মিরসরাইয়ে বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষ, নিহত ১
Published: 26th, March 2025 GMT
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ১২ জন। বুধবার উপজেলার বারৈয়াহাট পৌরসভার শান্তিরহাট রাস্তার মাথায় এ সংঘর্ষ হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নিহত যুবকের নাম মো. জাবেদ হোসেন (৩৪)। তিনি নগরীর বায়েজিদ থানার নীলগিরি আবাসিক এলাকায় মো. জাহাঙ্গীরের ছেলে। জাবেদ এক যুবদল কর্মীর বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন বলে জানা গেছে।
আহতরা হলেন- ফজলুল করিম (৪৩), জাহেদুল ইসলাম (৪২), শহীদুল ইসলাম (৫১), ওমর ফারুক (৩৫), দিদার (৩৭), আবু সুফিয়ান (৪৫), ফাহিম (২১) এরশাদ (৪০), মোলাম মোর্শেদ (৪০), ইলিয়াছ ((৫০), দিদার (৪০), রাসেল (৫০)। আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
স্থানীয়রা জানায়, গত সোমবার মিরসরাই উপজেলা, বারৈয়াহাট ও মিরসরাই পৌরসভার তিনটি ইউনিটের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে পদধারী ও পদবঞ্চিতদের অনুসারীদের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। মঙ্গলবার একটি পক্ষ মহাসড়ক অবরোধ করে। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে স্বাধীনতা দিবসের দিন সকাল ৬টা থেকে মিরসরাই শহীদ মিনারে ১৪৪ ধারা জারি করে উপজেলা প্রশাসন। এর মধ্যেই সকালে বারৈয়াহাট পৌর বিএনপির আহ্ববায়ক মাঈনুদ্দিন লিটনের বাড়িতে জড়ো হয় তার অনুসারীরা। পরে সেখানে মিরসরাই উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিনের অনুসারীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাঁধে।
মিরসরাই উপজেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির সদস্যসচিব আজিজুর রজমান চৌধুরীর রড় ভাই ইলিয়াছ রহমান চৌধুরী অভিযোগ করেন, মিরসরাই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক দেওয়া স্থগিত করার কারণে আমরা নেতাকর্মীরা একত্রিত হয়ে বারৈয়াহাট পৌরসভা বিএনপির আহ্বায়ক মাঈনুদ্দীন লিটনের জামালপুরের বাড়িতে যাওয়ার পথে নুরুল আমিন চেয়ারম্যান, গাজী নিজাম ও দিদারুল আলম মিয়াজীর অনুসারীরা আমাদের ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা করে। এ সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জাবেদ হোসেন নামে একজন মারা যায়।
বারইয়ারহাট পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মাঈনুদ্দীন লিটন বলেন, নুরুল আমিন চেয়ারম্যানের লোকজনের হামলায় আমার কর্মী মাসুদের বন্ধু জাবেদ হোসেন নিহত হয়েছে। জাবেদ হোসেন মাসুদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। এ ঘটনায় আমরা আইনি ব্যবস্থা নিবো।
এবিষয়ে মিরসরাই উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক নুরুল আমিন বলেন, উপজেলা বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব আজিজুর রহমান চৌধুরী বারৈয়াহাট পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মাঈনুদ্দীন লিটনের বাড়িতে লোকজন জড়ো করছিলো। ওই বাড়িতে যাওয়ার সময় আজিজুর রহমানের লোকজন পথে আমাদের কয়েকজন নেতাকর্মীকে মারধর করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বারৈয়াহাট পৌর বাজারে অবস্থান করা আমাদের লোকজন সেখানে গেলে দুই পক্ষে মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এতে দুই পক্ষে কয়েকজন আহত হয়। সেখানে যে যুবক নিহত হয়েছে সে কে ছিল বা তাকে কারা মেরেছে তা আমার জানা নেই।
জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম বলেন, মিরসরাইয়ে বিএনপির নতুন কমিটি ঘোষণার পর থেকে উত্তেজনা চলছিল। এর জেরে বুধবার বারৈয়াহাট পৌরসভার শান্তিরহাট সড়কের মুখে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে এক যুবক নিহত হয়েছে। আমরা ঘটনার তদন্ত করছি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ স ঘর ষ ন হত ম রসর ই উপজ ল ন র ল আম ন র অন স র স ঘর ষ ল কজন প রসভ
এছাড়াও পড়ুন:
গভীর রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আমল মাসঊদের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বুধবার গভীর রাতে বিনোদপুরের মণ্ডলের মোড় এলাকায় তাঁর বাড়ির দরজার সামনে এ ঘটনা ঘটে। তবে এতে কেউ আহত হয়নি।
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মালেক প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সেখানে তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়েছে। তবে কে বা কারা এটি করেছে, সে বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগও কেউ করেনি। তাঁরা দুর্বৃত্তদের শনাক্তের চেষ্টা করছেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইফতিখারুল আমল মাসঊদের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তিনি সাড়া দেননি। তবে ঘটনার পর তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টে লিখেছেন, ‘ফ্যাসিবাদী অপশক্তির জুলুম-নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলাম। কোনো রক্তচক্ষুর ভয়ংকর হুমকি অন্যায়ের প্রতিবাদ করা থেকে বিরত রাখতে পারেনি। তবে তারা কখনো বাড়ি পর্যন্ত আসার ঔদ্ধত্য দেখাতে পারেনি। কিন্তু আজ আমার বাড়ির দরজায় গভীর রাতের অন্ধকারে হামলার সাহস দেখিয়েছে কাপুরুষের দল! এরা কারা? এদের শিকড়সহ উৎপাটনের দাবি জানাই।’
এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ভেবেছিলাম বাড়ির গেটে কিংবা গেটের বাইরে। কিন্তু গিয়ে দেখলাম একেবারে বাড়িতে হামলা হয়েছে। গতকালই ওনার অসুস্থ বাবা হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে বাসায় এসেছেন। জানি না শেষ কবে একজন শিক্ষকের বাড়িতে রাতের আঁধারে এভাবে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। আমরা শঙ্কিত, স্তম্ভিত।’
এদিকে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে এ সমাবেশের আয়োজন চলছে।