স্বল্প আয়ের মানুষের হিসাবে এখন ৪৬৮৫ কোটি টাকা
Published: 21st, March 2025 GMT
কম টাকায় খোলা বিশেষ অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেড়ে এখন তিন কোটি ছুঁই ছুঁই। এসব হিসাবে জমার পরিমাণও বেড়েছে। গত ডিসেম্বর শেষে কৃষক, মুক্তিযোদ্ধা, গার্মেন্ট শ্রমিক কিংবা অতি দরিদ্রদের হিসাবে জমার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জমা রয়েছে সামাজিক সুরক্ষার আওতায় ভাতাভোগীদের হিসাবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এমন চিত্র উঠে এসেছে।
২০২৬ সালের মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক সবার অন্তত একটি করে অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য ২০২২ সাল থেকে পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে সরকার। যদিও কম টাকার এসব অ্যাকাউন্ট খোলার উদ্যোগ শুরু হয় ২০১০ সালে। উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যেতে জাতীয় আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কৌশল (এনএফআইএস) নিয়ে এগোচ্ছে সরকার। এই কৌশল বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সবার অ্যাকাউন্টের জন্য আর্থিক সেবা সহজীকরণ ও আর্থিক শিক্ষার প্রসারে বিভিন্ন প্রচারণা চালানো হচ্ছে। বর্তমানে একই ব্যক্তির একাধিক অ্যাকাউন্টের কারণে দেশের মোট জনসংখ্যার চেয়ে অ্যাকাউন্ট সংখ্যা অনেক বেশি। আসলে কত শতাংশ প্রাপ্তবয়স্কের অ্যাকাউন্ট আছে, তা চিহ্নিত করতে একটি সেন্ট্রাল ডেটাবেজ করার কাজ চলছে।
সবাইকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির আওতায় আনতে ড.
বিশেষ এ অ্যাকাউন্ট সচল রাখার জন্য ব্যাংকগুলোর প্রতি বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়ে রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আবার কৃষক ভর্তুকিসহ বিভিন্ন ধরনের সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির ভাতা এসব হিসাবের মাধ্যমে বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ ধরনের অ্যাকাউন্টে কোনো লেনদেন না হলেও কিংবা কোনো টাকা জমা না থাকলেও, হিসাব চালু রাখার বিধান রয়েছে। অন্যসব অ্যাকাউন্টের মতো এখানে সার্ভিসচার্জ কাটার সুযোগ নেই। আবার কৃষকের হিসাব কার্যকর করতে ৭৫০ কোটি টাকার কম সুদের একটি পুনঃঅর্থায়ন কর্মসূচি চলমান আছে।
কাদের কত অ্যাকাউন্ট, জমার শীর্ষে কারা
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সব মিলিয়ে কম টাকায় খোলা অ্যাকাউন্ট ২ কোটি ৮১ লাখ ছাড়িয়েছে। এক বছর আগে যা ছিল ২ কোটি ৭০ লাখ। এক বছরের ব্যবধানে অ্যাকাউন্ট বেড়েছে ১১ লাখের বেশি। কম টাকার এসব হিসাবের মধ্যে এখন সবচেয়ে বেশি অ্যাকাউন্ট রয়েছে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় ভাতাভোগী এবং কৃষকদের। এই দুটি ক্ষেত্রেই অ্যাকাউন্ট সংখ্যা এক কোটির ঘর পেরিয়েছে। সর্বোচ্চ জমা সামাজিক সুরক্ষায় ভাতাভোগীদের। গত ডিসেম্বর শেষে এ ধরনের অ্যাকাউন্ট দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৪ লাখ ৪০ হাজার। এক বছর আগে যা ছিল ৯৮ লাখ ৬৬ হাজার। আর জমার পরিমাণ প্রায় ৯ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা। এক বছর আগে ছিল ১ হাজার ৫০৩ কোটি টাকা।
১০ টাকার বিনিময়ে কৃষকের খোলা অ্যাকাউন্ট দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৩ লাখ ৯১ হাজার। এক বছর আগে যা ছিল ১ কোটি ৩ লাখ ৬৩ হাজার। এক বছরের ব্যবধানে এ ধরনের হিসাবে জমার পরিমাণ ২৩ শতাংশের বেশি বেড়ে গত ডিসেম্বর শেষে ৭৩১ কোটি টাকা হয়েছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে যা ছিল ৫৯২ কোটি টাকা। গত বছর অতিদরিদ্রদের হিসাবে জমা বাড়লেও কমেছে হিসাব সংখ্যা। গত ডিসেম্বর শেষে এ ধরনের হিসাব সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৩ লাখ ২৬ হাজার। এক বছর আগে যা ছিল ৩৪ লাখ ৮৪ হাজার। এ ধরনের হিসাবে জমার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৫ শতাংশ বেড়ে গত ডিসেম্বর শেষে ২৪৯ কোটি টাকা হয়েছে।
গত বছর মুক্তিযোদ্ধাদের অ্যাকাউন্ট বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। গত ডিসেম্বরে এ ধরনের অ্যাকাউন্ট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪ লাখ ৯ হাজার। এক বছর আগের তুলনায় যা সাড়ে ১৭ শতাংশ বেশি। আর জমার পরিমাণ প্রায় ৬ শতাংশ বেড়ে ৯১৩ কোটি টাকায় ঠেকেছে।
অ্যাকাউন্ট বৃদ্ধির হারে এর পরে রয়েছে তৈরি প্রশাক শিল্প শ্রমিক। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত এ ধরনের হিসাব সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ৩৭ হাজার। এক বছর আগে যা ছিল ৯ লাখ ৩৯ হাজার। এক বছরে বেড়েছে ১০ দশমিক ৩৮ শতাংশ। জমার হার বেড়েছে আরও বেশি। গত ডিসেম্বর শেষে এ ধরনের অ্যাকাউন্টে জমার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৬৭ কোটি টাকা। এক বছর আগের তুলনায় যা ৩০ দশমিক ৪৭ শতাংশ বেশি।
এ ছাড়া ‘অন্যান্য’ খাতের অ্যাকাউন্ট সবচেয়ে বেশি বাড়লেও জমা কমেছে। গত ডিসেম্বর শেষে এ ধরনের হিসাব ২৭ শতাংশ বেড়ে ২৫ লাখ ২১ হাজারে ঠেকেছে। আর এক বছরে জমার পরিমাণ সাড়ে ২৭ শতাংশ কমে ৭৯০ কোটি টাকায় নেমেছে।
অ্যাকাউন্ট খোলার শীর্ষে কারা
বিশেষ অ্যাকাউন্টের অর্ধেকের বেশি রয়েছে রাষ্ট্রীয় মালিকানার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে। জমার বড় অংশও এসব ব্যাংকে। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট হিসাবের মধ্যে রাষ্ট্রীয় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে আছে ১ কোটি ৪৬ লাখ। যেখানে জমা আছে ৩ হাজার ২ কোটি টাকা। বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর ৭০ লাখ ৪৪ হাজার অ্যাকাউন্টে রয়েছে ১৬০ কোটি টাকা। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ৬৫ লাখ ৬ হাজার হিসাবে জমা রয়েছে ১ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। আর বিদেশি ব্যাংকের ৬৯টি অ্যাকাউন্টে আছে মাত্র ৬ লাখ টাকা।
অ্যাকাউন্ট খোলার শীর্ষ পাঁচ ব্যাংকের তালিকা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অ্যাকাউন্ট রয়েছে সোনালী ব্যাংকে। মোট অ্যাকাউন্টের ২৪ শতাংশের বেশি এই ব্যাংকে। পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে ১৭ শতাংশ, অগ্রণীতে ১৫ শতাংশ, ব্যাংক এশিয়া ১৩ শতাংশ এবং জনতা ব্যাংকে রয়েছে ১০ শতাংশ হিসাব।
এসবের বাইরে ১০০ টাকার বিনিময়ে স্কুল ব্যাংকিং খোলার সুযোগ রয়েছে। স্কুলের পরিচায়পত্র ও জন্মনিবন্ধন কার্ডের কপি দিয়ে যে কোনো স্কুল শিক্ষার্থী খুলতে পারে এই হিসাব। বর্তমানে ৪৪ লাখ ২৮ হাজারের বেশি এ ধরনের হিসাব রয়েছে। যেখানে জমা রয়েছে ২ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা। অবশ্য স্কুল ব্যাংকিং খোলায় এগিয়ে আছে বেসরকারি ব্যাংকগুলো। এসব ব্যাংকের ৩১ লাখ ১৮ হাজার হিসাবে জমা আছে ১ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা। রাষ্ট্রীয় বাণিজ্যিক ব্যাংকের ১১ লাখ ২১ হাজার অ্যাকাউন্টে জমা রয়েছে ৪০৫ কোটি টাকা। বিশেষায়িত ব্যাংকের এক লাখ ৮৬ হাজার অ্যাকাউন্টে রয়েছে ৪৯ কোটি টাকা। আর বিদেশি ব্যাংকের মাত্র ২ হাজার ৭০৬টি স্কুল ব্যাংকিং হিসাব রয়েছে। যেখানে জমার পরিমাণ ১০ কোটি টাকা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এ ধরন র হ স ব কম ট ক আর থ ক সবচ য় সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
দুনিয়ায় প্রত্যেক মুসলিমকে যেসব পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে
জীবন একটি পরীক্ষার ময়দান, যেখানে আমরা বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও কষ্টের মুখোমুখি হই। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা, সম্পদের ক্ষতি, জীবন ও ফসলের ক্ষতি দিয়ে। আর যারা ধৈর্য ধরে, তাদের সুসংবাদ দাও।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৫)
এই পরীক্ষাগুলো প্রায়ই আমাদের হতাশ বা বিমর্ষ করে তুলতে পারে, কিন্তু ইসলাম আমাদের শেখায় যে এই কষ্টগুলো আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যম এবং পরকালে চিরস্থায়ী সুখের পথ প্রশস্ত করে। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘এই দুনিয়ার জীবন তো কেবল ক্ষণস্থায়ী ভোগ, আর পরকালই হলো চিরস্থায়ী আবাস।’ (সুরা গাফির, আয়াত: ৩৯)
পরীক্ষার উদ্দেশ্যইসলামে পরীক্ষা বা কষ্টকে আল্লাহর রহমতের অংশ হিসেবে দেখা হয়। এগুলো আমাদের পাপ থেকে মুক্তি, আল্লাহর ওপর নির্ভরতা বৃদ্ধি, নিজেকে নম্র করা এবং তাঁর নৈকট্য লাভের মাধ্যম।
আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা, সম্পদের ক্ষতি, জীবন ও ফসলের ক্ষতি দিয়ে। আর যারা ধৈর্য ধরে, তাদের সুসংবাদ দাও।সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৫পরীক্ষা আমাদের ধৈর্য ও বিশ্বাস যাচাই করে এবং এর মাধ্যমে আমরা আল্লাহর কাছে উচ্চ মর্যাদা লাভ করতে পারি। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যখনই তুমি আল্লাহর জন্য কিছু ত্যাগ করবে, আল্লাহ তা তোমার জন্য আরও উত্তম কিছু দিয়ে প্রতিস্থাপন করবেন।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ২৩,০৭৪)
আরও পড়ুনযে ৪টি পরীক্ষা নবীজি (সা.)–এর জীবনকে দৃঢ়তা দিয়েছে২২ জুলাই ২০২৫পরীক্ষার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্যদুনিয়ার জীবন সাময়িক এবং এর কষ্টগুলো ক্ষণস্থায়ী। আমরা প্রায়ই দুনিয়ার সমস্যায়, যেমন অর্থনৈতিক সংকট, সম্পর্কের জটিলতা বা সামাজিক চাপ, এতটাই মগ্ন হয়ে পড়ি যে আমাদের মূল উদ্দেশ্য ভুলে যাই। পবিত্র কোরআন আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, ‘কিন্তু যে ব্যক্তি তার প্রভুর সামনে দাঁড়ানোর ভয় করেছে এবং নিজের নফসকে অবৈধ কামনা থেকে বিরত রেখেছে, তার জন্য জান্নাতই হবে আশ্রয়।’ (সুরা নাজিয়াত, আয়াত: ৪০–৪১)
ইবন কাইয়্যিম (রহ.) বলেছেন, ‘যদি আল্লাহ তাঁর বান্দার জন্য পর্দা তুলে দিতেন এবং তাকে দেখাতেন, কীভাবে তিনি তার জন্য সবকিছু পরিচালনা করেন, তবে তার হৃদয় আল্লাহর প্রতি ভালোবাসায় গলে যেত এবং কৃতজ্ঞতায় টুকরা টুকরা হয়ে যেত। তাই যদি দুনিয়ার কষ্ট তোমাকে ক্লান্ত করে, তবে দুঃখ করো না। হয়তো আল্লাহ তোমার দোয়ার কণ্ঠ শুনতে চান।’ (ইবন কাইয়্যিম, আল–ফাওয়ায়িদ, পৃষ্ঠা ১২৮, বৈরুত: দারুল কুতুব আল–ইলমিয়্যাহ, ১৯৯৬)
পরীক্ষা আমাদের ধৈর্য ও বিশ্বাস যাচাই করে এবং এর মাধ্যমে আমরা আল্লাহর কাছে উচ্চ মর্যাদা লাভ করতে পারি।পরীক্ষা আমাদের আল্লাহর কাছাকাছি নিয়ে যায়। এটি আমাদের নম্র করে, আমাদের পাপমুক্তি ঘটায় এবং আল্লাহর ওপর নির্ভরতা বাড়ায়। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘দুনিয়ায় যে ব্যক্তি সবচেয়ে বেশি কষ্ট ও পরীক্ষার মধ্য দিয়ে গেছে, তাকে জান্নাতে একবার ডুবিয়ে দেওয়া হবে এবং জিজ্ঞাসা করা হবে, ‘হে আদম সন্তান, তুমি কি কখনো কোনো কষ্ট দেখেছিলে? তুমি কি কখনো দুঃখ অনুভব করেছিলে?’ সে বলবে, ‘না, হে আমার রব! আমি কখনো কোনো কষ্ট দেখিনি, কখনো কোনো দুঃখ অনুভব করিনি।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস নম্বর–২৮০৭)
আরও পড়ুনবালকের ঈমানের পরীক্ষা ও বাদশাহের নির্মম পরিণতি০৪ মে ২০২৪আল্লাহর পরিকল্পনায় ভরসাপরীক্ষার সময় মনে রাখতে হবে যে আল্লাহর পরিকল্পনা আমাদের পরিকল্পনার চেয়ে উত্তম। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘হয়তো তোমরা এমন কিছু অপছন্দ করো, যা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর এমন কিছু পছন্দ করো, যা তোমাদের জন্য ক্ষতিকর। আল্লাহ জানেন, আর তোমরা জানো না।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২১৬)
এই আয়াত আমাদের শেখায় যে কষ্টের পেছনে আল্লাহর একটি বৃহত্তর উদ্দেশ্য রয়েছে।
হয়তো তোমরা এমন কিছু অপছন্দ করো, যা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর এমন কিছু পছন্দ করো, যা তোমাদের জন্য ক্ষতিকর। আল্লাহ জানেন, আর তোমরা জানো না।সুরা বাকারা, আয়াত: ২১৬আরেকটি হাদিসে বলা হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি পরকালের জন্য চিন্তিত থাকে, আল্লাহ তার বিষয়গুলো সহজ করে দেবেন, তার হৃদয়ে তৃপ্তি দেবেন এবং দুনিয়া তার কাছে আসবে, যদিও সে তা অপছন্দ করে।’ (ইবন মাজাহ, হাদিস: ৪১০৫)
পরীক্ষায় ধৈর্য ও দোয়াপরীক্ষার সময় ধৈর্য ধরা এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর ভরসা করে, তিনি তার জন্য যথেষ্ট।’ (সুরা তালাক, আয়াত: ৩) দোয়ার মাধ্যমে আমরা আমাদের হৃদয়ের কথা আল্লাহর কাছে প্রকাশ করি এবং তাঁর রহমতের জন্য আশ্রয় প্রার্থনা করি।
ইবন কাইয়্যিম (রহ.) বলেছেন, ‘যদি দুনিয়ার কষ্ট তোমাকে ক্লান্ত করে, তবে সিজদায় তোমার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করো এবং জেনে রাখো, আল্লাহ কখনো ভোলেন না।’ (আল–ফাওয়ায়িদ, পৃষ্ঠা ১৩০, বৈরুত: দারুল কুতুব আল–ইলমিয়্যাহ, ১৯৯৬)
আমরা যদি আল্লাহকে আমাদের হৃদয়ের কেন্দ্রে রাখি, তবে কোনো পরীক্ষাই আমাদের ভেঙে দিতে পারবে না।জীবনের পরীক্ষাগুলো আমাদের আল্লাহর কাছাকাছি নিয়ে যায়, আমাদের হৃদয়কে বিশুদ্ধ করে এবং পরকালে জান্নাত লাভের পথ প্রশস্ত করে। দুনিয়ার কষ্ট ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু আল্লাহর ভালোবাসা ও রহমত চিরস্থায়ী।
আমরা যদি আল্লাহকে আমাদের হৃদয়ের কেন্দ্রে রাখি, তবে কোনো পরীক্ষাই আমাদের ভেঙে দিতে পারবে না; বরং নবীজি (সা.)–এর শিক্ষা ও ধৈর্য, দোয়া এবং আল্লাহর ওপর ভরসার মাধ্যমে আমরা জীবনের প্রতিটি পরীক্ষায় বিজয়ী হতে পারব।
আরও পড়ুনত্যাগের পরীক্ষা, সফলতার উদ্যাপন০১ আগস্ট ২০২০