নির্বাচনের আকাশে কালো মেঘ দেখা দিয়েছে: মান্না
Published: 22nd, March 2025 GMT
নির্বাচনের আকাশে একটা কালো মেঘ দেখা দিয়েছে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, যাঁরা জীবন দিয়ে রক্ত দিয়ে সংগ্রাম করে এই দেশের ফ্যাসিবাদকে উৎখাত করেছেন, তাঁদের ডেকে নিয়ে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগকে নির্বাচন করার সুযোগ দিতে হবে, তাদের সঙ্গে আসন সমঝোতা করতে।
আজ শনিবার রাজধানীর মালিবাগে একটি রেস্তোরাঁয় ১২–দলীয় জোটের ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মান্না এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ এখন আবার বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক হয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমার খুবই অবাক লাগে, আওয়ামী লীগের সাহস হয়নি বাংলাদেশের রাজনীতিতে অনুপ্রবেশ করে। তারা রাজনীতির তৎপরতা শুরু করেনি। তারা সমাবেশ করবে, মিছিল করবে সে শক্তি নেই। কিন্তু আমাদের এখানে কিছু মানুষ তাদের নিয়ে এত কথাবার্তা বলা শুরু করেছে, যা নিয়ে পত্রিকা নিউজ করছে। তাদের তৎপরতায় আওয়ামী লীগ এখন আবার বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক হয়ে যাচ্ছে।’
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি আরও বলেন, ‘প্রথমত বাংলাদেশ সরকারের কাছে বলতে চাই, ব্যক্তিগতভাবে আমি ও আমার দল খুবই উদ্বিগ্ন। সরকারের উচিত, যাঁর যেটা বলা উচিত নয়, যিনি যেটা বলতে পারেন না, তাঁর কথা সম্পর্কে সরকারের একটা ব্যাখ্যা দিয়ে দেওয়া। আইএসপিআরের কথা বলা উচিত। এমন করে অনধিকার চর্চা করার কোনো দরকার নেই।’
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ করে মান্না বলেন, ‘আপনি যাকেই সুযোগ দেবেন বা অন্তর্ভুক্ত করবেন, রাজনীতির মধ্যে বা গণতন্ত্রের মধ্যে, তার মধ্যে যদি কোনো গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ না থাকে, তাহলে পুরো গণতন্ত্র বিপর্যস্ত হয়ে যেতে পারে। শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিপর্যস্ত হতে পারে, বিশৃঙ্খলা হতে পারে।’
সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি আরও বলেন, ‘খুবই স্পষ্ট বলি, সরকার যখন মনে করছে, তাদেরকে রাজনীতিতে ব্যান (নিষিদ্ধ) করবে না, তার মানে রাজনীতি করার অনুমতি দেবে। তাহলে আপনাদের গ্যারান্টি দিতে হবে, তারা আমাদের গণতন্ত্রে অনুপ্রবেশ করে গণতন্ত্রের পুরো বাগানটাই নষ্ট করে দেবে না। সরকার যদি দায়িত্ব নিতে পারে, তাহলে বলবে।’
পৃথিবীতে অনেক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার উদাহরণ রয়েছে উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বাংলাদেশেও এই উদাহরণ আছে। তারপরও তাঁর দল এ ধরনের প্রস্তাব দিচ্ছে না। কারণ, সরকার নিজেই এ ব্যাপারে বিরোধিতা করেছে। কিন্তু তারপরও প্রশাসনের মধ্য থেকে যখন বলা হয়, সমঝোতার নির্বাচন করা হবে, তখন সব সংস্কার অচল হয়ে যাবে, নস্যাৎ হয়ে যাবে। এখন যে গণতন্ত্রের মুক্ত ও অবাধ চর্চা হচ্ছে, তা নষ্ট হয়ে যাবে। এর মধ্যে ষড়যন্ত্রের জাল বিছাবে, শক্তি অর্জন করবে।
১২–দলীয় জোটের সমন্বয়ক জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে এবং মুখপাত্র বাংলাদেশ জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদার সঞ্চালনায় ইফতারপূর্ব আলোচনায় বক্তব্য দেন বিএনপির সেলিমা রহমান, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, এবি পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জু, বিএলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম, জেএসডির শহীদ উদ্দিন মাহমুদ, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আখতার হোসেন, গণ অধিকার পরিষদের ফারুক হাসান ও জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) কাজী নাহিদ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র রহম ন ম গণতন ত র র জন ত ত সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে: তারেক রহমান
সংবাদপত্রের কালো দিবস ছিল আজ। সোমবার এ উপলক্ষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক বাণীতে বলেছেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বহুদলীয় গণতন্ত্রের মৌলিক উপাদান। গণতন্ত্রের নিরাপত্তা ও স্থায়িত্ব দিতে হলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
রোববার মধ্যরাতে পাঠানো এক বাণীতে তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৬ জুন বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কালো দিবস। এদিন তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী সব দল বাতিল করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করে। তাদের অনুগত চারটি সংবাদপত্র রেখে জাতিকে নির্বাক করে দিয়েছিল। বিভিন্ন সংবাদপত্রে কর্মরত অসংখ্য সংবাদকর্মী বেকার হয়ে পড়েন। তাদের রুজি-রোজগার ও সন্তানদের ভবিষ্যৎ নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়।’
তিনি বলেন, ‘একাত্তরের যুদ্ধের মূল চেতনা ছিল বাংলাদেশের ভৌগোলিক স্বাধীনতা অর্জন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। গণতন্ত্রে মানুষের নাগরিক স্বাধীনতা নিশ্চিত হয় এবং এর মূল শর্ত হলো বাক, চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা। সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় ভিন্নমত প্রকাশের সুযোগ থাকায় রাষ্ট্র ও সমাজ জবাবদিহির আওতায় আসে এবং দেশের সরকার গঠনে নাগরিকের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘ক্ষমতাসীনরা স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথচলাকে স্তব্ধ করে দিয়ে একদলীয় বাকশাল কায়েম করে। পরে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এ দেশের কাঙ্ক্ষিত বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন করেন। বাকশাল সরকারের সব ধরনের অগণতান্ত্রিক কালাকানুন বাতিল করে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেন।’
তারেক রহমান উল্লেখ করেন, ‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ মূলত চিন্তা ও বিবেককে বন্দি রাখা। শেখ মুজিবুর রহমানের মতো তার মেয়ে শেখ হাসিনাও একই পথ ধরে তাদের প্রকৃত দর্শন একদলীয় ব্যবস্থার পুনঃপ্রবর্তন করেছিল নতুন আঙ্গিকে। নানা কালাকানুন প্রণয়ন করে সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের ওপর অব্যাহত জুলুম চালিয়েছে তারা।’
সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদের সই করা বাণীতে বলা হয়, বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছিল। সত্য উচ্চারণ করলেই নেমে আসত নির্যাতনের খড়্গ। বাংলাদেশের গণমাধ্যম কর্মীসহ সব পর্যায়ের মানুষকে সার্বক্ষণিক শঙ্কিত থাকতে হয়েছে।
তারেক রহমান আরও বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের মতো একের পর এক ড্রাকোনিয়ান (কঠোর) আইন প্রণয়ন করে সংবাদপত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে ভয়াল দুর্গে বন্দি করা হয়েছিল। বিগত ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর গণমাধ্যম কিছুটা স্বাধীনতা ভোগ করলেও এখনও ফ্যাসিবাদী শক্তির হাত থেকে পুরোপুরি মুক্ত নয়।’