সৌদি আরবে গিয়ে কেন নারী গৃহকর্মীরা লাশ হয়ে ফিরছেন
Published: 19th, March 2025 GMT
কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবির আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বহির্গমন এলাকা। সপ্তাহের যেকোনো দিন সেখানে গেলে দলবেঁধে থাকা নারীদের দেখা মিলবে। একই রকমের টি-শার্ট পরে, চোখে স্বপ্ন পূরণের উচ্ছ্বাস নিয়ে সেলফি তুলছেন তাঁদের অনেকেই। নতুন চাকরিতে পাওয়া বেতনের টাকায় কে কী করবেন, তা নিয়ে আলোচনায় মশগুল তাঁদের কেউ কেউ।
কেনিয়ার এসব নারী চাকরি করতে যাচ্ছেন সৌদি আরবে। কেনিয়া সরকারের উৎসাহে এবং নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের প্রলোভনে তাঁদের এই দলবেঁধে বিদেশযাত্রা। দুই বছর সৌদি আরবে থাকবেন। গৃহকর্মীর কাজ করবেন। এরপর বেতনের টাকায় দেশে ঘরবাড়ি করবেন, সন্তানদের শিক্ষিত করবেন ও নিজেদের ভাগ্য ফেরাবেন, ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করবেন—এসবই তাঁদের প্রত্যাশা।
যদিও প্রত্যাশা আর বাস্তবতায় ঢের ফারাক। সেটা বোঝা যায় একই বিমানবন্দরের আগমন এলাকায় গেলে। সেখানে অনেক নারী শ্রমিক সৌদি আরব থেকে ফিরে আসেন স্বপ্ন হারানোর রূঢ় বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে। তাঁদের কেউ হয়তো ঠিকঠাক বেতন পাননি। কেউ–বা দিনের পর দিন অনাহারে থেকেছেন। কাউকে মারধর করা হয়েছে। আবার কেউ যৌন নির্যাতন বা ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা কফিনবন্দী হয়ে দেশে ফিরেছেন।
আফ্রিকার দেশ কেনিয়া-উগান্ডা দীর্ঘদিন ধরে অর্থনৈতিক মন্দাবস্থায় দিন পার করছে। দেশ দুটির আয়ের অন্যতম এক উৎস বিদেশে থাকা শ্রমিকদের পাঠানো বিপুল রেমিট্যান্স। বিশ্বের অনেক দেশ সৌদি আরবের কাছ থেকে শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা পাওয়ার পরই দেশটিতে শ্রমিক পাঠায়। নথিপত্র ঘেটে দেখা গেছে, কেনিয়া ও উগান্ডা সেই সুযোগ পায়নি।সৌদি আরবে গত ৫ বছরে কেনিয়ার অন্তত ২৭৪ জন শ্রমিক মারা গেছেন। বেশির ভাগই নারী। এর মধ্যে ২০২৪ সালে মারা গেছেন ৫৫ জন। এ সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনগুলো অস্পষ্ট আর পরস্পরবিরোধী। বলা হয়েছে, কেউ হয়তো ট্রমায় মারা গেছেন। কেউ–বা পুড়ে কিংবা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন। অর্থাৎ তাঁদের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। একজন নারীর মৃত্যুর কারণ লেখা হয়েছে, ‘ব্রেইন ডেড’।
শুধু কেনিয়া নয়, আফ্রিকার আরেক দেশ উগান্ডার অনেক নারী শ্রমিক সৌদি আরবে মারা গেছেন। যদিও উগান্ডার সরকার সেই সংখ্যা প্রকাশ করেনি।
প্রভাবশালীরা সম্পৃক্তসৌদি আরবে গিয়ে প্রতারিত এসব নারীর সুরক্ষায় কাজ করেন ফাবিয়ান কাউলে মুলি। তিনি কেনিয়ার পার্লামেন্টের শ্রমবিষয়ক কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান। প্রভাবশালী এই কমিটি নারী শ্রমিকদের মৃত্যুর কারণ নিয়ে তদন্ত দাবি করতে পারে। আরও ভালো সুরক্ষার জন্য সৌদি আরবের সঙ্গে আলোচনা করতে নিজ দেশের সরকারকে চাপ দিতে পারে। এমনকি প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ না হওয়া পর্যন্ত অভিবাসন কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত রাখতে আইনের খসড়া করতে পারে।
কেনিয়া ও উগান্ডার প্রায় লাখ পাঁচেক শ্রমিক এখন সৌদি আরবে কর্মরত রয়েছেন। এটা সৌদি আরবের সরকারি হিসাব। তাঁদের বেশির ভাগই নারী। তাঁরা মূলত গৃহকর্মী হিসেবে রান্না, পরিচ্ছন্নতা ও শিশুদের দেখাশোনার কাজ করেন। সাংবাদিক ও অধিকার সংগঠনগুলো বলছে, তারা দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে শ্রমিক নির্যাতনের কথা বলে আসছে। আর এ জন্য দায়ী দেশটির পুরোনো শ্রম আইন।তবে পূর্ব আফ্রিকার অন্যান্য অনেক সরকারি কর্মকর্তার মতো ফাবিয়ান কাউলে মুলির মালিকানায় সৌদি আরবে নারী শ্রমিক পাঠানোর একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কাজ করতে সৌদি আরবে যাওয়া শ্রমিকদের একজন মার্গারেট মুথেউ মুয়েনি বলেন, সৌদি নিয়োগকর্তা তাঁর পাসপোর্ট আটকে রেখেছিলেন। প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছিলেন, তাঁকে কেনিয়া থেকে ‘কিনে আনা’ হয়েছে। নিয়মিত খাবার দিতেন না।
এই পরিস্থিতিতে নিরূপায় হয়ে ফাবিয়ানের প্রতিষ্ঠানে ফোন করে সহায়তা চান মার্গারেট। তখন শ্রমিক পাঠানো ওই প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি তাঁকে বলেন, ‘আপনি সাঁতার কেটে লোহিত সাগর পার হয়ে এরপর দেশে (কেনিয়ায়) ফিরে আসতে পারেন।’
নিউইয়র্ক টাইমসের এক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, কেনিয়া, উগান্ডা আর সৌদি আরবে ব্যাপক নির্যাতনের শিকার হলেও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শ্রমিক পাঠানোর ক্ষেত্রে বিশেষ প্রণোদনার ব্যবস্থা রয়েছে। সৌদি আরবের রাজপরিবারের সদস্যরা গৃহকর্মী নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান বিনিয়োগকারী। কেনিয়া ও উগান্ডায় রাজনীতিবিদ আর তাঁদের পরিবারের সদস্যরা শ্রমিক পাঠানোর প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিক।
বর্তমানে প্রতি মাসে বেশ কয়েকবার কেনিয়ার প্রত্যন্ত এলাকাগুলো হতে অনেকে সৌদি আরব থেকে আসা কফিন বুঝে নেওয়ার জন্য রাজধানী নাইরোবিতে আসছেন। এসব কফিনে কারও পরিবারের সদস্য আছেন। কারও আছেন বন্ধু বা স্বজন। সবাই সৌদি আরবে কাজ করতে বা ভাগ্য ফেরাতে গিয়েছিলেন।অনেক সময় এসব রাজনীতিবিদের সরকারি ও ব্যবসায়িক প্রভাবের সীমারেখা অনেকটা ঝাপসা হয়ে আসে। যেমন বিদেশে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকদের সুরক্ষায় ফাবিয়ানের শ্রম কমিটির উচ্চকণ্ঠ থাকার কথা। কিন্তু অনেক সময় এই কমিটি নির্যাতনের প্রমাণ প্রকাশ্যে এলেও সেটা প্রত্যাখ্যান করেছে।
সৌদি আরবে গৃহকর্মী হিসেবে কর্মরত উগান্ডার চারজন নারী গত মাসে একটি সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠানে ভিডিও পাঠান। তাঁরা বলেন, সৌদি আরবে মাস ছয়েক ধরে চারজনই বন্দিজীবন কাটাচ্ছেন।
ভিডিওতে এক নারী বলেন, ‘ইচ্ছার বিরুদ্ধে আটক থাকতে থাকতে আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।’ ওই নারী আরও জানান, তাঁরা এমন একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সৌদি আরবে গিয়েছেন, যেটার মালিক উগান্ডার ক্ষমতাসীন দলের একজন নেতা। পরে উগান্ডার সংবাদমাধ্যম জানতে পারে, ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক দেশটির প্রেসিডেন্টের ভাই।
সৌদি আরবে বিদেশি শ্রমিকদের সুরক্ষার জন্য আইন রয়েছে। তবে অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রেই আইনের ব্যত্যয় ঘটে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ হকর ম র সরক র ক জ কর করব ন আরব র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রথম আলোর সাংবাদিককে বৈষম্যবিরোধী নেতার হুমকি, থানায় জিডি
প্রথম আলোর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নিজস্ব প্রতিবেদক আনোয়ার হোসেনকে ফেসবুকে হুমকি দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার মুখ্য সংগঠক মোত্তাসিন বিশ্বাস। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এক ফেসবুক পোস্টে এ হুমকি দেন তিনি।
এ ঘটনায় গতকাল রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন আনোয়ার হোসেন।
ফেসবুক পোস্টে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আনোয়ার হোসেনের দুটি ছবি লাল দাগ দিয়ে ক্রস চিহ্ন দেন মোত্তাসিন। ক্যাপশনে তিনি আনোয়ার হোসেনের উদ্দেশে লিখেছেন, ‘....সত্য লিখুন, না হলে আপনিও ছাড় পাবেন না। ইনকিলাব জিন্দাবাদ।’
মোত্তাসিন বিশ্বাসের পোস্টের পর মন্তব্যের ঘরে আনোয়ার হোসেনকে একাধিক আইডি থেকে মারধরের হুমকি দেওয়া হয়েছে। তবে আজ বুধবার বেলা ৩টা ১৬ মিনিটে মোত্তাসিনের আইডি থেকে পোস্টটি সরিয়ে নেওয়া হয়। ঘণ্টাখানেক পর পোস্টটি তাঁর ওয়ালে আবার দেখা যায়। এ হুমকির প্রতিবাদ জানিয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সাংবাদিকদের সংগঠনগুলোর সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ সাংবাদিক সমাজ’।
ফেসবুক পোস্টের বিষয়ে জানতে চাইলে মোত্তাসিন বিশ্বাস আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ফেসবুক পোস্টে হলুদ কথাটা লেখা ঠিক হয়নি। এটি গত শনিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরের শহীদ সাটু অডিটরিয়ামে জেলা পুলিশ আয়োজিত সুধী সমাবেশে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বক্তব্য দেওয়ার সময় বাধা দিয়ে থামিয়ে দেন জামায়াতে ইসলামীর একজন নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য। এ নিয়ে প্রথম আলোয় ‘পুলিশের সুধীসমাবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধার বক্তব্যে জামায়াত নেতার বাধা’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ খবরের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েই এমন পোস্ট করেছেন বলে জানিয়েছেন মোত্তাসিন।
তাৎক্ষণিকভাবে লিখে ফেলেছিলেন, পরে মুছে দিয়েছেন। আনোয়ার হোসেনের করা কোন সংবাদটির বিষয়ে পোস্ট করেছেন, জানতে চাইলে তিনি মুক্তিযোদ্ধাকে বাধা দেওয়ার সংবাদটির কথা জানান।
মোত্তাসিন বিশ্বাস আরও বলেন, প্রথম আলোর চাঁপাইনবাবগঞ্জের নিজস্ব প্রতিবেদক আনোয়ার হোসেন চব্বিশের আন্দোলনে তাঁদের সঙ্গেই ছিলেন। কিন্তু সংবাদটি এভাবে কেন লিখেছেন, তা জানার জন্য তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তিনি তাঁদের এড়িয়ে গেছেন। সে জন্যই তিনি ফেসবুকে লিখেছেন।
আনোয়ার হোসেন জিডিতে উল্লেখ করেছেন, স্ট্যাটাসে তাঁর দুটি ছবি ক্রস চিহ্ন দিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে। ওই পোস্টে মোত্তাসিনের অনুসারীসহ আরও অনেকে খারাপ মন্তব্য করে তাঁকে হুমকি দিয়েছেন। জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হওয়ায় জিডি করার কথা জানান তিনি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে এ ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন। এটি একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে তদন্ত করতে দিয়েছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার আহ্বায়ক আবদুর রাহিম বলেন, এই পোস্ট দেওয়ার পর রাতে তাঁরা এটি নিয়ে সভা করেছেন। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, পোস্টটি ডিলিট করা হবে।
আরও পড়ুনপুলিশের সুধীসমাবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধার বক্তব্যে জামায়াত নেতার বাধা২৭ এপ্রিল ২০২৫সাংবাদিক সমাজের নিন্দা-প্রতিবাদআনোয়ার হোসেনকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় জরুরি সভা করে ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সাংবাদিক সমাজ। বিষয়টি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের লিখিতভাবে অবহিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে গতকাল মঙ্গলবারের সভায়। অবহিত করার পরবর্তী তিন দিনের মধ্যে এ বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নিলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যাবতীয় সংবাদ বর্জন করা হবে বলেও সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের (সিটিজেএ) সভাপতি রফিকুল আলম। উপস্থিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রেসক্লাব, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রেসক্লাব, সিটি প্রেসক্লাব, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও সিটিজেএর নেতা ও সদস্যরা।
সভার পর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পরিবর্তিত বাংলাদেশে একজন পেশাদার সাংবাদিককে নিয়ে আপত্তিজনক ও হুমকিস্বরূপ বক্তব্য কোনোভাবেই কাম্য নয়। যেসব অধিকারের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান হয়, তার মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে বাক্স্বাধীনতার অধিকার। একজন পেশাদার সাংবাদিককে নিয়ে ফেসবুকে এমন পোস্ট সেই আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এটা স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর হস্তক্ষেপ, যা আমাদের উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠিত করেছে।’ অবিলম্বে মোত্তাসিন বিশ্বাস তাঁর দেওয়া পোস্টটি প্রত্যাহার করে দুঃখ প্রকাশ না করলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সাংবাদিক সমাজ সম্মিলিতভাবে কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে বিবৃতিতে।