বিশ্বে কোটিপতির সংখ্যা তিন হাজার ছাড়ালো
Published: 2nd, April 2025 GMT
বিশ্বের কোটিপতিরা সবসময়ই ধনী ও ক্ষমতাশালী ছিলেন - তবে এখনকার চেয়ে বেশি কখনোই নয়। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে এটি সত্য, যেখানে ডোনাল্ড ট্রাম্প জানুয়ারিতে আমেরিকার বিলিয়নিয়ার-ইন-চিফ হিসেবে (আবার) শপথ গ্রহণ করেছিলেন। এবার তিনি কোটিপতি শ্রেণিকে সরকারের উপর আগের চেয়েও বেশি নিয়ন্ত্রণ দিচ্ছেন। তার ডান হাতের মানুষটি পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। তার প্রশাসনে কমপক্ষে ১০ জন বিলিয়নিয়ার এবং বিলিয়নিয়ার স্বামী-স্ত্রী রয়েছেন। আর মেটার মার্ক জুকারবার্গ থেকে শুরু করে ফরাসি বিলাসবহুল পণ্যের কিংপিন বার্নার্ড আর্নল্ট পর্যন্ত অসংখ্য বিলিয়নিয়ার নির্বাহী ট্রাম্পের পিছনে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন ব্যবসার জন্য।
অবশ্য কোটিপতিদের এই সৌভাগ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরেও বিস্তৃত। চলতি বছর ফোর্বসের বিশ্বের বিলিয়নিয়ারদের তালিকায় বিশ্বজুড়ে রেকর্ড তিন হাজার ৩২৮ জন স্থান পেয়েছেন, যা গত বছরের তুলনায় ২৪৭ জন বেশি। এবারই প্রথমবারের মতো বিলিয়নিয়ারের সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়ে গেল। তাদের সম্পদের মূল্য সব মিলিয়ে রেকর্ড ১৬ দশমিক ১ ট্রিলিয়ন ডলার, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন ছাড়া বিশ্বের প্রতিটি দেশের জিডিপির চেয়েও বেশি। ধনীদের গড় সম্পদ এখন ৫ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা ২০২৪ সালের তুলনায় ২০০ মিলিয়ন ডলার বেশি।
তালিকা অনুযায়ী, বিশ্বে সবচেয়ে ধনী হলেন এলন মাস্ক, যার আনুমানিক সম্পদের পরিমাণ ৩৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। মাস্ক গত বছর তার সম্পদে ১৪৭ বিলিয়ন ডলার যোগ করেছেন। তালিকায় এরপরেই রয়েছেন মেটার মার্ক জুকারবার্গ, যার আনুমানিক মোট সম্পদ ২১৬ বিলিয়ন ডলার। অ্যামাজনের জেফ বেজোসের সম্পদের পরিমাণ ২১৫ বিলিয়ন ডলার। সেই সুবাদে তিনি তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছেন। ওরাকলের ল্যারি এলিসন ১৯২ বিলিয়ন ডলার সম্পদের মালিক হয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছেন।
সব মিলিয়ে চলতি বছর বার্ষিক বিলিয়নিয়ার র্যাঙ্কিংয়ে ২৮৮ জন নতুন মুখ যোগ হয়েছে। এদের মধ্যে রকস্টার ব্রুস স্প্রিংস্টিন (১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার), চলচ্চিত্র তারকা আর্নল্ড শোয়ার্জনেগার (১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার) এবং কৌতুক অভিনেতা জেরি সিনফেল্ড (১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার) এর মতো সেলিব্রিটিরা রয়েছেন।
সকলের মধ্যে সবচেয়ে ধনী নবাগত হলেন মেরিলিন সাইমনস ($৩১ বিলিয়ন), হেজ ফান্ড কিংবদন্তি জিম সাইমনসের বিধবা স্ত্রী, যিনি ২০২৪ সালের মে মাসে মারা গেছেন। তিনি গত এক বছরে মারা যাওয়া ৩২ জন বিলিয়নেয়ারের একজন ছিলেন। (আরেকজন, ইসরায়েলি শিল্পপতি স্টিফ ওয়ার্থাইমার, মার্চের শেষের দিকে মারা যান, আমরা তালিকাটি বন্ধ করার পর, এবং এইভাবে তিনি তালিকায় স্থান পেয়েছেন।)
বিশ্বের বিলিয়নিয়ারদের মধ্যে মাত্র ৪০৬ জন নারী রয়েছেন। এদের মধ্যে সবচেয়ে ধনী হচ্ছেন ওয়ালমার্টের উত্তরাধিকারী অ্যালিস ওয়ালটন (১০১ বিলিয়ন ডলার)। এই তালিকায় রয়েছেন ফরাসি প্রসাধন সামগ্রী লরিয়েলের উত্তরাধিকারী ফ্রাঁসোয়া বেটেনকোর্ট মেয়ার্স (৮১ দশমিক ৬ বিলিয়ন)।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ১ দশম ক সবচ য
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ