Samakal:
2025-08-02@00:22:16 GMT

প্রেরণাদাত্রী সন্‌জীদা খাতুন

Published: 25th, March 2025 GMT

প্রেরণাদাত্রী সন্‌জীদা খাতুন

বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গণের অগ্রণী ব্যক্তিত্ব, সঙ্গীতজ্ঞ ও ছায়ানটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সন্‌জীদা খাতুন মারা গেছেন। মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। ২০১৮ সালের ৩ এপ্রিল সমকালের অনলাইনে সন্‌জীদা খাতুনকে নিয়ে লিখেছিলেন আনিসুজ্জামান ও শামসুজ্জামান খান। লেখাটি আবার প্রকাশ করা হলো।-

এক আলোকিত বাঙালি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করে সকল মানুষের অন্তরে সঙ্গীত-সাহিত্য-শিল্পরুচির আলোকশিখা প্রজ্বালনের সাধনায় নিরন্তর ব্রতী রয়েছেন আপনি। ব্যক্তিগত শৈল্পিক সিদ্ধি অর্জনে গভীর অভিনিবেশে নিমগ্ন থেকেও সমাজের মুক্তি চেতনার দায় প্রতিনিয়ত তাড়িত করেছে আপনাকে। বাইরের দিক থেকে প্রত্যক্ষ প্রেরণায় ছিলেন বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলনের সংগঠক, পরিসংখ্যানবিদ, দার্শনিক পিতা, রবীন্দ্রনাথের সাহচর্য এবং নজরুলের স্নেহধন্য, কাজী মোতাহার হোসেন। অন্তরের গহিনে আরেক প্রেরণাদাত্রী ছিলেন মুক্তমনা মাতা সাজেদা বেগম, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে যিনি অন্তঃপুর থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন রাজপথে, কন্যার সঙ্গে একই কাতারে। আর জীবনব্যাপী যে মাভৈঃবাণী বুকে নিয়ে বিরুদ্ধ স্রোতের অভিযাত্রী হয়েছেন আপনি সেই সুর-ছন্দ-কথা অন্তরে গেঁথে দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। 'দেশকে আপনার জ্ঞানে বুদ্ধিতে প্রেমে কর্মে সৃষ্টি' করতে পারলেই প্রতিভাত হতে পারে 'স্বদেশ', রবীন্দ্রনাথের এই উপলব্ধির সার্থক প্রকাশ আমরা দেখি আপনার মধ্যে। আপনি সন্‌জীদা খাতুন জাতির সৃজনশক্তির মেধাবী প্রতিভূ, বাঙালি সংস্কৃতি ভুবনের অনন্য ব্যক্তিত্ব, কতভাবেই না ঋদ্ধ করে চলেছেন বাঙালির জীবন-সাধনা।

কৈশোর-উত্তীর্ণ কাল থেকে শুরু হয়েছে আপনার মুক্তি অভিযাত্রা। সাতচল্লিশের দেশভাগে সাম্প্রদায়িকতার যে বিষবাষ্প ছড়িয়ে পড়েছিল বাংলায়, তা পীড়িত করেছিল আপনার কিশোরী মনকে। ভাষা আন্দোলনকালে নিজ কর্তব্য নির্ধারণে আপনার মধ্যে তাই কোনো দ্বিধা ছিল না। রাজপথের সংগ্রামের পাশাপাশি সংগ্রামী মানুষদের সঙ্গে আপনার এমন এক আত্মিক বন্ধন গড়ে ওঠে, যা জীবনব্যাপী লালন করেছেন আপনি। পাকিস্তানি আমলের বিপুল বাধানিষেধ উপেক্ষা করে শান্তিনিকেতনে পড়তে যাওয়ার দৃঢ় অঙ্গীকার আপনাকে আরেক বিরল অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ করেছিল।

অধ্যয়নের পাশাপাশি কণ্ঠে গান তুলে নিয়েছিলেন আপনি আত্যন্তিক ভেতর প্রেরণায়, সে প্রয়াস শান্তিনিকেতনে পেয়েছিল গভীরতর আত্মপ্রকাশ। দেশে ফিরে অধ্যাপনা হয়েছিল আপনার জীবিকার অবলম্বন এবং গান হয়ে উঠল প্রাণের বাঙ্‌ময় প্রকাশ। সাহিত্য ও সঙ্গীতের অধ্যয়ন ও অনুশীলন, সেইসঙ্গে বৃহত্তর জীবনের সঙ্গে সংযোগ আপনার ব্যক্তিত্বের গড়নে যে বিশিষ্টতা যুক্ত করেছিল, তার সার্থক প্রকাশ ঘটে ১৯৬১ সালে রবীন্দ্রজন্মশতবার্ষিকীকে ঘিরে পূর্ব বাংলার বাঙালি জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জাগরণে। শতবার্ষিকী উদ্‌যাপনের অনুষ্ঠানমালা হয়ে পড়ে সাংস্কৃতিক জাগরণ চেতনার এক নব্য প্রকাশ এবং তার মধ্যমণি হয়ে উঠলেন আপনি। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিষ্ঠা পায় 'ছায়ানট' সংগঠন, সঙ্গীতে দীক্ষাদানের মধ্য দিয়ে সূচিত হয় সুরস্পর্শে জাতীয় সাংস্কৃতিক জাগৃতির কাঙ্ক্ষিত প্রয়াস। 'ছায়ানট' হয়ে ওঠে পূর্ব বাংলায় আধুনিক বাঙালি সংস্কৃতি বিকাশের কেন্দ্র, আমাদের সংস্কৃতি ও সঙ্গীতচর্চার ব্যতিক্রমী পীঠস্থান। সঙ্গীত শিক্ষাদানে নিষ্ঠা, দক্ষতা, আকুলতা নিয়ে আপনি ও সতীর্থমণ্ডলী বাঙালিত্বের চেতনায় উদ্বুদ্ধ সুরচর্চায় নিবেদিত নবীন-নবীনাদের বিশাল গোষ্ঠী তৈরি করতে সক্ষম হন। 'ছায়ানটে'র উদ্যোগে রমনার বটমূলে বাংলা নববর্ষবরণের প্রভাতি অনুষ্ঠানের সূচনা সামন্তবাদী পাকিস্তানি সাংস্কৃতিক অমানিশা ঘুচিয়ে এক নতুন প্রভাতের আবাহন ঘটাল, যা উদ্বেলিত ও আলোড়িত করল পূর্ব বাংলার নবজাগ্রত বাঙালি সমাজকে। এরই ধারাবাহিকতায় রাজনৈতিক গণসংগ্রামের সমান্তরালে, বলতে গেলে রবীন্দ্রনাথের হাতে হাত রেখে, পূর্ব বাংলার বাঙালি পৌঁছে গেল একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে এবং কণ্ঠে গান নিয়ে আপনি এবং আপনার দীক্ষাপ্রাপ্ত সঙ্গীত দল ঝাঁপিয়ে পড়ে সেই সংগ্রামে।

স্বাধীন বাংলাদেশের পতন-অভ্যুদয়-বন্ধুর যাত্রাপথে নানা বাধাবিঘ্ন-বঞ্চনা উপেক্ষা করে আপনি সঙ্গীতের মাধ্যমে চিত্তের জাগরণ প্রয়াসে কেবল অটল ও একাগ্র থাকেননি, আরও কতভাবেই না সৃষ্টিশীল কাজের অনন্য সব উদাহরণ তৈরি করে বিস্তার ঘটিয়েছেন সুষ্ঠু সাংস্কৃতিক পরিসরের। অধ্যাপনা ও অধ্যয়নের যুগল-সাধনায় আপনি উচ্চ শিখর স্পর্শ করেছেন, রবীন্দ্রসঙ্গীতের ভাবসম্পদ বিশ্নেষণে জুগিয়েছেন নতুন মাত্রা, ধ্বনি ও কবিতার সম্মিলন বিচারে আপনার উপলব্ধি সৃষ্টিরস অনুধাবনে নববিস্তার ঘটিয়েছে। আপনার রচনাদি বাংলা সাহিত্যে ব্যতিক্রমী সংযোজন হিসেবে কীর্তিত হয়েছে। সেইসঙ্গে চলেছে সঙ্গীতের দীক্ষাদানে আপনার নিরলস সাধনা, 'ছায়ানটে'র বৃত্ত ছাপিয়ে যা দেশব্যাপী বিস্তার লাভ করেছে 'জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ'-এর সুবাদে, আপনি ছুটে চলেছেন দেশব্যাপী চারণের মতো সঙ্গীতসুধারস বিতরণের ব্রত নিয়ে।

সহজ কঠিন দ্বন্দ্বে ছন্দে বহমান আপনার কর্মময় জীবন জাতির সামনে অনন্য উদাহরণ মেলে ধরেছে। নিজেকে পরমভাবে উৎসর্গ করেছেন সুরস্পর্শে মানুষের অন্তর আলোকিত করবার কাজে। আপনার সেই সঙ্গীত-সাধনা স্নিগ্ধ ও গভীর, কোমল ও কঠোর; সর্বোপরি তা নিবেদিত মানবের কল্যাণে, দেশের হিতসাধনে। এমন ব্যক্তিত্বের ছায়াতলে সমবেত আমরা সবাই অন্তরের নিবিড়তম শ্রদ্ধার অঞ্জলি নিবেদন করি আপনার প্রতি, দেশজুড়ে সঙ্গীত-সংস্কৃতির বিস্তারে আপনার কর্মধারায় স্নাত জাতির পক্ষ থেকে পঁচাশিতম জন্মবার্ষিকীতে প্রদান করি ভালোবাসার অর্ঘ্য। আপনি বাঙালি সংস্কৃতির সম্পদ, শিল্পের সুষমা ও শক্তির প্রকাশক, সঙ্গীতে নিহিত সর্বজনীন কল্যাণবোধ আপনি সবার হৃদয়ে সঞ্চারিত করে চলেছেন।

আপনার মঙ্গল হোক, আপনি শতায়ু হোন, আপনি সুরের স্পর্শে, সংস্কৃতি শক্তিতে, মানবিকতার প্রত্যয়ে যে স্বদেশ মূর্ত করে তুলেছেন, তা জাগ্রত হোক সর্বজনের হৃদয়ে। পঁচাশিতম জন্মবর্ষপূর্তিতে আপনার কাছ থেকে নতুনভাবে দীক্ষা নিয়ে বলবান হবে আলোর পথে আমাদের অভিযাত্রা। সেই যাত্রাপথের আনন্দগান আমরা শুনি আপনার কণ্ঠে, আপনাকে পাই অপরিমেয় অব্যাহত প্রেরণাদাত্রী হিসেবে, আপনার প্রতি রইল আমাদের অশেষ শ্রদ্ধা ও বিনম্র অভিবাদন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ য় নট আপন র ম আপন র ক স পর শ ন আপন

এছাড়াও পড়ুন:

ভোগবাদী যুগে ইসলামে সুখের খোঁজ

আপনার বাড়িতে কি অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের স্তূপ জমে আছে? জানেন কি, এর থেকে মুক্তির পথ আছে ইসলামের সরল জীবনধারায়? আধুনিক বিশ্বে ভোগবাদের তীব্র ঝড়ে আমরা প্রায়ই নিজেদের দেখি অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রে ঠাসা ঘরে।

নতুন ফ্যাশনের পোশাক, সর্বশেষ প্রযুক্তির গ্যাজেট বা মধ্যরাতে এক ক্লিকে কেনা অপ্রয়োজনীয় পণ্য—এসব আমাদের জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু ইসলাম আমাদের ন্যূনতম একটি সরল জীবনধারার পথ দেখায়, যা পার্থিব লোভ থেকে মুক্ত করে আমাদের আল্লাহর পথে নিবেদিত হতে উৎসাহিত করে।

আয়েশা, তুমি যদি আমার সঙ্গে মিলিত হতে চাও, তবে এই দুনিয়া থেকে একজন পথিকের প্রয়োজনীয় জিনিসের মতো সামান্য গ্রহণ করো।সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ১৭,৮০০সংযম কেন জরুরি

মিনিমালিজম বা ন্যূনতাবাদ এমন একটি জীবনধারা, যেখানে আমরা শুধু প্রয়োজনীয় জিনিসের ওপর নির্ভর করব এবং অতিরিক্ত ভোগবিলাস থেকে দূরে থাকব। ক্রমাগত কেনাকাটার দিকে প্রলুব্ধ না হয়ে শুধু যেটুকু না হলেই জীবন চলে না, সেটুকু নিজের কাছে রাখব।

আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘হে আদম সন্তান, প্রত্যেক নামাজের সময় বেশভূষা সৌন্দর্য গ্রহণ করো, খাও এবং পান করো, কিন্তু অপচয় কোরো না। নিশ্চয়ই তিনি অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা আ’রাফ, আয়াত: ৩১)।

এই আয়াত আমাদের জীবনে সংযম ও সরলতার গুরুত্ব মনে করিয়ে দেয়।

আরও পড়ুনদুনিয়ার ভোগ–বিলাস নিয়ে সুরা তাকাসুরের সতর্কতা১০ এপ্রিল ২০২৩

বিজ্ঞাপনের প্রলোভন আজকাল আমাদের অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটার দিকে ঠেলে দেয়। প্রায়ই এমন জিনিস কিনে ফেলি, যেমন একটি ইউএসবি মগ হিটার বা জামাকাপড়, যা তারপর বছরের পর বছর অব্যবহৃত পড়ে থাকে।

বাড়িতে জমে থাকে প্যাকেট না খোলা গ্লাস–বক্স, অপঠিত বইয়ের স্তূপ। প্রশ্ন করে দেখি তো, আমাদের আসলেই কি এগুলো প্রয়োজন ছিল?

মহানবী (সা.)-এর সাদাসিধা জীবন

মহানবীজি (সা.) এবং তাঁর সাহাবারা সরল জীবনযাপনের উজ্জ্বল উদাহরণ। হজরত আয়েশা (রা.)-কে নবীজি বলেছিলেন, ‘হে আয়েশা, তুমি যদি আমার সঙ্গে মিলিত হতে চাও, তবে এই দুনিয়া থেকে একজন পথিকের প্রয়োজনীয় জিনিসের মতো সামান্য গ্রহণ করো। ধনীদের সঙ্গে মেলামেশা থেকে সাবধান থাকো এবং কোনো পোশাককে তখনই জীর্ণ হয়ে গেছে মনে করো, যখন তুমি তাতে প্যাঁচ লাগিয়েছ (মানে যখন পুরোনো হয়ে যাওয়ার কারণে পেঁচিয়ে যায়)।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ১৭,৮০০)।

এই হাদিসে নবীজি (সা.) স্পষ্টভাবে সরল জীবনযাপন এবং অতিরিক্ত সম্পদ সঞ্চয় থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।

উপহারের পরিবর্তে আমরা দাতব্য সংস্থায় দানের জন্য অনুরোধ করতে পারি। এমনকি আমাদের একটি অনলাইন সাবস্ক্রিপশন বাতিল করে সেই অর্থ স্থানীয় মসজিদে দান করতে পারি।

ইসলাম আমাদের শেখায় যে পার্থিব সম্পদ ক্ষণস্থায়ী এবং এটি আমাদের চিরস্থায়ী জীবনের জন্য প্রস্তুতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। নবীজি (সা.) কখনো অপ্রয়োজনীয় সম্পদ সঞ্চয় করেননি এবং সব সময় দানশীলতার মাধ্যমে আল্লাহর পথে ব্যয় করতে উৎসাহিত করেছেন।

দানের সংস্কৃতি

আজকের বিশ্বে ভোগবাদী সংস্কৃতি আমাদের জীবনকে জটিল করে তুলেছে। ক্রেডিট কার্ড, সহজলভ্য ঋণ এবং ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলো আমাদের ক্রমাগত কেনাকাটার দিকে প্রলুব্ধ করে। আমাদের পূর্ববর্তী প্রজন্ম, যেমন আমাদের দাদা-দাদিরা, সীমিত সম্পদের মধ্যে সরল জীবন যাপন করতেন। কিন্তু গত কয়েক দশকে বিশ্বব্যাপী মধ্যবিত্ত শ্রেণির উত্থান এবং সহজে ঋণ পাওয়ার সুযোগ আমাদের ভোগবাদী প্রবৃত্তিকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

আরও পড়ুনখাদ্যনিরাপত্তা নিয়ে ইসলামের নির্দেশনা০৯ জুন ২০২৫

কিন্তু ইসলাম আমাদের শেখায়, প্রয়োজনের বাইরে অতিরিক্ত সম্পদ সঞ্চয় করা লোভ ও কৃপণতার দিকে নিয়ে যায়, যা একজন মুমিনের বৈশিষ্ট্য নয়।

ইসলাম আমাদের জীবনকে সরল করার পাশাপাশি আল্লাহর পথে ব্যয় করতে উৎসাহিত করে। আমরা চাইলে মাসিক বাজেটের একটি অংশ দানের জন্য বরাদ্দ করতে পারি।

যে ব্যক্তি নিজের সম্পদে সংযমী হয় এবং আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তার জন্য জান্নাতের দরজা খুলে যায়।সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯৯৪

বিয়ের মতো উৎসবে আমরা বিলাসবহুল আয়োজনের পরিবর্তে সরলতা বেছে নিতে পারি। উপহারের পরিবর্তে আমরা দাতব্য সংস্থায় দানের জন্য অনুরোধ করতে পারি। এমনকি আমাদের একটি অনলাইন সাবস্ক্রিপশন বাতিল করে সেই অর্থ স্থানীয় মসজিদে দান করতে পারি।

নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিজের সম্পদে সংযমী হয় এবং আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তার জন্য জান্নাতের দরজা খুলে যায়।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯৯৪)।

আমাদের ভালো কাজ এবং দানশীলতা পরকালে যেমন উপকারে আসবে, তেমনি সমাজের জন্যও হবে কল্যাণকর। অপ্রয়োজনীয় খরচ কমিয়ে দানশীলতার দিকে মনোযোগ দিলে সমাজের দরিদ্র ও অভাবী মানুষের জীবন উন্নত হবে।

ভোগবাদী জীবন মানুষকে অস্থির করে তোলে এবং ন্যূনতম খরচের জীবনধারা মানুষকে তৃপ্তির জীবন উপহার দেয়। এটি একই সঙ্গে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনেরও একটি পথ।

আমরা যদি আমাদের অপ্রয়োজনীয় খরচ কমিয়ে আল্লাহর পথে ব্যয় করি, তবে তা আমাদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনকে সমৃদ্ধ করবে। ন্যূনতমবাদ আমাদের মনে করিয়ে দেয়, আমাদের প্রকৃত সুখ পার্থিব সম্পদে নয়, বরং আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পরকালের প্রস্তুতিতে নিহিত।

আরও পড়ুনআধুনিক এই প্রবণতার শিকড় ইসলামে২০ মে ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ