যুক্তরাষ্ট্রে বিতাড়ন থেকে আর সুরক্ষা পাবেন না আফগানিস্তান ও ক্যামেরুনের হাজার হাজার অভিবাসী
Published: 12th, April 2025 GMT
অস্থায়ী সুরক্ষার আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের সুযোগ পাওয়া হাজার হাজার আফগান ও ক্যামেরুনের নাগরিক তাঁদের সুরক্ষা হারাচ্ছেন। তাঁরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত হওয়ার ক্ষেত্রে আর সুরক্ষা পাবেন না। গতকাল শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের মন্ত্রী ক্রিস্টি নোয়েম মনে করছেন, আফগানিস্তান ও ক্যামেরুনে এখন এমন কোনো অবস্থা চলছে না যে দেশ দুটির অভিবাসীদের টিপিএস নামের সুরক্ষা দিতে হবে। এক বিবৃতিতে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের সহকারী মন্ত্রী ট্রিসিয়া ম্যাকলগ্নিন এ কথা জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ হাজার ৬০০ আফগান নাগরিক টিপিএস সুরক্ষার আওতায় আছেন। মার্কিন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মে মাসে সে সুরক্ষা তাঁরা হারাতে যাচ্ছেন। আর জুনে সুরক্ষা হারাবেন ক্যামেরুনের প্রায় ৭ হাজার ৯০০ নাগরিক।
এ সিদ্ধান্তের কথা এমন দিনে জানা গেল, যেদিন ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে ভূমিকা রাখা কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিলকে বিতাড়িত করা হতে পারে বলে অভিবাসন আদালত মত দিয়েছেন।
যেসব দেশ সশস্ত্র সংঘাত কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে এবং সেখানে ফেরাটা নিরাপদ নয় বলে বিবেচনা করা হচ্ছে—এমন দেশগুলোর নাগরিকদের টিপিএস সুবিধা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। সাধারণত ১৮ মাসের জন্য এমন সুরক্ষা দেওয়া হয়ে থাকে এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের দায়িত্বরত মন্ত্রী, সে মেয়াদ নবায়ন করতে পারেন। টিপিএস সুবিধার আওতায় অভিবাসীদের বিতাড়িত করা থেকে সুরক্ষা দেওয়া হয় এবং তাঁরা কাজ করারও অনুমতি পান।
ম্যাকলগ্লিনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে তৎকালীন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রী আলেজান্দ্রো মায়োরকাস আফগানদের জন্য টিপিএস সুবিধা ১৮ মাস বাড়িয়ে চলতি বছরের ২০ মে পর্যন্ত করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে আলোচনার পর ২১ মার্চ নোয়েম সিদ্ধান্ত নেন, টিপিএস সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে যেসব শর্ত থাকে, সেগুলো আফগানিস্তান ও ক্যামেরুনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হচ্ছে না।
ম্যাকলগ্নিন আরও বলেছেন, আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ও অভিবাসনবিষয়ক সংস্থা আইএসসিআইএসের এক পর্যালোচনার ভিত্তিতে নোয়েম এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রায় চার বছর আগে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে।
ম্যাকলগ্লিনের তথ্য অনুসারে, ক্যামেরুনের অভিবাসীদের টিপিএস সুবিধা বাতিলের সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে ৭ এপ্রিল।
গত মাসে ট্রাম্প প্রশাসন ঘোষণা দিয়েছে, কিউবা, হাইতি, নিকারাগুয়া ও ভেনেজুয়েলার পাঁচ লাখের বেশি অভিবাসীকে অস্থায়ীভাবে দেওয়া বৈধতার মর্যাদা তারা প্রত্যাহার করবে। সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শাসনকালে সিএইচএনভি নামে পরিচিত এক কর্মসূচির আওতায় তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন। কর্মসূচিটি বাতিল হওয়ার আগপর্যন্ত এর আওতায় ভেনেজুয়েলার ১ লাখ ২০ হাজার ৭০০-এর বেশি নাগরিক, কিউবার ১ লাখ ১০ হাজার ৯০০-এর বেশি নাগরিক এবং নিকারাগুয়ার ৯৩ হাজারের বেশি নাগরিককে যুক্তরাষ্ট্রে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ট প এস স ব ধ আফগ ন স ত ন র আওত য় মন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
সেই আছিয়ার পরিবারকে গরু ও ঘর দিল জামায়াত
মাগুরায় যৌন নিপীড়নের শিকার হয়ে মারা যাওয়া আলোচিত শিশু আছিয়ার পরিবারকে দুটি গরু ও একটি গোয়ালঘর উপহার দেওয়া হয়েছে। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের পক্ষ থেকে আছিয়ার পরিবারকে এ উপহার দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামে আছিয়ার বাড়িতে উপস্থিত হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে উপহার হস্তান্তর করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এবং কুষ্টিয়া ও যশোর অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হোসাইন।
এ সময় জেলা জামায়াতের আমির এম বি বাকের, সাবেক আমির ও কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আব্দুল মতিনসহ স্থানীয় এবং জেলা কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
শিশু ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা
অপারেশনের পর শিশুর মৃত্যু: তদন্ত কমিটি গঠন, থানায় মামলা
গত ১৫ মার্চ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান আছিয়ার বাড়িতে যান। তিনি শিশুটির মৃত্যুর ঘটনায় দ্রুত বিচার চান। সে সময় আছিয়ার পরিবারকে স্বাবলম্বী করতে একটি গোয়াল ঘর এবং দুটি গরু দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন জামায়াতের আমির।
আট বয়সী আছিয়া মাগুরার নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের শিকার হয় বলে পরিবারের তরফ থেকে অভিযোগ ওঠে। গত ৬ মার্চ অচেতন অবস্থায় মাগুরার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। অবস্থার অবনতি হলে মাগুরা হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শে শিশুটিকে নেওয়া হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে থেকে সেদিন সন্ধ্যায় উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে ঢাকায় নেওয়া হয় এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করা হয়। দুই দিন পর ৮ মার্চ তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়। ১৩ মার্চ বৃহস্পতিবার সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় আছিয়ার।
ঢাকা/শাহীন/রফিক