ভোজ্যতেলে কর ছাড় ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর সুপারিশ
Published: 18th, March 2025 GMT
ভোজ্যতেলের দাম সহনীয় রাখতে আমদানি পর্যায়ের অব্যাহত শুল্ক-কর ছাড়ের সুবিধা আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। মঙ্গলবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যানকে এ-সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছে সংস্থাটি।
চিঠিতে বলা হয়, আগামী ৩১ মার্চ শুল্ক-করের ছাড়ের সুবিধার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। গত ১০ মার্চ বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং সংশ্লিষ্ট আমদানিকারকরা মূসক ও শুল্ক-করাদি রেয়াত সংক্রান্ত এসআরওয়ের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য ট্যারিফ কমিশনে আবেদন করেছেন।
চিঠিতে আরও বলা হয়, কমিশন ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে গত ১৩ মার্চ পর্যন্ত সময়ে অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেলের আন্তর্জাতিক বাজারদরের প্রবণতা পর্যালোচনা করে। এ সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি মেট্রিক টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের এফওবি মূল্য ছিল এক হাজার ৫৪ দশমিক ৭ মার্কিন ডলার এবং প্রতি মেট্রিক টন আরবিডি পাম তেলের মূল্য ১ হাজার ৬৩ দশমিক ৫ মার্কিন ডলার। বর্তমানে (১৩ মার্চ) প্রতি মেট্রিক টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের এফওবি মূল্য দাঁড়ায় ৯৭৬ দশমিক ২১ মার্কিন ডলার এবং আরবিডি পাম তেলের মূল্য দাঁড়ায় এক হাজার ১২৫ মার্কিন ডলার। সয়াবিন তেলের মূল্য কিছুটা হ্রাস পেলেও আরবিডি পাম তেলের দাম বেড়েছে। ভোজ্যতেল হিসেবে দেশে আরবিডি পাম তেলের ব্যবহার প্রায় ৫৫-৬০ শতাংশ। সে হিসেবে আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের গড় মূল্য এখনও স্বাভাবিক হয়নি মর্মে ট্যারিফ কমিশনের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে।
কমিশন বলছে, সানফ্লাওয়ার ও ক্যানোলা ভোজ্যতেল হিসেবে সারাবিশ্বে জনপ্রিয়। দেশে এ দুটো তেল আমদানিতে সয়াবিন ও পাম তেল অপেক্ষা অধিক হারে (সানফ্লাওয়ারের ক্ষেত্রে মোট শুল্কায়ন মূল্য ৩২ শতাংশ ও ক্যানোলা তেলের ক্ষেত্রে মোট শুল্কায়ন মূল্য ৫৮ দশমিক ৬০ শতাংশ) শুল্কারোপ করায় স্থানীয় বাজারে পণ্য দুটোর আমদানি নিরুৎসাহিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে ক্যানোলা ও সানফ্লাওয়ার তেলের মূল্য পাম ও সয়াবিন তেলের কাছাকাছি এবং এদের ব্যবহার পরিপূরক। স্থানীয় বাজারে ভোজ্যতেলের সরবরাহ বৃদ্ধি, ভোক্তাদের স্বার্থে ও সরবরাহে বৈচিত্র্য আনতে এবং স্থানীয় বাজারে ভোজ্যতেলের মূল্যে স্থিতিশীলতা আনতে সয়াবিন ও পাম তেলের মতো সানফ্লাওয়ার ও ক্যানোলা তেল আমদানিতে একই রকম শুল্ক-করারোপ এবং পণ্য দুটোতে অনুরূপ শুল্ক-কর রেয়াতি সুবিধা অব্যাহত রাখা প্রয়োজন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ভ জ যত ল র শ ল ক কর আমদ ন দশম ক আরব ড
এছাড়াও পড়ুন:
বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ
ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ডিইপিজেড) আজ সোমবার দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দুপুরের পর ডিইপিজেডের সব কারখানায় শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। ডিইপিজেডের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ারের বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় এ সংকট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. শরীফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ইউনাইটেড পাওয়ারের ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রকল্পটিতে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এতে তারা উৎপাদন করতে না পারায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে ডিইপিজেডে প্রায় ৯০টি কারখানার এক লাখের মতো শ্রমিককে ছুটি দেওয়া হয়।
বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে উল্লেখ করে মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার যদি এটি অব্যাহত থাকে, তবে সংকট আরও বাড়বে। শ্রমিকেরা কাজ না করতে পেরে বিক্ষুব্ধ হলে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠবে। কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়া এ ধরনের ঘটনায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘তিতাস বলছে, ইউনাইটেড পাওয়ারের কাছে বিল বকেয়া রয়েছে। তারা বকেয়া পরিশোধ করেনি। এ ব্যাপারে আদালতে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছে। কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে, বেপজাকে কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ করে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ ধরনের পদক্ষেপের আগে ডিইপিজেডের গুরুত্ব বিবেচনা করে আলোচনার মধ্য দিয়ে বিষয়টির সমাধান করা উচিত ছিল।’
এ বিষয়ে ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপক মো. মমতাজ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্যাসের কোনো প্রেশার নেই। প্রেশার শূন্য। কিন্তু কেন তিতাস কর্তৃপক্ষ এমনটি করল, সে ব্যাপারে এখানকার (আশুলিয়া অঞ্চলের) তিতাসের লোকজন কিছু বলতে পারেননি। আমরা নিজেরাও বিষয়টি নিয়ে জানি না। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে, বকেয়া নিয়ে কোনো ধরনের মামলা নেই। তিতাস কেন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিল, সেটি জানা নেই।’
জানতে চাইলে তিতাসের আশুলিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু ছালেহ মুহাম্মদ খাদেমুদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাসের বিল বকেয়া থাকায় গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এটি সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্ত। দুপুরের দিকে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।