি কেনার দুটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছিল। একটিতে দর ছিল প্রতি এমএমবিটিইউ ১৫ দশমিক ৭৩ মার্কিন ডলার, আরেকটিতে দর ছিল প্রতি এমএমবিটিইউ ১৫ দশমিক ৪৭ মার্কিন ডলার।
২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে তৎকালীন সরকার আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানির জন্য আগ্রহী বিক্রেতা বা সরবরাহকারীদের তালিকা চেয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এতে সাড়া দিয়ে ২৯টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। তাদের মধ্য থেকে ১৭টির সঙ্গে প্রথম দফায় মাস্টার সেল অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএসপিএ) অনুস্বাক্ষর করা হয়।
তবে আইনি পরীক্ষা-নিরীক্ষার (ভেটিং) পর অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি পেট্রোবাংলার সঙ্গে এমএসপিএ স্বাক্ষরের অনুমোদন দেওয়া হয় ১৪টি প্রতিষ্ঠানকে। পরে প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা অবশ্য ২৩টিতে উন্নীত হয়। টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার সেই ২৩টিরই একটি।
এদিকে স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য ১ কোটি ১০ লাখ লিটার পরিশোধিত রাইস ব্র্যান তেল এবং ১০ হাজার টন মসুর ডাল কেনার প্রস্তাব অনুমোদিত হয় ক্রয় কমিটিতে। এতে ব্যয় হবে ২৭৩ কোটি টাকা।
রাইস ব্র্যান তেল কেনা হবে গ্রিন অয়েল অ্যান্ড পোলট্রি ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে ২০ লাখ লিটার, মজুমদার প্রোডাক্টস লিমিটেড থেকে ৪৫ লাখ লিটার এবং মজুমদার ব্র্যান অয়েল মিলস লিমিটেড থেকে ৪৫ লাখ লিটার। প্রতি লিটার রাইস ব্র্যান তেলের দাম ১৬২ টাকা ৫০ পয়সা হিসাবে দাম পড়ছে ১৭৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
এদিকে ৯৪ টাকা ২৩ পয়সা কেজি দরে ১০ হাজার টন মসুর ডাল কিনতে ব্যয় হবে ৯৪ কোটি ২৩ লাখ টাকা। মদিনা ট্রেডিং করপোরেশন পাঁচ হাজার টন ও পায়েল ট্রেডার্স পাঁচ হাজার টন মসুর ডাল সরবরাহ করবে।
ক্রয় কমিটিতে সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় পূর্ত কাজের দুটি প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ৫১৩ কোটি ২৪ লাখ টাকা। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে কাজ পেয়েছে চায়না পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ৩৯ কোটি ৫৫ লাখ ১২ হাজার ৪৪৭ টাকা। একই প্রকল্পের আওতায় যৌথভাবে আরেকটি পূর্ত কাজ পেয়েছে হুবেই ইন্ডাস্ট্রিয়াল কনস্ট্রাকশন গ্রুপ এবং এসআর করপোরেশন। এতে ব্যয় হবে ৪৭৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এমএমব ট হ জ র টন দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়েছে, নিম্নমুখী চালের দাম
ঈদের বন্ধের আমেজ কাটতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে চট্টগ্রামের পাইকারি ও খুচরা বাজারগুলো। ক্রেতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারগুলোতে বেড়েছে সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের সরবরাহ। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কয়েক দিনের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে সবজির দাম। পেঁয়াজ, রসুন ও চালের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও নিম্নমুখী।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার পর নগরের কাঁচাবাজারে সবজির সরবরাহ কমে যায়। ফলে দাম ছিল কিছুটা বাড়তি। গত রোববার ও সোমবারের দিকে নগরের আড়তগুলোতে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৬০ টাকা দরে। অধিকাংশ সবজির দামও ৪০ টাকার আশপাশে ছিল। তবে গত মঙ্গলবার থেকে আবারও বাজারে পুরোদমে সবজির সরবরাহ শুরু হয়েছে। যার কারণে দাম কমতে শুরু করেছে।
আজ শুক্রবার নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজারের পাইকারি আড়তে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ২০ থেকে ৪০ টাকা দরে। বেশির ভাগ সবজির দাম প্রতি কেজি ১০ থেকে ৩৫ টাকা। তবে খুচরা বাজারগুলোতে প্রায় দ্বিগুণ দামে সবজি বিক্রি হতে দেখা যায়। নগরের বহদ্দারহাট, চকবাজার, সাব এরিয়া ও কাজির দেউড়ি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব বাজারে অধিকাংশ সবজির দাম ৬০ টাকার বেশি। লাউ, মিষ্টিকুমড়া ও ফুলকপির দাম কিছুটা কম। এসব সবজির দাম ৫০ টাকার আশপাশে। খুচরা বাজারগুলোতে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা কেজি দরে। পরিবহন খরচ ও আগে কেনার অজুহাতে বাড়তি দাম নিচ্ছেন বিক্রেতারা। রিয়াজউদ্দিন বাজারের আড়তদার নুরুল ইসলাম বলেন, বাজারে সব সবজির দাম কম। কিন্তু খুচরা ব্যবসায়ীদের কারণে ভোক্তাদের ভোগান্তি হচ্ছে। আড়তের দামের দ্বিগুণ দামে তাঁরা সবজি বিক্রি করছেন।
সবজির বাজারের পাশাপাশি পেঁয়াজ, রসুন ও চালের দামও নিম্নমুখী। খাতুনগঞ্জের পাইকারি আড়তে আজ পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৫২ টাকা দরে। খুচরা পর্যায়ে দাম ছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি। অন্যদিকে রসুনের কেজি আড়তে ছিল ৮৫ থেকে ১১০ টাকা। খুচরায় সেটি ১০০ থেকে ১৩০ টাকা।
পাহাড়তলী চালের আড়তে মোটা চাল (গুটি, স্বর্ণা) কেজিপ্রতি ৪৮ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে জিরাশাইল ৭২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত তিন দিন আগ থেকে চালের বাজার কিছুটা নিম্নমুখী বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) চালের দাম কমেছে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন বলেন, চালের সরবরাহ যথেষ্ট আছে। চালের দাম বাড়ার আশঙ্কা নেই এখন।