মঙ্গলবার দিবাগত রাতে উরুগুয়ে মুখোমুখি হয় বলিভিয়ার। লাপাজে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে উরুগুয়েকে রুখে দিয়ে গোলশূন্য ড্র করে বলিভিয়া। আর এই ড্রয়ে ব্রাজিলের বিপক্ষে আজ বুধবার (২৬ মার্চ) সকালে মাঠে নামার আগেই ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলার টিকিট নিশ্চিত হয়ে যায় আর্জেন্টিনার।

এরপর অবশ্য ঘরের মাঠে ব্রাজিলকে নিয়ে ছেলেখেলা করে আর্জেন্টিনা। ৬৬ বছর পর সেলেসওদের ৪-১ ব্যবধানের হার উপহার দেয়।

এই জয়ে ১৪ ম্যাচ থেকে ৩১ পয়েন্ট নিয়ে কনমেবল অঞ্চলের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে আছে আর্জেন্টিনা। তারা অন্যদের চেয়ে অনেক এগিয়ে থাকায় বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত হয়ে যায়। ২৩ পয়েন্ট নিয়ে ইকুয়েডর দ্বিতীয় ও ২১ পয়েন্ট নিয়ে উরুগুয়ে আছে তৃতীয় স্থানে।

আরো পড়ুন:

তামিমের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল, চলছে বিদেশে নেওয়ার প্রস্তুতি

সেইফার্ট ঝড়ে মাত্র ৬০ বলে পাকিস্তানকে হারাল নিউ জিল্যান্ড

১৪ ম্যাচ থেকে ২১ পয়েন্ট নিয়ে ব্রাজিল আছে চতুর্থ স্থানে। তবে তাদের বিশ্বকাপের টিকিট এখনও নিশ্চিত হয়নি। সমান ম্যাচ থেকে সমান ২১ পয়েন্ট নিয়ে গোল গড়ে পিছিয়ে থেকে পঞ্চম স্থানে আছে প্যারাগুয়ে। আর ২০ পয়েন্ট ও ব্রাজিলের সমান গোল গড় নিয়ে কলম্বিয়া আছে ষষ্ঠ স্থানে।

সপ্তম স্থানে থাকা ভেনেজুয়েলার সঙ্গে ব্রাজিলের পয়েন্ট ব্যবধান মাত্র ৬। বাছাইপর্বে প্রত্যেক দলের আর মাত্র চারটি করে ম্যাচ বাকি রয়েছে। সেক্ষেত্রে শেষ চার ম্যাচে ব্রাজিল পয়েন্ট হারালে আর ভেনেজুয়েলাসহ অন্যান্য দলগুলো ভালো খেললে ব্রাজিলকে প্লে’অফও খেলা লাগতে পারে।

দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চল থেকে এবার মোট ছয়টি দল সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাবে। পয়েন্ট টেবিলে সপ্তম স্থানে থাকা দলটি আন্তঃমহাদেশীয় প্লে’অফের মাধ্যমে বিশ্বকাপের টিকিট পাওয়ার সুযোগ পাবে।

আগামী ৪ জুন বাছাইপর্বের পরবর্তী ম্যাচে ইকুয়েডরের মুখোমুখি হবে ব্রাজিল।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আর জ ন ট ন ব শ বক প

এছাড়াও পড়ুন:

কাজের আনন্দই জীবনের সার্থকতা

জন্মদিনের অনুষ্ঠান নয়, তবে অনানুষ্ঠানিক আয়োজনটি ছিল সে উপলক্ষেই। আলোকিত মানুষ গড়ার কারিগর, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষাবিদ ও সুবক্তা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের জন্মদিন ছিল গত ২৫ জুলাই। তাঁর অগণিত অনুরাগীরা চেয়েছিলেন তাঁকে নিয়ে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে মিলিত হতে। উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের যে হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে গেছে, তারপর আর জন্মদিনের অনুষ্ঠান করতে কিছুতেই সম্মত হননি তিনি।

শুক্রবার সন্ধ্যায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ষষ্ঠতলায় কেন্দ্রের প্রাক্তনী ও তাঁর কিছু ঘনিষ্ঠজন আলাপচারিতার এক ঘরোয়া আয়োজন করেছিলেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে নিয়ে। সেখানে তিনি বললেন, কাজের মধ্য দিয়ে জীবনে যে আনন্দ পেয়েছেন, সেটিই জীবনের সার্থকতা। এই আনন্দই তাঁকে অনুপ্রাণিত করে, শক্তি জোগায়।

এ আয়োজনে অংশগ্রহণকারীরা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেছেন। তিনি তাঁর চিরপরিচিত সরস অথচ বুদ্ধিদীপ্ত গভীর তাৎপর্যময় কথায় উত্তর দিয়েছেন। কবিতা, সাহিত্য, শিল্প থেকে শিক্ষা, ইতিহাস, দর্শন, ধর্ম, রাজনীতি, অর্থনীতি, সংগঠন, প্রেম–ভালোবাসা—সবকিছু উঠে আসে প্রশ্নোত্তরভিত্তিক কথোপকথনে। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল থেকে শুরু করে বিশ্বসাহিত্যের বহু কালজয়ী লেখকের রচনা থেকে প্রচুর উদ্ধৃতি দিয়েছেন তিনি। এক অন্তরঙ্গ প্রাণবন্ত আবহ বিরাজমান ছিল সন্ধ্যা থেকে অনেকটা রাত অবধি এই আয়োজনে।

আবৃত্তিশিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় শুরুতেই আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের একটি কবিতা আবৃত্তি করে জানতে চান, তিনি কবিতার চর্চা করেননি কেন? জবাবে তিনি বলেন, কবি শামসুর রাহমান একবার তাঁকে বলেছিলেন, তাঁর মধ্যে কবিত্বের ঘাটতি আছে। তাঁর নিজেরও সে রকম মনে হয়েছে। তারপর সাহিত্য পত্রিকা কণ্ঠস্বর প্রকাশ ও অনেক রকম কাজ করতে গিয়ে আর কবিতা লেখা হয়ে ওঠেনি।

অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য প্রশ্ন করেন, এখন একটা কঠিন সময় যাচ্ছে। তরুণ প্রজন্মকে কীভাবে দেখেন, কী আশা করেন তাদের কাছে?

আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘তরুণেরা কী হবে, তা তরুণদের ওপরে নির্ভর করে না। সেটা নির্ভর করে আমরা তাদের কী বানাতে চাই, তার ওপর। দেখতে হবে তরুণদের গড়ার মতো আমাদের ক্ষমতা কতটা আছে। অর্থাৎ শিক্ষক কেমন হবে, তার ওপরে নির্ভর করে তাঁর ছাত্র কেমন হবে। সক্রেটিস শিক্ষক ছিলেন বলে ছাত্র প্লেটো হয়েছেন। প্লেটোর শিক্ষা পেয়ে ছাত্র অ্যারিস্টটল হতে পেরেছেন। বড়দের যদি বড়ত্ব না থাকে, তবে ছোটরা বড় হতে পারে না। দুর্ভাগ্য যে আমরা বড়রা তাদের সামনে আদর্শ দাঁড় করাতে পারিনি। ফলে এখন বড়দেরই ছোটদের পেছনে দাঁড়াতে হচ্ছে।’

ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্‌ফুজ আনাম জানতে চান, তিনি এত বিচিত্র ধরনের এত বিপুল কাজ করেছেন। এই প্রাণশক্তি পান কেমন করে?

উত্তর দিতে গিয়ে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘শক্তি আসে আনন্দ থেকে। কাজ করতে পারাটাই আনন্দের। আর সব সময় আশাবাদী থাকি। আশা কখনো শেষ হয় না। আশা শেষ মানে আমি শেষ।’

আলাপচারিতায় আরও অংশ নেন দুদক চেয়ারম্যান এম এ মোমেন, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ, চিকিৎসক আমজাদ হোসেন, অভিনয়শিল্পী খায়রুল আলম সবুজ, কথাশিল্পী আনিসুল হক, ছড়াকার আমিরুল ইসলাম, উপস্থাপক আবদুন নূর তুষার, অভিনয়শিল্পী আফসানা মিমি, মশিউর রহমান, আলী নকী প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রাক্তনী খাদিজা রহমান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ