বসতবাড়ির পেছনে একই রশিতে মা-ছেলের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
Published: 6th, April 2025 GMT
ঝালকাঠির নলছিটিতে বসতঘরের পেছনের একটি গাছ থেকে একই রশিতে ঝুলন্ত অবস্থায় মা-ছেলের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ রোববার সকালে উপজেলার মগড় ইউনিয়নের রায়াপুর এলাকা থেকে তাঁদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
ওই দুজন হলেন আসাদ মাঝি (৩৫) ও তাঁর মা রুবি বেগম (৫০)। রুবি বেগম ওই গ্রামের মুদিরদোকানি আবু হানিফ মাঝির স্ত্রী। এই দম্পতির চার ছেলে। দুই ছেলে আহাদ মাঝি (৩৮) ও সোহাগ মাঝি (৩৭) খুলনায় দিনমজুরের কাজ করেন। আরেক ছেলে আবদুল হাই মাঝি (৪৫) ঢাকায় থাকেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আসাদ মাঝি ও তাঁর মা রুবি বেগম খুলনায় থাকেন। ঈদ উপলক্ষে তাঁরা বাড়িতে এসেছিলেন। আজ সকালে এলাকাবাসী বসতবাড়ির পেছনের একটি গাছে একই রশিতে মা ও ছেলের লাশ ঝুলতে দেখেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে দুজনের লাশ উদ্ধার করে।
পুলিশ জানিয়েছে, লাশের গায়ে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
আবু হানিফ মাঝি অভিযোগ করেন, এই এলাকার একটি মেয়ে গত রমজান মাস থেকে নিখোঁজ। মেয়েটির পরিবারের দাবি, তাঁর ছেলে আহাদ মাঝি ওই মেয়েকে লুকিয়ে রেখেছেন। তাঁরা তাঁর ছেলে আসাদকে মারধর করাসহ বিভিন্ন হুমকি দিয়ে চাপ সৃষ্টি করেছেন। এ কারণে তাঁর স্ত্রী ও ছেলে আত্মহত্যা করেছেন।
নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুস সালাম বলেন, লাশ দুটি উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস