সম্প্রতি সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আইনবহির্ভূত নানামুখী বাধা, হুমকি ও কাজে হস্তক্ষেপে সাংবাদিকতার স্বাধীনতাকে নতুন করে ঝুঁকিতে ফেলেছে বলে উদ্বেগ জানিয়েছে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে মাইক্রোবাস স্ট্যান্ড চত্বরে শ্যামনগর উপজেলা সাংবাদিক সমাজের ব্যানারে শুরু হওয়া ঘণ্টাব্যাপী সাংবাদিক সমাবেশে এই মন্তব্য করেন তারা।

সমাবেশে বক্তারা তাদের বক্তব্যে উল্লেখ করেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর একটি গোষ্ঠী আবারও বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের ন্যায় সংবাদ প্রকাশে দমন-নিপীড়নের অপচেষ্টা করছে যা সাংবাদিকতার স্বাধীনতাকে নতুন করে ঝুঁকিতে ফেলেছে। 

সাংবাদিক সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিগত আওয়ামী সরকারের শাসনামলে নিপীড়নমূলক আইন ও কর্তৃত্ববাদী আচরণসহ নানা কারণে সাংবাদিকতা বাধাগ্রস্ত ও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে স্বাধীন সাংবাদিকতার ক্ষেত্র তৈরির আশা জেগেছিল। কিন্তু আবার সাম্প্রতিক আমাদের এই উপকূলীয় অঞ্চলের কয়েকটি ঘটনা পুরনো উদ্বেগকে নতুন করে হাজির করেছে।

তা ছাড়া বিশেষ কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাদের মাধ্যমে নানারকম মনগড়া মন্তব্য করে সাংবাদিকদের বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। এ রকম পরিস্থিতি সাংবাদিক সমাজের মধ্যে সংবাদ প্রকাশে বাধাগ্রস্ত করছে, যা বর্তমান সরকারের গণমাধ্যমের স্বাধীনতার অঙ্গীকারকে চ্যালেঞ্জ করছে।

এছাড়াও বর্তমান পরিস্থিতির অবসান ঘটিয়ে সাংবাদিকের নিরাপত্তা ও কাজের উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয় এই সাংবাদিক সমাবেশ থেকে।

সাংবাদিক সমাবেশে শ্যামনগর উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি সমকালের শ্যামনগর প্রতিনিধি সামিউল মনিরের সভাপতিত্বে সমাবেশে একত্বটা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক সাংবাদিক কল্যাণ ব্যানার্জি। 

এছাড়া বক্তব্য রাখেন ডিবিসি নিউজের সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি এম.

বেলাল হুসাইন, শ্যামনগর উপজেলা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এস.এম মোস্তফা কামাল, উপজেলা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আবু কাওছার, সাবেক উপদেষ্টা শেখ আফজালুর রহমান, সাংবাদিক রনজিত বর্মন, দৈনিক সংগ্রামের শ্যামনগর প্রতিনিধি হুসাইন বিন আফতাব, সুন্দরবন প্রেস ক্লাবের সভাপতি বেলাল হোসেন, উপকূলীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি আব্দুল হালিম, সীমান্ত প্রেস ক্লাবের সভাপতি নুরুন্নবী ইসলাম ইমন, অনলাইন নিউজ ক্লাবের সাবেক সভাপতি মারুফ হোসেন মিলন, সদস্য মোমিনুর রহমান এবং রিপোর্টার্স ক্লাবের আহ্বায়ক খলিলুর রহমান প্রমুখ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ য মনগর উপজ ল সরক র র ব দ কত

এছাড়াও পড়ুন:

সাতক্ষীরা-৪ আসনের পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল

সাতক্ষীরা-৪ আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসসংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শ্যামনগরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে শ্যামনগর পৌরসভায় এসব কর্মসূচি পালিত হয়।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সাতক্ষীরার ২টি আসনসহ দেশের মোট ৩৯টি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল খবরটি ছড়িয়ে পড়লে শ্যামনগরে আলোচনা–সমালোচনা শুরু হয়। রাত সাড়ে আটটার দিকে বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে দুই শতাধিক মানুষ বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। এ সময় তাঁরা ‘নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত মানি না, মানব না’, ‘শ্যামনগর আসন ছিল, শ্যামনগর থাকবে’, ‘পুনর্গঠন সিদ্ধান্ত বাতিল কর, করতে হবে’ স্লোগান দিতে থাকেন।

পরে জেসি কমপ্লেক্স চত্বরে পথসভা করে বিক্ষোভকারীরা অবিলম্বে নির্বাচন কমিশনের আসন পুনর্বিন্যাসসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান। এ সময় বক্তব্য দেন সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান, উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সোলায়ামন কবীর, জেলা বিএনপির সদস্য জি এম লিয়াকত আলী, সাবেক চেয়ারম্যান সাদেকুর রহমান, শফিকুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

সাতক্ষীরার চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে দুটির আসন পুনর্বিন্যাস করে প্রাথমিক গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। পুনর্বিন্যাস করার আগে সাতক্ষীরা-৪ আসনটি শ্যামনগর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা ও পাশের কালীগঞ্জ উপজেলার একাংশের ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ছিল। এবার পুনর্বিন্যাস করে শ্যামনগর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা ও আশাশুনি উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন নিয়ে সাতক্ষীরা-৪ আসন গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, শ্যামনগর উপজেলার সঙ্গে আশাশুনি উপজেলার সরাসরি যোগযোগ নেই। শ্যামনগর থেকে আশাশুনি যেতে হলে কালীগঞ্জ উপজেলার ওপর দিয়ে অথবা নৌকায় নদী পার হয়ে যেতে হয়।

অন্যদিকে সাতক্ষীরা-৩ আসনে ছিল আশাশুনি উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, দেবহাটা উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও কালীগঞ্জ উপজেলার একাংশ ৪টি ইউনিয়ন। পুনর্বিন্যাস করে কালীগঞ্জ উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও দেবহাটা উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে সংসদীয় আসন গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাতক্ষীরা-৪ আসনের পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল