চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে অসহায় ব্যক্তিদের জন্য বরাদ্দ ভিজিএফের চাল সরানোর সময় দু’জনকে আটক করেছে স্থানীয় জনতা। রোববার দুপুরে উপজেলার দাইপুখুরিয়া ইউনিয়নের বারীক বাজারে এ ঘটনা ঘটে। আটক ব্যক্তিরা হলেন ওই ইউপির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জোবদুল করিম পারুলের ভাতিজা লিটন আলী ও ভ্যানচালক ভিখু আলী। 

এলাকার লোকজন জানায়, দুপুরে চাল বিতরণের সময় ভ্যানে করে বস্তা নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে তাদের সন্দেহ হয়। পরে বারীক বাজার এলাকায় দু’জনকে আটক করা হয়। পরে ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর রেজা তাদের ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যান। তিনি বলেন, ‘আমার ইউপির এক সদস্যের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তদন্তে তা প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ইউপি সদস্য জোবদুল করিম পারুলের মোবাইল ফোন নম্বরে কল দিয়েও সংযোগ মেলেনি। ভ্যানচালক ভিখু আলী বলেন, একই ভ্যানে করে তিনি আরেক ভ্যান চাল ইউপি সদস্য পারুলের বাসায় রেখে এসেছেন। দ্বিতীয় দফায় নেওয়ার সময় জনসাধারণ তাঁকে আটক করে।  

শিবগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজাহার আলী বলেন, তিনি বিষয়টি জানতে পেরে দু’জনকেই পুলিশে দিতে বলেছেন। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আটক র সময় সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’

ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।

হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।

আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’

গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’

আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ