খানাজাহান আলীর মাজারে মেলা শুরু, ভক্তদের ঢল
Published: 11th, April 2025 GMT
বাগেরহাটে খানজাহান আলী (রহ.) এর মাজারে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী বাৎসরিক মেলা। প্রতিবছরের মতো এবারো চৈত্র মাসের পূর্ণিমা তিথি অনুযায়ী শুক্রবার (১১ এপ্রিল) মাজার প্রাঙ্গণে মেলা শুরু হয়।
মেলায় অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজারো নারী-পুরুষ জড়ো হয়েছেন মাজার এলাকায়। আগামী ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে মেলা।
এদিকে, যে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে জেলা পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, আনসার, গ্রাম পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব পালন করছেন মেলা এলাকায়। পাঁচ শতাধিক মৌসুমি ব্যবসায়ী বিভিন্ন ধরণের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। ভক্ত-দর্শনার্থীদের দোকানিদের কাছ থেকে পছন্দের পণ্য কিনতে দেখা গেছে।
আরো পড়ুন:
বৈশাখী মেলা সামনে রেখে মৃৎশিল্পীদের ব্যস্ততা
পঞ্চগড়ে ভাষা সৈনিক সুলতান বই মেলা শুরু
মেলায় অংশগ্রহণকারীরা লালন, মুর্শিদি, ভাটিয়ালিসহ বিভিন্ন আধ্যাত্মিক গান পরিবেশন করছেন। আগত মানুষরা সৃষ্টিকর্তার আরাধনা ও নিজেদের মনের ইচ্ছা পূরণের আশায় এসেছেন।
পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া থেকে আসা রফিক নামে এক দর্শনার্থী বলেন, “অনেক বছর ধরে মাজার মেলায় আসি। এখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের সঙ্গে দেখা হয়। খুব ভালো লাগে মেলায় আসতে পেরে। এখানে যে দীঘিটি রয়েছে, সেখানে গোসল করলে মনে শান্তি আসে।”
মেলায় আসা নুরুননাহার বলেন, “আজ ভোরে আসছি। রবিবার রাতে যাব। এখানে ভাই-বোনদের সঙ্গে গান করব। মনের আশা পূরণে সবাই মিলে প্রার্থনা করব। আশা করি, চাওয়া পূরণ হবে।”
খানজাহান আলী (রহ.
তিনি আরো বলেন, “এখানে ধর্মীয় অনুষ্ঠান হয়। এটি দক্ষিণাঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী মেলা। মেলায় যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা না ঘটে সেজন্য প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।”
ঢাকা/শহিদুল/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ল র খবর জ হ ন আল
এছাড়াও পড়ুন:
গোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন নামঞ্জুর
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পথসভাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ১৮ জন শিশু রয়েছে। এর মধ্যে গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
গতকাল বৃহস্পতিবার সাত শিশুর জামিন আবেদনের শুনানি হয়। গোপালগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) সৈয়দ আরাফাত হোসেন তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এর আগে সোম ও মঙ্গলবার পাঁচ শিশুর জামিন আবেদন করা হয়। তাদের জামিন নামঞ্জুর করা হয়। ওই পাঁচজনের জামিন আবেদন করা হয়েছিল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে।
কারাগার সূত্র জানায়, গত ১৬ জুলাই সংঘর্ষের পর ১৭ ও ১৮ জুলাই জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৮ শিশুকে আটক করে পুলিশ। ১৮ জুলাই তাদের আদালতে হাজির করে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ২১ জুলাই তাদের যশোরের পুলেরহাট শিশু-কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।
আদালতের নথি অনুযায়ী, গ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বয়স, ঠিকানা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ নেই। তবে গতকাল পর্যন্ত ১২ শিশুর নাম ও পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে চার পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগ, তাদের সন্তানদের কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই আটক করা হয়েছে।
আরও পড়ুনগ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ২৭ জুলাই ২০২৫একজন শিশুর বাবা বলেন, ‘সংসারে অভাব–অনটন, নিজেরাই সংসার চালাইতে পারি না। আমার কষ্ট দেখে ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দেয়। সে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রমজান শেখ নামের একটা রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করে। কাজের সময় পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে যায়।’
আরেক শিশুর ভ্যানচালক বাবা বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, কোথাও কোনো কাইজের মধ্যে নেই। তিনডা ছেলে, বড়টা একটা মাদ্রাসার শিক্ষক। ছোট দুইডা এখনো পড়ে। যারে ধরছে, সে সবার ছোট। ওই দিন সকালে আমার মাদ্রাসায় গেছে, পরীক্ষা ছিল। পরে দুপুরের আগে আমি নিজে যাইয়ে নিয়ে আসছি। সেদিন বাড়িতেই ছিল। পরের দিনও সারা দিন বাড়ি ছিল, সেদিন তো কারফিউ ছিল। আসরের নামাজের পর আমার কাছ থেকে ২০ টাকা নিয়ে গেছে চটপটি খাইতে। পাশে মাদ্রাসার সামনেই চটপটির দোকান বসে। সেই হান দে ওরে ধইরে নিছে।’
ওই ব্যক্তি আরও বলেন, ‘ধরার ঘণ্টাখানেক পর থানা থেইকা ফোন দিছে, কয় ছেলে ধরা হইছে। আমরা থানায় গিয়া অনেক কইছি, ও তো কোথাও যায় না, কোনো গ্যাঞ্জামের ছেলে না। মাদ্রাসায় পড়ে। কিন্তু কেউ কিছুই শুনল না। ছেলেরে ছাড়ায় আনতে অনেক জায়গায় দৌড়াইছি।’ তিনি জানান, এ ঘটনার পর থেকে তাঁদের প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
এ ছাড়া জামিনের আশ্বাস দিয়ে কয়েকজন লোক তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন একজন অভিভাবক।
আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলা, আসামি ৪৭৭ জন৩১ জুলাই ২০২৫গ্রেপ্তার এক শিশুর আইনজীবী ফিরোজা বেগম বলেন, ১৬ জুলাই সহিংসতার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় এই শিশুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ ধারায় দ্রুত তদন্ত করে নির্দোষ প্রমাণিত হলে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে সরকারি কৌঁসুলি তৌফিকুল ইসলাম বলেন, শিশুরা অল্প সময় আগে গ্রেপ্তার হয়েছে, এখনো তদন্ত চলছে। তাই হয়তো বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেছেন। এ মামলায় এখনো কারও জামিন হয়নি।
আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে সংঘাতের ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট, নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন ১৮ জুলাই ২০২৫