ছুটির দিনে ফিরে পাওয়া চিরচেনা চট্টগ্রাম শহর
Published: 1st, April 2025 GMT
রমজানের শেষ। আমাদের সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদ উদ্যাপনের জন্য মানুষ বাড়ি যাচ্ছে। তাতে চেনা শহরটার চেহারা পাল্টে গেল। কেমন অচেনা মনে হচ্ছে। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় নন্দনকানন থেকে রিকশায় প্রবর্তক মোড় পর্যন্ত আসতে এক সেকেন্ডের জন্য কোথাও দাঁড়াতে হয়নি। ১২ মিনিটে পৌঁছে গেলাম। চারদিক কেমন শান্ত ও নির্জন। কোথাও যানজট নেই। গাড়ির হর্ন নেই। মানুষের চিৎকার–চেঁচামেচি নেই। হঠাৎ করে যেন গত শতকের সত্তর কিংবা আশির দশকের চট্টগ্রামে ফিরে গেলাম। ঈদ এলে প্রায় সব পত্রিকায় একটি কমন শিরোনাম থাকে, নাড়ির টানে ফিরছে মানুষ। কেবল কি নাড়ির টানে মানুষ শহর ছাড়ে?
দুই ঈদ কিংবা একটু লম্বা ছুটি পেলে মানুষ কেন ছুটে যায়, কেন পালায় শহর থেকে? মা, বাবা, দাদা কিংবা দাদিসহ পূর্বপুরুষকে শ্রদ্ধা জানাতে? তাঁদের কবর জিয়ারত করতে, তাঁদের স্মৃতিবিজড়িত ভূমিতে পা রেখে মনের শান্তি পেতে? এটা হয়তো ঠিক। কিন্তু সবচেয়ে বড় সত্য কিংবা বাস্তবতা হলো, মানুষ নাগরিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি চায়। নগর মানুষকে জীবিকা দিয়েছে, চাকরি, ব্যবসা দিয়েছে; শিক্ষা, চিকিৎসাসহ নানা সুবিধা দিয়েছে, কিন্তু এর বিনিময়ে তার ভেতর থেকে প্রশান্তিটুকু কেড়ে নিয়েছে। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের নগরগুলো উন্নত দেশের নগরগুলোর মতো পরিকল্পিতভাবে বেড়ে ওঠে না। এ কারণে নগরের পরিধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এখানে মানুষের ভোগান্তি বাড়তে শুরু করে।
আমাদের চট্টগ্রাম ছিল একসময় অরণ্যসংকুল জীববৈচিত্র্যে ভরা একটি পার্বত্য শহর। ঢাকা ও কলকাতা থেকেও প্রাচীন এই বন্দরনগরীর বয়স দেড় হাজার বছরের মতো। এই নগরে সুলতানি ও মোগল আমলের ঐশ্বর্যের চিহ্ন যেমন আছে, তেমনি আছে ব্রিটিশ শাসনামলের নানা নিদর্শন। প্রকৃতি যেমন চট্টগ্রামের প্রতি উদারহস্ত, তেমন ঐতিহ্যের দিক থেকেও ছিল সমৃদ্ধ। ঐতিহাসিক, বাণিজ্যিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে সব সময় এই নগর খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই গুরুত্ব দিন দিন বেড়েছে। ফলে সব ক্ষেত্রের মানুষের একটা আকর্ষণ ছিল কর্ণফুলীর তীরের এই জনপদের প্রতি। তাই দিন দিন এর সীমা বড় হয়েছে, পরিধি বিস্তৃতি লাভ করেছে।
বিশেষ করে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের আবির্ভাবের পর দেশের একমাত্র সমুদ্রবন্দরের ওপর নির্ভরতা বাড়ার পর এখানকার কর্মযজ্ঞ দিন দিন বাড়তেই থাকে। তা ছাড়া দিন দিন শহরের ওপর মানুষের নির্ভরতা বাড়তে থাকায় মানুষ ক্রমে শহরমুখী হতে থাকে। ফলে নগরে মানুষের সংখ্যা ক্রমে বাড়তে থাকে। ১৮৬৩ সালে চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যালটির যাত্রা শুরুর কালে এখানে ওয়ার্ড ছিল চারটি। এখন সিটি করপোরেশনের ৪১টি ওয়ার্ড। ওই সময় শহরের আয়তন ছিল চার বর্গমাইল। আর এখন সিটি করপোরেশনের আয়তন ১৫৫ বর্গকিলোমিটার। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০২২ সালের হিসাব অনুযায়ী, চট্টগ্রাম শহরে ৩৫ লাখ মানুষের বাস। কিন্তু চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মতে, চট্টগ্রাম নগরে ৬০ লাখ মানুষের বসবাস।
এই যে জনসংখ্যার বিরাট উল্লম্ফন এবং নগরের বিস্তার, এটা সুষ্ঠু পরিকল্পনায় যথাযথভাবে হয়নি। নগর বেড়েছে, কিন্তু প্রাকৃতিক সম্পদ কমেছে। পরিধি বিস্তৃত হয়েছে; কিন্তু খাল নদী, জলাশয় সংকুচিত হয়েছে। পরিবেশের ক্ষতি করতে করতে, প্রাকৃতিক সম্পদ বিনষ্ট করতে করতে আমাদের চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল থেকে সিটি করপোরেশনে উন্নত হয়েছে, কিন্তু বাসযোগ্যতা হারিয়ে একটা ধূলিধূসর দূষিত শহরে পরিণত হয়েছে।
দিন যতই এগোচ্ছে, শহরের ওপর মানুষের নির্ভরতা বাড়ছে। মানুষের একটু সামর্থ্য হলেই শহরে চলে আসছে। গ্রামের প্রশস্ত উঠান, পুকুর, দিঘিসহ শুদ্ধ আলো–হাওয়ার বাড়ি ছেড়ে প্রয়োজনের তাগিদে শহরে গলিঘুপচির মধ্যে খাঁচার মতো ঘরে বাস করছে। এখানে সারা দিন কর্মব্যস্ত থাকে তারা। যানজট, জলজট, ধোঁয়া, ধুলা, হাওয়াহীন দমবন্ধ পরিবেশে থেকে থেকে মানুষ তাই আজকাল একটু ছুটি পেলে গ্রামে ফিরে গিয়ে প্রাণের শক্তি নিয়ে আসে, বেঁচে থাকার প্রেরণা নিয়ে আসে। আর কয়েকটি দিন শহরও যেন মানুষের ভারমুক্ত থাকে, যানবাহনের শব্দদূষণ আর ধোঁয়ার দূষণ থেকে বাঁচে। নগরও যেন বিশ্রাম নেয়, নিশ্বাস ফেলে।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত বছরের এই কয়েকটি ছুটির দিনই কি আমাদের নাগরিক সমস্যা থেকে মুক্তির একমাত্র সমাধান? এর কী কোনো বিকল্প নেই? চট্টগ্রাম শহরকে কি পরিবেশের বিপর্যয় থেকে রক্ষা করা যাবে না? এই প্রশ্নের উত্তরে হ্যাঁ বলা সত্যিই কঠিন। কারণ, যে পাহাড় আমরা হত্যা করেছি, যে জলাশয়গুলো আমরা ভূমিতল থেকে মুছে দিয়েছি, যে খালগুলো হারিয়ে গেছে, যে বৃক্ষ উজাড় হয়েছে এবং তার বদলে গড়ে উঠেছে বড় বড় দালান; সেগুলো পূর্বাবস্থায় ফিরে যাওয়া অসম্ভব। তাই অতীতের জন্য আমাদের হাহাকার ছাড়া কিছু নেই। কিন্তু ভবিষ্যৎকে বর্তমান থেকে আরও আরামদায়ক কিংবা অধিক বাসযোগ্য করতে পারি।
এর জন্য দরকার যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত এবং তার বাস্তবায়ন। আজকের ছুটির দিনগুলোর মতো শান্ত, দূষণহীন দিন হয়তো পাওয়া যাবে না। কিন্তু পরিকল্পনা করে একটি নগরকে সুন্দর ও মানুষের বসবাসযোগ্য করা যায়। নগরের ওপর থেকে মানুষের চাপ কমিয়ে আনতে হবে। কর্ণফুলী নদীর ওপারে তীরবর্তী গ্রামগুলোতে শহরের সুযোগ-সুবিধা রাখলে, শহরের সঙ্গে সময়ের দূরত্ব কমিয়ে আনতে পারলে মানুষ কেন থাকবে গলির অন্ধকারে। গ্রাম থেকে শহরে এসে দিনের কাজ সেরে সন্ধ্যায় ফিরে যাবে নিজের শান্তির ঘরে। তার জন্য নতুন কালুরঘাট সেতুসহ অন্তত আরও দুটি সেতু নির্মাণ প্রয়োজন।
চট্টগ্রাম শহরের পরিধি বেড়ে যাওয়ায় কিছু কিছু ভারী শিল্পাঞ্চল এখন নগরের মধ্যে ঢুকে পড়েছে। একটা নগরের ভেতরে এ রকম ভারী শিল্পকারখানা থাকা সমীচীন নয়। কালুরঘাট ও নাসিরাবাদে বহু বড় কারখানা রয়েছে, যেগুলো এই শহরের পরিবেশকে বিনষ্ট করছে। একটা কারখানা ঘিরে বহু রকমের কর্মকাণ্ড হয়, যেগুলো একটি মানববান্ধব নগরের পরিপন্থী। পক্ষান্তরে এসব কারখানা আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখছে। মানুষের কর্মসংস্থান থেকে শুরু করে পণ্য উৎপাদনসহ নানামুখী উপকার করছে এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান। তাই সরকারি সহায়তায় এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে নগর থেকে দূরে স্থানান্তর করতে পারলে চট্টগ্রাম শহর বড় ধরনের দূষণ থেকে রক্ষা পাবে।
এ ছাড়া সামাজিক বনায়ন, পাহাড় কর্তনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ, হারিয়ে যাওয়া খাল উদ্ধার, কারখানা সরিয়ে খালি জায়গা তৈরি, মানুষের লোভ–লালসা থেকে ফুটপাত, বিদ্যমান খাল, পুকুর, মাঠ, সড়ক, সরকারি জায়গাকে দূরে রাখতে পারলে চট্টগ্রাম নগর ধীরে ধীরে তার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফিরে পাবে। আর এর জন্য দরকার সংশ্লিষ্ট সবার অকৃত্রিম আন্তরিক প্রচেষ্টা। ভোট আর ক্ষমতার রাজনীতির বাইরে এসে চট্টগ্রাম শহরকে বাঁচাতে সবাই এক জোট হবেন, এটাই এই ঈদে আমাদের প্রত্যাশা।
ওমর কায়সার প্রথম আলোর চট্টগ্রাম অফিসের বার্তা সম্পাদক
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত হয় ছ পর ব শ আম দ র র জন য নগর র র ওপর শহর র
এছাড়াও পড়ুন:
ভোগবাদী যুগে ইসলামে সুখের খোঁজ
আপনার বাড়িতে কি অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের স্তূপ জমে আছে? জানেন কি, এর থেকে মুক্তির পথ আছে ইসলামের সরল জীবনধারায়? আধুনিক বিশ্বে ভোগবাদের তীব্র ঝড়ে আমরা প্রায়ই নিজেদের দেখি অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রে ঠাসা ঘরে।
নতুন ফ্যাশনের পোশাক, সর্বশেষ প্রযুক্তির গ্যাজেট বা মধ্যরাতে এক ক্লিকে কেনা অপ্রয়োজনীয় পণ্য—এসব আমাদের জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু ইসলাম আমাদের ন্যূনতম একটি সরল জীবনধারার পথ দেখায়, যা পার্থিব লোভ থেকে মুক্ত করে আমাদের আল্লাহর পথে নিবেদিত হতে উৎসাহিত করে।
আয়েশা, তুমি যদি আমার সঙ্গে মিলিত হতে চাও, তবে এই দুনিয়া থেকে একজন পথিকের প্রয়োজনীয় জিনিসের মতো সামান্য গ্রহণ করো।সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ১৭,৮০০সংযম কেন জরুরিমিনিমালিজম বা ন্যূনতাবাদ এমন একটি জীবনধারা, যেখানে আমরা শুধু প্রয়োজনীয় জিনিসের ওপর নির্ভর করব এবং অতিরিক্ত ভোগবিলাস থেকে দূরে থাকব। ক্রমাগত কেনাকাটার দিকে প্রলুব্ধ না হয়ে শুধু যেটুকু না হলেই জীবন চলে না, সেটুকু নিজের কাছে রাখব।
আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘হে আদম সন্তান, প্রত্যেক নামাজের সময় বেশভূষা সৌন্দর্য গ্রহণ করো, খাও এবং পান করো, কিন্তু অপচয় কোরো না। নিশ্চয়ই তিনি অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা আ’রাফ, আয়াত: ৩১)।
এই আয়াত আমাদের জীবনে সংযম ও সরলতার গুরুত্ব মনে করিয়ে দেয়।
আরও পড়ুনদুনিয়ার ভোগ–বিলাস নিয়ে সুরা তাকাসুরের সতর্কতা১০ এপ্রিল ২০২৩বিজ্ঞাপনের প্রলোভন আজকাল আমাদের অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটার দিকে ঠেলে দেয়। প্রায়ই এমন জিনিস কিনে ফেলি, যেমন একটি ইউএসবি মগ হিটার বা জামাকাপড়, যা তারপর বছরের পর বছর অব্যবহৃত পড়ে থাকে।
বাড়িতে জমে থাকে প্যাকেট না খোলা গ্লাস–বক্স, অপঠিত বইয়ের স্তূপ। প্রশ্ন করে দেখি তো, আমাদের আসলেই কি এগুলো প্রয়োজন ছিল?
মহানবী (সা.)-এর সাদাসিধা জীবনমহানবীজি (সা.) এবং তাঁর সাহাবারা সরল জীবনযাপনের উজ্জ্বল উদাহরণ। হজরত আয়েশা (রা.)-কে নবীজি বলেছিলেন, ‘হে আয়েশা, তুমি যদি আমার সঙ্গে মিলিত হতে চাও, তবে এই দুনিয়া থেকে একজন পথিকের প্রয়োজনীয় জিনিসের মতো সামান্য গ্রহণ করো। ধনীদের সঙ্গে মেলামেশা থেকে সাবধান থাকো এবং কোনো পোশাককে তখনই জীর্ণ হয়ে গেছে মনে করো, যখন তুমি তাতে প্যাঁচ লাগিয়েছ (মানে যখন পুরোনো হয়ে যাওয়ার কারণে পেঁচিয়ে যায়)।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ১৭,৮০০)।
এই হাদিসে নবীজি (সা.) স্পষ্টভাবে সরল জীবনযাপন এবং অতিরিক্ত সম্পদ সঞ্চয় থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
উপহারের পরিবর্তে আমরা দাতব্য সংস্থায় দানের জন্য অনুরোধ করতে পারি। এমনকি আমাদের একটি অনলাইন সাবস্ক্রিপশন বাতিল করে সেই অর্থ স্থানীয় মসজিদে দান করতে পারি।ইসলাম আমাদের শেখায় যে পার্থিব সম্পদ ক্ষণস্থায়ী এবং এটি আমাদের চিরস্থায়ী জীবনের জন্য প্রস্তুতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। নবীজি (সা.) কখনো অপ্রয়োজনীয় সম্পদ সঞ্চয় করেননি এবং সব সময় দানশীলতার মাধ্যমে আল্লাহর পথে ব্যয় করতে উৎসাহিত করেছেন।
দানের সংস্কৃতিআজকের বিশ্বে ভোগবাদী সংস্কৃতি আমাদের জীবনকে জটিল করে তুলেছে। ক্রেডিট কার্ড, সহজলভ্য ঋণ এবং ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলো আমাদের ক্রমাগত কেনাকাটার দিকে প্রলুব্ধ করে। আমাদের পূর্ববর্তী প্রজন্ম, যেমন আমাদের দাদা-দাদিরা, সীমিত সম্পদের মধ্যে সরল জীবন যাপন করতেন। কিন্তু গত কয়েক দশকে বিশ্বব্যাপী মধ্যবিত্ত শ্রেণির উত্থান এবং সহজে ঋণ পাওয়ার সুযোগ আমাদের ভোগবাদী প্রবৃত্তিকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুনখাদ্যনিরাপত্তা নিয়ে ইসলামের নির্দেশনা০৯ জুন ২০২৫কিন্তু ইসলাম আমাদের শেখায়, প্রয়োজনের বাইরে অতিরিক্ত সম্পদ সঞ্চয় করা লোভ ও কৃপণতার দিকে নিয়ে যায়, যা একজন মুমিনের বৈশিষ্ট্য নয়।
ইসলাম আমাদের জীবনকে সরল করার পাশাপাশি আল্লাহর পথে ব্যয় করতে উৎসাহিত করে। আমরা চাইলে মাসিক বাজেটের একটি অংশ দানের জন্য বরাদ্দ করতে পারি।
যে ব্যক্তি নিজের সম্পদে সংযমী হয় এবং আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তার জন্য জান্নাতের দরজা খুলে যায়।সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯৯৪বিয়ের মতো উৎসবে আমরা বিলাসবহুল আয়োজনের পরিবর্তে সরলতা বেছে নিতে পারি। উপহারের পরিবর্তে আমরা দাতব্য সংস্থায় দানের জন্য অনুরোধ করতে পারি। এমনকি আমাদের একটি অনলাইন সাবস্ক্রিপশন বাতিল করে সেই অর্থ স্থানীয় মসজিদে দান করতে পারি।
নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিজের সম্পদে সংযমী হয় এবং আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তার জন্য জান্নাতের দরজা খুলে যায়।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯৯৪)।
আমাদের ভালো কাজ এবং দানশীলতা পরকালে যেমন উপকারে আসবে, তেমনি সমাজের জন্যও হবে কল্যাণকর। অপ্রয়োজনীয় খরচ কমিয়ে দানশীলতার দিকে মনোযোগ দিলে সমাজের দরিদ্র ও অভাবী মানুষের জীবন উন্নত হবে।
ভোগবাদী জীবন মানুষকে অস্থির করে তোলে এবং ন্যূনতম খরচের জীবনধারা মানুষকে তৃপ্তির জীবন উপহার দেয়। এটি একই সঙ্গে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনেরও একটি পথ।
আমরা যদি আমাদের অপ্রয়োজনীয় খরচ কমিয়ে আল্লাহর পথে ব্যয় করি, তবে তা আমাদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনকে সমৃদ্ধ করবে। ন্যূনতমবাদ আমাদের মনে করিয়ে দেয়, আমাদের প্রকৃত সুখ পার্থিব সম্পদে নয়, বরং আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পরকালের প্রস্তুতিতে নিহিত।
আরও পড়ুনআধুনিক এই প্রবণতার শিকড় ইসলামে২০ মে ২০২৫