সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বন্যাতলা এলাকার ৭/২ নম্বর পোল্ডারের উপকূল রক্ষা বাঁধে ধসের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার রাতে আকস্মিকভাবে সেখানকার ১৫০ ফুটেরও বেশি জায়গাজুড়ে বাঁধ পাশের খোলপেটুয়া নদীতে বিলীন হলে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়। 
ধসে যাওয়া অংশে মাত্র চার থেকে পাঁচ ফুট বাঁধ অবশিষ্ট থাকায় এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। খবর পেয়ে পাউবো কর্তৃপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে শ্যামনগরের ইউএনও রনী খাতুন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল রিফাত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ধসে যাওয়া বাঁধের পাশে বসবাসকারী নুরুল ইসলাম জানান, প্রায় এক সপ্তাহ আগে বন্যাতলা এলাকার দুটি অংশের বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। কিন্তু শুরু থেকে কোনো ধরনের প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় বুধবার রাতে আকস্মিকভাবে দেড়শ ফুটেরও বেশি জায়গা নদীতে বিলীন হয়ে যায়। তিনি আরও জানান, সাত দিনের অব্যাহত ধসের কারণে ভাঙন একেবারে বাঁধের শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছে। ভাঙন ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।  
স্থানীয় পদ্মপুকুর ইউপি চেয়ারম্যান আমজাদুল ইসলামের ভাষ্য– ভাঙনের শুরু থেকে পাউবোর পক্ষ থেকে কোনো তদারকি ছিল না। বারবার বলা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ না নেওয়ায় ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ভাঙনের বিস্তৃতি রোধে শুরু থেকে গ্রামবাসী গাছের ডালপালা ও বাঁশ-কঞ্চির ‘বোঝা’ বেঁধে রক্ষার চেষ্টা চালিয়েছিল। দ্রুত ব্যবস্থা নিতে না পারলে যে কোনো মুহূর্তে সম্পূর্ণ বাঁধ ধসে গোটা ইউনিয়ন প্লাবিত হতে পারে।
পাউবোর সংশ্লিষ্ট পোল্ডারের দায়িত্বে থাকা সেকশন অফিসার সুমন আলী জানান, উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছেন। নির্দেশনা পাওয়া সাপেক্ষে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে। 
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রনী খাতুন জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ভাঙনকবলিত অংশে জিও ব্যাগ ও সিমেন্টের ব্লক ফেলার প্রস্তাবনা এসেছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় জরুরি ভিত্তিতে করণীয় নির্ধারণে পাউবোর সাব-ডিভিশন ২-কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাব-ডিভিশন ২-এর সহকারী প্রকৌশলী রাশিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থলের ভিডিও এবং ছবি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হয়েছে। ভাঙনের পরিস্থিতি বর্ণনা করে বিষয়ের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। নির্দেশনা পাওয়া মাত্রই কাজ শুরু করা হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপক ল

এছাড়াও পড়ুন:

সাতক্ষীরায় বেড়িবাঁধে বড় ফাটল, ঝুঁকিতে ১৫ গ্রামের মানুষ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন চুনকুড়ি নদীর বেড়িবাঁধে বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে বাঁধ সংলগ্ন মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের সিংহড়তলী ও চুনকুড়ি গ্রামসহ পার্শ্ববর্তী ১০ থেকে ১৫টি গ্রামের হাজারো মানুষ। 

রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নদীতে জোয়ার বৃদ্ধি পেলে হঠাৎ করে ফাটল ধরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের একাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এ ঘটনায় চুনকুড়ি নদী তীরবর্তী এলাকার গ্রামবাসীর মধ্যে ভাঙন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। দ্রুত তারা ভাঙনকবলিত বেড়িবাঁধ মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, শনিবার সকালে হরিনগর বাজারের কাছে সিংহরতলী গ্রামের চুলকুড়ি নদীর বেড়িবাঁধের ৩০-৩৫ মিটার এলাকাজুড়ে বড় ফাটল দেখা দেয়। এ সময় স্থানীয় এলাকাবাসীর সহায়তায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা বেড়িবাঁধের ফাটল পয়েন্টে আধুনিক মানের জিও টিউব দিয়ে বাঁধের ভাঙন প্রতিরোধে কাজ শুরু করেন।

কিন্তু এ ঘটনার একদিন পরেই গতকাল দুপুরের জোয়ারের সময় নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে হঠাৎ করে ফাটল দেখা দেওয়া বাঁধের একাংশ নদীতে বিলীন হয়ে যায়। দ্রুত এই ভাঙনপয়েন্ট সংস্কার করতে না পারলে নদীর প্রবল স্রোতে সম্পূর্ণ বাঁধ ভেঙে মুন্সিগঞ্জ ও হরিনগর ইউনিয়নসহ আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়তে পারে। ক্ষতি হতে পারে বসতবাড়ি, চিংড়িঘের, মিঠা পানির পুকুর, ফসলি জমি, রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা।

স্থানীয় বাসিন্দা আইয়ুব হোসেন বলেন, বাঁধের ফাটলের একাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় ঝুঁকি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। নদীতে এখনো জোয়ার বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্রোতের টানে বাঁধের বাকি অংশ যদি ভেঙে যায়; তাহলে শ্যামনগর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে পরবে।

তিনি আরও বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড চেষ্টা করছে বাঁধটি সংস্কার করার জন্য। কিন্তু জানি না কয়দিন লাগবে। বাঁধটি দ্রুত সংস্কারের জন্য তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

এদিকে উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধে ফাটলের খবর শুনে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. রনী খাতুন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল রিফাত, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেকশন অফিসার (এসও) প্রিন্স রেজাসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সিংহড়তলী এলাকার ভাঙনকবলিত বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করেছেন।

সাতক্ষীরা পাউবো-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী সালাউদ্দীন সানি বলেন, চুনকুড়ি নদীর বেড়িবাঁধে গত শনিবার ৩০-৩৫ মিটার জায়গাজুড়ে ফাটল শুরু হয়। এরপর থেকেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। হঠাৎ করে গতকাল রোববার সকালে বাঁধের একাংশ ভেঙে নদীতে দেবে যায়। ফলে ৩০ মিটার এলাকা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। যাতে বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকতে না পারে সেজন্য জিও টিউব দিয়ে ৫০/৬০ মিটার বিকল্প রিং বাঁধ দেওয়ার কাজ চলছে। আশা করছি, খুব দ্রুতই কাজ শেষ হবে। এছাড়াও শ্যামনগরের কয়েকটি বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে, সেগুলোর কাজও শুরু করা হবে।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের হরিনগর বাজারের কাছে সিংহরতলী গ্রামে চুনকুড়ি নদীর উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধে ফাটল দেখা দেয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাতক্ষীরায় পৃথক দুর্ঘটনায় নিহত ২
  • উপকূল রক্ষা বাঁধে ভয়াবহ ধস, প্লাবনের আশঙ্কা সুন্দরবন তীরবর্তী জনপদে
  • সাতক্ষীরায় বেড়িবাঁধে বড় ফাটল, ঝুঁকিতে ১৫ গ্রামের মানুষ