গ্যাব্রিয়েল, গিমারেস, ভিনি, রাফিনিয়া– ক্লাবের হয়ে তাদের একেকজন প্রতি সপ্তাহেই দর্শক মাতিয়ে রাখছেন। দারুণ সব ম্যাচ উপহার দিচ্ছেন তাদের ক্লাবের হয়ে। অথচ এই তাদেরই জাতীয় দল কিনা ভুগছে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে। ব্যাপারটি ঠিক মেনে নেওয়ার মতো নয়। কিন্তু বাস্তবতটা এটাই।
লাতিন অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে ১০ দলের মধ্যে ব্রাজিলের অবস্থান এখন পাঁচে। ১২ ম্যাচে পয়েন্ট তাদের ১৮। গেল নভেম্বরের উইন্ডোতেই শেষ দুটি ম্যাচ ড্র করেছে ব্রাজিল। ঘরের মাঠে উরুগুয়ের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করাটা চাপা কষ্ট দিয়েছিল সেলেকাওদের। তবে এ বছরের প্রথম উইন্ডোতে সেই ভাগ্য বদলাতে চান ভিনিরা এবং সেটা ব্রাসিলিয়ায় গারিঞ্চার মাঠেই।
শুক্রবার বাংলাদেশ সময় সকাল ৬.
এমনিতেই কলম্বিয়ার বিপক্ষে এ পর্যন্ত মোট ৩৭ বারের মুখোমুখিতে মাত্র চারবার হেরেছে ব্রাজিল। তবে সর্বশেষ তাদের বিপক্ষে দুটি ম্যাচেই জয়শূন্য ভিনিরা। ২০২৩ সালের নভেম্বরে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে ২-১ গোলে হেরে গিয়েছিল ব্রাজিল। লুইস দিয়াজ জোড়া গোল করেছিলেন সেই ম্যাচে। কোপা আমেরিকার গ্রুপ পর্বে সর্বশেষ মুখোমুখি দেখায় অবশ্য ১-১ গোলে ড্র করেছিলেন ভিনিরা।
লাতিন এই প্রতিবেশীর সঙ্গে ম্যাচে বেশ চ্যালেঞ্জের মুখেই পড়ে থাকে সেলেকাওরা। তবে একটি ব্যাপারে তারা কখনোই কম্প্রোমাইজ করেনি। আর তাহলো, নিজেদের মাঠে ১৪ বারের দেখায় কখনোই কলম্বিয়ার কাছে হারেনি ব্রাজিল। তাই ব্রাসিলিয়ার স্তাদিও ন্যাসিওনাল মানে গারিঞ্চা স্টেডিয়ামের প্রায় ৭০ হাজার নিজেদের দর্শকের সামনে চেনা রূপেই দেখা যেতে পারে ব্রাজিলকে।
আজকের ম্যাচে অবশ্য ব্রাজিল কোচ তাঁর সেরা একাদশের অনেককেই পাচ্ছেন না। নেইমার নেই, সে তো আগেই জেনে গেছে সবাই। তবে দরিভাল আরও কিছু খেলোয়াড়কে মিস করতে পারেন এদিন। এদের মিলিতাও, ব্রিমার, দানিলো ও এদেরসন চোটের কারণেই দলের বাইরে। ব্রাজিলের জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দেখা দিতে পারেন দিয়াজ। যদিও লিভারপুলের হয়ে সপ্তাহটা তাঁর ঠিক ভালো যায়নি।
ক্রিস্টাল প্যালেসের ড্যানিয়েল মুনোজ কিন্তু দারুণ ফর্মে রয়েছেন। লিমা, রদ্রিগেজ, দুরানদের নিয়ে র্যাঙ্কিংয়ের ১২ নম্বর কলম্বিয়াও প্রস্তুত ব্রাজিলের মাঠে গিয়ে পয়েন্ট নিয়ে আসার জন্য। তাছাড়া ব্রাজিলের পরের ম্যাচই বুধবার আর্জেন্টিনার সঙ্গে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর মাঠে মুখোমুখি হওয়ার আগে কলম্বিয়ার বিপক্ষে আত্মবিশ্বাসটা তাদের বাড়িয়ে নিতে হবে বৈকি।
লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের পয়েন্ট তালিকা
দল ম্যাচ জয়/ড্র/ হার পয়েন্টস
আর্জেন্টিনা ১২ ৮/১/৩ ২৫
উরুগুয়ে ১২ ৫/৫/২ ২০
ইকুয়েডর ১২ ৬/৪/২ ১৯
কলম্বিয়া ১২ ৫/৪/৩ ১৯
ব্রাজিল ১২ ৫/৩/৪ ১৮
প্যারাগুয়ে ১২ ৪/৫/৩ ১৭
বলিভিয়া ১২ ৪/১/৭ ১৩
ভেনেজুয়েলা ১২ ২/৬/৪ ১২
চিলি ১২ ২/৩/৭ ৯
পেরু ১২ ১/৪/৭ ৭
# পয়েন্ট তালিকার প্রথম ছয়টি দল সরাসরি বিশ্বকাপের টিকিট পাবে। সপ্তম দলটির প্লেঅফ খেলে বিশ্বকাপে যাওয়ার সুযোগ থাকবে। প্রতিটি দল মোট ১৮টি করে ম্যাচ খেলবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব র জ ল ফ টবল কলম ব য় র
এছাড়াও পড়ুন:
স্তন ক্যানসার প্রাথমিক পর্যায়েই শনাক্ত করতে নিয়মিত স্ক্রিনিং জরুরি
স্তন ক্যানসারের রিস্ক ফ্যাক্টর বলতে আমরা বুঝি ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয় এমন কারণগুলো। এগুলো দুইভাবে ভাগ করা যায়। একটি হলো জেনেটিক কারণ, যেমন ‘বিআরসিএ১’ ও ‘বিআরসিএ২’ জিনে মিউটেশন থাকলে ব্রেস্ট ক্যানসারের আশঙ্কা বেড়ে যায়। আরেকটি হলো, নন-জেনেটিক কারণ। তবে প্রাথমিক পর্যায়েই ক্যানসার শনাক্ত করার জন্য নিয়মিত স্ক্রিনিং জরুরি।
‘বিশ্বমানের ক্যানসার চিকিৎসা এখন বাংলাদেশে’ শীর্ষক অনলাইন আলোচনায় কথাগুলো বলেন জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. মো. নাহিদ হোসেন। উপস্থাপনায় ছিলেন নাসিহা তাহসিন। ক্যানসার বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে এসকেএফ অনকোলজি।
এবারের আলোচনায় মেডিকেল অনকোলজি, কেমোথেরাপি, হরমোন থেরাপি ও ইমিউন থেরাপিসহ স্তন ক্যানসারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সচেতনতামূলক পরামর্শ দেন চিকিৎসক। পর্বটি গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) সরাসরি প্রচারিত হয় প্রথম আলো ডটকম এবং প্রথম আলো, এসকেএফ অনকোলজি ও এসকেএফের ফেসবুক পেজে।
ক্যানসার কীভাবে হয়স্তন ক্যানসার এবং এটি হওয়ার প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে শুরুতেই চিকিৎসকের কাছে জানতে চান উপস্থাপক। উত্তরে ডা. মো. নাহিদ হোসেন বলেন, আসলে যেকোনো ক্যানসারই হলো শরীরের কোনো সেল বা কোষের অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি। যদি সেই কোষের গ্রোথ অনিয়ন্ত্রিতভাবে হয়, সেটাই ক্যানসার। আর স্তন ক্যানসারও একইভাবে ঘটে—যখন ব্রেস্টের সেলগুলোর আনকন্ট্রোলড গ্রোথ হয়।
স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি কাদেরডা. মো. নাহিদ হোসেন বলেন, সাধারণত দুই ধরনের ব্রেস্ট ক্যানসার বেশি দেখা যায়—ডাক্টাল কারসিনোমা, যা দুধ বহনকারী ডাক্টে ক্যানসার হলে। অন্যটি লোবুলার কারসিনোমা, যা ব্রেস্টের দুধ উৎপাদনকারী গ্ল্যান্ডে ক্যানসার হলে।
নন–মডিফায়েবল কারণগুলো সম্পর্কে ডা. মো. নাহিদ হোসেন বলেন, ‘এগুলো হলো, মেয়েদের অল্প বয়সে অর্থাৎ ১২ বছরের আগে মাসিক শুরু হওয়া, দেরিতে অর্থাৎ ৫৫ বছরের পরে মেনোপজ হওয়া, পরিবারে ব্রেস্ট ক্যানসারের ইতিহাস থাকা। আর মডিফায়েবল কারণগুলো হলো স্থূলতা বা মোটা হওয়া, হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি নেওয়া, দেরিতে অর্থাৎ ৩০ বছর পর সন্তান নেওয়া বা সন্তান না নেওয়া, সন্তানকে বুকের দুধ না খাওয়ানো, অ্যালকোহল গ্রহণ এবং উচ্চ ফ্যাটযুক্ত খাবার খাওয়া। এগুলো এড়িয়ে চললে স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব।’
প্রসঙ্গক্রমে উপস্থাপক জানান, এসকেএফ অনকোলজি বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র ইউজিএমপি ও অ্যানভিজা ব্রাজিল অনুমোদিত প্ল্যান্ট। ফলে এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রায় ২৭টি দেশে এবং দক্ষিণ আমেরিকায় রপ্তানি হচ্ছে। এ ছাড়া এসকেএফ অনকোলজির সারা দেশে রয়েছে ৩৩টি সেবাকেন্দ্র, যার মাধ্যমে ক্যানসারের ওষুধ পাওয়া যায়। শুধু তা–ই নয়, ঘরে বসে অর্ডার করলেই বাংলাদেশের যেকোনো প্রান্তে সহজেই পৌঁছে দেওয়া হয়।
সচেতনতা জরুরিনন-মডিফায়েবল রিস্ক ফ্যাক্টরের মধ্যে জিনগত ফ্যাক্টর কীভাবে ভূমিকা রাখে? সে ক্ষেত্রে স্ক্রিনিং কখন থেকে শুরু করা উচিত? এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. মো. নাহিদ হোসেন বলেন, স্ক্রিনিং আসলে করা হয় স্বাস্থ্যবান ব্যক্তিদের জন্য, যাদের এখনো ক্যানসার হয়নি—যেন প্রাথমিক পর্যায়েই শনাক্ত করা যায়। স্ক্রিনিংয়ের কিছু ধাপ রয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে ব্রেস্ট সেলফ এক্সামিনেশন, এটি মাসিক শেষ হওয়ার ৩ থেকে ৫ দিন পর প্রতি মাসে নিজে নিজে ব্রেস্ট পরীক্ষা করা উচিত। তিন আঙুলের সাহায্যে ব্রেস্ট ও বগল ভালোভাবে পরীক্ষা করে দেখা উচিত কোনো গোটা বা স্রাব আছে কি না। আরেকটি হলো, স্ক্রিনিং মেমোগ্রাম। তিনি বলেন, মেমোগ্রাম ৪০ বছর বয়সের পর থেকে প্রতিবছর করা উচিত। যদি কারও পরিবারে ক্যানসারের ইতিহাস থাকে, যেমন মা বা বোনের ব্রেস্ট বা ওভারি ক্যানসার ছিল—তাহলে স্ক্রিনিং আরও আগে থেকে শুরু করা উচিত। আর হাই–রিস্ক গ্রুপের জন্য ‘এমআরআই’ করা যেতে পারে। এই স্ক্রিনিং প্রক্রিয়াগুলো ক্যানসারকে প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করতে সহায়তা করে।
বাংলাদেশে স্তন ক্যানসারের বর্তমান পরিস্থিতি, রোগনির্ণয়, ডায়াগনোসিস ও চিকিৎসা-সুবিধা বিষয়ে পরামর্শ দেন ডা. মো. নাহিদ হোসেন