কুষ্টিয়ায় চালকলমালিক নেতার বাড়িতে গুলি: অভিযোগের তির বিএনপি নেতার দিকে, নেপথ্যে হাটের ইজারা
Published: 9th, April 2025 GMT
কুষ্টিয়ার চালকলমালিক ও ব্যবসায়ী আবদুর রশিদের বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছে দুর্বৃত্তরা। একটি পশুহাটের ইজারা পাওয়াকে কেন্দ্র করে সদর উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব জাহিদুল ইসলাম (বিপ্লব) চরমপন্থী সংগঠনের নেতাদের দিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন আবদুর রশিদ। তবে বিএনপি নেতা জাহিদুল ইসলাম সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বুধবার বেলা পৌনে দুইটার দিকে শহরের গোশালা সড়কে রশিদের বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। গুলিতে তাঁর বাড়ির তৃতীয় তলার একটি কাচ ভেঙে যায়। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ঘটনার সময় রশিদ খাজানগর এলাকায় নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি। সদর উপজেলার খাজানগর এলাকায় তাঁর বড় কয়েকটি চালকল আছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গোশালা সড়কের প্রবেশমুখে কয়েকটি বাড়ির পরেই রশিদের ডুপ্লেক্স বাড়ি। বাড়িটি এখনোর নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। এর মধ্যে দোতলায় তিনি পরিবার নিয়ে বাস করেন। ঘটনার সময় বাড়িতে রশিদের স্ত্রী, ছেলে ও পুত্রবধূ ছিলেন। আবদুর রশিদ এ সময় খাজানগর এলাকায় তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ছিলেন। গুলির খবর পেয়ে রশিদ বাড়িতে যান। খবর পেয়ে পুলিশ ও র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং গুলির খোসা জব্দ করে নিয়ে যান। পরে তাঁরা রশিদের সঙ্গে কথা বলেন।
রশিদের ছেলে শাহরিয়ার রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, দুপুরের দিকে তিনি বাড়িতেই ছিলেন। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। হঠাৎ একটি বিকট শব্দ শুনতে পান। নিচ থেকে বাড়ির দারোয়ান গুলি ছোড়ার বিষয়টি জানান। পরে দেখা যায়, তৃতীয়তলার কাচ ভেদ করে গুলি ভেতরে ঢুকে গেছে এবং কাচের টুকরা নিচে ও আশপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে বাবাকে জানাই এবং পুলিশকে ফোন করেন। এরপর পুলিশ, ডিবি ও র্যাবের টিম বাড়িতে আসে। ঘটনা জানার পর খাজানগরে চাল ফ্যাক্টরিতে থাকা বাবাও বাড়িতে চলে আসেন।’
বাড়ির সামনে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিওতে দেখা যায়, বেলা ১টা ৪০ মিনিটের দিকে একটি মোটরসাইকেলে দুজন ব্যক্তি আসেন। তাঁদের দুজনের মুখে সার্জিক্যাল মাস্ক ও মাথায় হেলমেট পরা ছিল। বাড়ির সামনে দাঁড়ানোর ১০ সেকেন্ড পর পেছনে বসে থাকা এক ব্যক্তি বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এরপর শহরের দিকে চলে যান। এ সময় সড়কে মানুষ চলাচল করছিল।
আবদুর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ও তাঁর পরিবার দীর্ঘদিন ধরে চাল ব্যবসার পাশাপাশি হাটবাজার ইজারা নেওয়ার ঠিকাদারি করেন। কয়েক দিন আগে সদর উপজেলার আইলচারা পশুহাটের ইজারা পেয়েছেন তাঁর ভাতিজা জিহাদুজ্জামান। ওই হাটের দরপত্র কেনার পর থেকে চরমপন্থী সংগঠনের নেতা পরিচয় দিয়ে দরপত্র জমা না দিতে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। কয়েক দিন আগে প্রায় ১ কোটি ৬২ লাখ টাকায় হাটের ইজারা পান জিহাদুজ্জামান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই চরমপন্থী নেতা স্বপন ঠাকুর পরিচয় দিয়ে হুমকি দেন। বলেন, ‘বিএনপি নেতা জাহিদুল ইসলাম বিপ্লব ও মুন্না নামের দুজন এই হাট পরিচালনা করবে।’ এ জন্য ইজারা প্রত্যাহার করে নিতে হবে। না হলে মেরে ফেলার হুমকি দেন।
হুমকি পাওয়ার পর থেকে আত্মগোপনে আছেন রশিদের ভাতিজা খাজানগর এলাকার গোল্ডেন অটো রাইস মিলের মালিক জিহাদুজ্জামান। তিনি বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির কুষ্টিয়া শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা যুবদলের সাবেক শিল্পবিষয়ক সম্পাদক। মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সদর উপজেলার একটি হাটের দরপত্রে অংশ না নিতে তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়। সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে হাট ইজারা পাওয়ার পর হুমকি বেড়ে যায়। এই হুমকির সঙ্গে চরমপন্থী ও বিএনপির দলীয় লোকজন জড়িত। নেপথ্যে থেকে বিএনপি নেতা বিপ্লব (জাহিদুল ইসলাম) কাজ করছেন। তিনি বলেন, ‘যেহেতু চাচা (রশিদ) আমাদের প্রধান অভিভাবক। তাঁর পরামর্শেই ব্যবসা-বাণিজ্য করা হয়। তাঁর বাসায় গুলির ঘটনাটি দরপত্রকেন্দ্রিক মনে করছি।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সদর উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব জাহিদুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আবদুর রশিদ ও তাঁর ভাতিজা আওয়ামী লীগের দোসর। তাঁরা বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে হানিফের সঙ্গে আঁতাত করে ব্যবসা-বাণিজ্য ও হাটঘাট ইজারা নিয়ে চলেছে। চলতি মৌসুমে এই হাটের দরপত্র কিনেছিলাম। চরমপন্থীরা আমাকেও অংশ না নিতে হুমকি দিয়েছিল। এ জন্য আর এগোয়নি। এখন কেন আমার নাম আসছে?’ তিনি বলেন, ‘এলাকায় রশিদদের সঙ্গে কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। এ জন্য আমার রাজনীতিকে হেয় করতে আমার নাম ব্যবহার করছে। এসব ঘটনার সঙ্গে আমি বিন্দুমাত্র সংশ্লিষ্ট নই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করতে পারে।’
জানতে চাইলে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, প্রকাশ্যে দিনের বেলায় যে ঘটনা ঘটেছে, তা আতঙ্কের বিষয়। তবে যে বা যারা পরিচয় দিয়ে হুমকি দিয়েছে, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে খুঁজে বের করতে হবে। যাদের নাম ব্যবহার করা হচ্ছে, কেউ তো ফাঁসানোর জন্যও করতে পারে। সব বিষয়ই দ্রুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে উদ্ঘাটন করার দাবি জানান তিনি।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন বলেন, গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। গুলির খোসা জব্দ করা হয়েছে। গুলিটি ভবনের তৃতীয় তলার কাচ ভেদ করেছে। তবে সেখানে কোনো বাসিন্দা থাকেন না। পুরো বিষয়টি নিয়ে পুলিশের একাধিক দল ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
আরও পড়ুনকুষ্টিয়ায় দিনদুপুরে চালকল মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি রশিদের বাড়িতে গুলি৩ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ হ দ ল ইসল ম প রথম আল ক সদর উপজ ল হ ট র ইজ র চরমপন থ ব এনপ র দরপত র এল ক য় ব ষয়ট ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে আবার ইরানের হামলা, নাগরিকদের নেওয়া হলো সুরক্ষিত এলাকায়
ইসরায়েলের হাইফা ও তেল আবিব শহর লক্ষ্য করে ইরান নতুন করে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের এক মুখপাত্রের বরাতে স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, এ হামলা ভোর পর্যন্ত চলবে। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম প্রেস টিভি ও আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা মেহের নিউজের প্রতিবেদনেও নতুন করে ইসরায়েলে ইরানের হামলা চালানোর কথা বলা হয়েছে। খবর-গার্ড়িয়ান
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইসরায়েলি শহর তেল আবিব ও হাইফা শহরে আঘাত করেছে। এতে চলতি সপ্তাহের জি-৭ বৈঠকে বিশ্ব নেতাদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে যে, এই দুই আঞ্চলিক শত্রুর মধ্যে সংঘাত মধ্যপ্রাচ্যকে একটি বৃহত্তর যুদ্ধের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
ইরান থেকে ছোড়া নতুন ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত: ইসরায়েলি সেনাবাহিনী
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা ইরান থেকে ছোড়া নতুন ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আকাশে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করার চেষ্টা করা হয়েছে।
নাগরিকদের সুরক্ষিত এলাকায় আশ্রয় নেওয়ার আহ্বান: ইসরায়েলি বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ইরানের হামলার ব্যাপারে নাগরিকদের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সাধারণ জনগণকে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যেতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করতে বলা হয়েছে।
পরিস্থিতি মূল্যায়ন করার পর পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে বলেছে, দেশের সমস্ত অঞ্চলের সুরক্ষিত এলাকা ছেড়ে যাওয়া সম্ভব। নাগরিকরা এখন দেশের সমস্ত অঞ্চলের সুরক্ষিত এলাকা ছেড়ে যেতে পারে।
এর আগে রোববার সোমবার ভোরে ইসরায়েলে ইরানের হামলায় চারজন নিহত ও ৮৭ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম গার্ডিয়ান। এছাড়া বেশ কিছু ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে বলে জানিয়েছে।
ইসরায়েলের ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম (এমডিএ) জরুরি পরিষেবা সোমবার জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের চারটি স্থানে হামলায় চারজন নিহত এবং ৮৭ জন আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে দুজন মহিলা এবং দুজন পুরুষ, যাদের সকলের বয়স আনুমানিক ৭০ বছর।
নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৪ জনে: ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা মেহের নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েলের হাইফা ও তেল আবিব শহর লক্ষ্য করে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। ইসরায়েলে ইরানের হামলায় শুক্রবার থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৪ জনে।
তেল আবিবের কাছে মধ্য ইসরায়েলি শহর পেতাহ টিকভা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সেখানে একটি আবাসিক ভবনে আঘাত করেছে। কংক্রিটের দেয়াল পুড়ে গেছে। জানালা উড়ে গেছে। একাধিক অ্যাপার্টমেন্ট ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দেশটির জরুরি সেবা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উত্তরাঞ্চলীয় বন্দর শহর হাইফায় হামলায় ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে অনুসন্ধান চলছে। যেখানে প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছেন। বন্দরের কাছে একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে।
নতি স্বীকারের কোনোও ইচ্ছা নেই: ইরান
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, দেশটি ইসরায়েলে কমপক্ষে ১০০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে উত্তেজনা কমানোর জন্য আন্তর্জাতিক আহ্বানের কাছে নতি স্বীকার করার কোনোও ইচ্ছা তাদের নেই। কারণ শুক্রবার তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং সামরিক নেতৃত্বের ওপর ইসরায়েলের আকস্মিক আক্রমণের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তারা জোর দিয়েছে।
এর আগে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ভবনে হামলা চালায় ইসরায়েল। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সংক্ষেপে প্রচারিত ঘোষণায় বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম বর্তমানে ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্যবস্তু।’ এতে কিছুক্ষণের জন্য টেলিভিশনটির সম্প্রচার কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। কয়েক মিনিট পরে সেটি পুনরায় সম্প্রচারে আসে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের অধীনস্থ ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরান নিউজ নেটওয়ার্ক (আইআরআইএনএন) জানিয়েছে, তারা ইসরায়েলের হামলার শিকার হয়েছে। গণমাধ্যম কার্যালয়ে হামলা চালানোর মাধ্যমে ইসরায়েল ‘সত্যের কণ্ঠস্বরকে থামিয়ে দেওয়ার’ চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছে ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরান নিউজ নেটওয়ার্ক কর্তৃপক্ষ।
ইসরায়েলের হামলার পর আগুনে পুড়তে থাকা রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ভবনের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন ইরানি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের এক সাংবাদিক। ভিডিওটিতে ওই সাংবাদিক বলেন, তিনি নিশ্চিত নন—এই হামলায় তার কতজন সহকর্মী নিহত হয়েছেন।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ভবনে ইসরায়েলি হামলায় সেখানকার বেশ কয়েকজন কর্মী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে ঠিক কতজনের মৃত্যু হয়েছে এবং তাদের পরিচয় কী, সে বিষয়ে এখনও বিস্তারিত কিছু জানাননি কর্মকর্তারা।
টেলিভিশনটির একজন সাংবাদিক বিবিসিকে জানিয়েছেন যে, হামলার সময় তারা ভবনটিতে কাজ করছিলেন। তখন সরাসরি সম্প্রচার চলছিল। কিন্তু আকস্মিক হামলার পর কিছুক্ষণের জন্য সম্প্রচার কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। কয়েক মিনিট পর অবশ্য পুনরায় সম্প্রচার কাজ চালু করতে সক্ষম হন টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ।
একপর্যায়ে টেলিভিশনটির সম্প্রচার শাখার প্রধান পেমান জেবেলি রক্তমাখা একটি কাগজ নিয়ে পর্দায় হাজির হন। সেটি দেখিয়ে তিনি বলেন, তারা ‘শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে যাবেন’।
গণমাধ্যম কার্যালয়ে হামলা চালানোর মাধ্যমে ইসরায়েল ‘সত্যের কণ্ঠস্বরকে থামিয়ে দেওয়ার’ চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছে ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরান নিউজ নেটওয়ার্ক কর্তৃপক্ষ। ইসরায়েলের হামলার আগ মুহূর্তে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে পর্দায় উপস্থাপিকাকে দেখা যাচ্ছিল। হামলার সময় উপস্থাপিকাকে দ্রুত সরে যেতে দেখা যায়। অন্যদিকে, গণমাধ্যম কার্যালয়টি ইরান সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছে ইসরায়েল।
এই হামলার কিছুক্ষণ আগে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ও রেডিও ‘অদৃশ্য হতে যাচ্ছে’ বলে হুমকি দিয়েছিলেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ। কাৎজের বিবৃতির বরাত দিয়ে বিবিসির খবরে বলা হয়, ইরানের প্রচারণা ও উসকানির মেগাফোন ‘অদৃশ্য হতে যাচ্ছে’।
এদিকে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ভবনে হামলার কথা স্বীকার করেছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ। হামলার পর এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, তেহরানের স্থানীয় বাসিন্দাদের সরে যেতে বলার পরে ওই হামলাটি চালানো হয়েছে।
তিনি বলেন, ইরানের স্বৈরশাসক যেখানেই থাকুন না কেন, তাকে আঘাত করা হবে।