গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় ‘নিখোঁজের’ ৩৫ ঘণ্টা পর আজ রোববার সকালে বাড়িতে ফিরেছেন মো. জামান মিয়া (২৪) নামের এক তরুণ। তাঁর দাবি, গত শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টায় তাঁকে অপহরণ করা হয়। ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে তিনি ছাড়া পেয়েছেন।

জামান মিয়া উপজেলার পূর্ব সোনাব গ্রামের সৌদিপ্রবাসী আবদুস শহীদ মিয়ার ছেলে। তিনি মাওনা পিয়ার আলী কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। এ ঘটনায় গতকাল শনিবার জামানের মা জরিনা আক্তার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। তবে পুলিশের ধারণা, ওই তরুণ মায়ের থেকে টাকা আদায় করতে অপহরণের নাটক সাজিয়েছেন। এরপরও পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।

আজ সন্ধ্যায় মো.

জামান মিয়া বলেন, শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় বাড়ির পাশে কাওরাইদ বাজারে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে একটি দোকান থেকে বের হয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন। তখন অপরিচিত একজন তাঁর কোমরে পিস্তল ঠেকিয়ে একটি গাড়িতে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। ওই গাড়িতে পাঁচ–ছয়জন ছিল। তারা তাঁর চোখ ও হাত-পা বেঁধে ফেলে। এরপর আড়াই ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে একটি ঘরে আটকে রাখে। পরে তাঁর মুঠোফোন থেকে স্বজনদের কল করে মুক্তিপণ হিসেবে দুই লাখ টাকা চাইতে বলে অপহরণকারীরা। টাকা না দিলে মারধর করার হুমকি দেওয়া হয়। একপর্যায়ে মুক্তিপণ হিসেবে তাঁর নিজের বিকাশ নম্বরে ৫০ হাজার টাকা পাঠান তাঁর মা। পরে অপহরণকারীরা মুঠোফোনের সিম কার্ড রেখে তাঁকে একটি গাড়িতে করে নরসিংদী জেলা সদরের ইটাখোলা এলাকায় নামিয়ে দেয়। এরপর তিনি তাঁর কাছে থাকা অন্য একটি সিম কার্ড মুঠোফোনে সংযুক্ত করে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক সুজন কুমার জানান, অভিযোগ পেয়ে তাঁরা গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করেছেন। এর মধ্যে তাঁরা কয়েক দফা তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মুক্তিপণ চাওয়া ব্যক্তির অবস্থান জেনেছেন। ওই তরুণ একটি ঘরে দীর্ঘ সময় বন্দী ছিলেন দাবি করলেও তাঁর মুঠোফোনের অবস্থান বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়। তিনি বলেন, ‘এটি অপহরণ নয়। আমাদের ধারণা, মায়ের কাছ থেকে টাকা আদায়ের জন্য তিনি অপহরণের নাটক সাজিয়েছেন।’

শ্রীপুর মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কর বলেন, এটি নিয়ে পুলিশ কাজ শুরু করেছিল। তবে অল্প সময়ের মধ্যে ভিকটিম বাড়ি চলে আসে। এখনো পুলিশ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ আছে। আরও তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পেশায় বাসচালক, আড়ালে করেন ইয়াবার কারবার

আট বছর ধরে গাড়ি চালানোর পেশায় আছেন মো. শাহীন। প্রথমে চালাতেন ট্রাক, এখন যাত্রীবাহী বাস। তবে এটা তার মূল কারবারের আড়াল মাত্র। বাস চালানোর আড়ালে তিনি কক্সবাজার থেকে ঢাকায় আনেন ইয়াবার বড় চালান। প্রতি চালানে ১০–২০ হাজার পিস ইয়াবা থাকে। এগুলো পৌঁছানোর বিনিময়ে তিনি পান মোটা অঙ্কের টাকা। প্রতি মাসে গড়ে ছয়টি চালান এনে তিনি অন্তত ছয় লাখ টাকা পান। ফলে লাভজনক এ কারবারে তিনি আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গেছেন।

সম্প্রতি রাজধানীর পূর্ব রামপুরা এলাকা থেকে বাসচালক শাহীন ও সুপারভাইজার সঞ্জিত রাজবংশীকে গ্রেপ্তার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। ওই সময় বাসটিতে তল্লাশি চালিয়ে ১৫ হাজার ৬০০ পিস ইয়াবা পাওয়া যায়। এই চালানটি ঢাকার গাবতলী এলাকায় পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল বলে জানা গেছে।

ডিএনসি ঢাকা মহানগর উত্তরের উপপরিচালক শামীম আহম্মেদ জানান, আন্তঃজেলা বাসের চালক–হেলপারদের একটি অংশ মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়েছে। এ কারণে বিভিন্ন রুটের পরিবহনকর্মীদের মাদকসংশ্লিষ্টতার তথ্য পেতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়। এরপর গোপন তথ্যের ভিত্তিতে কক্সবাজার থেকে আসা শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস পূর্ব রামপুরার মোল্লা টাওয়ারের সামনে থামানো হয়। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদে চালক ও সুপারভাইজার স্বীকার করেন, তাদের কাছে মাদকদ্রব্য আছে। এরপর তাদের দেখানো অনুযায়ী চালকের আসনের নিচ থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেছেন ডিএনসি ধানমন্ডি সার্কেলের পরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল মামুন।

ডিএনসি ঢাকা মহানগর উত্তরের জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, শাহীনের ভাষ্য অনুযায়ী, দুই বছর ধরে তিনি বাসে মাদক পরিবহনের কাজ করেন। এর আগে ট্রাক চালানোর সময় অন্য চালকদের মাধ্যমে এ কারবারের বিষয়ে জানতে পারেন। পরে টেকনাফের মাদক কারবারিদের সঙ্গে তার যোগাযোগ ও সখ্য গড়ে ওঠে। তিনি প্রতি ১০ হাজার পিস ইয়াবা ঢাকায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য আনুমানিক এক লাখ টাকা করে পান। এবারের চালানের জন্য পেতেন দেড় লাখের কিছু বেশি। তবে পৌঁছানোর আগেই তিনি ও তার সহযোগী ধরা পড়েন।

অভিযান সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইয়াবার চালানের প্রেরক ও প্রাপকসহ আরও কয়েকজনের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। তাদের গ্রেপ্তার করা গেলে পুরো চক্রটিকে শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বৈষম্যবিরোধীদের তোপের মুখে যশোর মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগ
  • শ্রীলঙ্কার মাটিতে ঘুরে দাঁড়িয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ
  • মিরাজ বীরত্বে দারুণ প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখলো বাংলাদেশ
  • সেঞ্চুরির পর ৫ উইকেট, মিরাজ ধন্যবাদ দিলেন ৬ জনকে
  • পেশায় বাসচালক, আড়ালে করেন ইয়াবার কারবার
  • আগারগাঁওয়ে সেনা অভিযানে অপহৃত ৪ কিশোর উদ্ধার
  • গাইবান্ধায় বাবা-মাকে মারধর করে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে অপহরণ, অভিযুক্ত আটক
  • অপহরণে বাঁধা দেওয়ায় যুবককে গুলি করে হত্যা, আটক ৩
  • অপহৃতকে ছেড়ে দিয়ে পালানোর সময় অস্ত্র ও গুলিসহ অপহরণকারী আটক
  • ছাড়া পেলেন অপহৃত কৃষক, এক অপহরণকারী অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার