‘নিউজ মিডিয়া মনিটরিং সেবা’ চালু করবে বিএসইসি
Published: 24th, March 2025 GMT
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) পুঁজিবাজার সংক্রান্ত সংবাদ নিয়মিতভাবে পর্যবেক্ষণ করার জন্য একটি ‘সংবাদ মাধ্যম পর্যবেক্ষণ সেবা’ বা ‘নিউজ মিডিয়া মনিটরিং সেবা’ চালুর পরিকল্পনা করছে। এ লক্ষ্যে সংস্থাটি উপযুক্ত সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান নির্বাচনের জন্য একটি দরপত্র আহ্বান করেছে।
আন্তর্জাতিক সিকিউরিটিজ কমিশনের সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব সিকিউরিটিজ কমিশনের (আইওএসসিও) ‘এ’ ক্যাটাগরির সদস্য হিসেবে বিএসইসি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক, অনলাইন এবং সামাজিক মাধ্যমের সংবাদ পর্যবেক্ষণ করবে।
সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তিতে বিএসইসির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
তথ্য মতে, কমিশন এমন একটি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রস্তাব আহ্বান করেছে, যারা দেশের জাতীয় পর্যায়ের প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক, অনলাইন এবং সামাজিক মাধ্যম থেকে পুঁজিবাজার-সংক্রান্ত সংবাদ সংগ্রহ ও সরবরাহ করতে পারবে।
তথ্যগুলো নির্ধারিত কীওয়ার্ড ব্যবহার করে ইমেইল ও একটি পোর্টাল ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে সরবরাহ করতে হবে, এবং প্রয়োজনে ভিডিও ক্লিপও অন্তর্ভুক্ত করা যাবে।
সংবাদগুলো সাধারণ এবং নেতিবাচক প্রতিবেদনে বিভক্ত থাকতে হবে, যেখানে নেতিবাচক প্রতিবেদনে আইন ও বিধিবিধান লঙ্ঘনের বিষয়গুলো তুলে ধরা হবে, যেমন অর্থপাচার প্রতিরোধ (এএমএল), সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ (সিএফটি), সিকিউরিটিজ আইন বা অন্যান্য প্রাসঙ্গিক নীতিমালা লঙ্ঘনের ঘটনা ইত্যাদি।
বিএসইসি মনে করে, এই পর্যবেক্ষণ সেবাটি ব্যবহার করে বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা আরও জোরদার করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি নিয়ন্ত্রক সংস্থার মান বজায় রাখা সম্ভব হবে।
বিএসইসি জানিয়েছে, প্রতিদিন গণমাধ্যমে বাজারসংক্রান্ত বিভিন্ন সংবাদ প্রকাশিত হয়, যা বিনিয়োগকারী এবং সামগ্রিক বাজারকে প্রভাবিত করতে পারে। বিভ্রান্তিকর বা ভুয়া সংবাদ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। একটি ‘সংবাদ মাধ্যম পর্যবেক্ষণ সেবা’ বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন শনাক্ত ও বিশ্লেষণ করতে এবং গণমাধ্যমে বাজার সংক্রান্ত গুজবের বিস্তার রোধ করতে সাহায্য করবে, যা তথ্যের প্রবাহকে আরও স্বচ্ছ ও নির্ভরযোগ্য করে তুলবে।
সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে চুক্তি স্বাক্ষরের তারিখ থেকে দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক ও বার্ষিক ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করতে হবে।
ঢাকা/এনটি/ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পুঁজিবাজারে আস্থা ফেরাতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ নেবে বিএসইসি
শেয়ার সূচকের নিয়মিত পতনের মূল কারণ খুঁজে বের করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সেই সঙ্গে যেসব শেয়ারের অস্বাভাবিক বিক্রির চাপ দেখা যাচ্ছে, বাজার তদারকির মাধ্যমে সেসব শেয়ার চিহ্নিত করা হবে বলেও জানিয়েছে তারা।
দেশের পুঁজিবাজারে সাম্প্রতিক নিম্নমুখী প্রবণতার পরিপ্রেক্ষিতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। গতকাল মঙ্গলবার এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সভায় পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে তাৎক্ষণিক কিছু কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী। এ ছাড়া সভায় বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক, বিএসইসির কমিশনার মু. মোহসিন চৌধুরী, মো. আলী আকবর, ফারজানা লালারুখ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব দেলোয়ার হোসেন, পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্সের প্রতিনিধি ও বিএসইসির নির্বাহী পরিচালকেরা উপস্থিত ছিলেন।
সভার সিদ্ধান্ত হয়, বিনিয়োগকারীদের জ্ঞান ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় টক শো ও বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। পাশাপাশি বিআইসিএম ও বিএএসএম পুঁজিবাজার-বিষয়ক শিক্ষণীয় ভিডিও তৈরি করবে। ফেসবুক ও ইউটিউবের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে পুঁজিবাজার সম্পর্কে ইতিবাচক বার্তা প্রচার ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সচেতন করা হবে।
প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানির শেয়ার পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রমালিকানাধীন লাভজনক কোম্পানির শেয়ার অফলোড করা, বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্তিতে উৎসাহিত করা এবং টেক্সটাইল ও ওষুধ খাতের দেশী লাভজনক কোম্পানিগুলোর শেয়ার পুঁজিবাজারে নিয়ে আসা হবে।
যেসব কোম্পানি এখনো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়নি, তাদের তালিকাভুক্ত হতে উৎসাহিত করার জন্য আকর্ষণীয় করছাড় দেওয়া হবে। পাশাপাশি ব্যাংকিং খাত থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের সুযোগ সীমিত করা এবং পুঁজিবাজারকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের প্রধান উৎস হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, পুঁজিবাজারের উন্নয়নের স্বার্থে দেশের আর্থিক খাতের অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যে সমন্বয় বাড়ানো হবে। সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা হবে। এ ছাড়া আসন্ন জাতীয় বাজেটে বিনিয়োগকারীদের জন্য করছাড়ের সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করা হবে। এর মধ্যে লভ্যাংশ আয়ের ওপর করছাড় এবং পুঁজিবাজারের বিনিয়োগের ওপর বিশেষ করছাড়ের সুবিধা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।