ট্রাভেল পিলো মূলত একধরনের বালিশ বা কুশন, যা দেখতে অনেকটা ইংরেজি ‘সি’ বা ‘ইউ’ বর্ণের মতো। দীর্ঘ যাত্রায় ঘুম কিংবা আরামের জন্য সিটে ঘাড় এলিয়ে দেন অনেকে। কিন্তু প্রচণ্ড ঝাঁকুনি ও সিটে ঠিকমতো মাথা রাখতে না পারায় তৈরি হয় অস্বস্তি। টানা অস্বস্তি ঘাড় ও মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এমনকি পেশিতে টানও লাগে। ট্রাভেল পিলো মূলত এ ধরনের ঝুঁকি থেকে বাঁচায়। ঘাড় ও মাথাকে রাখে আরামদায়ক অবস্থানে। ফলে পেশিতে টান লাগে না। তবে ঠিকভাবে ব্যবহার করতে না পারলে এই ট্রাভেল পিলোর কারণে তৈরি হতে পারে বিভিন্ন সমস্যা।

বিভিন্ন ধরনের ট্রাভেল পিলো

ট্রাভেল পিলো ব্যবহারের আগে সঠিক ট্রাভেল পিলো বেছে নেওয়া জরুরি। বাজারে এখন বেশ কয়েক ধরনের ট্রাভেল পিলো পাওয়া যায়।

কিছু পিলো আছে, বাতাসে ফুলিয়ে ব্যবহার করা হয়। এসব সহজে বহনযোগ্য। দীর্ঘ যাত্রা শেষে লাগেজে ভাঁজ করে রাখা যায়।

মেমোরি ফোমের তৈরি কিছু পিলো আছে, যা তুলনামূলক ভারী হলেও কাঁধ ও ঘাড়ের জন্য বেশ ভালো।

৩৬০ ডিগ্রি ‘র‌্যাপ অ্যারাউন্ড পিলো’ পাওয়া যায়, যা একই সঙ্গে গলা, কাঁধ ও ঘাড়ের জন্য আরামদায়ক।

এর মধ্যে থেকে বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দসই বা উপযোগী ট্রাভেল পিলো।

আরও পড়ুনদীর্ঘ যাত্রায় ব্যায়াম১৯ ডিসেম্বর ২০১৯সঠিক ব্যবহার

ট্রাভেল পিলো কেনার আগে ঘাড়ে সঠিকভাবে সেঁটে যাচ্ছে কি না, তা দেখে নেবেন। শুরুতে ঘাড়ের মাঝবরাবর পিলো সেট করে নিন। যাতে পিলোটা ঘাড়ের দুই পাশে সমান অংশজুড়ে থাকে। খুব শক্ত করে পিলো সেট করবেন না। ঘাড় ও মাথা সহজে নড়াচড়া করার জায়গা রাখুন।

পিলো ঠিকভাবে সেট করতে না পারলে মাথা সামনের দিকে ঝুঁকে থাকবে। এতে অস্বস্তি তৈরি হবে। খুব শক্ত করে বসালে ঘাড় দ্রুত আড়ষ্ট হয়ে যাবে, ফলে ঘাড়ব্যথা হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। সুবিধা অনুযায়ী পিলো হালকা শক্ত বা নরম করে নিতে পারেন।

আরও পড়ুনবেড়াতে যাচ্ছেন? ৫-৪-৩-২-১ নিয়মে ব্যাগ গোছান  ২৮ নভেম্বর ২০২৪

পিলো ঠিক করে সেট না হলে ঘাড় একদিকে বাঁকা হয়ে থাকবে। অথবা ঘাড় সামনের দিকে ঝুঁকে থাকবে। এমন হলে ঘাড়ের পেশি দ্রুত আড়ষ্ট হয়ে যায়। এ জন্য ঘাড়ে পিলো সেট করেই ঘুমানোর পজিশন ঠিক করা দরকার। জানালার পাশে সিট থাকলে জানালায় হেলান দিয়ে ঘুমাতে পারেন। তখন জানালার দিকে পিলো সামান্য নরম করে নেবেন। এতে ঘুম ভালো হবে।

যানবাহনের আইল সিটে সিট বসলে চেষ্টা করবেন সিটে হেলান দিয়ে ঘুমানোর। তখন ঘাড়ের দুই পাশে সমান করে করে পিলো সেট করে নিতে হবে।

আপনার স্বাভাবিক ঘুমের অবস্থানের ওপর ভিত্তি করে ট্রাভেল পিলো বেছে নিতে পারেন। যদি এক পাশে মাথা দিয়ে ঘুমান, তবে আপনার জন্য র‌্যাপ অ্যারাউন্ড পিলো উপযোগী।

ট্রাভেল পিলোর যত্ন

ভ্রমণপিপাসু না হলে ট্রাভেল পিলো ব্যবহার করা হয় কালেভদ্রে। বাকি সময় জিনিসটা যেনেতনভাবে ফেলে রাখবেন না। ট্রাভেল পিলো টেকসই করতে হলে যত্নের বিকল্প নেই। ভ্রমণ থেকে বাড়ি ফিরে কাপড়ের সঙ্গে একবার পরিষ্কার করে নিন। এতে ময়লা-জীবাণু জমে থাকবে না। ভ্রমণ শেষে পিলোতে কোনো সমস্যা আছে কি না, দেখে নিন। কোনো সমস্যা হলে তা ঠিক করে নিন। মেমোরি ফোমের ট্রাভেল পিলো পানিতে পরিষ্কার করবেন না। বরং ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে নিতে পারেন। এ ছাড়া সংরক্ষণের ব্যাপারেও আলাদা নজর দিতে হবে। চেষ্টা করবেন যাতে পিলোটি ভারী কিছুর নিচে চাপা না পড়ে। ঠিকভাবে সংরক্ষণ করলে একটা পিলো অনেক দিন ব্যবহার করা যায়।

তথ্যসূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট

আরও পড়ুনগাড়িতে চড়লেই বমি পায়? জেনে নিন সমাধান১৭ মার্চ ২০২৩.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর স ট কর র জন য করব ন

এছাড়াও পড়ুন:

জব্দ করা জাটকা এতিমখানায় বিতরণ, সেই মাছ লুট করলেন আড়তদারেরা

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় জব্দ করা ৭০ কেজি জাটকা দুটি মাদ্রাসা ও এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছিল। তবে সেই মাছ লুট করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন আড়তদারের বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার আমিরাবাদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেলে মৎস্য কার্যালয়ের উদ্যোগে পরিচালিত জাটকা রক্ষার অভিযানে আমিরাবাদ ও দশানী বাজার থেকে ৭০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। অভিযান পরিচালনা করেন মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস। পরে আমিরাবাদ এলাকায় জব্দ করা জাটকা উপজেলার হাজীপুর ও ফরাজীকান্দি মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। স্থানীয় কিছু দুস্থ মানুষকেও কিছু জাটকা দেওয়া হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই জাটকা নিয়ে ওই দুই মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কমিটির লোকজন সন্ধ্যায় আমিরাবাদের বেড়িবাঁধ এলাকায় পৌঁছান। তখন আমিরাবাদ বাজারের মাছের আড়তদার আবুল প্রধান, আরিফ গাজী, সেরু প্রধানিয়া, দেলু বেপারীসহ আরও কয়েকজন তাঁদের পথরোধ করেন এবং জাটকাগুলো লুট করে নিয়ে যান।

হাজীপুর মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ও ফরাজীকান্দি মাদ্রাসার শিক্ষক মো. আল আমিন অভিযোগ করেন, মাছের ওই আড়তদারেরা তাঁদের নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে তাঁদের কাছ থেকে জাটকা লুট করে নিয়ে যান। বাধা দিয়েও কাজ হয়নি। বিষয়টি মৎস্য কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানিয়েছেন।

এ অভিযোগের বিষয়ে আবুল প্রধান, আরিফ গাজী ও সেরু প্রধানিয়ার মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। তবে দেলু ব্যাপারী মুঠোফোনে বলেন, জাটকা লুট করা তাঁদের উচিত হয়নি। ওই জাটকা আজ (বৃহস্পতিবার) তাঁরা ফেরত দেবেন। এটি তাঁদের বড় ভুল হয়েছে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস বলেন, বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। জাটকা উদ্ধারে ব্যবস্থাপনা নেওয়া হচ্ছে।

ইউএনও মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর জাটকা উদ্ধারে তিনি থানার ওসি ও মৎস্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টির তদন্ত চলছে। এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এতিমদের জাটকা লুট হওয়ার বিষয়টি খুব দুঃখজনক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ