জার্মানিতে ৩ বছরে নাগরিকত্ব পাওয়ার আইন বাতিল হচ্ছে
Published: 12th, April 2025 GMT
জার্মানিতে তিন বছরের মধ্যে নাগরিকত্ব পাওয়ার যে বিধান বিদায়ী সরকার চালু করেছিল, তা বাতিলের পথে হাঁটছে নতুন সরকার। সম্প্রতি গঠিত নতুন জোট সরকার তাদের চুক্তিপত্রে বিষয়টি স্পষ্ট করেছে।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সদ্য গঠিত রক্ষণশীল খ্রিস্টান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ)/খ্রিস্টান সোশ্যাল ইউনিয়ন (সিএসইউ) এবং মধ্য বামপন্থি সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এসপিডি) যৌথ জোট সরকারের চুক্তিপত্রে এই পরিকল্পনার উল্লেখ রয়েছে।
আরো পড়ুন:
নাটকীয় ম্যাচে ইতালিকে হারিয়ে প্রথমবার সেমিফাইনালে জার্মানি
জার্মানির নির্বাচনে রক্ষণশীলদের জয়, চ্যান্সেলর হচ্ছেন ফ্রিডরিখ মের্ৎস
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত মধ্যবর্তী নির্বাচনের পর সরকার গঠনে এই দুই দলের সমঝোতা হয়। জোটের চুক্তি অনুযায়ী, নাগরিকত্ব আইনে পূর্ববর্তী সরকারের আনা কিছু সংস্কার বাতিল করা হবে। বিশেষ করে ওলাফ শলৎসের নেতৃত্বাধীন বিদায়ী সরকারের ২০২৪ সালের জুনে প্রবর্তিত ‘তিন বছরে নাগরিকত্ব’ পাওয়ার সুযোগটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নতুন সরকার।
বিদায়ী চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের নেতৃত্বাধীন সরকার বিদেশিদের জন্য নাগরিকত্ব প্রাপ্তি সহজ করতে একাধিক সংস্কার এনেছিল। এর মধ্যে অন্যতম ছিল- যদি কেউ জার্মান সমাজে সফলভাবে একীভূত হয় এবং সি১ লেভেলের ভাষাজ্ঞান অর্জন করে, তাহলে মাত্র তিন বছরের মধ্যেই তাকে নাগরিকত্ব দেওয়া যাবে।
তবে এর তীব্র সমালোচনা করে সিডিইউ/সিএসইউ। তাদের মতে, মাত্র তিন বছরে নাগরিকত্ব দেওয়া হলে সেটি হবে ‘অতি সহজলভ্য’, যা জার্মানির নাগরিকত্বের মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করতে পারে।
যদিও দ্রুত নাগরিকত্ব পাওয়ার নিয়ম বাতিল হচ্ছে, তবে পাঁচ বছর বসবাসের পর নাগরিকত্ব পাওয়ার নিয়মটি বহাল থাকবে।
এছাড়া বিতর্কিত দ্বৈত নাগরিকত্বও সুবিধাটিও বহাল থাকছে।
২০২৪ সালে আইন সংস্কারের আগে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশগুলো থেকে আগত অভিবাসীদের জন্য দ্বৈত নাগরিকত্ব মূলত নিষিদ্ধ ছিল। বিদায়ী ওলাফ শলৎস সরকার সংশোধিত আইনে ‘দ্বৈত নাগরিকত্বের’ অনুমোদন দিয়েছিলেন। এই পরিবর্তনের ফলে নাগরিকত্বের আবেদনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষ করে জার্মানির বৃহৎ তুর্কি জনসংখ্যার মধ্যে।
সিডিইউ নেতা এবং সম্ভাব্য পরবর্তী চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ দ্বৈত নাগরিকত্বের বিরোধীতা করেছিলেন। তবে এসপিডির সঙ্গে জোট আলোচনার অংশ হিসাবে নীতিটি বহাল রাখতে সম্মত হয়েছেন।
নতুন জোট সরকার উগ্রপন্থি মতাদর্শকে সমর্থনকারীদের ‘দ্বৈত নাগরিকত্ব’ প্রত্যাহারের বিষয়টিও উড়িয়ে দিয়েছে।
সিডিইউ/সিএসইউ এর আগে বলেছিল, যদি কোনো দ্বৈত নাগরিক সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত হন, ইহুদিবিদ্বেষী হন বা চরমপন্থী মতাদর্শে বিশ্বাস করেন, তাহলে তার জার্মান নাগরিকত্ব বাতিল করা হবে। তবে এই প্রস্তাবটি এসপিডি এবং অভিবাসী সংগঠনগুলোর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিল।
এর পরিবর্তে, নতুন সরকার জার্মানির গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য হুমকিস্বরূপ অ-নাগরিকদের বহিষ্কার করার জন্য বিকল্প আইনগুলোতে জোর দেবে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত ন বছর ন সরক র র জন য স ড ইউ
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ