তরুণদের প্রতি আস্থা রাখার আকুতি রাউফের
Published: 19th, March 2025 GMT
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাজে পারফরম্যান্সের পর বড় পরিবর্তন এসেছে পাকিস্তান দলে। মোহাম্মদ রিজোয়ান ও বাবর আজমদের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের বাদ দিয়ে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে গিয়েছে তারা।
তবে কিউইদের বিপক্ষে পরপর দুটি ম্যাচে কোন প্রতিদ্বন্দ্বীতা না গড়েই হারতে হয় পাকিস্তানকে। তবে দেশটির গতি তারকা হারিস রাউফ আহ্বান জানালেন তরুণদের প্রতি আস্থা ও ধৈর্য রাখার। এই পেসারের বিশ্বাস নবাগতদের প্রতি বিশ্বাস রাখলে ভবিষ্যতে পুরস্কৃত হবে দলই।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ২-০ পিছিয়ে পড়েছে পাকিস্তান। এই সিরিজে আব্দুল সামাদ, হাসান নওয়াজ এবং মোহাম্মদ আলীর মতো ক্রিকেটাররা খেলেছেন প্রথম দুই ম্যাচেই। যারা আবার নিউ জিল্যান্ড সফরের মাধ্যমেই পাকিস্তান স্কোয়াডে প্রথম ডাক পেয়েছিলেন।
আরো পড়ুন:
রিজওয়ানের চুক্তি বতিলের পরামর্শ
পাকিস্তানের তিন ভেন্যুতে বাংলাদেশের ছয় ম্যাচ
এই ত্রয়ীকে সমর্থন জানিয়ে রাউফ সাংবাদিকদের বলেন, “আপনারা সমালোচনার কথা বলেন, আমি মনে করি এটা পাকিস্তানে সাধারণ হয়ে গেছে। এরা তরুণ খেলোয়াড়। আপনি পৃথিবীর যে কোনো জায়গায় যান, যে কোনো দলের দিকে তাকান, তারা তরুণদের পুরো স্বাধীনতা দেয়। যদি তারা তরুণদের সুযোগ দেয়, তবে তারা ১০-১৫টি ম্যাচের সুযোগ দেয়। এর মাধ্যমে তারা খেলোয়াড় হয়ে ওঠে।”
রাউফের মতে তরুণরা সব সময়ই প্রথমে সংগ্রাম করেন। তবে তাদের সঙ্গে কজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার থালে সে ব্যাপারটা কাটিয়ে উঠা সম্ভব। পাক্সিতানের এই দলে তরুণ এবং অভিজ্ঞতার সেই মিশ্রণটা আছে। রাউফ বলেন, “যে কেউই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আসলে, শুরুতে সংগ্রাম করে। আপনি সমালোচনার কথা বলছেন, এটা এখন একটা প্রথা হয়ে গেছে। সবাই বসে থাকে এবং পাকিস্তান দল হারলে তারা সেই নিয়ে কথা বলে।”
রাউফ আরও যোগ করেন, “সমালোচকদের মতামত আছে, কিন্তু আমরা আমাদের দল গড়ার চেষ্টা করছি। আমরা তরুণদের অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করছি, সিনিয়ররা সেখানে আছেন। আমরা সিনিয়ররা আমাদের জুনিয়রদের অনুপ্রাণিত করি, এবং তাদের পরামর্শ দেই যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সফল হতে কী কী দরকার। তারা যত দ্রুত শিখবে, তাদের জন্য তত ভালো হবে।”
প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৯ উইকেটের হারার পর, পাকিস্তান মঙ্গলবার (১৮ মার্চ, ২০২৫) বৃষ্টিতে সংক্ষিপ্ত হওয়া দ্বিতীয় ম্যাচে ৫ উইকেটে হারে। ১৫ ওভারে পাকিস্তানকে ১৩৫/৯ রানে সীমাবদ্ধ রাখার পর, ব্ল্যাক ক্যাপসরা ১১ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখেই লক্ষ্য অতিক্রম করে।
রাউফ বিশ্বাস করেন, পাকিস্তানের পেসাররা ডানেডিনে ভাল পারফর্ম করলেও ভাগ্য সহায় হয়নি, “সব খেলোয়াড়ই চেষ্টা করেছে। এখানে যে ধরনের মাঠ রয়েছে, সেখানে সাধারণত আমরা হাই স্কোরিং ম্যাচ দেখি। এমন না যে, আমরা ভালো বলিং করিনি, আমাদের ভাগ্য কিছুটা খারাপ বটে। কয়েকটি টপ এজ ছিল যেগুলো ছক্কা হয়ে গেছে, মাঠ ছোট সাথে বাতাসের কারণে বল ওভার বাউন্ডারি হয়ে গেছে। আমরা বোলিং ইউনিট হিসেবে চেষ্টা করেছি, কিন্তু আমরা চাওয়া অনুযায়ী ফল পাইনি।”
রাউফ আশাবাদী যে, নবাগতদের প্রতি আস্থা রাখা শেষ পর্যন্ত ফলপ্রসূ হবে। কারণ পাকিস্তান আন্তর্জাতিক মঞ্চে সাফল্য অর্জনের দিকে তাকিয়ে রয়েছে, যা তরুণরাই এনে দিবে। রাউফ বলেম, “এতে কোনো সন্দেহ নেই যে আমাদের ক্রিকেট ধীরে ধীরে অবনতির দিকে গেছে। তবে আমরা একটি দল হিসেবে গড়ছি এবং একটি সমন্বয় তৈরি করার চেষ্টা করছি। আমরা বিভিন্ন জিনিস চেষ্টা করছি। যখন নতুন কিছু চেষ্টা করবেন তখন কিছু পরাজয় আসবেই। কিন্তু আমরা শিখব। ভবিষ্যতে এমন এক দিন আসবে যখন আপনি পাকিস্তান দলের ভালো ক্রিকেট দেখতে পাবেন।”
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
পশ্চিমবঙ্গের চার শ্রমিককে বিদেশি বলে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর চেষ্টা ভারতের
আসাম রাজ্যের পর গোটা ভারত থেকেই বাংলাদেশি বলে ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো (পুশইন) হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তা–ই নয়, প্রমাণের অভাবে আবার তাঁদের অনেককে ফিরিয়েও আনতে হচ্ছে বলে পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত অঞ্চল থেকে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গেরই সংবাদমাধ্যম।
দক্ষিণ ও মধ্য বাংলার দুই জেলা বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদের চার পরিযায়ী শ্রমিক মহারাষ্ট্রে কাজ করতে গিয়েছিলেন। বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করে মহারাষ্ট্র পুলিশ তাঁদের ভারতের সীমান্ত নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে তুলে দেয়। এরপর বিএসএফ তাঁদের বাংলাদেশে ঠেলে দেয়। এ চারজনই আবার মুসলমান।
মুম্বাইয়ে কাজ করতে যাওয়া মুর্শিদাবাদ ও বর্ধমানের এই চার পরিযায়ী শ্রমিককে মহারাষ্ট্র পুলিশ বাংলাদেশি তকমা লাগিয়ে বিএসএফের হাতে তুলে দেয়। কোনো রকম যাচাই না করেই তাঁদের বাংলাদেশে ঠেলে দেয় বিএসএফ। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজ্য পুলিশের উদ্যোগে গতকাল রোববার বিকেলে তাঁদের উদ্ধার করা হয়। বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) কাছ থেকে ওই তিন নাগরিককে ফেরত নিয়ে বিএসএফ তাঁদের কোচবিহার জেলার পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে বলে জানা গেছে।
চারজনের মধ্যে তিনজনই মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা। তাঁরা হলেন হরিহরপাড়ার তরতিপুর গ্রামের বাসিন্দা নাজিমুদ্দিন মণ্ডল, ভগবানগোলার মহিষাস্থলি গ্রামপঞ্চায়েতের হোসেনপুর গ্রামের বাসিন্দা মেহবুব শেখ ও বেলডাঙার কাজিশাহার বাসিন্দা মিনারুল শেখ। অন্যজন পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর থানার কুলুট গ্রামের বাসিন্দা মোস্তাফা কামাল। তাঁরা প্রত্যেকেই পরিযায়ী শ্রমিক। মহারাষ্ট্রের মুম্বইয়ে তাঁরা রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। হেফাজতে নেওয়ার পাঁচ দিন পর তাঁদের উদ্ধার করা হলো বলে জানানো হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের সংবাদপত্র ‘পুবের কলম’ আজ সোমবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, তাঁদের কাছে বৈধ নথিপত্র থাকা সত্ত্বেও তাঁদের বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করে দুই প্রকৃত বাংলাদেশি নাগরিকের সঙ্গে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।পশ্চিমবঙ্গের সংবাদপত্র ‘পুবের কলম’ আজ সোমবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, তাঁদের কাছে বৈধ নথিপত্র থাকা সত্ত্বেও তাঁদের বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করে দুই প্রকৃত বাংলাদেশি নাগরিকের সঙ্গে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। দুই দিন ধরে তাঁরা কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ থেকে কিছুটা দূরে জিরো পয়েন্টে ছিলেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় মুঠোফোন থেকে ভিডিও বার্তায় ওই চার শ্রমিক তাঁদের দুর্দশার কথা জানান। তারপরেই তাঁদের ফেরানোর তৎপরতা শুরু করেন পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পরিষদের চেয়ারম্যান তথা রাজ্যসভার সংসদ সদস্য সামিরুল ইসলামসহ অন্য জনপ্রতিনিধিরা। পুলিশও বিষয়টি বিএসএএফকে জানায়।
হরিহরপাড়ার বাসিন্দা শামীম রহমান গণমাধ্যমে বলেন, ‘স্থানীয় তৃণমূলের রাজনৈতিক নেতাদের বিষয়টি জানানো হয়। তারপর তাঁদের ফেরানোর তৎপরতা শুরু হয়। তাঁরা উদ্ধার হয়ে ঘরে ফিরছেন ভেবে ভালো লাগছে।’
সূত্রের খবর, বাংলাদেশি সন্দেহে চারজনকে আটক করে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হাতে তুলে না দিয়ে ১০ জুন বিএসএফের হাতে তুলে দেয় মহারাষ্ট্র পুলিশ। তাঁদের মুম্বাই থেকে আগরতলা ও পরে কোচবিহারের মেখলিগঞ্জে পাঠানো হয়। ওই শ্রমিকদের টাকা, মুঠোফোনও কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
হরিহরপাড়ার তরতিপুর গ্রামের বাসিন্দা নাজিমুদ্দিন দুই বছর ধরে মুম্বাইয়ে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। গতকাল সকালে তাঁর স্ত্রী পিংকি বিবি হরিহরপাড়ার বিধায়ক নিয়ামত শেখের সঙ্গে দেখা করেন। বিধায়কের মাধ্যমে বৈধ নথি সংসদ সদস্য সামিরুল ইসলাম ও প্রশাসনের কর্তাদের কাছে পাঠানো হয়। তারপরই তাঁদের ঘরে ফেরানোর তৎপরতা শুরু হয়।
হরিহরপাড়ার বিধায়ক নিয়ামত শেখ বলেন, নাজিমুদ্দিন এ দেশেরই নাগরিক। তাঁর বৈধ নথি ও নাগরিকত্বের পরিচয়পত্র রয়েছে।
বিধায়ক নিয়ামত শেখ আরও বলেন, ‘তাঁর মতো আরও তিনজনকে বাংলাদেশি তকমা লাগিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দেয় কেন্দ্রের বিএসএফ। গতকাল বিকেলে তাঁরা বিএসএফের হেফাজতে আসেন। আশা করছি, খুব তাড়াতাড়ি তাঁরা ঘরে ফিরবেন।’
এ বিষয়ে মুর্শিদাবাদ পুলিশের তরফে গতকাল জানানো হয়, আটক ব্যক্তিদের কাগজপত্র রোববার বিএসএফের হাতে তুলে দেয় রাজ্য পুলিশ। এরপরে বিএসএফ যাবতীয় কাগজপত্র রাজ্য পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবে যাচাইয়ের পরে তা বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) হাতে তুলে দেয়।
এরপর বিএসএফ সবাইকে ফেরানোর ব্যবস্থা করে এবং কোচবিহার পুলিশের হাতে তুলে দেয়। মুর্শিদাবাদ ও বর্তমানের জেলা পুলিশের একটি দল ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনতে ইতিমধ্যে কোচবিহারের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। আজ সোমবার তাঁদের নিজে নিজে জেলায় ফেরানো হবে বলে জানা গেছে।
চারজনের মধ্যে তিনজনই মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা। তাঁরা হলেন হরিহরপাড়ার তরতিপুর গ্রামের বাসিন্দা নাজিমুদ্দিন মণ্ডল, ভগবানগোলার মহিষাস্থলি গ্রামপঞ্চায়েতের হোসেনপুর গ্রামের বাসিন্দা মেহবুব শেখ ও বেলডাঙার কাজিশাহার বাসিন্দা মিনারুল শেখ। অন্যজন পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর থানার কুলুট গ্রামের বাসিন্দা মোস্তাফা কামাল।বাঙালি বলে হেনস্তা পশ্চিমবঙ্গে
তবে শুধু দরিদ্র পরিযায়ী শ্রমিকই নন, পশ্চিমবঙ্গে উচ্চ ও মধ্যবিত্ত অনেকেই সম্প্রতি অভিযোগ করেছেন, তাঁদের অন্যভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে।
দিল্লির এক অধ্যাপিকা গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, গত কয়েক মাসে চারবার দক্ষিণ কলকাতার প্রধান পাসপোর্ট অফিসে গিয়েও তিনি তাঁর ২০০৭ সালের পুরোনো পাসপোর্ট নবায়ন করতে পারেননি।
এই অধ্যাপিকা বলেন, ‘আমাকে পুলিশের তরফে বলা হয়েছে, এখানে প্রচুর বাংলাদেশি ঢুকেছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। সে কারণে আমাদের যাঁদের প্রায় ২০ বছর ধরে বৈধ ভারতীয় পাসপোর্ট রয়েছে, তাঁদেরও সহজে পাসপোর্ট নবায়ন করা হচ্ছে না।’