সাবেক এমপি মৃণাল ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা
Published: 19th, March 2025 GMT
তিন কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ-সদস্য মৃণাল কান্তি দাস ও তার স্ত্রী নিলীমা দাসের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সংস্থার উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ জুলফিকার বাদী হয়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) মামলা দুটি করেন।
বুধবার (১৯ মার্চ) দুদকের মহাপরিচালক মো.
দুদক মহাপরিচালক বলেন, “মৃণাল কান্তি দাস আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১ কোটি ৫৫ লাখ ১৭ হাজার ২৩০ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জন করে তা ভোগদখলে রাখেন। তার নিজ নামীয় ৮টি ব্যাংক হিসাবে ২০১৩ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত মোট ২ কোটি ৪০ লাখ ৯৯ হাজার ৯০৬ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করে মানি লন্ডারিংওয়র সম্পৃক্ত অপরাধ করেছেন।”
মৃণাল কান্তির স্ত্রী নিলীমা রায়ের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অপর মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামি নিলীমা দাস তার স্বামী মৃণাল কান্তি দাসের সহায়তায় নিজ নামে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১ কোটি ৪৫ লাখ ২৮ হাজার ৮৪ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জন করে তা ভোগদখলে রাখেন।
এছাড়া নিলীমা দাস নিজ নামীয় ৩০টি ব্যাংক হিসাবে ২০১৩ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত মোট ১৬ কোটি ১৯ লাখ ২৭ হাজার ৬৪১ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করে মানিলন্ডারিং সম্পৃক্ত অপরাধ করেছেন।
তাই তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা; মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) (৩) ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন এবং ১৯৪৭এর ৫(২) ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়, দুর্নীতি ও ঘুষ সংঘটনের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থ বা সম্পত্তির অবৈধ উৎস গোপন বা আড়াল করার উদ্দেশে অর্থের রূপান্তর, স্থানান্তর ও হস্তান্তর করেছেন। এই মামলায় মৃণাল কান্তি দাসকেও আসামি করা হয়েছে।
ঢাকা/রতন/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
আরো পড়ুন:
নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা
সাজিদ হত্যার তদন্তে সিআইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বল্প সময়ের জন্য ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্বই তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০১০ সালে জাহাঙ্গীর ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা নেন। কিন্তু এর আড়ালে তিনি অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম করেন। কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি ও ব্যবসার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের নানা স্থান থেকে। এসব অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।
বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বা সম্পদ ক্রয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে।
অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ