লম্বা দৌড় শেষে ব্যাটসম্যানের দিকে তেড়েফুঁড়ে বল ছুড়ে মারা—এই ছিল মাঠের শোয়েব আখতারের চেনা চেহারা। ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বর্ণিল চরিত্রগুলোর একটি পাকিস্তানের এই ফাস্ট বোলার। ১৯৯৭ সালের নভেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে দলে অভিষেক, খেলেছেন ২০১১ বিশ্বকাপ পর্যন্ত। রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস নামে পরিচিত এই ফাস্ট বোলার অবসরের কয়েক মাসই পরই প্রকাশ করেন কন্ট্রোভার্সালি ইয়োরস বা ‘বিতর্কিত আমি’ নামের আত্মজীবনী। বইয়ের ‘দ্য ড্রেসিংরুম’ অংশে শোয়েব তুলে ধরেছেন পাকিস্তান দলের ভেতরের নানা মজার ঘটনা, রাজনীতির ঘটনা। আছে পাকিস্তান দলে ধর্মচর্চা, এমনকি নিজের স্বার্থপরতার কথাও। আর পুরোটা জুড়েই আছে দিলখোলা শোয়েবের ছাপ, যে শোয়েব উইকেটশিকারের পর দু হাত ছড়িয়ে দিতেন।

পাকিস্তানের ড্রেসিংরুমে প্রথমবার পা রাখতেই আমি হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলাম। পুরো পরিবেশটাই ছিল বিষাক্ত। প্রায় সব সিনিয়র খেলোয়াড় হয় শুধু আমার ও অন্য জুনিয়রদের সঙ্গে চিৎকার–চেঁচামেচি করছে, আর না হয় বসে বসে টিম ম্যানেজমেন্টকে গালি দিচ্ছে, আর বলছে কীভাবে তাদের সঙ্গে অন্যায় হচ্ছে।

আমার ভাবনা ছিল সোজা—বোর্ড আমাকে বেছে নিয়েছে। মাজিদ খান (পিসিবির তৎকালীন প্রধান নির্বাহী) আমার ওপর এতটাই বিশ্বাস করেছিলেন যে তিনি বলেছিলেন, আমাকে খেলানো না হলে তিনি অর্ধেক সিনিয়র খেলোয়াড় দল থেকে বের করে দেবেন। যে কারণে বোর্ড নিয়ে আমার কোনো সমস্যা ছিল না। বরং আমার স্বপ্ন বাস্তবায়নের সুযোগ দেওয়ায় বোর্ডের প্রতি কৃতজ্ঞই ছিলাম।

কিন্তু ধীরে ধীরে বুঝলাম, এই নেতিবাচকতা দলেরই স্বাভাবিক চেহারা। তখন নিজেকে মানসিকভাবে আলাদা করে নিলাম। শুরুতে দেশের হয়ে খেলতে পেরে এতটাই আনন্দে ছিলাম যে কোনো কিছুই স্পৃহাকে নষ্ট করতে পারত না। পরে বুঝলাম, এই দূরত্ব রাখাটা দরকার ছিল।

আমার মতো শহীদ আফ্রিদি, আজহার মেহমুদ, সাকলাইন মুশতাক, শহীদ নাজির, আব্দুর রাজ্জাক, সেলিম এলাহীরাও ড্রেসিংরুমের রাজনীতি থেকে নিজেদের দূরে রাখত। আমরা একসঙ্গে থাকতাম, বন্ধুও হয়ে উঠলাম বাকি জীবনের জন্য। আমরা তখন এত বেশি একসঙ্গে সময় কাটিয়েছি যে আমাদের পরিবারও হয়তো আমাদের এতটা চিনত না।

১৯৯৯ বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে।.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বাবুডাইং আলোর পাঠশালা পরিদর্শন করলেন দুই বিদেশি পর্যটক

‘এটি খুবই আনন্দায়ক খবর যে এই স্কুলে আদিবাসী ও বাঙালি শিক্ষার্থীরা একসঙ্গেই বসে শান্তিপূর্ণভাবে পাঠ গ্রহণ করে। যেখানে ইসলাম-হিন্দু-খ্রিষ্টধর্মের শিক্ষার্থীরাও একই আসনে বসে পাঠ নিচ্ছে। সম্প্রীতি-ভালোবাসার এ দৃশ্য আমাদের বিমোহিত করেছে।’

আজ সোমবার দুপুরে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত বাবুডাইং আলোর পাঠশালা পরিদর্শনে এসে জার্মান নাগরিক অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক মাথিয়াস রিচার্ড এ মন্তব্য করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন সুইজারল্যান্ডের নাগরিক অবসরপ্রাপ্ত রসায়নবিদ সিলভিয়া মাউরিজিও। ‘দেশ ঘুরি’ নামের একটি ট্যুরিস্ট সংস্থার মাধ্যমে তাঁরা এ বিদ্যালয় পরিদর্শনে আসেন।

বেলা সাড়ে ১১টায় তাঁরা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উপস্থিত হলে ফুলের তোড়া ও মালা দিয়ে শুভেচ্ছা জানায় শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাঁদের বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষ ঘুরিয়ে দেখান প্রধান শিক্ষক আলী উজ্জামান নূর। তাঁরা শ্রেণিকক্ষগুলোতে গিয়ে পাঠ উপস্থাপন দেখেন। কথা বলেন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। শিক্ষার্থীরাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাঁদের সঙ্গে ভাববিনিময় করে।

এ সময় দুই পর্যটক জানতে পারেন, এ বিদ্যালয়ে ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও বাঙালি শিশুরা একসঙ্গে পড়াশোনা করে। ইসলাম-হিন্দু-খ্রিষ্টধর্মের শিক্ষার্থীরা নিজেদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ না করে একবেঞ্চে বসে পাঠ গ্রহণ করে। বিষয়টি জানতে পেরে তাঁরা খুবই খুশি হন।

চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মাসুমা খাতুন দুজনকে একটি গান গেয়ে শোনায়। বিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক দলের শিক্ষার্থীরা তাঁদের সামনে ঐতিহ্যবাহী নাচ-গান প্রদর্শন করে। সিলভিয়াও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নাচে অংশ নেন। সৃষ্টি হয় একটি আনন্দদায়ক পরিবেশের। এ সময় বাঙালি ও কোল ক্ষুদ্র জাতিসত্তার শিক্ষার্থীদের মধ্যে সম্প্রীতি-ভালোবাসা ও বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ দেখে খুশি হন।

বিদেশি দুই পর্যটকের সামনে আলোর স্কুলের শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাবুডাইং আলোর পাঠশালা পরিদর্শন করলেন দুই বিদেশি পর্যটক
  • সব সিম লক রেখে কিস্তিতে স্মার্টফোন বিক্রির সুযোগ পাচ্ছে অপারেটররা
  • আগামী বছর নির্বাচনের পর বিশ্ব ইজতেমা: ধর্ম উপদেষ্টা
  • শাহরুখের ব্যাপারে সাবধান করলেন জুহি চাওলা
  • শাহরুখের অজানা এই সাত তথ্য জানেন?