খুলনায় দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে মো. পলাশ (১৮) নামের এক তরুণ নিহত হয়েছেন। আজ সোমবার সকাল ৯টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

এর আগে গতকাল রোববার রাত ৮টার দিকে নগরের শান্তিধাম মোড়ে জাতিসংঘ শিশুপার্কের সামনে পলাশকে ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা।

পলাশ খুলনা সদর থানার মতলেবের মোড় এলাকার বাসিন্দা মো.

আবদুল হামিদ খানের ছেলে। তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা হয়েছে, তবে এ ঘটনায় আজ সোমবার পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার রাতে ঈদমেলায় তুচ্ছ ঘটনায় পলাশের সঙ্গে প্রতিপক্ষের বিরোধ সৃষ্টি হয়। এ সময় তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে পলাশের পেটে আঘাত করে। আহত অবস্থায় তাঁকে স্থানীয় মানুষেরা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত ৯টার দিকে গুরুতর আহত অবস্থায় পলাশকে হাসপাতালে আনা হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু আঘাত এতটাই গভীর ছিল যে তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।

খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাওলাদার সানোয়ার হুসাইন জানান, সন্ত্রাসী হামলায় আহত পলাশের মৃত্যু হয়েছে। রাতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা

‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’

এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন। 

এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী  বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’

প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ