ঝালকাঠির নলছিটিতে বসতঘরের পেছনের একটি গাছ থেকে একই রশিতে ঝুলন্ত অবস্থায় মা-ছেলের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ রোববার সকালে উপজেলার মগড় ইউনিয়নের রায়াপুর এলাকা থেকে তাঁদের লাশ উদ্ধার করা হয়।

ওই দুজন হলেন আসাদ মাঝি (৩৫) ও তাঁর মা রুবি বেগম (৫০)। রুবি বেগম ওই গ্রামের মুদিরদোকানি আবু হানিফ মাঝির স্ত্রী। এই দম্পতির চার ছেলে। দুই ছেলে আহাদ মাঝি (৩৮) ও সোহাগ মাঝি (৩৭) খুলনায় দিনমজুরের কাজ করেন। আরেক ছেলে আবদুল হাই মাঝি (৪৫) ঢাকায় থাকেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আসাদ মাঝি ও তাঁর মা রুবি বেগম খুলনায় থাকেন। ঈদ উপলক্ষে তাঁরা বাড়িতে এসেছিলেন। আজ সকালে এলাকাবাসী বসতবাড়ির পেছনের একটি গাছে একই রশিতে মা ও ছেলের লাশ ঝুলতে দেখেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে দুজনের লাশ উদ্ধার করে।

পুলিশ জানিয়েছে, লাশের গায়ে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

আবু হানিফ মাঝি অভিযোগ করেন, এই এলাকার একটি মেয়ে গত রমজান মাস থেকে নিখোঁজ। মেয়েটির পরিবারের দাবি, তাঁর ছেলে আহাদ মাঝি ওই মেয়েকে লুকিয়ে রেখেছেন। তাঁরা তাঁর ছেলে আসাদকে মারধর করাসহ বিভিন্ন হুমকি দিয়ে চাপ সৃষ্টি করেছেন। এ কারণে তাঁর স্ত্রী ও ছেলে আত্মহত্যা করেছেন।

নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুস সালাম বলেন, লাশ দুটি উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সৈয়দপুরে লাশ সামনে রেখে পরিবারের সংবাদ সম্মেলন, মানসিক আঘাতে মৃত্যুর অভিযোগ

নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলায় এক ব্যক্তির লাশ সামনে রেখে সংবাদ সম্মেলন করেছে পরিবার। গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে উপজেলার বাঙালীপুর ইউনিয়নের আমজাদের মোড়ে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

মারা যাওয়া ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষ বসতবাড়িতে নিজেরাই আগুন লাগিয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তি মোসলেম সরদারের (৬০) বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। এ কারণে মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে তিনি হার্ট অ্যাটাক করে মারা গেছেন।

অন্যদিকে মামলার বাদী বলেছেন, মোসলেম সরদারের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। এটিকে ‘হত্যাকাণ্ড’ বলা বড় মিথ্যাচার। উল্টো বসতঘর পুড়ে সর্বস্ব হারিয়ে তাঁরা নিঃস্ব।

বাঙালীপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের লক্ষ্মণপুর জোতদারপাড়ার মোসলেম সরদারের পরিবার এ সংবাদ সম্মেলন করেছে। এতে বক্তব্য দেন সৈয়দপুর জেলা বিএনপির স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক শাহিদুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রদল নেতা আবদুল্লাহ আল মামুন, ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি আলমগীর হোসেন, নিহত ব্যক্তির ছোট ভাই তসলিম সরদার, ভাতিজা বাবলু সরদার, নাতি মেহেদী হাসান, গৃহবধূ মৌসুমী ও স্থানীয় জহুরুল শেখ।

সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা বলেন, দীর্ঘদিন থেকে এলাকার মোসলেম সরদারের পরিবার ও বাছান জোতদার পরিবারের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। গত ১৪ ও ১৫ মে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতারা বিষয়টি নিয়ে মীমাংসায় বসেন। উভয় পক্ষের কাগজপত্র দেখে একটা সমাধানে আসেন তাঁরা। কিন্তু ১৮ মে মৃত বাছান জোতদারের ছেলে আবদুল আজিজ ও তাঁর ভাইয়ের বসতবাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে আবদুল আজিজ বাদী হয়ে মোসলেম সরদারসহ তাঁর পরিবারের ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আরও ৭ জনকে আসামি করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ অভিযোগটি একতরফা তদন্ত করে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে। এতে মোসলেম সরদার মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। এমন অবস্থায় তিনি তিন দিন আগে হার্ট অ্যাটাক করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন এবং গতকাল সকালে মারা যান।

এ বিষয়ে আবদুল আজিজ জোতদার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘মামলা সত্য না মিথ্যা, তা তদন্তেই প্রমাণিত হবে। আর কারও স্বাভাবিক মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড বলাই তো বড় মিথ্যাচার। আমাদের দুই পরিবারের ১০ জনকে পেট্রল ছিটিয়ে বাড়িতে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে মারার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। আল্লাহর রহমতে আমরা বেঁচে গেছি। এতে সর্বস্ব হারিয়ে আমরা নিঃস্ব। এর সঠিক বিচার চাই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সৈয়দপুরে লাশ সামনে রেখে পরিবারের সংবাদ সম্মেলন, মানসিক আঘাতে মৃত্যুর অভিযোগ