Prothomalo:
2025-06-16@03:27:47 GMT

ঈদ খরচ আয়কর নথিতে দেখাতে হবে

Published: 31st, March 2025 GMT

ঈদ উপলক্ষে আপনি বেতন–ভাতার পাশাপাশি বোনাস পান। হাতে এসেছে বাড়তি নগদ টাকা। তাই এবারের ঈদে হয়তো অনেক কেনাকাটা করেছেন। কেনাকাটা করেছেন স্ত্রী-সন্তানের পাশাপাশি আত্মীয়স্বজনের জন্য। ঈদ উপলক্ষে বেশ ভালো বাজারসদাই করেছেন। এ ছাড়া অনেককে নগদ টাকাও দিয়েছেন।

আপনি কি জানেন, ঈদের খরচ আপনার আয়কর নথিতে দেখাতে হবে? আয়কর নথিতে উৎসবের খরচ অংশে এ খরচ দেখাতে হবে।

ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের বার্ষিক রিটার্ন দেওয়ার সময় জীবনযাপনের খরচ বিবরণী দিতে হয়। সেখানে ঈদসহ উৎসবের যাবতীয় খরচ দেখাতে হয়। আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় আইটি-১০ বি ফরমের মাধ্যমে জীবনযাত্রার তথ্য দিতে হয়। সেখানে ৭ নম্বর সারণিতে উৎসব ও অন্যান্য বিশেষ ব্যয় খাতে ঈদের খরচের যাবতীয় সব জানাতে হবে।

গুলশান-বনানীসহ অভিজাত এলাকায় বিপণিবিতানে এবারের ঈদে পাঞ্জাবির দাম উঠেছে প্রায় চার লাখ টাকা। ৪০-৫০ হাজার টাকার শাড়ি-জামা অহরহ বিক্রি হচ্ছে। ১০-১২ হাজার টাকার পাঞ্জাবি, শার্ট, টি–শার্ট এখন অনেকেই কেনেন। এসব কেনাকাটার খরচ আয়কর নথিতে দেখানো হয় কি না, তা জানতে চান কর কর্মকর্তারা। তাঁদের আয়ের সঙ্গে খরচের সামঞ্জস্য আছে কি না, তা–ও খতিয়ে দেখেন তাঁরা।

ইদানীং ঈদের ছুটিতে পরিবার নিয়ে কিংবা বন্ধুবান্ধব নিয়ে দল বেঁধে ঘুরতে যাওয়া বেশ জনপ্রিয় হয়ে গেছে। আপনি যদি ঈদের ছুটিতে দেশে-বিদেশে ঘুরতে যান; অবকাশ যাপন করতে যান, তাহলেও তা আয়কর নথিতে দেখাতে হবে। নিজ খরচে দেশে ও বিদেশে ভ্রমণ ও অবকাশ ইত্যাদির খরচ আইটি-১০ বি ফরমের ৬ নম্বর সারণিতে দিতে হয়।

আপনার করযোগ্য আয় থাকলেই, অর্থাৎ সাড়ে তিন লাখ টাকার বেশি আয় হলেই প্রতিবছর যে রিটার্ন দেন, এর সঙ্গে আলাদা ফরমে জীবনযাত্রার ব্যয় বিবরণী জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। তবে কোম্পানির পরিচালক হলে আপনার আয় যা-ই হোক না কেন, খরচ বিবরণী জমা দিতেই হবে। কোম্পানি পরিচালকদের রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক।

বাধ্যতামূলকভাবে সম্পদের বিবরণী দাখিলে নানা শর্ত থাকলেও ক্ষেত্রে জীবনযাত্রার খরচ দেখানোর জন্য কোনো শর্ত নেই। সাড়ে তিন লাখ টাকার বেশি করযোগ্য আয় হলেই কোথায় কত খরচ করলেন, তা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) জানাতে হবে। এখানে ঈদের খরচও বাদ যায়নি।

জীবনযাত্রার ব্যয় কেন দেখাতে হয়, এর পেছনে কারণ আছে। আপনি কতটা ধনী, আপনি কত আয় করেন, কত খরচ করেন, আপনার সামাজিক অবস্থান কী, সেটা দেখতে চায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আপনার বৈধ আয়ের সঙ্গে আপনার জীবনযাত্রার মিল আছে কি না, তা দেখতে চান কর কর্মকর্তারা।

জীবনযাত্রায় যেসব তথ্য দিতে হয়

জীবনযাত্রার ফরমে ১ নম্বর সারণিতে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য ও পরিবারের ভরণপোষণের খরচের দিতে হয়। আপনার সংসার খরচ কত, তা–ও জানাতে হবে। ২ নম্বর সারণিতে আবাসনসংক্রান্ত তথ্য দিতে হয়। নিজের বাড়ি কিংবা মা-বাবার বাড়ি কিংবা অফিস থেকে কোয়ার্টার পেলেও তা লিখতে হবে। আপনি যদি ভাড়া বাসায় থাকেন, সেটা লিখতে হবে। বছরে কত টাকা ভাড়া দেন, তা হিসাব করে জানাতে হবে। এমনকি রক্ষণাবেক্ষণ খরচের (পৌরকর, সার্ভিস চার্জ প্রভৃতি) কথাও বলতে হবে।

৩ নম্বর সারণিতে যানবাহন–সংক্রান্ত খরচের তথ্য দিতে হয়। সেখানে গাড়ির চালকের বেতন, প্রতি মাসের জ্বালানি ও রক্ষণাবেক্ষণের খরচ—এসব তথ্য জানাতে হবে।

৪ নম্বর সারণিতে পরিষেবার যত তথ্য আছে, তা দিতে হয়। সেখানে গৃহকর্মীর বেতন–ভাতা বাবদ কত দিলেন, সেটাও জানতে চায় এনবিআর। যাবে। বাড়িওয়ালা-ভাড়াটেনির্বিশেষে সবাইকে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল দিতে হয়। বর্জ্য অপসারণের বিল, ইন্টারনেট ও ডিশের বিলের যাবতীয় তথ্য দিতে হবে। এমনকি মুঠোফোনের রিচার্জে কত খরচ করলেন, তা–ও এই সারণির মাধ্যমে জানাতে হবে।

সন্তানদের পড়াশোনায় পুরো বছরে কত খরচ করছেন, তা জানাতে হয় ৫ নম্বর সারণিতে। ছোট চাকরি করেন অনেকে, কিন্তু ঘুষ-দুর্নীতির টাকায় সন্তানদের নামজাদা স্কুলে পড়ান। তাঁরা যদি কর নথিতে তা না দেখান, তাহলে কর কর্মকর্তারা চাইলে স্কুলের শিক্ষার্থীদের নাম ও পরিচয় দেখে তাদের খুঁজে বের করে ফেলতে পারবেন।

এ ছাড়া সারা বছরের বিভিন্ন সময়ে উৎসে কর কর্তন ও ঋণের তথ্যও জীবনযাত্রার বিবরণীতে দিতে হয়।

আয়কর নথিতে জীবনযাত্রার খরচ দেখানো কোনো শর্ত নেই। সাড়ে তিন লাখ বার্ষিক করযোগ্য আয় হলেই করদাতাতে জীবনযাত্রার খরচ দেখাতে হয়। তবে রিটার্ন জমার সময় সম্পদ বিবরণী নামে আরেকটি বিবরণী জমা দিতে হয়। সে ক্ষেত্রে শর্ত আছে। আপনার সম্পদের পরিমাণ ৫০ লাখ টাকা বেশি হয়; মোটর গাড়ির মালিক হলে, অ্যাপার্টমেন্ট বা গৃহসম্পত্তির মালিক, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার হলে কিংবা সরকারি কর্মচারী হলে সম্পদের বিবরণী দেওয়া বাধ্যতামূলক।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ বনয ত র র খরচ দ খ দ র খরচ ব বরণ কর কর আপন র খরচ র

এছাড়াও পড়ুন:

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সংস্কার যেভাবে হলে ভালো হয়

অন্তর্বর্তী সরকার গত ১২ মে একটি অধ্যাদেশ জারি করে ‘জাতীয় রাজস্ব বোর্ড’ (এনবিআর) এবং ‘অভ‍্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ’ (আইআরডি)-এর বিলুপ্তি ঘোষণা করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে দুটি নতুন বিভাগ– ‘রাজস্বনীতি বিভাগ’ এবং ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ গঠনের প্রস্তাব করেছে। তবে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিপুল প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের মুখে সরকার গত ২২ মে পুরো সংস্কার প্রস্তাবটি  স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে। সরকার অংশীজনের সঙ্গে আরও আলোচনা করে তা বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছে।

দেশের মোট রাজস্বের ৯১ ভাগই কর-রাজস্ব, যার প্রায় পুরোটাই আদায় করে এনবিআর। সে কারণে এনবিআরের সংস্কার এত গুরুত্বপূর্ণ।
পৃথিবীর বহু দেশেই রাজস্বনীতি প্রণয়ন এবং রাজস্বনীতি বাস্তবায়ন বা ব‍্যবস্থাপনার দায়িত্ব পৃথক সংস্থার হাতে আছে; উভয়ের মধ‍্যে একটি বিভাজন বা ‘চেক অ্যান্ড ব‍্যালান্স’ থাকে।  রাজস্বসংক্রান্ত আইন যেমন– শুল্ক আইন, আয়কর আইন তেমনি অর্থ আইন সংশ্লিষ্ট বিধিবিধান যেমন– আয়কর ও শুল্কবিধি, সময়ে সময়ে জারিকৃত স্ট‍্যাটিউটরি রেগুলেশনস অর্ডার (এসআরও) এবং বিভিন্ন ধরনের করের হার নির্ধারণ রাজস্বনীতির অন্তর্ভুক্ত। অন‍্যদিকে, এসব কর আইন ও বিধিবিধানের প্রয়োগ এবং রাজস্ব আদায় করা রাজস্ব ব‍্যবস্থাপনার অংশ। প্রায় সব দেশেই রাজস্বনীতি প্রণয়নের দায়িত্বটি থাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের হাতে এবং এই নীতি বাস্তবায়ন বা ব‍্যবস্থাপনার দায়িত্বটি পালন করে সেই মন্ত্রণালয়েরই অধীন কোনো কার্যনির্বাহী বিভাগ/অধিদপ্তর বা সংবিধিবদ্ধ সংস্থা (স্ট‍্যাটিউটরি বডি)। এটি লোক প্রশাসনের মৌলিক নীতি-ব‍্যবস্থাপনা বিভাজনের স্বীকৃত পন্থার ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং তা সব সেক্টরের ক্ষেত্রেই প্রযোজ‍্য।

বাংলাদেশে কর বা রাজস্বনীতি প্রণয়নের দায়িত্ব (অন্তত তাত্ত্বিকভাবে) পালন করে আসছিল অর্থ মন্ত্রণালয়েরই একটি অংশ ‘অভ‍্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ’, যদিও বাস্তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারাই খসড়া আইন, বিধিবিধান, এসআরও এবং কর প্রস্তাব তৈরি করে তা আইআরডিতে প্রেরণ করে থাকে। অন‍্যদিকে, রাজস্ব ব‍্যবস্থাপনা অর্থাৎ রাজস্বনীতির প্রয়োগ এবং রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব সরাসরি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডই পালন করে আসছে। রাজস্বনীতি এবং রাজস্ব ব‍্যবস্থাপনার মধ‍্যে কোনো বিভাজন বা ‘চেক অ্যান্ড ব‍্যালান্স’ নেই– সেটি বলা যায় না।

এদিক থেকে করনীতি ও কর ব‍্যবস্থাপনার বিভাজন বাংলাদেশের জন্য নতুন কোনো সংস্কার বা অনন‍্য বিষয় নয়। নতুন প্রস্তাবে রাজস্ব ব‍্যবস্থাপনার দায়িত্ব বর্তমানের সংবিধিবদ্ধ সংস্থা ‘এনবিআর’-এর স্থলে প্রস্তাবিত ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ’কে (যা অর্থ মন্ত্রণালয়েরই একটি অংশ) দেওয়া হয়েছে, যা কার্যত ‘সোনার পাথর বাটি’ বলে মনে হয়। কারণ মন্ত্রণালয়ের তো নীতিনির্ধারণের কাজই করার কথা। পৃথিবীর কোনো দেশেই রাজস্ব ব‍্যবস্থাপনার দায়িত্ব অর্থ মন্ত্রণালয় বা অন‍্য কোনো মন্ত্রণালয়ের হাতে থাকে না। এটি থাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন এক বা একাধিক কার্যনির্বাহী সংস্থা যেমন– সরকারি বিভাগ/অধিদপ্তর বা সংবিধিবদ্ধ সংস্থার হাতে। প্রস্তাবিত সংস্কার বাস্তবায়ন করা হলে রাজস্বনীতি এবং রাজস্ব ব‍্যবস্থাপনার মধ‍্যে যেমন সমন্বয় কঠিন হয়ে পড়বে (কারণ কেউ কারও অধীন মেনে নেবে না), তেমনি রাজস্ব ব‍্যবস্থাপনা ও রাজস্ব আদায় আরও জটিল হয়ে পড়বে। কারণ এতে ব্যবস্থাপনার মধ্যে অতিরিক্ত আরও একটি স্তর বাড়বে, শীর্ষ ব‍্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান এবং মাঠ পর্যায়ের ইউনিটগুলোর বর্তমান সহজ আন্তঃসংযোগ কঠিন হয়ে পড়বে এবং শীর্ষ ব‍্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানে আমলাতান্ত্রিক ব‍্যবস্থা ও ভাবধারার উদ্ভব ঘটবে। তবে ‘রাজস্বনীতি প্রণয়ন ও রাজস্ব ব‍্যবস্থাপনা’র সংস্কারগুলো নিম্নরূপ হতে পারে বলে আমি মনে করি:
এক. রাজস্ব ব‍্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে একটির স্থলে দুটি বোর্ড গঠন: বর্তমানের একটি রাজস্ব বোর্ডের স্থলে দুটি রাজস্ব বোর্ড বা সংস্থা গঠন করা যায়-(ক) একটি প্রত‍্যক্ষ করের (আয়কর) জন‍্য, (খ) অপরটি পরোক্ষ করের (শুল্ক, ভ‍্যাট ইত‍্যাদি) জন‍্য, ভারতে যেমন আছে। অনেকেই মনে করেন, দুটি বোর্ডের মধ‍্যে আয় বাড়ানোর জন‍্য প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হবে এবং কর ব‍্যবস্থাপনা অধিকতর লক্ষ‍্যভিত্তিক হবে। অন্যদিকে এনবিআরে আগে থেকেই উক্ত দুই দিকেই পর্যাপ্ত এবং সমসংখ‍্যক সদস‍্য থাকায় দুটি বোর্ড গঠিত হলে কোনো ব‍্যয় বাড়বে না। ভারতের মতো এই সংস্থা দুটির প্রধান হবেন যথাক্রমে বিসিএস আয়কর এবং বিসিএস শুল্ক ক‍্যাডারের জ‍্যেষ্ঠ‍তম কর্মকর্তা এবং তাদের সরকারের একজন সচিবের পদমর্যাদা দেওয়া যেতে পারে। বোর্ডের অন‍্য সদস‍্যরা জ‍্যেষ্ঠ‍তার ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ক‍্যাডার হতে নিয়োগ পাবেন। 

দুই. এনবিআরে বেসরকারি খাত থেকে 
অ-নির্বাহী সদস‍্য নিয়োগ বা পরামর্শ কমিটি গঠন : এনবিআরের স্থলে যদি প্রত‍্যক্ষ ও পরোক্ষ করের জন‍্য দুটি পৃথক বোর্ড গঠন করা হয়, তবে কর্ম-সম্পাদনে সাফল‍্য, দক্ষতা, করদাতাদের সেবা প্রদান, কর্ম-কৌশল এবং ঝুঁকি ব‍্যবস্থাপনা ইত‍্যাদি বিষয়ে বোর্ডকে পরামর্শ দেওয়ার জন‍্য বোর্ডের অধীনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, পেশাজীবী এবং বেসরকারি খাতের নির্বাহীদের বোর্ডের অ-নির্বাহী সদস‍্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে। বিকল্প হিসেবে তাদের নিয়ে বোর্ডের পরামর্শ কমিটি গঠন করা যেতে পারে। তবে করনীতি প্রণয়ন এবং কোনো ব‍্যক্তি-বিশেষ বা প্রতিষ্ঠানের কর নির্ধারণ বিষয়ে অ-নির্বাহী সদস‍্যদের অথবা পরামর্শ কমিটির সদস‍্যদের পরামর্শ দেওয়ার কোনো ক্ষমতা থাকবে না।

সিঙ্গাপুরের ‘ইনল‍্যান্ড রেভিনিউ অথরিটি অব সিঙ্গাপুর’-এর উপদেষ্টা বোর্ডে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং বেশ কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি রয়েছেন। ‘সিঙ্গাপুর কাস্টমস’-এর পরামর্শক কমিটিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিশ্ববিদ‍্যালয়ের শিক্ষক, পোর্ট অথরিটি, এয়ারলাইনস, লজিস্টিকস কোম্পানি এবং ফ্রেইট অ্যাসোসিয়েশন প্রতিনিধিরা উপদেষ্টা পরিষদে অ-নির্বাহী সদস‍্য হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। যুক্তরাজ‍্যে এইচএমআরসি পরিচালনার জন‍্যও একটি বোর্ড রয়েছে এবং এতে বেসরকারি খাতের বেশ কয়েকজন পেশাজীবী অ-নির্বাহী পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত আছেন। বোর্ডের অ-নির্বাহী পরিচালক পদে কর, অ‍্যাকাউন্ট্যান্সি, তথ‍্যপ্রযুক্তি, মানবসম্পদ ব‍্যবস্থাপনা, ইত‍্যাদি বিষয়ে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন পেশাজীবী এবং বেসরকারি খাতের নির্বাহীদের নিয়োগ দেওয়া হয়। বেসরকারি খাতের পরিচালকদের সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা এবং পেশাদার ব্যাকগ্রাউন্ড বোর্ডের পরামর্শের জন্য একটি বাহ্যিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আসে এবং তাতে বোর্ডের কর্ম-পরিকল্পনা প্রণয়ন ও কর্ম-কৌশল নির্ধারণে গুণগত পরিবর্তন আশা করা যায়।
তিন. ‘রাজস্বনীতি বিভাগ’ কীভাবে গঠিত হওয়া উচিত: ‘রাজস্বনীতি বিভাগ’ মূলত কাস্টমস ও আয়কর এবং অর্থ ব‍্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন‍্য ক্যাডার সদস‍্যদের দ্বারা গঠিত হওয়া উচিত। কারণ, এটি একটি অত্যন্ত বিশেষায়িত কাজ, অন্য মন্ত্রণালয়গুলোর মতো নয়। সাধারণ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পক্ষে রাজস্বনীতি কার্যক্রম কার্যকরভাবে পরিচালনা করা সহজ হবে না, কারণ এটির জন্য প্রয়োজন বিশেষজ্ঞ জ্ঞান এবং রাজস্ব ব্যবস্থাপনার বাস্তব অভিজ্ঞতা। তবে সেই সঙ্গে বাজার থেকে অর্থনীতিবিদ ও অন্য পেশাজীবীদেরও ‘রাজস্বনীতি বিভাগে’ আনতে হবে। এই জনবল নীতির পাশাপাশি, ‘রাজস্বনীতি বিভাগ’কে পরিকল্পনা কমিশনের মতো একটি বিশেষ স্বাধীন সংস্থার আদলে পরিচালিত হতে হবে এবং এর গঠন কাঠামো ফ্ল্যাট বা সমতল হতে হবে, যেখানে একাধিক সদস্য সমান পদমর্যাদা ও অবস্থানে থাকবেন। এটি যেন সচিব, অতিরিক্ত সচিব বা যুগ্ম সচিব ইত্যাদির মতো আমলাতান্ত্রিক ও পদসোপান-ভিত্তিক (হায়ারার্কিকেল) কাঠামোতে পরিণত না হয়।

ফিরোজ আহমেদ: সদস্য, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন; সাবেক কর্মকর্তা, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক
firozlxp@gmail.com

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সংস্কার যেভাবে হলে ভালো হয়