আন্তর্জাতিক বাজারে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দাম একটু কমেছে। এ দফায় যুক্তরাজ্যভিত্তিক টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড থেকে দুই কার্গো এলএনজি আমদানির প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। কেনা হবে স্পট মার্কেট থেকে। আর খরচ পড়বে বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ হাজার ৩৭৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।

আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এই এলএনজি আমদানির প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এক কার্গো সমান ৩৩ লাখ ৬০ হাজার মিলিয়ন মেট্রিক ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট (এমএমবিটিইউ) এলএনজি। দুই কার্গোর জন্য আজ দুটি আলাদা প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। একটি প্রস্তাবে প্রতি এমএমবিটিইউর দাম ধরা হয়েছে ১৪ দশমিক ৪৮ মার্কিন ডলার। মোট ব্যয় হবে ৬৯৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। আরেক কার্গোতে প্রতি এমএমবিটিইউর দাম ধরা হয়েছে ১৪ দশমিক ২২ মার্কিন ডলার, যাতে বাংলাদেশি মুদ্রায় ব্যয় হবে ৬৮২ কোটি টাকা।

দুই সপ্তাহ আগে গত ৫ মার্চ ক্রয় কমিটি দুই কার্গো এলএনজি কেনার দুটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছিল। একটিতে দর ছিল প্রতি এমএমবিটিইউ ১৫ দশমিক ৭৩ মার্কিন ডলার, আরেকটিতে দর ছিল প্রতি এমএমবিটিইউ ১৫ দশমিক ৪৭ মার্কিন ডলার।

২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে তৎকালীন সরকার আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানির জন্য আগ্রহী বিক্রেতা বা সরবরাহকারীদের তালিকা চেয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এতে সাড়া দিয়ে ২৯টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। তাদের মধ্য থেকে ১৭টির সঙ্গে প্রথম দফায় মাস্টার সেল অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএসপিএ) অনুস্বাক্ষর করা হয়।

তবে আইনি পরীক্ষা-নিরীক্ষার (ভেটিং) পর অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি পেট্রোবাংলার সঙ্গে এমএসপিএ স্বাক্ষরের অনুমোদন দেওয়া হয় ১৪টি প্রতিষ্ঠানকে। পরে প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা অবশ্য ২৩টিতে উন্নীত হয়। টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার সেই ২৩টিরই একটি।

এদিকে স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য ১ কোটি ১০ লাখ লিটার পরিশোধিত রাইস ব্র্যান তেল এবং ১০ হাজার টন মসুর ডাল কেনার প্রস্তাব অনুমোদিত হয় ক্রয় কমিটিতে। এতে ব্যয় হবে ২৭৩ কোটি টাকা।

রাইস ব্র্যান তেল কেনা হবে গ্রিন অয়েল অ্যান্ড পোলট্রি ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে ২০ লাখ লিটার, মজুমদার প্রোডাক্টস লিমিটেড থেকে ৪৫ লাখ লিটার এবং মজুমদার ব্র্যান অয়েল মিলস লিমিটেড থেকে ৪৫ লাখ লিটার। প্রতি লিটার রাইস ব্র্যান তেলের দাম ১৬২ টাকা ৫০ পয়সা হিসাবে দাম পড়ছে ১৭৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

এদিকে ৯৪ টাকা ২৩ পয়সা কেজি দরে ১০ হাজার টন মসুর ডাল কিনতে ব্যয় হবে ৯৪ কোটি ২৩ লাখ টাকা। মদিনা ট্রেডিং করপোরেশন পাঁচ হাজার টন ও পায়েল ট্রেডার্স পাঁচ হাজার টন মসুর ডাল সরবরাহ করবে।

ক্রয় কমিটিতে সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় পূর্ত কাজের দুটি প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ৫১৩ কোটি ২৪ লাখ টাকা। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে কাজ পেয়েছে চায়না পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ৩৯ কোটি ৫৫ লাখ ১২ হাজার ৪৪৭ টাকা। একই প্রকল্পের আওতায় যৌথভাবে আরেকটি পূর্ত কাজ পেয়েছে হুবেই ইন্ডাস্ট্রিয়াল কনস্ট্রাকশন গ্রুপ এবং এসআর করপোরেশন। এতে ব্যয় হবে ৪৭৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এমএমব ট হ জ র টন দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা কী

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা রোববার জানিয়েছিলেন, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের রাখাইনের মধ্যে একটি মানবিক করিডোর স্থাপনে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যদিও মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, সরকার জাতিসংঘ বা অন্য কোনো সংস্থার সঙ্গে তথাকথিত ‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে কোনো আলোচনা করেনি (সমকাল অনলাইন, ২৯ এপ্রিল ২০২৫)। 
আলোচনাটি যে হঠাৎ এসে গেছে– এমন মনে করার কারণ নেই। গত বছর ১১ নভেম্বর আরাকান আর্মি মংডু শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকেই মানবিক করিডোরের বিষয়টি আলোচিত হয়ে আসছিল। ১৪ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘রোহিঙ্গা সংকট ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা: বাংলাদেশের প্রাসঙ্গিক বিবেচনাসমূহ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি-সংক্রান্ত বিশেষ প্রতিনিধি খলিলুর রহমানও আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগের একটি ধারণা দিয়েছিলেন। ওই সভাতেই লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহফুজুর রহমান মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি ও মানবিক করিডোর খোলার প্রস্তাব রাখেন।

দু’মাস পর জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস দুই দিনের সফরে বাংলাদেশ আসেন। তখনই বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে যায়। জাতিসংঘ মহাসচিব তাঁর দুই দিনের সফর শেষে ১৫ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্টই বলেছিলেন– ‘মিয়ানমারের ভেতরে মানবিক সহায়তা জোরদার করা জরুরি, যাতে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়। পরিস্থিতি অনুকূল হলে বাংলাদেশ থেকে মানবিক সহায়তা চ্যানেল চালু করাও গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। তবে বাংলাদেশকে চ্যানেল বা করিডোর হিসেবে ব্যবহার করতে যথাযথ অনুমোদন ও সহযোগিতা প্রয়োজন’ (সমকাল, ১৬ মার্চ ২০২৫)।
সর্বশেষ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন রোববার এক ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, ‘নীতিগতভাবে আমরা রাখাইন রাজ্যে করিডোরের ব্যাপারে সম্মত হয়েছি। কারণ এটি একটি মানবিক সহায়তা সরবরাহের পথ হবে। তবে আমাদের কিছু শর্ত আছে। সে ব্যাপারে বিস্তারিত আপাতত বলছি না। সেই শর্ত যদি পালন করা হয়, অবশ্যই আমরা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সহযোগিতা করব (সমকাল, ২৮ এপ্রিল ২০২৫)।
বিধৃত পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মানুষের জন্য বাংলাদেশকে মানবিক করিডোর হিসেবে ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি জাতিসংঘের অভিজ্ঞতার আলোকে বিশ্লেষণের দাবি রাখে।

স্নায়ুযুদ্ধ-পরবর্তী যুগে যুদ্ধরত অনেক দেশেই বেসামরিক লোকদের কাছে মানবিক সহায়তা প্রদানে মানবিক করিডোর স্থাপন ও ব্যবহার করা হয়েছে। এসবের কোনো কোনোটি বিবদমান পক্ষগুলোর স্বতঃপ্রণোদিত আলোচনার মাধ্যমে, কোনো কোনোটি তৃতীয় পক্ষ বিশেষত জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় হয়েছে। উদ্দেশ্য যা-ই থাকুক না কেন, ফল সবসময় খুব একটা ভালো হয়নি।
যেমন ১৯৮৯ সালে প্রথম আর্মেনিয়া-আজারবাইজান যুদ্ধের (নাগোর্নো-কারাবাখ যুদ্ধ) সময় বেসামরিক মানুষদের সাহায্য করার জন্য লাচিন করিডোর স্থাপিত হয়েছিল। এটি নাগোর্নো-কারাবাখের আর্মেনিয়ান জনগোষ্ঠীর জন্য মানবিক করিডোর বা ‘জীবনরেখা’ হিসেবে বিবেচিত ছিল। শুরুতে কিছুদিন ভালো চললেও বছর দুয়েকের মাঝেই করিডোরটি আজারবাইজান বন্ধ করে দেয়। তাদের অভিযোগ ছিল, প্রতিপক্ষ এটিকে সামরিক সরবরাহ এবং প্রাকৃতিক সম্পদের ‘অবৈধ’ পরিবহনের কাজে ব্যবহার করছিল; যদিও  আর্মেনিয়া ও তার মিত্র প্রজাতন্ত্রগুলো এসব অভিযোগ অস্বীকার করে।
সর্বশেষ ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে নতুন করে আক্রমণের পর আজারবাইজানি বাহিনী পুরো নাগোর্নো-কারাবাখের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। ফলে নাগোর্নো-কারাবাখের প্রায় সব আর্মেনীয় বাসিন্দা লাচিন করিডোর দিয়ে আর্মেনিয়ায় চলে যায়। এভাবেই একটি মানবিক করিডোরের অমানবিক মৃত্যু ঘটে।

বসনিয়া-হার্জেগোভিনায় মানবিক করিডোরের ইতিহাস আরও রক্তাক্ত। সেখানে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বেশ কয়েকটি প্রস্তাবের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মানবিক করিডোর।
প্রথমে ১৯৯৩ সালের ১৬ এপ্রিল জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ৮১৯ নম্বর প্রস্তাবের মাধ্যমে স্রেব্রেনিকা ছিটমহলকে নিরাপদ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরে একই বছরের ৬ মে নিরাপত্তা পরিষদের ৮২৪ নম্বর প্রস্তাবের মাধ্যমে সারায়েভো, জেপা, গোরাজদে, তুজলা ও বিহাচকেও এর অন্তর্ভুক্ত করে মোট ৬টি মানবিক করিডোর ঘোষণা করা হয়। এগুলোকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী ইউনিটের সুরক্ষাধীনে রাখা হয়। এটা জাতিসংঘের ইতিহাসে সবচেয়ে বিতর্কিত সিদ্ধান্তের একটি বিবেচিত হয়ে থাকে। কারণ বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার মতো যুদ্ধক্ষেত্রে এই নিরাপদ এলাকাগুলোকে কীভাবে সুরক্ষিত করা হবে, সেটি সম্পর্কে সুস্পষ্ট রূপরেখা ছিল না। ফলে প্রস্তাবটি পরে জটিল ও কঠিন কূটনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি করেছিল। কারণ এর পক্ষে ভোট দেওয়া রাষ্ট্রগুলো রাজনৈতিক কারণে নিরাপদ এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ইচ্ছুক ছিল না। এ অবস্থায় ১৯৯৫ সাল নাগাদ জাতিসংঘের নিরাপদ এলাকাগুলোতে পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে থাকে এবং স্রেব্রেনিকা গণহত্যার ক্ষেত্র তৈরি করে। এটি ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে ভয়াবহ নৃশংসতার একটি।

উল্লেখ্য, নিরাপত্তা পরিষদের ৮১৯ নম্বর প্রস্তাবে স্রেব্রেনিকাকে ‘বল প্রয়োগসহ সব প্রয়োজনীয় উপায় ব্যবহার করে সুরক্ষিত নিরাপদ এলাকা’ হিসেবে মনোনীত করা হয়েছিল। কিন্তু জাতিসংঘের নিরাপদ এলাকার ওপর অব্যাহত আক্রমণের পাশাপাশি সারায়েভোর অব্যাহত অবরোধের ফলে শেষ পর্যন্ত বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায় অপারেশন ডেলিবারেট ফোর্স নামে ন্যাটো হস্তক্ষেপের সৃষ্টি হয়। যুদ্ধের শেষ নাগাদ প্রতিটি নিরাপদ এলাকায় ‘রিপাবলিকা শ্রপস্কা আর্মি’ বা বসনিয়ান সার্ব সেনাবাহিনী আক্রমণ এবং স্রেব্রেনিকা ও জেপা দখল করে।

আফ্রিকার দেশ কঙ্গোতে ২০০৮ সালে রাষ্ট্রীয় সেনাবাহিনী এবং জেনারেল লরেন্ট নকুন্ডার নেতৃত্বাধীন মিলিশিয়া বাহিনীর মধ্যে সশস্ত্র দাঙ্গা চরম আকার ধারণ করে। সেখানেও জাতিসংঘের প্রস্তাবমতে গোমা অঞ্চলে একটি মানবিক করিডোর খোলার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু দেশটির সমস্যা সমাধানে এই পদক্ষেপও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পেরেছে, এমন মনে করার অবস্থা এখনও সৃষ্টি হয়নি।
২০১১ সাল থেকে শুরু হওয়া সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময়ও বিভিন্ন সময় নিরাপদ অঞ্চল, উত্তেজনা কমানোর অঞ্চল বা নো-ফ্লাই জোন প্রস্তাব বা তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু কোনো কিছুই তেমন কাজে লাগেনি। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে। সিরিয়ার বর্তমান অবস্থাই তার প্রকৃষ্ট প্রমাণ।
বস্তুত বিশ্বজুড়ে যুদ্ধাবস্থার মধ্যে যেসব জায়গায় ‘মানবিক করিডোর’ স্থাপন করা হয়েছে, সেগুলো শেষ পর্যন্ত শুধু মানবিক করিডোরে সীমাবদ্ধ রাখা যায়নি। অনিবার্যভাবেই সামরিক নানা বিষয় যুক্ত হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও যে এমনটি ঘটবে না– সে ব্যাপারে আত্মতুষ্টির অবকাশ নেই। কারণ আরাকান রাজ্যে এ ধরনের করিডোর মিয়ানমার সহজভাবে গ্রহণ করবে বলে মনে হয় না। ভূরাজনৈতিক কারণে এ অঞ্চলে আমেরিকাসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে চীনের দীর্ঘদিনের স্বার্থ-সংঘাত সুবিদিত। সঙ্গে রয়েছে ভারত ও রাশিয়ার স্বার্থও। সর্বোপরি রাখাইনে মানবিক সহায়তার করিডোরে সেখানকার বেসামরিক নাগরিকদের লাভ হবে কিনা, তারও নিশ্চয়তা নেই। 

আমরা জানি, আরাকান আর্মির রসদ সরবরাহের অন্যান্য পথ বন্ধ করে রেখেছে মিয়ানমার জান্তা সরকার। এখন বাংলাদেশ থেকে যাওয়া ‘মানবিক সহায়তা’ তারা নিজেদের বদলে বেসামরিক নাগরিকদের হাতে তুলে দেবে? আবার আরাকান আর্মির হাতেও রোহিঙ্গারা নির্যাতিত হচ্ছে এবং সাম্প্রতিক সময়ে এই জনগোষ্ঠীর আরও এক লাখ সদস্য প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
কথা হচ্ছে, আর্মেনিয়া-আজারবাইজান, বসনিয়া-হার্জেগোভিনা, কঙ্গো কিংবা সিরিয়া– কোথাও মানবিক করিডোর সফল হয়নি। সর্বশেষ ইউক্রেন-রাশিয়াতেও জাতিসংঘ প্রস্তাবিত মানবিক করিডোরের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। এখন সেটা বাংলাদেশ-মিয়ানমারের ক্ষেত্রে কী ম্যাজিক দেখাতে পারে, বোধগম্য নয়। প্রস্তাব জাতিসংঘ বা যেখান থেকেই আসুক; সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনার প্রয়োজন রয়েছে।

মোশতাক আহমেদ; কলাম লেখক; অবসরপ্রাপ্ত পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স অফিসার, জাতিসংঘ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গ্যাস খাতের পুরো বকেয়া শোধ করেছে পেট্রোবাংলা
  • আ’লীগ সরকার আমলের ৮ হাজার ৭০২ কোটি টাকার দেনা শোধ 
  • আ’লীগের রেখে যাওয়া ৮ হাজার ৭০২ কোটি টাকার দেনা শোধ 
  • আদানির সঙ্গে চুক্তি ক‌রে শুল্ক ফাঁকি
  • শিল্প খাতের উৎপাদন যেন ব্যাহত না হয়
  • কারাগারে গাঁজা সরবরাহ করতে গিয়ে নিজেই কারাগারে
  • ‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা কী
  • গণ-অভ্যুত্থানের সময় অগ্নিসংযোগ, পুলিশের জন্য কেনা হচ্ছে ২০০ জিপ
  • এলএনজি আমদানি: ব্যয় হবে ১৬২০ কোটি ৫ লাখ ২৮ হাজার টাকা
  • বিদ্যুৎ খাতে সরবরাহ বাড়ায় শিল্পে গ্যাস–সংকট