আইএসও কমিউনিটি অ্যাওয়ার্ড অর্জন করল এসএবি
Published: 12th, April 2025 GMT
ওকলাহোমা ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এসএবি) ২০২৫ সালের মর্যাদাপূর্ণ আইএসও কমিউনিটি অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে। এটি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে অন্তর্ভুক্তি, বহুসাংস্কৃতিক বোঝাপড়া এবং সম্প্রীতির পরিবেশ গঠনে সংগঠনটির অসামান্য ভূমিকার স্বীকৃতি হিসেবে প্রদান করা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার লয়েড নোবেল সেন্টারে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান বহুজাতিক অনুষ্ঠান ‘ইভ অব নেশনসে এই সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়। ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশন (আইএসও)-এর উদ্যোগে আয়োজিত এই বার্ষিক উৎসবে বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন—যেখানে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, ঐতিহ্যবাহী পোশাক ও আন্তঃসম্পর্কের উজ্জ্বল প্রদর্শনী ছিল উপস্থাপনার কেন্দ্রবিন্দু।
এসএবি-এর পক্ষে সংগঠনের সভাপতি জাহিদ হোসেন এই পুরস্কার গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, এই স্বীকৃতি কেবল এসএবি-এর নয়, এটি প্রতিটি সদস্যের যাদের নীরব ও নিবেদিত প্রচেষ্টায় একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সহমর্মিতাপূর্ণ পরিসর তৈরি হয়েছে। এটি বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন, যা প্রমাণ করে আমরা একটি বৈচিত্র্যসমৃদ্ধ, সহনশীল ও আন্তঃসাংস্কৃতিক পরিবেশে নিজের অবস্থান দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছি। আমরা বিশ্বাস করি, সাংস্কৃতিক বিনিময়ই হচ্ছে ঐক্যের প্রকৃত সেতুবন্ধন।
প্রতিবছর আইএসও কমিউনিটি অ্যাওয়ার্ড সেইসব ছাত্র সংগঠনকে প্রদান করা হয় যারা পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, বহুজাতিক সংহতি এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরিতে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা রাখে।
এসএবিকে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে একটি এমন পরিবেশ গঠনের জন্য, যেখানে নানা জাতিগোষ্ঠী ও সাংস্কৃতিক পটভূমির শিক্ষার্থীরা নিজেদের স্বাগত, সম্মানিত ও শক্তিশালী বোধ করে।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সম্প্রদায়মুখী উদ্যোগ ও আন্তঃসংগঠনিক সহযোগিতার মাধ্যমে এসএবি ওকলাহোমা ইউনিভার্সিটিতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের দৃশ্যমানতা ও নেতৃত্বের জায়গা শক্তিশালী করেছে। এই সম্মাননা কেবল তাদের সৃজনশীল অবদানের স্বীকৃতি নয়, বরং এক বৈশ্বিক ক্যাম্পাসে সংযোগ, সহমর্মিতা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ গড়ে তুলতে এসএবি-এর দৃঢ় প্রতিশ্রুতির পরিচয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প রব স পর ব শ স গঠন
এছাড়াও পড়ুন:
থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র অপরাধীদের হাতে
চট্টগ্রাম নগরে থানা-ফাঁড়ি থেকে লুট হওয়া অনেক আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি এখনো উদ্ধার হয়নি। এসব অস্ত্র-গুলি ডাকাতি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত হচ্ছে। লুট হওয়া অস্ত্র কেনাবেচায় পুলিশেরও সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন গত বছরের ৫ আগস্ট চট্টগ্রাম নগরের আটটি থানা ও আটটি ফাঁড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করেন বিক্ষুব্ধ লোকজন। সে সময় ৮১৩টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৪৪ হাজার ৩২৪টি গুলি লুট হয়। পুলিশের একটি সূত্র বলছে, বেশির ভাগ অস্ত্র-গুলি এখনো উদ্ধার হয়নি।
জানতে চাইলে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মাহমুদা বেগম সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেননি। তবে অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।
গত ২১ জুলাই নগরের চান্দগাঁওয়ে ‘সন্ত্রাসী’ ইসমাইল হোসেন ওরফে টেম্পো ও শহিদুল ইসলাম ওরফে বুইসার বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি হয়। পরে পুলিশ বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার এলাকায় সন্ত্রাসী শহিদুলের আস্তানার সন্ধান পায়। সেখানে লুট হওয়া দুটি গুলি ও গুলির খোসা পাওয়া যায়।
চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, শহিদুলের দখল করা একটি ফ্ল্যাট থেকে গুলি ও দেশি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। ফ্ল্যাটটি টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
গত বছরের ২৯ আগস্ট নগরের বায়েজিদ-হাটহাজারী থানার সীমানাসংলগ্ন কুয়াইশ এলাকায় মাসুদ কায়সার ও মো. আনিস নামে দুই ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে পাঁচটি গুলির খোসা (শটগানের কার্তুজ) উদ্ধার করা হয়। সেগুলোও লুট করা গুলির খোসা বলে নিশ্চিত হয় পুলিশ।
নিহত আনিসের স্ত্রী শামিম আকতারের অভিযোগ, সন্ত্রাসী সাজ্জাদ পুলিশের গুলি ব্যবহার করে তাঁর স্বামীসহ দুজনকে খুন করেছেন। তবে সাজ্জাদ কারাগারে থাকায় তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এদিকে ৩ মার্চ সাতকানিয়ায় পিটুনিতে দুজনের মৃত্যুর পর ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ যে পিস্তল উদ্ধার করে, সেটিও থানা থেকে লুট হওয়া।
১৭ এপ্রিল নগরের ডবলমুরিং থানার বারিক বিল্ডিং মোড় থেকে আরিফ হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁর আস্তানা থেকে একটি পিস্তল ও ৫০টি গুলি উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে আরিফ স্বীকার করেন, এসব অস্ত্র-গুলি থানা থেকে লুট করা। তিনি অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ডাকাতি ও ছিনতাই করেন।
গত ২৫ জানুয়ারি ডবলমুরিং থানার ঝরনাপাড়ায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১৬টি গুলি, ১টি রাবার বুলেটসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। এ ছাড়া ১৫ ফেব্রুয়ারি ডবলমুরিং থানার চৌমুহনী এলাকার চারিয়াপাড়ায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ অস্ত্রসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ জানায়, এসব অভিযানে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র-গুলি লুট হওয়া এবং গ্রেপ্তার ছয়জনই ছিনতাইকারী।
১৭ জুন নগরের মেরিন সড়ক থেকে পিস্তল-গুলিহ মো. রুবেল নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পিস্তলটি থানা থেকে লুট হওয়া বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে। এদিকে পিস্তলটি বিক্রির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ২১ মার্চ মো. রিয়াদ নামের পুলিশের এক কনস্টেবলসহ ছয়জনকে পতেঙ্গা ও বাকলিয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে রিয়াদসহ তিনজন আদালতে অস্ত্র কেনাবেচায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রামের সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, অস্ত্র, গুলি উদ্ধারে বিশেষ অভিযান পরিচালনা না করলে কিংবা মনোযোগ না দিলে জননিরাপত্তা এবং সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা হুমকির মুখে পড়বে।