জাতীয় দলের জন্য টাকার মায়া ছেড়েছেন হ্যারি ব্রুক
Published: 10th, April 2025 GMT
সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের নতুন অধিনায়ক হিসেবে সর্বস্ব নিংড়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন হ্যারি ব্রুক। এ জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলতে যত টাকার প্রস্তাবই দেওয়া হোক না কেন, তিনি জাতীয় দলের হয়ে খেলাকেই প্রাধান্য দেবেন।
ইংল্যান্ডের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হওয়ার পর প্রথমবারের মতো সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ব্রুক এসব কথা বলেন।
সর্বশেষ আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ইংল্যান্ডের ভরাডুবির পর নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ান জস বাটলার। গত সোমবার বাটলারের জায়গায় ব্রুককে সাদা বলের দুই সংস্করণের অধিনায়ক ঘোষণা করে ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)।
আগামী মে-জুনে ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ স্থায়ী অধিনায়ক হিসেবে ব্রুকের প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট হতে যাচ্ছে। তবে তাঁর জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।
২৬ বছর বয়সী ব্রুক আগে থেকেই সাদা বলে ইংল্যান্ডের সহ-অধিনায়ক ছিলেন। বাটলারের জায়গাটা যে ব্রুকই নিতে যাচ্ছেন, সেই সংকেতও তাঁকে আগেভাগে দিয়েছিল ইসিবি। এ কারণেই আইপিএল শুরুর ১২ দিন আগে নিজেকে সরিয়ে নেন।
মেগা নিলাম থেকে দিল্লি ক্যাপিটালস তাঁকে ৬ কোটি ২৫ লাখ রুপিতে কিনলেও সেই টাকার মায়া ছেড়ে দেন। ফিট থাকার পরও আইপিএলে না খেলায় তাঁকে দুই বছরের নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)।
তবে দেশের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা বয়ে বেড়ানোকে গর্বভরেই দেখছেন ব্রুক। গতকাল লিডসের হেডিংলিতে সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, ‘অবশ্যই এই মুহূর্তে এটা (আইপিএলে নিষেধাজ্ঞা) আমার জন্য কোনো ব্যাপার নয়। আমি শুধু ইংল্যান্ডের হয়ে ক্রিকেট খেলতে চাই। গত কয়েক বছর যেভাবে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছি, এখনো সেভাবেই করতে চাই। আশা করি, দলকে সামনে এগিয়ে নিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারব।’
ব্রুক সাফ জানিয়েছেন, ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটকে আপাতত ‘না’ বলে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হলেও ব্যাপারটিকে স্বাভাবিকভাবেই নিচ্ছেন, ‘ইংল্যান্ডই আমার অগ্রাধিকার ও এগিয়ে যাওয়ার পথ। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটকে আমি কিছু সময়ের জন্য পেছনে রাখছি। দিন শেষে আমি অন্য যেকোনো কিছুর চেয়ে ইংল্যান্ডের হয়ে খেলা বেশি উপভোগ করি। তাই এখানে-সেখানে কিছু টাকা হারাতে হলেও জাতীয় দলের স্বার্থে তা মেনে নেব।’
আগামী মে থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত তিন সংস্করণ মিলিয়ে ২৬টি ম্যাচ খেলবে ইংল্যান্ড। এর মধ্যে অ্যাশেজও আছে। ব্রুক তিন সংস্করণেই ইসিবির চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটার হওয়ায় সব ম্যাচই তাঁর খেলার কথা।
জাতীয় দলের ঠাসা সূচির কারণেই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার সুযোগ দেখছেন না তিনি, ‘আমি ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট একেবারেই ছেড়ে দিইনি। কিন্তু (জাতীয় দলের) সূচির দিকে তাকালে অদূর ভবিষ্যতে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলার জন্য আমার খুব বেশি সময় নেই। সময় বের করার কোনো উপায়ও দেখছি না।’
ইংল্যান্ডকে আগেও নেতৃত্ব দিয়েছেন হ্যারি ব্রুক। ২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে তাঁর অধিনায়কত্বে সুপার লিগের প্লে-অফ সেমিফাইনালে খেলেছিল ইংলিশরা। সেই ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে হেরে বাদ পড়তে হয়। বাটলার চোটে পড়ায় গত বছর ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ইংল্যান্ড জাতীয় দলকে প্রথমবারের মতো নেতৃত্ব দেন ব্রুক। ইংল্যান্ড সেই সিরিজ হারে ৩-২ ব্যবধানে।
‘টাকার মায়া ছেড়ে’ সাদা বলের স্থায়ী অধিনায়ক হওয়া ব্রুক সফল হাতে পারবেন কি না, এখন সেটাই দেখার অপেক্ষা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফ র য ঞ চ ইজ জ ত য় দল র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
প্রথমবার বিগ ব্যাশে বাবর আজম
বিশ্ব ক্রিকেটে ব্যাট হাতে বহুবার তোলপাড় করা বাবর আজম এবার অস্ট্রেলিয়ার জমজমাট বিগ ব্যাশ লিগে (বিবিএল) পা রাখতে যাচ্ছেন। দীর্ঘদিন গুঞ্জনের পর অবশেষে এই পাকিস্তানি তারকাকে নিজেদের স্কোয়াডে টেনে নিয়েছে সিডনি সিক্সার্স। নতুন মৌসুমে (২০২৫) তাকে দেখা যাবে গোলাপি জার্সিতে।
এটাই বাবরের প্রথমবারের মতো বিগ ব্যাশে খেলার অভিজ্ঞতা হতে যাচ্ছে। সিডনি সিক্সার্সের সঙ্গে তার এই চুক্তিটি হয়েছে প্রি-সাইনিং অপশনের মাধ্যমে, যেখানে প্রতিটি দল আন্তর্জাতিক ড্রাফট শুরুর আগেই একজন বিদেশি ক্রিকেটারকে দলে নিতে পারে। ১৯ জুন শুরু হতে যাওয়া আন্তর্জাতিক ড্রাফটের আগেই সিক্সার্স বাবরের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি সম্পন্ন করে।
দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাবরের মতো বিশ্বমানের অভিজ্ঞ একজন টপ অর্ডার ব্যাটারকে পাওয়ার অর্থই হলো দলে গভীরতা ও ভারসাম্য বাড়ানো। এই তারকার সঙ্গে একই দলে থাকছেন স্টিভ স্মিথ, শন অ্যাবটের মতো অভিজ্ঞ অজি খেলোয়াড়রা, যা দলের শক্তিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে।
গত মৌসুমে একমাত্র সিডনি সিক্সার্সই ছিল এমন দল, যারা কোনো বিদেশি তারকাকে আগেভাগে দলে নেয়নি। এবার তারা সেই ঘাটতি পূরণ করল বাবরের মতো একজন ক্রিকেট সেনসেশনকে নিয়ে।
তবে বাবরের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে অনেকবার। পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি দলে তার জায়গা এখন অনিশ্চিত, ব্যাটেও অনুজ্জ্বল সময় কাটছে। তবু, অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে নতুন এই চ্যালেঞ্জ বাবরের জন্য এক নতুন দরজা খুলে দিতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।
চুক্তির পর নিজের প্রতিক্রিয়ায় বাবর জানান, “এটা আমার জন্য দারুণ এক সুযোগ। বিগ ব্যাশ বিশ্বের অন্যতম সেরা টি-টোয়েন্টি লিগ এবং সিডনি সিক্সার্স একটি সফল ফ্র্যাঞ্চাইজি। এই দলে খেলার সুযোগ পেয়ে আমি গর্বিত। আমি চাই দলের জয়ে অবদান রাখতে, ভক্তদের ভালোবাসা কুড়াতে এবং এই অভিজ্ঞতা আমার পরিবারের সঙ্গে ভাগ করে নিতে।”
অস্ট্রেলিয়ায় বাবরের প্রথম আগমনকে ঘিরে ইতোমধ্যেই পাকিস্তানি ভক্তদের মধ্যে উচ্ছ্বাসের জোয়ার বইছে। অনেকেই বলছেন, হয়তো এটাই সেই ‘নতুন শুরু’, যেটা বাবরের ক্যারিয়ার আবার উজ্জ্বল করে তুলতে পারে।
ঢাকা/আমিনুল