লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় তিনটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার নিহত প্রবাসীর স্বজন ও কৃষক দল নেতার অনুসারীরা এ ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে। আগের দিনে হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহভাজনদের বাড়িতে এ ভাঙচুর চালানো হয়। এ সময় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

এর আগে সোমবার উপজেলার উত্তর চরবংশীর খাসেরহাট বাজার এলাকায় স্থানীয় বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষে ফ্রান্সফেরত সাইজ উদ্দিন দেওয়ান নিহত ও অন্তত ২০ জন আহত হন। এর জেরে মঙ্গলবার সকালে পাল্টা হামলা চালানো হয়। তবে প্রবাসী নিহত হওয়ার ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। মূল অভিযুক্ত সহোদর ফারুক কবিরাজ, মেহেদী কবিরাজসহ অন্যরা পলাতক। তাদের অনুসারীদেরও এলাকায় দেখা যাচ্ছে না।

গতকালের হামলা প্রসঙ্গে স্থানীয়রা জানান, সকাল ১০টার দিকে উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মেহেদী কবিরাজ, রুহুল আমিন খাঁ ও আরিফ সরদারের বাড়িতে একযোগে হামলা চালায় কৃষক দলের সাবেক সদস্য সচিব শামীম গাজীর অনুসারী ও নিহত সাইজ উদ্দিনের স্বজনরা। তারা তিনটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালায়। এ সময় পুরো এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

রায়পুর থানার ওসি মো.

নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, সহিংসতা থামছে না খাসেরহাট এলাকায়। এ কারণে গত দু’দিনের ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সোমবার সংঘর্ষ ও হত্যায় কোনো মামলা হয়নি। তদন্ত চলছে। জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

এ প্রসঙ্গে কৃষক দল নেতা শামীম গাজী বলেন, ‘সোমবার সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি চালায়।’ এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’ অন্যদিকে সোমবারের ঘটনায় অন্যতম হামলাকারী মেহেদী কবিরাজ পলাতক থাকায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, স্থানীয় বিএনপির নেতাদের দীর্ঘদিনের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, চরাঞ্চল ও মাছঘাট নিয়ন্ত্রণ নিয়ে টানাপোড়েন এ সহিংসতার মূল কারণ। রায়পুরে দলটির কমিটি বিলুপ্ত করা হলেও মাঠ পর্যায়ে বিরোধ থেমে নেই। বারবার তা সহিংস আকারে সামনে আসছে। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে রয়েছে উদ্বেগ। পরপর দুই সংঘর্ষের ঘটনায় এলাকার পরিস্থিতি থমথমে। রাজনৈতিক সহিংসতা থামাতে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ চাচ্ছেন তারা। স্থানীয়দের অভিযোগ, ‘আমরা সাধারণ মানুষ রাজনীতির বলি হতে চাই না। দ্রুত প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ, দোষীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: লক ষ ম প র র স ঘর ষ র ঘটন য় ব এনপ র এল ক য় স মব র

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনায় ‘সেরা সাঁতারুর খোঁজে বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতা শুরু

তৃণমূল থেকে প্রতিভা তুলে আনার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে খুলনায় শিশুদের নিয়ে শুরু হয়েছে ‘সেরা সাঁতারুর খোঁজে বাংলাদেশ- ২০২৫’ প্রতিযোগিতা।

সোমবার (১৬ জুন) সকাল থেকে দিনব্যাপী নগরীর সোনাডাঙ্গাস্থ বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সের রেজাউল সুইমিং একাডেমিতে এ প্রতিযোগিতা শুরু হয়। 

নৌবাহিনীর সহযোগিতায় বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশন প্রতিযোগিতার আয়োজনে করে। বয়স ভিত্তিক এ প্রতিযোগিতায় খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলা থেকে শিশু-কিশোররা অংশ নিচ্ছে। 

আরো পড়ুন:

ফুলকুমার নদে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু 

টাঙ্গাইলে পুকুরে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু

সরেজমিনে ভেন্যুতে গিয়ে দেখা যায়, খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকা থেকে সন্তানদের নিয়ে সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য অভিভাবকরা এসেছেন। প্রতিযোগিতা শুরুর আগে নৌবাহিনী সদস্যরা প্রতিযোগীদের বুক ও হাতের মাপসহ রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করছেন।

অভিভাবকরাও সন্তানদের প্রতিযোগিতায় সেরা হওয়ার প্রত্যাশায় অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। ক্ষুদে সাঁতারুরাও তাদের সেরাটা প্রদর্শনের জন্য অপেক্ষা করছেন। সব মিলিয়ে খুলনার এ আয়োজন শিশু সাঁতারুদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

খুলনা ভেন্যু প্রতিনিধি ও সুইমিং ফেডারেশনের সাবেক সদস্য জি এম রেজাউল ইসলাম বলেন, “তৃণমূল থেকে প্রতিভা তুলে এনে তাদের লম্বা ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে সেরা সাঁতারু খুঁজে বের করার যে পরিকল্পনা বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশন নিয়েছিল, তারই অংশ হিসেবে খুলনায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘সেরা সাঁতারুর খোঁজে বাংলাদেশ-২০২৫’ প্রতিযোগিতা। এখানে অংশ নিয়েছে খুলনা বিভাগের খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরার শিশু-কিশোররা।”

তিনি আরো বলেন, “বয়সভিত্তিক ‘ক’ গ্রুপে ৯-১১ বছর বয়সী এবং ১২-১৫ বছর বয়সী সাঁতারুরা অংশ নিয়েছে ‘খ’ গ্রুপে।”

“তিন ধাপে বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। চূড়ান্ত পর্যায়ের বাছাইকৃত সাঁতারুদের দুই বছরের জন্য দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আশা করি, এই ট্যালেন্ট হান্টের মাধ্যমে খুলনাসহ সারা দেশে সাঁতারুদের যে ক্রাইসিস চলছে, তা থেকে আমরা বের হয়ে আসতে পারব”, যোগ করেন তিনি।

এর আগে ‘সেরা সাঁতারুর খোঁজে বাংলাদেশ ২০২৫’ প্রতিযোগিতার বিষয় নিয়ে রবিবার (১৫ জুন) সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে প্রতিযোগিতার বিস্তারিত তুলে ধরেন খুলনা ভেন্যু প্রতিনিধি, সুইমিং ফেডারেশনের সাবেবক সদস্য ও রেজাউল সুইমিং একাডেমির পরিচালক জি এম রেজাউল ইসলাম।

সেখানে উপস্থিত ছিলেন- সেরা সাঁতারুর খোঁজে বাংলাদেশের খুলনা ভেন্যুর নির্বাচন কমিটি ও সুইমিং ফেডারেশনের সদস্য  মাহাবুবুর রহমান, মো. সোলাইমান, এম এইচ ঢালী, নাজিমুদ্দিন জুলিয়াস, জ্যোতিন্দ্রনাথ বিশ্বাস, মো. আলাউদ্দিন, শাহাজাহান রনি, মাহফুজুর রহমান শিলা ও জুয়েল আহম্মেদ প্রমুখ। 

ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ