শ্রীপুরে ৩৫ ঘণ্টা পর বাড়িতে ফিরলেন ‘অপহৃত’ তরুণ, পুলিশের সন্দেহ
Published: 23rd, March 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় ‘নিখোঁজের’ ৩৫ ঘণ্টা পর আজ রোববার সকালে বাড়িতে ফিরেছেন মো. জামান মিয়া (২৪) নামের এক তরুণ। তাঁর দাবি, গত শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টায় তাঁকে অপহরণ করা হয়। ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে তিনি ছাড়া পেয়েছেন।
জামান মিয়া উপজেলার পূর্ব সোনাব গ্রামের সৌদিপ্রবাসী আবদুস শহীদ মিয়ার ছেলে। তিনি মাওনা পিয়ার আলী কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। এ ঘটনায় গতকাল শনিবার জামানের মা জরিনা আক্তার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। তবে পুলিশের ধারণা, ওই তরুণ মায়ের থেকে টাকা আদায় করতে অপহরণের নাটক সাজিয়েছেন। এরপরও পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।
আজ সন্ধ্যায় মো.
শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক সুজন কুমার জানান, অভিযোগ পেয়ে তাঁরা গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করেছেন। এর মধ্যে তাঁরা কয়েক দফা তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মুক্তিপণ চাওয়া ব্যক্তির অবস্থান জেনেছেন। ওই তরুণ একটি ঘরে দীর্ঘ সময় বন্দী ছিলেন দাবি করলেও তাঁর মুঠোফোনের অবস্থান বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়। তিনি বলেন, ‘এটি অপহরণ নয়। আমাদের ধারণা, মায়ের কাছ থেকে টাকা আদায়ের জন্য তিনি অপহরণের নাটক সাজিয়েছেন।’
শ্রীপুর মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কর বলেন, এটি নিয়ে পুলিশ কাজ শুরু করেছিল। তবে অল্প সময়ের মধ্যে ভিকটিম বাড়ি চলে আসে। এখনো পুলিশ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ আছে। আরও তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বোনকে খুন করে লাশ বস্তায় ভরেন, পুলিশ জিজ্ঞেস করলে জানান বস্তায় গম
ভারতের উত্তর প্রদেশের গোরখপুরে এক তরুণ তাঁর বোনকে খুন করে লাশ একটি বস্তায় ভরে রেখেছিলেন। ওই বস্তা নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ তাঁকে ভেতরে কী আছে জানতে চাইলে তিনি বলেছিলেন, ‘এর মধ্যে গম আছে।’
উত্তর প্রদেশের ৩২ বছর বয়সী রাম আশিস নিষাদ তাঁর ১৯ বছর বয়সী বোন নীলমকে খুন করেন।
ওই এলাকায় একটি সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়। আশিসের বাবা চিংকু নিষাদ সেখানে সরকারের জমি অধিগ্রহণ বাবদ ছয় লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ পেয়েছিলেন।
পুলিশ জানায়, ওই ক্ষতিপূরণ বাবদ পাওয়া অর্থের ভাগাভাগি নিয়েই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ঝগড়া হয়। ওই রুপি বোনের বিয়েতে খরচ করা হবে জেনে রাম আশিস ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
পুলিশ জানায়, গত সোমবার রাম আশিস একটি কাপড় দিয়ে পেঁচিয়ে বোন নীলমকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এরপর নীলমের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ভেঙে ফেলে দেহটি একটি বস্তায় ভরেন। পরে বাইকের সঙ্গে বেঁধে তিনি গোরখপুর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে কুশীনগরের একটি আখখেতে বস্তাটি ফেলে আসেন।
সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজে অভিযুক্ত
সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজে রাম আশিসকে একটি বস্তা নিয়ে যেতে দেখা যায়। সন্দেহ করা হচ্ছে, ওই বস্তার মধ্যে ছিল তাঁর বোনের লাশ। কুশীনগর যাওয়ার পথে পুলিশ তাঁকে থামিয়ে বস্তায় কী আছে জানতে চেয়েছিল।
রাম আশিস পুলিশকে জানান, বস্তায় গম আছে। পরে আবার তিনি কুশীনগরের দিকে মোটরসাইকেল চালিয়ে যান। সেখানে তিনি আখখেতে নীলমের লাশ ফেলে দেন।
এরপর নীলমকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তাঁর বাবা প্রথমে ধরে নেন, মেয়ে ছটপূজার জন্য কোথাও গেছে। তবে প্রতিবেশীরা যখন জানান, সোমবার রাম আশিস একটি বস্তা নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। তখন পরিবারের সন্দেহ হয় এবং ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হয়।
পুলিশ প্রথমে নিখোঁজের ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে ও তদন্ত শুরু করে। গত মঙ্গলবার নীলমের পরিবার পুলিশের কাছে অভিযোগ জানায়, রাম আশিসই নীলমকে খুন করেছেন।
জিজ্ঞাসাবাদের সময় রাম আশিস প্রথমে কিছু না জানার ভান করেন। তবে পুলিশের টানা জিজ্ঞাসাবাদে তিনি পরে বোনকে খুনের কথা স্বীকার করেন। গত বুধবার রাতে আখখেত থেকে নীলমের গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।
আগামী জানুয়ারি মাসেই নীলমের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। বিয়ের সবকিছু ঠিকঠাকও হয়ে গিয়েছিল।
রাম আশিসের বাবা চিংকু অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ বাবদ পাওয়া ওই ছয় লাখ রুপি মেয়ের বিয়েতে খরচ করার পরিকল্পনা করেছিলেন। এ কারণে রাম ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন। কারণ, তিনি জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ পাওয়া ওই রুপির ভাগ চেয়েছিলেন।