জার্মানিতে তিন বছরের মধ্যে নাগরিকত্ব পাওয়ার যে বিধান বিদায়ী সরকার চালু করেছিল, তা বাতিলের পথে হাঁটছে নতুন সরকার। সম্প্রতি গঠিত নতুন জোট সরকার তাদের চুক্তিপত্রে বিষয়টি স্পষ্ট করেছে।

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়,  সদ্য গঠিত রক্ষণশীল খ্রিস্টান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ)/খ্রিস্টান সোশ্যাল ইউনিয়ন (সিএসইউ) এবং মধ্য বামপন্থি সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এসপিডি) যৌথ জোট সরকারের চুক্তিপত্রে এই পরিকল্পনার উল্লেখ রয়েছে।

আরো পড়ুন:

নাটকীয় ম্যাচে ইতালিকে হারিয়ে প্রথমবার সেমিফাইনালে জার্মানি

জার্মানির নির্বাচনে রক্ষণশীলদের জয়, চ্যান্সেলর হচ্ছেন ফ্রিডরিখ মের্ৎস

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত মধ্যবর্তী নির্বাচনের পর সরকার গঠনে এই দুই দলের সমঝোতা হয়। জোটের চুক্তি অনুযায়ী, নাগরিকত্ব আইনে পূর্ববর্তী সরকারের আনা কিছু সংস্কার বাতিল করা হবে। বিশেষ করে ওলাফ শলৎসের নেতৃত্বাধীন বিদায়ী সরকারের ২০২৪ সালের জুনে প্রবর্তিত ‘তিন বছরে নাগরিকত্ব’ পাওয়ার সুযোগটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নতুন সরকার।

বিদায়ী চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের নেতৃত্বাধীন সরকার বিদেশিদের জন্য নাগরিকত্ব প্রাপ্তি সহজ করতে একাধিক সংস্কার এনেছিল। এর মধ্যে অন্যতম ছিল- যদি কেউ জার্মান সমাজে সফলভাবে একীভূত হয় এবং সি১ লেভেলের ভাষাজ্ঞান অর্জন করে, তাহলে মাত্র তিন বছরের মধ্যেই তাকে নাগরিকত্ব দেওয়া যাবে।

তবে এর তীব্র সমালোচনা করে সিডিইউ/সিএসইউ। তাদের মতে, মাত্র তিন বছরে নাগরিকত্ব দেওয়া হলে সেটি হবে ‘অতি সহজলভ্য’, যা জার্মানির নাগরিকত্বের মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করতে পারে।

যদিও দ্রুত নাগরিকত্ব পাওয়ার নিয়ম বাতিল হচ্ছে, তবে পাঁচ বছর বসবাসের পর নাগরিকত্ব পাওয়ার নিয়মটি বহাল থাকবে। 

এছাড়া বিতর্কিত দ্বৈত নাগরিকত্বও সুবিধাটিও বহাল থাকছে।

২০২৪ সালে আইন সংস্কারের আগে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশগুলো থেকে আগত অভিবাসীদের জন্য দ্বৈত নাগরিকত্ব মূলত নিষিদ্ধ ছিল। বিদায়ী ওলাফ শলৎস সরকার সংশোধিত আইনে ‘দ্বৈত নাগরিকত্বের’ অনুমোদন দিয়েছিলেন। এই পরিবর্তনের ফলে নাগরিকত্বের আবেদনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষ করে জার্মানির বৃহৎ তুর্কি জনসংখ্যার মধ্যে।

সিডিইউ নেতা এবং সম্ভাব্য পরবর্তী চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ দ্বৈত নাগরিকত্বের বিরোধীতা করেছিলেন। তবে এসপিডির সঙ্গে জোট আলোচনার অংশ হিসাবে নীতিটি বহাল রাখতে সম্মত হয়েছেন।

নতুন জোট সরকার উগ্রপন্থি মতাদর্শকে সমর্থনকারীদের ‘দ্বৈত নাগরিকত্ব’ প্রত্যাহারের বিষয়টিও উড়িয়ে দিয়েছে।

সিডিইউ/সিএসইউ এর আগে বলেছিল, যদি কোনো দ্বৈত নাগরিক সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত হন, ইহুদিবিদ্বেষী হন বা চরমপন্থী মতাদর্শে বিশ্বাস করেন, তাহলে তার জার্মান নাগরিকত্ব বাতিল করা হবে। তবে এই প্রস্তাবটি এসপিডি এবং অভিবাসী সংগঠনগুলোর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিল।

এর পরিবর্তে, নতুন সরকার জার্মানির গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য হুমকিস্বরূপ অ-নাগরিকদের বহিষ্কার করার জন্য বিকল্প আইনগুলোতে জোর দেবে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত ন বছর ন সরক র র জন য স ড ইউ

এছাড়াও পড়ুন:

জাতিসংঘ স্থায়ী মিশনে জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে বিশেষ অনুষ্ঠান

জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও নিউ ইয়র্কস্থ বাংলাদেশের কনস্যুলেট জেনারেল কর্তৃক যৌথভাবে আয়োজিত এই বিশেষ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) এই বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, যুবসমাজ শুধু আমাদের ভবিষ্যৎই নয়, বাংলাদেশে তারা আমাদের ‘বর্তমান’। এক বছর আগে, তাদের হাত ধরেই সমতা, স্বচ্ছতা এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনের দাবি সার্বজনীন জন-আকাঙ্ক্ষায় রূপ নেয়।

আরো পড়ুন:

জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের অফিস খোলার সিদ্ধান্ত সরকারের বড় অসতর্কতা: মঞ্জু

গাজাকে নিশ্চিহ্ন করার কোনো ন্যায্যতা থাকতে পারে না: গুতেরেস

তৌহিদ হোসেন আরো বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে শুরু হওয়া এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান লক্ষ্য- সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যাপক প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার। 

তিনি তার বক্তব্যে বিগত এক বছরে বর্তমান সরকারের গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপগুলোর কথা তুলে ধরেন।

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতাকে বৈশ্বিক বাস্তবতার সঙ্গে অত্যন্ত সঙ্গতিপূর্ণ মন্তব্য করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন বলেন, তারুণ্যের প্রতি আস্থা রাখলে তারা জাতি গঠনের কেন্দ্রে দাঁড়াতে পারে।  তিনি বলেন, যারা এক সময় মিছিলের অগ্রভাগে ছিল, আজ তারা নীতিনির্ধারণে অংশ নিচ্ছে, আর আগামী দিনের দিকনির্দেশনা ঠিক করতে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিচ্ছে।  বাংলাদেশে তারুণ্যের নেতৃত্ব জাতিসংঘের যুববিষয়ক নীতি ও কার্যক্রমের সঙ্গে দৃঢ়ভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে তিনি উল্লেখ করেন।

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার সফল গণআন্দোলনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠানমালার আলোকে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের মিলনায়তনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থান সম্পর্কিত তথ্যচিত্র এবং পোস্টার, দেয়াললিখন ও আলোকচিত্র প্রভৃতির প্রদর্শনীর মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনৈতিক নবযাত্রায় যুব সমাজের অনন্য অবদানকে উদযাপন করা হয়। বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, জাতিসংঘের কর্মকর্তাবৃন্দসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণে এই বিশেষ আয়োজনে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এবং জাতিসংঘের ইয়ুথ অফিসের প্রতিনিধি ড. সুধা বালাকৃষ্ণণ বক্তব্য রাখেন।

ড. বালাকৃষ্ণণ তার বক্তব্যে বলেন, জাতিসংঘ সমাজ পরিবর্তনে যুবসমাজের সত্যিকারের অংশগ্রহণকে সর্বদাই উৎসাহিত করে থাকে। বাংলাদেশে রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় পরিবর্তনের অগ্রভাগে থাকা যুবশক্তি তাই অন্যান্য সমাজের জন্যও অনুপ্রেরণার উৎস হতে পারে।

উল্লেখ্য, ফিলিস্তিন সমস্যার দুই-জাতি-ভিত্তিক সমাধানের লক্ষ্যে জাতিসংঘের একটি উচ্চ-পর্যায়ের সভায় অংশগ্রহণের জন্য পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বর্তমানে নিউ ইয়র্কে অবস্থান করছেন।

ঢাকা/হাসান/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পিডিবির ভুলে ২৪৫ কোটি টাকা জরিমানা দিতে হলো বাংলাদেশকে
  • জুলাইয়ের ৩০ দিনে রেমিট্যান্স ২৩৬ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে
  • নির্বাচনের রোডম্যাপে কবে যাত্রা শুরু করবে বাংলাদেশ
  • ভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
  • এ দেশে খুচরা ব্যাংকিং বন্ধ করে দিচ্ছে এইচএসবিসি
  • রাবিপ্রবির ১০ শিক্ষার্থীর সনদ-ছাত্রত্ব বাতিল
  • জন্মহার বাড়াতে চীনের নতুন উদ্যোগ, শিশুদের জন্য মা-বাবা পাবেন ভাতা
  • সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ১২ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
  • ‘রাষ্ট্রীয় শোক’ প্রত্যাখ্যান
  • জাতিসংঘ স্থায়ী মিশনে জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে বিশেষ অনুষ্ঠান